বৃষ্টির দিন
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি জেনারেল রাইটিং পোস্ট নিয়ে। আর আজকের পোস্ট হচ্ছে বৃষ্টির দিনকে কেন্দ্র করে। বৃষ্টির দিন কার না কাছে ভালো লাগে বলুন। আমার কাছে তো বৃষ্টির দিন খুবই ভালো লাগে। বৃষ্টির দিনে বৃষ্টির টুপটাপ শব্দ শুনতে আমার অসম্ভব ভালো লাগে। এই তো কিছুদিন আগে যখন প্রচন্ড গরমে মানুষ দিশেহারা হয়ে গিয়েছিল, তখন এক ফোঁটা বৃষ্টির আশায় সবাই আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতো। বিভিন্ন জায়গায় তো এমনও হয়েছে বৃষ্টির জন্য মানুষ মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে দুহাত তুলে ফরিয়াদ জানিয়েছিল।
প্রখর রোদে প্রচন্ড গরমে মাঠের মধ্যে দাঁড়িয়ে সকল মুসলিম ভাইয়েরা একত্র হয়ে মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে কেঁদে বুক ভাসিয়েছিল বৃষ্টির জন্য। আর সেই সময় মহান সৃষ্টিকর্তা তার রহমত বর্ষণ করেছিল বিধায় সেদিনই ঝুম বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। বৃষ্টির পরে সকল মুসল্লী ভাইয়েরা আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করেছিল। যাক অবশেষে বৃষ্টির দেখা মিলেছিল এবং সেই থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টির দেখা মিলছে। আর এই বৃষ্টির দিনে ঠান্ডা ঠান্ডা আবহাওয়া আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। বৃষ্টির দিনে ঠান্ডা ঠান্ডা আবহাওয়ায় গরম গরম ধোঁয়া ওঠা খিচুড়ি খেতে দুর্দান্ত স্বাদ লাগে।
তাই বৃষ্টির দিন এলেই আমার বাসায় খিচুড়ি খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। এত গেল বৃষ্টির দিনে খিচুড়ি খাওয়ার কথা, বৃষ্টির দিন বৃষ্টিতে ভিজতে আমার কাছে কি যে ভালো লাগে তা হয়তো বলে বোঝাতে পারবো না। তাই বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলেই আমিও বৃষ্টিতে গোসল করতে নেমে পড়ি। তবে বর্তমানে বজ্রপাতের ভয়ে খুব একটা গোসল করা হচ্ছে না। তবে হ্যাঁ বৃষ্টিতে গোসল করতে না পারলেও বৃষ্টির কারণে খুব সুন্দর আলসেমি ঘুম দেয়া যায়। কেননা বৃষ্টির কারণে আমার ব্যবসার কার্যক্রম বন্ধ থাকায় আমি কিছুটা রিলাক্সে সময় কাটাতে পারি। আর এই সময়টাতে আমি বেশিরভাগ সময়ে সাউন্ড বক্সে মিডিয়াম ভলিয়মে সুন্দর সুন্দর গান শুনে থাকি। এমনিতেই গান আমার কাছে ভীষণ রকম প্রিয় আর যদি এরকম বৃষ্টির দিনে গান শোনা যায় তাহলে ভালো লাগাটা অনেকটাই বেড়ে যায়।
যাক এ তো গেল বৃষ্টির দিনকে ভালো লাগার কথা। এবার আসি বৃষ্টির দিনে আমার কি কি অসুবিধা হয় তার কথায়। প্রথমত বৃষ্টির কারণে আমার মেয়ে ও আমার অর্ধাঙ্গিনীর স্কুলে যাওয়ার ভীষণ অসুবিধে হয়। যদিও বা আমার মেয়ের স্কুল আমার বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটারের মধ্যে, তবে আমার অর্ধাঙ্গিনীর স্কুল আমার বাড়ি থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরত্বে। যার কারণে বৃষ্টি এলে সময়মতো স্কুলে পৌঁছানো খুবই কষ্টকর হয়ে যায়।আজ যখন আমি এই পোস্ট লিখছিলাম তখনও বাইরে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল, আর তখন পর্যন্ত আমার অর্ধাঙ্গিনী স্কুলে যেতে না পেরে মানসিক টেনশনে অস্থির হয়ে গিয়েছিল। তার এই টেনশন দেখে আমার কাছে খুবই খারাপ লেগেছিল।
