জেনারেল রাইটিং ✍️ অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণ ও প্রতিকার।

in আমার বাংলা ব্লগ7 months ago

১৭বৈশাখ , ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৩০এপ্রিল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

২২শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

গ্রীষ্মকাল ।



আসসালামু আলাইকুম,আমি মোঃআলী, আমার ইউজার নাম @litonali।আমি বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে আমার আজকের পোস্ট শুরু করছি।



শুভ রাত্রি ❤️ প্রতিদিনের মতো আজ আবার আপনাদের সামনে হাজির হয়ে গেলাম নতুন আরেকটি পোস্ট নিয়ে। আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব একটি জেনারেল রাইটিং। আর আজকের বিষয় হলো অতিরিক্ত গরম এর কারণ এবং প্রতিকার। বর্তমানে রেড এলার্ট জারি রয়েছে কুষ্টিয়া চুয়াডাঙ্গা যশোর ঝিনাইদাহ সহ বেশ কয়টা জেলায়। আজকে সারা বাংলাদেশের মধ্যে চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৪৩.৭ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। আমার চুয়াডাঙ্গার কলিকের সাথে মাঝে মাঝেই কথা হয়। তবে চুয়াডাঙ্গা কুষ্টিয়া সামান্য তারতম্য। যে গরমটা পড়ছে এই গরমে কিন্তু জন জীবন থেমে নেই। জীবিকা নির্বাহের জন্য সবাইকেই কাজ করতে হচ্ছে। মাঝে মাঝেই খবর আসছে হিট স্ট্রোকের কারণে অনেকেই ইন্তেকাল করছে। আজ আমার পাশের বিল্ডিংয়ে থাকে এক ভাই সে দুপুরবেলায় হিট স্ট্রোক কারণে ইন্তেকাল করেছে। পৃথিবীর আজ বড়ই উত্তপ্ত। এখন পৃথিবীর কি জন্য এত উত্তপ্ত হচ্ছে আর কি এর প্রতিকার আমাদেরই বা কি দোষ রয়েছে এর পিছনে। এগুলো খুঁজে বের করে উত্তপ্ত পৃথিবীকে আবারো ভালোভাবে মানুষের বসবাসযোগ্য করে তুলতে আমাদের কি কি করণীয় এগুলো করতে হবে।

আসলে এই যে গরমটা পরছে এটা কি সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য গজব?? না এটা আমাদের কর্মফল। কেননা সৃষ্টি করতে তো বলেই দিয়েছে মানুষ যা পায় সেটা তাদের দুহাতের কামাই। হয়তো আমরা এমন কিছু করেছি যার কারণে এই অতিরিক্ত তাপমাত্রা আমাদেরকে সহ্য করতে হচ্ছে। যদি বলি এটা সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকে আমাদের উপর গজব তাও কিন্তু ভুল হবেনা। কেননা পৃথিবীর দিকে তাকালে আজ অশান্ত মনে হয়। হাজারো নিপীড়িত মানুষের হাহাকার। যত দুর্বল মানুষ আছে তাদের উপর বিভিন্নভাবে অত্যাচার করছে সবল মানুষেরা। অথচ কথা ছিল জীবের দয়া করে পূর্ণ জোবারের মাধ্যমে সৃষ্টি কর্তার সন্তুষ্টি লাভ করা। আমরা আজ এর বিপরীতে অবস্থান নিয়েছি।

