মহাস্থানগড়ে একদিন ||10% beneficiary for shy-fox||
আমার সমগ্র পোস্টের বিষয়বস্তু
আজ থেকে প্রায় বছর দুয়েক আগের কথা। তখন গ্রামের বাড়িতে অর্থাৎ গোবিন্দগঞ্জ এ ছিলাম। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন ভর্তি হয়েছিলাম কেবল। ক্লাস তখনও শুরু হয়নি। গ্রামের বাড়িতেই বন্ধু-বান্ধব এবং ছোট ভাইদের সঙ্গে আড্ডা, বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি এবং পিকনিক খাওয়া এসবই ছিল নিত্যদিনকার কার্যক্রম। অবসর সময় পেলে যা হয় আরকি। এরই ফাঁকে একদিন মহাস্থানগড় যাওয়ার প্ল্যান করলাম। সঙ্গে কোন বন্ধু কিংবা বড় ভাই ছিল না।যেই পরিকল্পনা, সেই কাজ। অর্থাৎ পরিকল্পনা করার পরদিনই ঘুরার জন্য বেরিয়ে পড়লাম।
এলাকার জুনিয়রদের সঙ্গে মহাস্থানগড় ঘুরতে যাওয়ার জন্য বের হলাম। পরদিন সকাল আটটায় আমরা চারজন বেরোলাম। আমার সঙ্গে ছিল সেতু, ইয়াসিন এবং সাগর। সবাই বেশ বন্ধুসুলভও বটে। প্রথমে অটোতে করে গ্রাম থেকে গোবিন্দগঞ্জে গেলাম। এরপর বাসে করে চলে গেলাম মহাস্থানগড়। যাত্রাপথে সবার সঙ্গে মোটামুটি ভালই হাসি ঠাট্টা করলাম। মহাস্থান গড় যাওয়ার পর প্রথমেই সাগরের পরিচিত এক চাচার বাড়িতে গেলাম। সেখানে যাওয়ার পর আমরা কিছুক্ষণ বিরতি নিয়ে খাওয়া-দাওয়া করলাম এবং অবসর নিলাম।
পরিশেষে মহাস্থানগড় ভ্রমণের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। মহাস্থানগড়ের ঐতিহ্য প্রায় সকলেরই জানা আছে। মহাস্থানগড় প্রাচীন বাংলার রাজধানী ছিল। তখন এর নাম ছিল পুণ্ড্রনগর বা পুন্ড্রবর্ধন। মহাস্থানগড় অনেকগুলো স্থানের জন্য বিখ্যাত। সেখানে রয়েছে বিখ্যাত একটি মজার, জাদুঘর, বেহুলার বাসরঘর থেকে শুরু করে আরো নানান ধরনের নিদর্শন। এরপর আমাদের ঘোরাঘুরি করার জন্য সাগরের মামা একটি অটো ঠিক করে দিল।ওই অটো রিজার্ভ নিয়ে প্রথমে আমরা চলে গেলাম মহাস্থানগড় জাদুঘর এ। সেখানে মহাস্থানগড়ের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সংগৃহীত রয়েছে। জাদুঘরের ভেতরে ছবি তোলার নিষেধাজ্ঞা থাকায় সেখানকার ছবি উঠাতে পারিনি। তা না হলে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সমূহ আপনাদের দেখাতে পারতাম। জাদুঘর থেকে বেরিয়ে চলে গেলাম মহাস্থানগড়ের বিখ্যাত শাহ সুলতান বখলির মাজার দেখার জন্য। সেখানে গিয়ে দেখি অনেক লোকসমাগম ঘটেছে। মাজারে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের লোকজন বিভিন্ন জিনিস মানত রাখে। এজন্যই প্রতি শুক্রবার করে এখানে ব্যাপক লোকসমাগম ঘটে। যদি এরকম মৃত ব্যক্তির নামে কোন কিছু মানত রাখা ঠিক নয়। যাদের ধর্মীয় দিক দিয়ে তেমন একটা ধারণা নেই,তারাই মূলত এখানে বেশি আসে। এরপর চলে গেলাম বেহুলা লক্ষিন্দরের বাসর ঘর দেখার জন্য। ওখনকার পরিবেশটা মোটামুটি ভালই ছিল।পড়ন্ত বিকেল বেলায় সেখানে সুন্দর সময় কাটালাম। সেখানে আমাদের মতই অনেক দর্শনার্থী ঘুরতে এসেছে। বেহুলা লক্ষিন্দরের বাসর ঘর পরিদর্শনের মাধ্যমে আমাদের মহাস্থানগড় ভ্রমণ পরিসমাপ্তি ঘটালাম।
এখন আমরা সন্ধ্যাবেলায় আমার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। রওনা দেওয়ার আগে মহাস্থানগড়ের বিখ্যাত একটি খাবার কটকটি কিনলাম। সেখানকার কটকটি খুব সুস্বাদু হয়। সব মিলে সুন্দর একটি দিন কাটিয়ে ছিলাম। এ পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এবং কাছের মানুষদের খেয়াল রাখবেন। শীতের শুভেচ্ছা জানানোর মাধ্যমে আমি আমার আজকের কনটেন্ট লেখার পরিসমাপ্তি ঘটালাম।
ধন্যবাদ সবাইকে।
@mahamuddipu
Photography | @mahamuddipu |
---|---|
Device | OPPO A12 |
Location | Link |
আমি মাহমুদ দিপু। আমি বাংলাদেশের বগুড়া জেলায় অবস্থান করছি।আমি পেশায় একজন ছাত্র। বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র হলেও লেখালেখি করতে আমার খুব ভালো লাগে। বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ানো এবং বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়া আমার সখ। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে অনেক ভালোবাসি।
আপনি অনেক সুন্দর ভাবে আপনার ঘোরাঘুরি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। এবং মহাস্থানগড় ঘোরার জন্য উৎসাহিত করলেন আমাকে। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনার মন্তব্য পড়ে আমার বেশ ভালো লাগলো।ধন্যবাদ আপনাকে।
মহস্তাননগর এখনো যাওয়া হয়নি। জায়গাটি দেখে মনে হচ্ছে অসম্ভব সুন্দর। আমার ইচ্ছা আছে এই জায়গাটি অনেক ঘুরাঘুরি করার। আপনি খুব সুন্দর বর্ণনার মাধ্যমে তুলে ধরেছেন ।যেটা পড়ে খুবই ভালো লাগলো আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
সুন্দর মন্তব্য করেছেন। এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
ভাইয়া খুব সুন্দর একটা সময় কাটিয়েছেন, মহস্থানগড় এ বন্ধুরা মিলে অনেক ঘুরাঘুরি করেছেন, আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ 💓💓💓💓
সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।