ভাগ্নের মটর সাইকেলের সঙ্গে আমার কাটানো কিছু মুহূর্ত
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকে আমি ভাগ্নের মোটরসাইকেল কেনার পর মোটরসাইকেলের সিট বাঁধাই করা ও মোটরসাইকেলের বাঙ্কার (leg gard) বাধাই করতে গিয়ে আমার কিছু অনুভূতি আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করব। এইতো কিছুদিন আগের কথা আমার ভাগ্নের একটি ব্র্যান্ড নিউ হিরো মোটরসাইকেল (model ignitor) কিনতে গিয়েছিলাম এবং তা আপনাদের মাঝে আমার অনুভূতি নিয়ে একটি পোস্ট করেছিলাম। আমার এই ভাগ্নে ফায়ার সার্ভিসে চাকরিরত আছে। সে এখন জলঢাকা ফায়ার সার্ভিসে কর্তব্যরত আছে। আর তাই সে জল ঢাকা থেকে কুড়িগ্রামে যাতায়াতের জন্য এই মোটরসাইকেলটি কিনেছে।
এইতো কিছুদিন আগেই আমার এই ভাগ্নেকে আমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বিয়ে দিয়েছিলাম আর সেই বিয়ে নিয়েও আমি একটি পোস্ট করেছিলাম। ভাগ্নিকে বিয়ে দেওয়ার পর থেকে ভাগ্নের মোটরসাইকেল কেনার প্রতি খুবই আগ্রহ জন্মে। আর তাই যখন সে মোটরসাইকেল কেনার কথা বলে তখন তাকে আমি আমার এলাকার বাজারে একটি শোরুম আছে সেখানে নিয়ে গিয়েছিলাম। মূলত তার পছন্দেই এই মোটরসাইকেলটি কিনেছিলাম।
সে যখনই ছুটিতে আসে তখনই শুধু আমাকে মোটরসাইকেলটির সিট কভার বাধাই করে আসার জন্য বায়না ধরে। কিন্তু আমার সময় ও সুযোগের অভাবে ওকে শুধু পরে কাজটি করবে বলে সময়টি পার করে দিয়েছিলাম। কিন্তু সেদিন সে কোনভাবেই পরে কথাটি শুনতে নারাজ ছিল। আর তাই তার জোরপূর্বক আমি তাকে আমার পরিচিত সেই মিস্ত্রির দোকানে নিয়ে গিয়েছিলাম কাজটি করার জন্য। আমার সময় স্বল্পতার জন্য আমি এখন আর কাউকে সেরকমভাবে সময় দিতে পারি না। তবে কি আর করার তার গাড়ির কাজ করানোর জন্যই মূলত আমরা সেখানে পৌঁছেছিলাম।
আমি যে মিস্ত্রীর কাছে গিয়েছিলাম সেই মিস্ত্রি আমাদের কুড়িগ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা নয়। বহু বছর আগে তার বাবা আমাদের এই কুড়িগ্রামে এসেছে। তাই ওনারা দোকানের নাম দিয়েছিল বিদেশি মিস্ত্রি। আর জন্মসূত্রে ইনিও মিস্ত্রি। তার বাবার কাজ এখন চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা সেই বিদেশি মিস্ত্রির কাছে পৌঁছার পর পরই সে তার ছোট্ট ছেলেকে দিয়ে ভাগ্নের গাড়ির সিটটি খুলে আনতে বলল।
তার দোকানের সেই ছেলেটি মোটরসাইকেলের সিটটি খুলে নিয়ে আসার পরে, মিস্ত্রী ভাই সেই মোটরসাইকেলের সিট টির মাপ নিয়ে কভারের জন্য রেক্সিন এর মাপ নিয়ে সিট কভার এর মাপে কেটে নিলো।
মিস্ত্রী ভাই সিট কভারের জন্য রেক্সিন টি কেটে নেবার পর সেলাই মেশিনের সাহায্যে সেলাই করে সিটের সাথে বাঁধাই করে সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত করে ফেলল।তিনি কাজগুলো নিখুঁতভাবে করছিল আর আমি সেখানে বসে থেকে উপলব্ধি করার চেষ্টা করছিলাম এবং নিজের একটি সেলফি তুলে নিলাম। আমাদের কাছে যা কঠিন তাদের কাছে তা খুব সহজ। আর তাই তো সে তার নিখুঁত হাতের কাজ দিয়ে সকলের মন জয় করে নিচ্ছে।
এরপর বিদেশি মিস্ত্রী ভাই তার ছেলেকে দিয়ে মোটরসাইকেলের বাঙ্কার (leg gard) খুলে এনে রেডিমেড রেক্সিন লাগাতে বললো। তারপর বিদেশি মিস্ত্রি মোটরসাইকেলের রংয়ের সাথে রং মিল রেখে একটি চিকন রেক্সিন আবারও উপর দিয়ে আঠার সাহায্যে বসিয়ে দেয়। তারপর রেক্সিনের ওই চিকন ফিতা দিয়ে উপরে খুবই জোরালোভাবে পেচিয়ে দেয়।