এখন আসেন বলি যে এই অতিরিক্ত গরম আমাদের জন্য গজব কিনা। হা আমি অবশ্যই বলব এটা আমাদের জন্য সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকে গজব। এবং পরীক্ষা। সেই সাথে আমাদেরকে বোঝানো হচ্ছে বা সময় দেয়া হচ্ছে ভালো হওয়ার জন্য। সৃষ্টিকর্তা মানুষকে ছেড়ে দেন কিন্তু ছাড় দেন না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার একটি হাদিসের মধ্যে বলেছেন মানুষ যদি তার সম্পদ থেকে যাকাত না দেয় তাহলে মানুষের উপর যে গজবটি অর্পিত হবে তা হল অতিরিক্ত খরা। যেটা আমরা এখন বর্তমানে উপভোগ করছি। এখন যাকাত কি এটা হয়তো আমরা সবাই জানি। নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে এবং সেই সম্পদ এক বছর স্থায়ী হলে সেই সম্পদের শতকরা আড়াই পারসেন্ট যাকাত দিতে হবে। বর্তমান সময়ে যাকাতের প্রচলনটা একদমই উঠে গেছে বললেই চলে। সৃষ্টিকর্তা মানুষকে ধন সম্পদ দিয়েছে তাদের পরীক্ষা করার জন্য। এবং তিনি বলে দিয়েছেন এই সম্পদ থেকে গরীবদেরকে দান করতে। এবং এক বছর শেষে হিসাব নিকাশ করে তাদের প্রাপ্য টা বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য। কেননা ধনীদের সম্পদের মধ্যে গরিবের হক রয়েছে। আর যখন ধনী ব্যক্তিগণ গরিবের হক সঠিক পন্থায় বন্টন না করবে তখনই মানুষের উপরে গজব নাজিল হবে। হতে পারে সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকে এটা আমাদের জন্য বড় একটি গজব। আর যাকাত না দেওয়ার কারণ হতে পারে এর প্রধান। আপনি একটু খোঁজখবর নিলে দেখতে পাবেন বর্তমানে ধনীদের মধ্যে শতকরা দু একজন তাদের সম্পদ হিসাব করে গরিবের হক টা দিচ্ছে। বাদবাকি সবাই যে যার মত গরিবের হক নিজের মনে করে ভক্ষণ করছে। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদিস দ্বারা আমরা এটাই বুঝতে পারি যে অতিরিক্ত করার কারণ হবে যাকাত না দেওয়া। এখন আমরা নির্দ্বিধায় বলতে পারি আমাদের উপর এই যে অতিরিক্ত তাপমাত্রাটা অর্পিত হচ্ছে এটা গরিবের হক নষ্ট করার কারণ।

এখন আসি দ্বিতীয় ব্যাখ্যায়। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করে সবুজ গাছপালা এবং জলাশয়। একটা গবেষণায় বিজ্ঞানীরা বলছেন যে পৃথিবী থেকে যে পরিমাণে পানি বাষ্প হয়ে উপরের দিকে উঠে যাচ্ছে তা থেকে ৪০ পার্সেন্ট পৃথিবীতে বৃষ্টি আকারে পড়ছে এবং ৬০% থেকে যাচ্ছে। তাহলে বোঝাই যাচ্ছে যে আস্তে আস্তে পানির স্তন নিচে নেমে যাবে এবং পৃথিবীটা মরুকরণের পথে চলে যাবে। আগে দেখতাম গ্রামে প্রায় প্রতিটা বাড়িতেই বড় বড় দিঘী থাকতো যেখানে মাছ চাষ এবং গোসল করা হতো। কিন্তু বর্তমানে এদিকে তাকালে খুবই নাজুক অবস্থা। এখন একটি গ্রামে একটি বড় পুকুর আছে কিনা এটাও সন্দেহ। ছোটবেলায় আমাদের গ্রামে অনেক বড় বড় পুকুর ছিল এখন তার একটি মাত্র রয়েছে বাদ বাকি সবই ভরাট করে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। আমাদের কুষ্টিয়া অঞ্চলে অতিরিক্ত তাপমাত্রা হওয়ার প্রধান কারণ হলো পদ্মা নদী শুকিয়ে যাওয়া। ইন্ডিয়া থেকে আসা আমাদের পদ্মা নদী এখন বর্তমানে মৃত। যেদিকে তাকাই শুধু বালি আর বালি। যে নদী ছিল একসময় ভয়াবহ বড় বড় ঢেউ এবং স্রোত নিয়ে। আর সেখানে আজ শুধুই বালি আর বালি। বিশেষজ্ঞরা বলছে এটাই যে এই অঞ্চলে অতিরিক্ত করা পরার কারণ পদ্মা নদী শুকিয়ে যাওয়া।

অতিরিক্ত খরা পড়ার অন্যতম এবং প্রধান কারণ হলো বনভূমি কেটে উজাড় করে। আগে দেখতাম গ্রামগঞ্জে বড় বড় বাঁশের ঝাড় বড় বড় মেহগুনীর বাগান সহ বিভিন্ন গাছপালা। কিন্তু বর্তমানে গ্রামের অবস্থা প্রায় শহরের মতোই হয়ে যাচ্ছে। রাস্তার দুপাশের বড় বড় গাছগুলো আর দেখা যায় না। প্রায় প্রতিটা গ্রামেই এক দুইটা বড় বড় বটগাছ থাকতো। এখন হয়তো একটা থানা ঘুরলে দু-একটা বড় বটগাছ খুঁজে পাওয়া যায়। মানুষ আগে গাছ লাগিয়ে বাগান করত আর এখন তার অন্যটা দেখা যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন অতিরিক্ত খড়া পড়ার কারণ সবুজ বনভূমি না থাকায়। আমরা কিন্তু প্রকৃতির উপরে অনেক বড় অত্যাচার করছে প্রতিটা সময়ে যে কারণে প্রকৃতির এমন বিরূপ আচরণ আমাদের উপর পড়ছে।

