রাতের বাণিজ্য মেলার কিছু স্মৃতিচারণ || ১০% বেনিফিশিয়ারি shy-fox এর জন্য
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবারও ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকে আমি আপনাদের মাঝে বাণিজ্য মেলার কিছু স্মৃতিচারণ উপস্থাপন করব। এই তো কিছুদিন আগে আমাদের এখানে বাণিজ্য মেলা শুরু হয়েছিল। আবার তা শেষও হয়ে গেছে। আমার ছোট্ট পরিবার মিলে সেই মেলায় অনেক অনেক আনন্দ উপভোগ করেছিলাম। মেলা শেষ তবে সেই দিনকার স্মৃতিগুলো আজও রয়ে গেছে। অনেকদিন থেকে খুবই ব্যস্ততায় দিন যাচ্ছে। আর তাই কোন DIY প্রজেক্ট তৈরি করতে পারছি না। আজ হঠাৎ করে মোবাইল ফোনটি হাতে নিয়ে মোবাইল ফোনের গ্যালারিতে গিয়ে ছবিগুলো দেখতে দেখতে মেলার অনেক ছবি চোখে পড়ে গেল। আর তাই ভাবলাম সেই দিনের সুন্দর মুহূর্তটুকু, সেই দিনের স্মৃতিটুকু আজ আপনাদের মাঝে শেয়ার করব।
সেদিন আমরা রাতের বেলায় বাণিজ্য মেলা দেখার জন্য গিয়েছিলাম। পুরো একমাস ব্যাপী এই মেলাটি চলেছিল আমি অনেক কয়েকবারই এই মেলায় গিয়েছিলাম। দিনের বেলায় মেলায় গিয়েছিলাম আবার রাতের বেলাতেও মেলায় গিয়েছিলাম। তবে আমার কাছে রাতের মেলায় ঘুরতে অনেক বেশি ভালো লাগে। কেননা রাতের বেলায় আলোকসজ্জা গুলো এত সুন্দর দেখাচ্ছিল তা বলার বাইরে। যা দিনের বেলায় বোঝা যায় না। আবার দিনের বেলায় প্রচন্ড গরমে মেলায় প্রবেশ করলে শরীরটা কেমন অস্থির অস্থির লাগে। কিন্তু রাতের বেলায় গরমের প্রভাব টা অনেক কম থাকে যার কারণে ঘুরতে অনেক স্বাচ্ছন্দ বোধ করি। আমি পরবর্তী সময়ে দিনের বেলায় বাণিজ্য মেলায় ঘোরার একটি পোস্ট উপস্থাপন করব।
আমরা সেদিন রাত নয়টার পরে মেলায় ঘুরতে গিয়েছিলাম। সেই দিন সারাদিন বৃষ্টি হয়েছিল তবে সন্ধ্যার পরে বৃষ্টি ছিল না তাই আমরাও সেই সুযোগটা গ্রহণ করলাম। আকাশটা পরিষ্কার দেখে বৃষ্টি না হওয়ার সম্ভাবনা বুঝে মেলায় ঘোরার জন্য বেরিয়ে পড়লাম। মেলার সামনে গিয়ে রংবেরঙের আলোকসজ্জা দিয়ে পুরো রাস্তাটি খুব সুন্দর করে সাজিয়েছে যা দেখামাত্রই ভালো লেগে যায়। রাতের বেলায় যখন এই আলোকসজ্জা গুলো জ্বলজ্বল করে জ্বলছিল আর তখনকার পরিবেশটা সত্যি দারুন লাগছিল। তারপর আমার অর্ধাঙ্গিনী মেলায় প্রবেশের জন্য টিকিট কেটে নিল। টিকিটের মূল্য ছিল 10 টাকা করে।টিকিট কাটার শেষে আমরা সকলেই মেলায় প্রবেশ করলাম।
আমরা মেলায় প্রবেশ করে বিভিন্ন ধরনের দোকানগুলো দেখে প্রথমে হিমশিম খেয়ে গেলাম কোন দোকানে যাব এই ভেবে। দোকান গুলো দেখে মনে হচ্ছে প্রতিটি দোকানেই কিছু না কিছু কিনতে। আমরা প্রথমেই মেলার একপাশ থেকে শুরু করলাম দোকানগুলো ঘোরার জন্য। মেলায় হরেক রকমের জিনিসগুলো দেখে এতটাই ভালো লাগছিল মনে হচ্ছিল যা চোখের সামনে দেখছি সবগুলোই কিনে নিয়ে যেতে পারলে ভীষণ ভালো লাগতো। কিন্তু তা আর কখনোই সম্ভব নয় কেননা এত জিনিস কিনতে গেলে পকেট ঘরের মাঠ হয়ে যাবে। যেটুকু সময় ঘুরেছি যতগুলো জিনিস কিনেছি তাতেই টাকার জন্য অনেক আফসোস হচ্ছিল। তারপরেও পরিবার বলে কথা যে যা কিনতে চাইলো কম বেশি সবাইকে কিনে দিয়ে সন্তুষ্ট করলাম।
আমার অর্ধাঙ্গিনী কসমেটিকসের দোকানে দাঁড়িয়ে একগুচ্ছ চুড়ি কিনে নিল। আর আমি একটি গেঞ্জি কিনে নিলাম। এরপর সানগ্লাসের দোকানে ঢুকে আমার ও আমার অর্ধাঙ্গিনীর সেই সাথে আমার ছোট ছেলেটির একটি করে মোট তিনটি সানগ্লাস কিনে নিলাম। আমার মেয়ের একটিও সানগ্লাস পছন্দ হলো না তাই আর তাকে কিনে দিতে পারলাম না। তবে আমার অর্ধাঙ্গিনী জুতার দোকানে গিয়ে আমার মেয়েকে জুতা কিনে দিল। জুতার দোকানে গিয়ে আমার মেয়ে ভীষণ খুশি হয়েছিল কারণ প্রত্যেকটি জুতাই তার ভীষণ রকম পছন্দ হয়েছিল। মেলায় ঘোরাফেরা করছি আর টুকটাক জিনিস কিনছি বেশ ভালই লাগছিল। সেই সাথে পকেটটাও ফাঁকা হচ্ছিল। হাহাহা