এবার চিকন ফিতা দিয়ে উপরে খুবই জোরালোভাবে পেচিয়ে দেয়ার পর মোটরসাইকেলের বাঙ্কার (leg gard) টি মোটরসাইকেলে লাগিয়ে দিল। তারপর মোটরসাইকেলের সিট কভার টি সিট সহ মোটরসাইকেলে বসিয়ে দিল।
অনেক বছর ধরে এই একই কাজ বারবার করে আসছে বিদেশে মিস্ত্রি ভাই। তার হাতের কাজের প্রশংসা না করলেই নয়। একবার যে তার কাছ থেকে কাজ করে নিবে পরবর্তী সময়ে আবারো সেই বিদেশি মিস্ত্রির কাজ থেকে কাজ করিয়ে নিতে চাইবে। বিদেশি মিস্ত্রি ভাইয়ের দোকানে শুধু মোটরসাইকেলের সিট বাঁধাই করা হয় তাই না তাদের দোকানে বিভিন্ন ধরনের হেলমেট ও সুন্দর সুন্দর স্টিকার পাওয়া যায়, যা মোটরসাইকেলে লাগেলে খুবই আকর্ষণীয় দেখায়। আজকের মতো এখানেই এই পোস্ট শেষ করছি।
আশা করি আমার ভাগ্নের মটর সাইকেলের সঙ্গে আমার কাটানো কিছু মুহূর্তের পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ সুন্দর বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
দারুন ছিল আপনার অনুভূতিগুলো। আপনার ভাইগ্না আর অনেক রিকোয়েস্টের পরে তার মোটরসাইকেলের চিট বানাতে নিয়ে গেছিলেন বিদেশি মিস্ত্রি কাছে। তবে একটা কথা ঠিক যে যেই কাজ করে সেই সে কাজটিই নিখুঁতভাবেই করে এবং যে জানেনা তার কাছে অনেক কঠিন মনে হয়। আমাদের সাথে আপনার অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
আমার ভাগ্নে অনেকদিন থেকেই তার এই মোটরসাইকেলের ছোট ছোট কাজগুলো করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে যাচ্ছিল। কিন্তু সময়ের অভাবে তার কাজগুলো করে দিতে পারছিলাম না। তাই হঠাৎ করে সেদিন সময় বের করে অনেকটা সময় পার করেছিলাম ভাগ্নের মোটরসাইকেলের কাজগুলো নিয়ে। আপনি সময় করে আমার পোস্ট পড়েছেন এজন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আপনি আপনার ভাগ্নের মোটরসাইকেলটি মেরামত করতে বিদেশি মিস্ত্রি দোকানের কাছে গিয়েছিলেন দেখে খুব ভালো লাগলো। এরকম সুন্দর অভিজ্ঞতা এবং স্মৃতিগুলো আমাদের মাঝখানে এ ছবির মাধ্যমে পোস্ট করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাই
ভাই, সব সময় আপনার সুন্দর মন্তব্য পেয়ে খুবই ভালো লাগে। আমার পোস্টে এসে এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
যে যে ধরনের কাজে পারদর্শী তার কাছে সেই কাজটি খুবই সহজ।তাছাড়া তিনি বহু বছর ধরে এই পেশার সঙ্গে যুক্ত তাই কাজটি নিখুঁত হতে বাধ্য।এই ধরনের কাজ আমাদের কাছে খুবই কঠিন তবে উনি যে সুন্দর করে কাজটি সম্পন্ন করেছেন জেনে ভালো লাগলো।ছোট্ট ছেলেটিও এখন থেকেই কাজটিকে ভালোবেসে ফেলছে।ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপু ছোট্ট ছেলেটি কাজ যেমন ভালোবাসে তেমনি কথা অনেক সুন্দর বলে। ওর ব্যবহারে আমি মুগ্ধ। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ছোট বাচ্চাটা টিকে দেখতে অনেক মিষ্টি দেখাচ্ছিলো। আপনার মোটরসাইকেল সিট লাগানোর মুহূর্ত টা আমার কাছে দারুন লেগেছিল আপনি পোস্টটি অনেক সাজিয়ে গুছিয়ে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন অনেক কিছুই উপলব্ধি করতে পারলাম আপনার পোস্ট থেকে ধন্যবাদ ভাই আপনাকে ।
আমার পোষ্টে এসে অনেক সুন্দর মন্তব্য করেছেন ভাইয়া। এজন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।