শুধু আমার অর্ধাঙ্গিনীর স্কুল কিংবা আমার মেয়ের স্কুল নয় বরং এই বৃষ্টির দিনে আমার ব্যবসাটাও বন্ধ হয়ে থাকে। কেননা আমি প্রাণ কোম্পানির ডিলারশিপ এর ব্যবসা করি। তাই বৃষ্টি এলে আমার ডেলিভারি ম্যান বৃষ্টিতে ভিজে মালামাল ডেলিভারি করতে চায় না। আর আমিও মানবতার খাতিরে বৃষ্টিতে ভিজে কখনোই ডেলিভারি দিতে বলি না। যাক এতো গেল আমার পরিবারের কথা, এখন আসি খেটে খাওয়া মানুষের কথায়, যারা দিনমজুর যারা দিন এনে দিন খায় তাদের এই বৃষ্টির দিন খুবই কষ্টের দিন। কেননা বৃষ্টির কারণে তাদের সেই দিনটি মাটি হয়ে যায়।
এই যেমন গতকাল আমার অর্ধাঙ্গিনীর স্কুলে গিয়ে একজন বাদাম বিক্রেতার সাথে কথা বলছিলাম, তখন তার কথা শুনে সত্যিই আমি হতাশ হয়ে গিয়েছিলাম। সে প্রতিদিন আমার অর্ধাঙ্গিনীর স্কুলে বাদাম বিক্রি করতে আসে, আর এই বাদাম বিক্রি করে তার পুরো সংসারটি চালায়। তবে বৃষ্টির কারণে অনেকদিন থেকেই তার বেচাকেনা ভালোভাবে হচ্ছে না, যার কারণে তার পরিবার নিয়ে সে খুব দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে। সেই বাদাম বিক্রেতা আমার সাথে কথা বলতে বলতে একপ্রকার কেদেই ফেলেছিল। আর সেই মুহূর্তটা যে আমার কতটা খারাপ লেগেছিল তা হয়তো আমি বলে বোঝাতে পারবো না।
হয়তোবা আমি এই বাদামওয়ালাকে সাময়িক কোন সহযোগিতা করতে পারি, কিন্তু তার প্রতিদিনের রুজি রোজগারের ব্যবস্থা আমার তো কোনোভাবেই করে দেয়া সম্ভব নয়। তাই যখন তার কথা চিন্তা করছিলাম তখন আমার কাছে ভীষণ খারাপ লাগছিল। আমার তো মনে হয় এই বৃষ্টির দিনে প্রতিটা দিনমজুরের একই অবস্থা হয়। কিন্তু কি আর করার বৃষ্টি তো বৃষ্টির মতই ঝরবে তাকে বাধা দেয়ার মত কারই বা সাধ্য আছে। তবে একটা কথা অবশ্যই মানতে হবে মহান সৃষ্টিকর্তা যা কিছু করেন সব মঙ্গলের জন্যই করেন। আর তাই বৃষ্টির দিন কারো কাছে ভালোলাগার দিন, আবার বৃষ্টির দিন কারো কাছে খারাপ লাগার দিন। আর এই ভালো মন্দ নিয়ে আমাদের জীবনযাপন চালিয়ে যেতে হয়। যাক বৃষ্টির দিন নিয়ে আমার মনের অনুভূতিটুকু আপনাদের মাঝে প্রকাশ করলাম, জানিনা আপনাদের কাছে কেমন লাগবে।
আশা করি আমার পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
বৃষ্টির দিন আমারও খুবই পছন্দের। বৃষ্টির রিমঝিম শব্দ শুনতে এবং বৃষ্টিতে ভিজতে আমার কাছে ভালো লাগে। আর বৃষ্টির দিনে গরম গরম খিচুড়ি হলে তো কথাই নেই। বৃষ্টির দিনে খিচুড়ি খাওয়ার মজাটাই আলাদা। কিন্তু বৃষ্টি আবার কিছু কিছু সময় মানুষের একটু অসুবিধার কারণ হয়। যেমন দিনমজুর মানুষগুলো বাদাম বিক্রেতার এ ধরনের মানুষগুলোর কথা মনে পড়লে খুব খারাপ লাগে। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ।
আপু, বৃষ্টির দিন আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। তবে সব কিছুরই ভালো-মন্দ দিক রয়েছে। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
বৃষ্টির দিন মানেই আলসেমি, বিছানায় ঘুম আর গরম গরম খিচুড়ি খাওয়া । সত্যি দারুন সময় কাটে বৃষ্টির দিনে । বৃষ্টির দিন নিয়ে দারুন কিছু লেখা লিখেছেন আপনি । বৃষ্টির দিন বরাবরই আমার কাছে বেশ ভালো লাগে । আর বৃষ্টিতে ভিজতে সে তো আরো বেশি মজার । যদিও আমাদের এখানে খুব একটা বৃষ্টি হচ্ছে না । তবুও অপেক্ষায় আছি ধন্যবাদ।