এই বাণিজ্য মেলায় বিভিন্ন ধরনের রাইডার এসেছে ছোট ছোট সোনামণিদের জন্য। আমার ছেলে ও মেয়ে এই রাইডারগুলোতে চরার জন্য ভীষণ ব্যস্ত হয়ে পড়ল। আর তাই আমিও টিকিট কেটে তাদের রাইডার গুলোতে চড়ার সুযোগ করে দিলাম। আর এই রাইডার গুলোতে চড়ে আমার ছেলে ও মেয়ে ভীষণ খুশি হয়েছিল। তাদের খুশি দেখতে পেয়ে বাবা হিসেবে আমি খুবই শান্তি অনুভব করেছিলাম।
মেলায় ঘোরাফেরা করতে করতে আমার ছেলে হাতের কাছে যাই পাচ্ছিল তাই কিনে নেয়ার জন্য ভীষণ বায়না ধরছিল। আর তাকে বোঝাতে বোঝাতে আমরা খুবই পেরেশান হয়ে গিয়েছিলাম। তারপরেও সে আমার কাছ থেকে হাল্ককের একটি মুখোশ, একটি সানগ্লাস, একটি খেলনা রিক্সা কিনে নিল। আর খাবার-দাবাদের কথা নাইবা বললাম। মেলার শেষের দিকে এসে বন্দুক দিয়ে বেলুন ফোটার খুবই ইচ্ছে হলো। তাই নিজের ইচ্ছেকে প্রাধান্য দেয়ার জন্য বন্দুক হাতে নিয়ে বেলুন ফোটাতে শুরু করলাম। মেলায় ঘোরাঘুরি করতে করতে আমরা ক্লান্ত হয়ে মেলার ভেতরে স্টলে বসে পড়লাম ফুচকা ও চটপটি খাওয়ার জন্য। কিন্তু সেই সময়কার কোন ছবি উপস্থাপন করতে পারলাম না কারণ পোস্টটি অনেক বড় হয়ে যাবে বলে। কুড়িগ্রামে রাতের বাণিজ্য মেলায় সেদিন আমরা অনেক অনেক আনন্দ উপভোগ করেছিলাম। আজ সেই আনন্দটুকু স্মৃতির পাতায় রয়ে গেছে। আর সেই স্মৃতিটুকু আপনাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
আশা করি আমার রাতের বাণিজ্য মেলার কিছু স্মৃতিচারণ পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ সুন্দর বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বাণিজ্য মেলায় আনন্দময় কিছু মুহূর্ত কাটিয়েছেন দেখে বোঝা যাচ্ছে এবং শপিংয়ের মাধ্যমে নিজেদের মেলায় ঘুরার পূর্ণতা প্রকাশ পেয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে অনুভূতি ও ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করার জন্য।
অনেকটা সময় নিয়ে আমার পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
হাল্ককের মুখোশটি দেখে আমি প্রথমে ভেবেছিলাম আপনি ডিজিটাল আর্ট করেছেন।যেকোনো মেলা খুবই আনন্দদায়ক হয়।আপনি আপনার পরিবারের সকলের সঙ্গে দারুণ সময় কাটিয়েছেন।মেলায় ঘুরতে আমার ও খুব ভালো লাগে, ধন্যবাদ ভাইয়া।
হাল্ককের মুখোশটি আমার ছেলে মেলায় গিয়ে জেদ ধরে কিনেছে। আর আমি একপ্রকার বাধ্য হয়ে কিনে দিয়েছি। যাইহোক মেলায় অনেক সুন্দর মুহূর্ত পার করেছি। আপনি অনেকটা ধৈর্য নিয়ে আমার পোস্টটি পড়েছেন এজন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।
রাতের বেলায় এরকম জায়গা ঘোরাঘুরি করতে ভীষণ ভালো লাগে। দেখে তো মনে হচ্ছে খুবই আনন্দের সাথে কেটেছে আপনার এই দিনটা। অনেক ভালো সময় কাটিয়েছেন বাণিজ্যিক মেলায় গিয়ে। আমার কাছে তো ভীষণ ভালো লেগেছে আপনার এই পোস্ট পড়ে। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
ঠিক বলেছেন ভাই অনেক ভালো সময় কাটিয়েছি এই বাণিজ্য মেলায় গিয়ে। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
মেলায় কাটানো সুন্দর মুহূর্ত দেখে খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া। মন চাচ্ছে আমিও মেলায় ঘুরতে চলে যাই। ভাইয়া আপনি আপনার পরিবারকে নিয়ে অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন এবং অনেক মজা করেছেন এটা বুঝতেই পারছি। আপনাদের সকলের কাটানো মুহূর্ত আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন এজন্য আপনাকে জানাচ্ছি ধন্যবাদ। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
মেলা বলতেই আনন্দ, মেলা বলতেই ভালোলাগা আর সে যদি হয় বাণিজ্য মেলা তাহলে তো কোন কথাই নেই। বাণিজ্য মেলা সেদিন ঘোরাফেরা করতে আমাদের সত্যিই অনেক অনেক ভালো লেগেছিল। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।