সুস্থতাই সকল সুখের মূল || ১০% বেনিফিশিয়ারি shy-fox এর জন্য
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবারও ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকে আমি আপনাদের মাঝে আমার ছেলের শারীরিক অসুস্থতা এবং তাকে ডাক্তার দেখানো নিয়ে কিছু কথা উপস্থাপন করব। এই তো কিছুদিন আগে আমার ছেলে হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। প্রচন্ড গরমে সূর্যের তাপে যখন জীবন ওষ্ঠাগত হয়ে পড়েছিল, ঠিক সেই রকম একটি দিনে আমার ছেলে গরম সহ্য করতে না পেরে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং তিনবার বমিও করে ফেলে। সেই অসুস্থতা থেকে আমার ছেলে সব ধরনের খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকলো। তাকে ঘরে বানানো খাবার কিংবা বাইরে থেকে কিনে আনা খাবার, কোন প্রকার খাবার খাওয়াতে পারছিলাম না।
না খেতে খেতে ছেলে আমার প্রায় শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাওয়ার উপক্রম। আর তাই দেরি না করে তাকে নিয়ে চললাম রংপুরে শিশু বিশেষজ্ঞকে দেখানোর জন্য। এমনিতে আমার ছেলের জন্মের সময় তার ওপর দিয়ে অনেক ধকল গিয়েছিল। জন্মানোর সঙ্গে সঙ্গেই তাকে NICU তে ভর্তি করে দেয়া হয়েছিল। কেননা আমার ছেলে প্রিম্যাচিউর ছিল। জন্মের সময় তার ওজন ছিল এক (১) কেজি নয়শ (৯০০) গ্রাম। তাই বর্তমানে যেকোনো শারীরিক অসুস্থ হলেই আমার মনের ভেতর ভয় কাজ করে। তাই তাকে সব সময় ভালো চিকিৎসকের তত্ত্বাবধায়নে রাখার চেষ্টা করে চলেছি।
আমরা শিশু চিকিৎসক অধ্যাপক ডা: বিকাশ মজুমদার এর চেম্বারে গিয়ে দেখি, ছোট ছোট অনেক সোনামণি ও বাবুদের দিয়ে চেম্বারটি ভরপুর হয়ে রয়েছে। ডাক্তার মানেই অপেক্ষার পালা, ডাক্তার মানেই ধৈর্যের পরীক্ষা দেয়া। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে করতে ছেলে আমার খুবই বিরক্ত হয়ে গেছে।
তাই তাকে কোলে নিয়ে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছি। অনেক প্রতীক্ষার পরে অবশেষে আমাদের ডা: এর সিরিয়ালের পালা চলে এলো। প্রতীক্ষার অবসান ঘটায় মনের ভেতরে শান্তি অনুভব করতে লাগলাম। কেননা প্রচন্ড গরমে আমরা বাপ বেটা দুজনে মিলে খুবই অশান্তিতে ভুগছিলাম। তাই দেরি না করেই ডাক্তারের কক্ষে প্রবেশের চিন্তাভাবনা করলাম।
আমার ছেলে যখন ডাক্তারের চেম্বারে বসেছিল তখন সভ্য বালকের মত ডাক্তারের সমস্ত কথা মানতে শুরু করল। আমার ছেলে যে এত ভদ্র, এত শান্তশিষ্ট তা আগে কখনো উপলব্ধি করিনি। ডাক্তার তাকে যেভাবে যেভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করল সে, সেভাবেই দাঁত, মুখ, চোখ, পেট, বুক সব দেখিয়ে দিল। আমি এরই ফাকে দুই একটি ছবি তুলে নিলাম আমার মোবাইল ফোনে।
ডা: সাহেব আমার ছেলের মোট চারটি (৪) পরীক্ষা দিয়েছিলেন। তিনটি (৩) টি ব্লাড টেস্ট এবং একটি (১) ইউরিন টেস্ট। এখন তো আমরা মহা বিপদে পড়ে গেলাম। কেননা ইউরিন দেওয়া খুবই সহজ ব্যাপার ছিল, কিন্তু ব্লাড দেয়া খুব সহজ ব্যাপার ছিল না।
তাই তাকে ব্লাড দেয়ার জন্য অনেক বুঝিয়ে সুুঝিয়ে একটি খেলনা কিনে দিয়ে অনেক কলা কৌশল করে ব্লাড পরীক্ষা করার কক্ষে নিয়ে গেলাম। এবং অবশেষে পুরো এক সিরিঞ্জ ব্লাড দেয়া হল পরীক্ষা করার জন্য। সমস্ত পরীক্ষা নিরীক্ষা করে রিপোর্ট এসেছে আমার ছেলে পুরোপুরি সুস্থ আছে। আর এই সুস্থতার জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। আপনারা সকলে আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন ও যেন সর্বদাই সুস্থ ও সুন্দর থাকে।
আশা করি আমার ছেলের ডাক্তার দেখানোর পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ সুন্দর বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বাড়ির শিশুদের কিছু হলে সবারই মন খারাপ হয়ে যায়। আপনার শিশুর প্রতি যত্ন নিবেন। বেশ ভালো করেছেন শিশু-বিশেষজ্ঞ ডাক্তার কে দেখানো। আপনার শিশুর জন্য শুভকামনা রইল।
ভাই একদম ঠিক কথা বলেছেন, নিজের অসুস্থতা মেনে নেয়া যায় কিন্তু বাড়ির ছোটদের অসুস্থতা খুবই কষ্টদায়ক হয়। তাই ছোট ছোট সোনা মনিদের অসুস্থতা মেনে নিতেও কষ্ট হয়। আপনার আশীর্বাদ আমার ছেলের উপর বর্ষিত হোক। ধন্যবাদ