আ_{^{মার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।}}

আজ আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোষ্ট নিয়ে। এইতো কিছুদিন আগে আমাদের এখানে হালকা বন্যার আবির্ভাব হয়েছিল। অন্যান্য বার যেভাবে বন্যার প্রকোপ ভয়াবহ রূপ ধারণ করে এবার তেমন একটা হয়নি। তবে আমাদের এখানে নিচু এলাকাগুলো বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল। আর এরকম পরিস্থিতি আমার অর্ধাঙ্গিনীর স্কুলের আশেপাশে দেখা গিয়েছিল। আমার অর্ধাঙ্গিনীর স্কুল আমার বাড়ি থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরত্বে হওয়ার কারণে, মাঝে মাঝেই তাকে স্কুলে রেখে আসার সুবাদে বন্যার এই পরিস্থিতি গুলো খুব কাছ থেকেই দেখার সুযোগ পেয়েছিলাম।

এইতো সেদিন আমি আমার অর্ধাঙ্গিনী কে স্কুলে রেখে ফিরে আসছিলাম, আর তখন দেখলাম স্কুলের পাশেই ছোট্ট একটি খালে ছোট ছোট দুটি ছেলে ও তার বাবা মা মিলে মাছ ধরার জন্য ছোট্ট ওই খালটিতে জাল ফেলছিল। আর তাই আমিও সেখানে দাঁড়িয়ে গেলাম তাদের মাছ ধরা দেখার জন্য। কেন জানি আমার মনে হচ্ছিল ছোট্ট এই খালটিতে তারা শুধু শুধুই জাল ফেলছে, এখানে কিভাবে তারা মাছের আশা করতে পারে।

আমার ধারনা একদমই ভুল ছিল। সেখানে তারা জাল দিয়ে মাছ ধরার সাথে সাথে, হাত দিয়েও মাছ ধরার চেষ্টা করছিল। আর তারা হাত দিয়ে টপাটপ ছোট মাছগুলো ধরে ফেলছিল। আমি তো বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না, তাই সেখানে থাকা বয়স্ক লোকটিকে জিজ্ঞেস করেছিলাম এখানে মাছ আসলো কিভাবে। প্রতিউত্তরে লোকটি আমাকে বলেছিল, নদীর পানি প্লাবিত হওয়ার কারণে এখানে থাকা অনেকগুলো পুকুর ভরে উপচে পড়েছিল। আর সেখান থেকেই এই ছোট ছোট মাছগুলো পুকুর থেকে ছুটে ছোট্ট ছোট্ট এই খাল গুলোতে চলে এসেছে।

প্রথমে আমি দেখছিলাম একটি ছেলে ছোট্ট একটি জালে করে মাছ ধরছিল। মাছের পরিমাণ বেশি মনে হওয়ার কারণে তারা বাড়ি থেকে আবার বড় একটি জাল নিয়ে এসে খালে ফেলছিল। আমিও অবাক দৃষ্টিতে তাদের মাছ ধরা দেখছিলাম। যতই মাছ ধরা দেখছি ততই যেন আমি অবাক হয়ে যাচ্ছিলাম। অল্প অল্প করে তারা কিছুটা সময়ের মধ্যে অনেকগুলো মাছ ধরে ফেলেছিল। তাদের এই মাছ ধরার দৃশ্য আমার কাছে এতটাই ভালো লেগেছিল যে আমি সময়ের চিন্তাভাবনা না করেই তাদের মাছ ধরা দেখছিলাম।

তবে শুরু থেকেই আমি এই মাছগুলো দেখে খুবই লোভে পড়ে গিয়েছিলাম। কেননা ছোট মাছ আমার খুবই প্রিয়। ছোট মাছের যে কোন রেসিপি খেতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। আর যদি এমন টাটকা টাটকা ছোট মাছের চচ্চড়ি খাওয়া যায়, তাহলে তা খেতে ভীষণ স্বাদের হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই আমি তাদের মাছ ধরা দেখছিলাম, আর ওই বয়স্ক চাচাকে জিজ্ঞাসা করছিলাম, তারা কি মাছগুলো বিক্রি করবে নাকি।

পরে লোকটি বলেছিল হ্যাঁ তারা এই মাছগুলো বিক্রি করবে। তাই তাদের সাথে কথাবার্তা বলে সবগুলো মাছ মাত্র ১৫০ টাকায় কিনে নিয়েছিলাম। আমি ভাবতেও পারিনি এতগুলো মাছ তারা মাত্র ১৫০ টাকায় দিয়ে দিবে। তবে কি বলব এই মাছের স্বাদের কথা, যখন আমার বাসায় এই মাছের রেসিপি তৈরি করা হয়েছিল, তখন সবাই এই মাছের রেসিপি খেয়ে খুবই প্রশংসা করেছিল।

যাইহোক বন্যার পানিতে ছোট্ট এই খাল ভরাট হয়ে যতগুলো মাছ এসেছিল, প্রায় সবগুলো মাছই তারা ধরে বিক্রি করেছিল। এতে করে তাদের কিছুটা হলেও আয়ের ব্যবস্থা হয়েছিল। যা দেখে আমার কাছে খুব খুব ভালো লেগেছিল। তাই আমার ভালোলাগা অনুভূতি টুকু আপনাদের মাঝে শেয়ার করে নিলাম।

---

---

আশা করি আমার পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।

আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।