যেহেতু আমরা প্রকৃতির বিরূপ আচরণ সহ্য করছি তার ওপর অত্যাচার করার কারণে। এখন এই বিরূপ আচরণ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য আমাদের কি করনীয়। যদি ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বলি তাহলে গরিবের হক বুঝিয়ে দিতে হবে। অর্থাৎ সঠিক পন্থায় যাকাত আদায় করতে হবে ধনী ব্যক্তিদের। এবং দ্বিতীয় কারণ হলো জলাশয় ভরাট করা। এটা বন্ধ করতে হবে এবং পারলে কিছু জলাশয় রেখে দিতে হবে। এবং তৃতীয় কারণ হলো বনভূমি কমে যাওয়া। বনভূমি বাড়ানোর জন্য আমাদেরকে কতক্ষণ নিতে হবে। একটি গাছ কাটলে দুটি গাছ লাগানোর ব্যবস্থা রাখতে হবে। এক কথায় আমাদেরকে বেশি বেশি বৃক্ষ 🌲 রোপণের মাধ্যমে পরিবেশকে শীতল করতে হবে। আমরা সবাই যদি সবার জায়গা থেকে চেষ্টা করি বেশি বেশি গাছ লাগিয়ে পরিবেশ ভালো রাখে তাহলে দেখবেন এক সময় আবার আগের মত হয়ে গিয়েছে অল্প তাপমাত্রায় আমরা বসবাস করতে পারতে। যাইহোক আমার স্বল্প জ্ঞানে যতটুকুনি বুঝেছি ততটুকুনি আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করলাম আশা করছি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।


ডিভাইসঃ Redmi Note 5



break .png

Banner.png

|| [আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে]

standard_Discord_Zip.gif

>>>>>|| এখানে ক্লিক করেন ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Witness Banner 2.png


সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

ধন্যবাদ

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 7 months ago 

চুয়াডাঙ্গা জেলাতে সবচেয়ে বেশি গরম পড়ে প্রতিবছরই। আপনি আজকে অতিরিক্ত তাপমাত্রা কারণ এবং প্রতিকার নিয়ে খুবই চমৎকার লিখেছেন। তাপমাত্রা বাড়ার সবচেয়ে বড় কারণটি আপনি উল্লেখ করেছেন। সেটা হলো নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এটা হাদিস আপনি উল্লেখ করেছেন। আর আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি এটাই হলো এর প্রধান কারণ।

 7 months ago 

আমাদের উচিত তাপমাত্রা যেন আস্তে আস্তে কমাতে পারি এর জন্য করণীয় পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করা।
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 7 months ago 

গত কয়েকদিন যাবৎ আমাদের জেলা এবং আমাদের পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে তাপমাত্রার পরিমাণ অনেক বেশি। আর এই তাপমাত্রা বেশি হবে সব থেকে বড় কারণ হচ্ছে বৃক্ষ কমে যাওয়া। এই পরিস্থিতির থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমাদের সকলের উচিত বেশি পরিমাণে বৃক্ষরোপণ করা।

 7 months ago 

সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে এবং বেশি বেশি করে বৃক্ষ রোপনের মাধ্যমে পরিবেশ আবার শীতল করে তুলতে হবে। । ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য

 7 months ago 

তাপমাত্রা সব জায়গাতেই বেশি।এর থেকে মুক্তি পেতে আমাদের সচেতন হতে হবে।গরীবদের হক যেমন ঠিকঠাক আদায় করতে হবে।ঠিক তেমনি বেশী বেশী গাছ লাগাতে হবে।আর জলাশয় ভরাট করা যাবে না।কিছু কিছু পদক্ষেপ এখন থেকে নিলে হয়তো কিছুটা স্বস্তি মিলবে।

 7 months ago 

অবশ্যই গরিবের হক আদায় করতে হবে।
এর সাথে বেশি বেশি বৃক্ষরোপনের মাধ্যমে পরিবেশটা আবার সবুজ শ্যামলে ভরে তুলতে হবে।
ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য

 7 months ago 

অতিরিক্ত তাপমাত্রার রেকর্ডে চুয়াডাঙ্গা একেবারে শীর্ষে রয়েছে। এই গরমে সবাইকে সাবধানে থাকা উচিত। হিট স্ট্রোক থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকমের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ভাইয়া আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আশা করি এই পোস্ট পড়ে সবাই অনেক বেশি সচেতন হবে।

Coin Marketplace

STEEM 0.24
TRX 0.21
JST 0.036
BTC 98303.59
ETH 3438.02
USDT 1.00
SBD 3.35