আপু আমাদের এদিকেতো প্রায় সময়ই বৃষ্টি হচ্ছে। আর এই বৃষ্টির দিনে ঠান্ডা ঠান্ডা আবহাওয়া আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন বৃষ্টির দিনের কিছু মজার ঘটনা বা কথা। আপনার লেখা পোস্টে আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। ঠিক বলেছেন ভাই প্রচন্ড রোদের এবং গরমের কারণে সকল মুসলিম দোয়া করেছে বৃষ্টির জন্য। ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
ভাই, আমার লেখাগুলো পড়ে আপনার কাছে ভালো লেগেছে এজন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আসলে আপনাকে আর কি বলব বৃষ্টির দিন আমারও অনেক বেশি পছন্দের। বৃষ্টি হলেই আমি তো বেশিরভাগ সময় চেষ্টা করি খিচুড়ি রান্না করার। বৃষ্টির দিনে বৃষ্টির এই মুহূর্তে খিচুড়ি খাওয়ার আনন্দটা সব থেকে বেশি অন্যরকম হয়। বিশেষ করে সবাই মিলে একসাথে বৃষ্টি উপভোগ করতে করতে খিচুড়ি খেতে খুব ভালো লাগে। সত্যি কথা বলতে আমাদের এখানে তো এখন ও অনেক বৃষ্টি হচ্ছে। ঠান্ডা ঠান্ডা এরকম পরিবেশ খুব ভালো লাগে। আপনার করা বৃষ্টি নিয়ে পোস্টটি খুব ভালো লেগেছে আমার কাছে।
আপু আমাদের এখানেও প্রায় সময় বৃষ্টি হচ্ছে, আর আমি যখন এই লেখাগুলো লিখেছিলাম তখনও বৃষ্টি ঝরছিল। তাই আপনাদের মাঝে মনের অনুভূতিটুকু শেয়ার করেছিলাম। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ভাই বৃষ্টি হলে আল্লাহর রহমত। আমি শুনেছি আল্লাহ যখন মানুষের প্রতি নারাজ হয় তখন নাকি বৃষ্টি দেয় না। আর এই বিষয়টা মনে হচ্ছে আমাদের পৃথিবীর বুকে বৃষ্টি না হওয়ার কারণ আমরা বুঝতে পারছি বিষয়টা ঠিক তেমনি। তারপরও অনেক মুসলমান দুহাত তুলে রোদের ভিতরে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ে কান্নাকাটি করে করছে বৃষ্টির জন্য। আল্লাহ অসীম দয়ালু তাদের এই দোয়া কবুল করছে এবং বৃষ্টি হয়েছে। মানুষ একসময় বৃষ্টির জন্য পাগল হয়ে যায় আবার দুই দিন বৃষ্টি হলে মানুষ বিরক্ত অনুভব করে। এটা হল পৃথিবীর মানুষের চরিত্র।
হ্যাঁ ভাই আমিও ইউটিউবে দেখেছিলাম, দিনাজপুরে মুসল্লী ভাইয়েরা বৃষ্টির জন্য আল্লাহর কাছে দুহাত তুলে ফরিয়াদ জানিয়েছিল। আর মহান আল্লাহ তায়ালা সেই ডাকে সাড়া দিয়েছিল। যাই হোক ভাই, আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আমি মনে করি অন্যান্য সব ঋতু থেকে বর্ষাটা একটু বেশি স্পেশাল সবার জন্য। বিশেষ করে আমার জন্য অনেক বেশি স্পেশাল এটা। বর্ষা এমন একটা মৌসুম যখন সবাই নিজের প্রিয় মানুষটাকে নিয়ে একটু বেশি চিন্তা ভাবনা করে থাকে এবং সবার মনে ভিন্ন রকম অনুভূতি কাজ করে। আর আপনি সেই বর্ষা নিয়েই অসাধারণ একটা পোস্ট লিখে ফেললেন। বৃষ্টির দিনের আপনার মনের অনুভূতিটা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে, বেশ ভালোই উপভোগ করলাম কিন্তু।
ভাই বৃষ্টির দিন আমার কাছে খুবই ভালো লাগে, তবে যখন অনবরত বৃষ্টি পড়তে থাকে তখন আপনার ভাবির স্কুলে যেতে খুবই অসুবিধা হয়। তবে আমরা এভাবেই অভ্যস্ত। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
বৃষ্টির দিন মহিলা মানুষের জন্য বাইরে চলাচল বড়ই কঠিন ভাইয়া। তাই চাকরিজীবী মানুষরা যারা নিজের গন্তব্যে পৌঁছাতে চাই হঠাৎ বৃষ্টি এলে যেন পথ চলা থামিয়ে দেয়। আপনার বাসা থেকে ভাবির স্কুলের দূরত্ব ১১ কিলোমিটার তাহলে তো অনেক দূর। সেখানে সময় মত পৌঁছানো বৃষ্টি দিন বড়ই কঠিন ব্যাপার।
ভাই আপনার ভাবির স্কুল এত দূরত্ব হওয়ার কারণে প্রতিদিনই যাতায়াত করতে খুবই অসুবিধে হয়। তাই বেশিরভাগ সময় আমি তাকে রেখে আসি। যাইহোক ভাই, আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।