দুরন্ত সেই শৈশবকাল।

in আমার বাংলা ব্লগ4 months ago
২৭মাঘ , ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
০৯ফেব্রুয়ারি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৯রজব ১৪৪৫ হিজরী
শুক্রবার।
শীতকাল।


আসসালামু আলাইকুম,আমি মোঃআলী, আমার ইউজার নাম @litonali।আমি বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে আমার আজকের পোস্ট শুরু করছি



ফেলে আসা দিনগুলো পিছু ডাকে আমাকে। স্মৃতিগুলো বার বার চোখে ভাসে আর জাগিয়ে তুলে নিজের ভিতর থাকা শৈশবটাকে। কেউ যদি আমাকে প্রশ্ন করে যে সবচেয়ে ভালো সময় কখন অতিবাহিত করেছেন। নির্দ্বিধায় বলে দিতে পারব আমার শৈশব। শুধু আমি না এক শ' য়ে 99 জন লোকই বলবে শৈশব কালে কাটিয়েছি সবথেকে ভালো সময়। তাইতো শৈশব কালে থাকা এখন কার বাচ্চাদেরকে দেখলেও নিজের মধ্যে হিংসে হয়। ছিল না কোন পিছুটান শুধু আনন্দঘন মুহূর্ত টাই উপভোগ করতাম। আসলে আমাদের জীবনে শৈশবকাল এতটাই গুরুত্বপূর্ণ এবং এতটাই স্মৃতিময় যে আমরা চাইলেও এটা কখনো ভুলে যেতে পারি না। তবে সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে আমাদেরকে ছেড়ে দিতে হয় শৈশব। আর শৈশবটা পেরোলেই আমাদের উপর চেপে বসে অনেক দায়িত্ব-কর্তব্য। দায়িত্ব কর্তব্যের বেড়াজালে কৈশোর টাও কিভাবে কেটে যায় আমরা বুঝতে পারি না। তবে সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে জীবনটা পরিবর্তন হলেও সেই ফেলে আসা শৈশবটাকে বারবারই স্মরণ করতে থাকে। মাঝে মাঝে নিজেকে এক অবুঝ বালকের কাতারে দাঁড়িয়ে দেখি যে না আমি এখন থেকে তখনই ভালো সুখে ছিলাম। কাদামাটি খরকুটো আর কাঠের এক টুকরো ব্যাট বলে যতটা খুশি ছিলাম এখন হয়তো ২, ৪ হাজার টাকা তেও এতটা খুশি থাকতে পারিনা। বৃষ্টি ভিজে গোসল করা আর স্কুল মাঠে ফুটবল খেলা । মা বাবার কাছে বকুনি খাওয়া সবগুলোই এখন খুব মিস করি। জীবনের এই পর্যায়ে এসে মনে হয় যদি আবার চলে যেতে পারতাম সেই শৈশবে তাহলে জীবনটাকে ভালোভাবে উপভোগ করতে পারতাম জীবনটাকে আবার রাঙাতাম নিজের মত করে। যাহোক আজ আমি আপনাদের মাঝে শৈশবের স্মৃতি তুলে ধরে কিছু লিখব এবং এই ফটোগ্রাফি গুলো বিভিন্ন জায়গা থেকে বাচ্চাদের খেলা অবস্থায় ফ্রেম বন্দি করা। তারা যেভাবে তাদের শৈশবটাকে রাঙিয়ে তুলছে একসময় আমিও এভাবেই তুলতাম তাইতো তাদের এই স্মৃতিগুলো দেখে আমারও ইচ্ছে করে আবার ফিরে যাই সেই দুরন্ত স্বপ্নের ভুবন শৈশবে।


🚴🚴

ছোটবেলায় আমরা সবাই কমবেশি দুষ্টু টাইপের ছিলাম। আমি তো খুব দুষ্টু ছিলাম সারাদিন এখানে ওখানে দুষ্টামি করতাম। স্কুল পালিয়ে খেলাধুলা আর নদীতে গিয়ে নৌকা চালানো আর নদীতে গোসল করা ছিল সবথেকে বড় নেশা। তাছাড়া লাটিম ঘোরানো গাছে গাছে উঠে পাখির বাসা দেখা পাখির ছানাকে বাড়িতে নিয়ে এসে খাঁচায় বন্দি করা উল্লেখযোগ্য। ছোটবেলা থেকেই সব থেকে বেশি ভালবাসতাম ফুটবল খেলাকে। তাইতো যেখানেই শুনতাম ফুটবল খেলা হচ্ছে সেখানে গিয়ে হয় দেখতাম সুযোগ থাকলে খেলায় নেমে পড়তাম। এই ছবিটি আজ থেকে প্রায় সাত-আট বছর আগে আমার একটি বাটন ফোন ছিল সেই ফোনের ক্যামেরা দিয়ে ফ্রেমবন্দি করা। এরা হচ্ছে আমার জুনিয়র ব্যাচ এক কথায় ছোট ভাই ভাসতেরা। তারা শৈশবে কেমন ছিল সেই স্মৃতিটা ধরে রাখতেই ছবিটি তুলেছিলাম। তবে কালের বিবর্তনে তারা আজ মোবাইল আসক্ত হয়ে পড়েছে কিন্তু সেই যে শৈশব সোনালী অতীত আমার মেমোরিতে এখনো ধরে রেখেছি।


🚴🚴

যেকোন একটা আয়োজন করলে আমরা যখন শৈশবকালে ছিলাম তখন হয়তো কতটা খুশি হতাম এখনকার পোলাপানদেরকে দেখলে বুঝতে পারি। বেশ কিছুদিন আগে আমরা একটি পিকনিকের আয়োজন করেছিলাম অনেক মানুষ মিলে। সেখানে আমার ছোট ভাই এবং বড় ভাইয়ের ছেলে ছিল তারা যে কতটা আনন্দ করছিল এদিক-ওদিক ঘুরে ঘুরে আমি দেখছিলাম আর ইচ্ছে করেছিলাম তাদের সাথে আমিও এরকম করি। তাদের সেই আনন্দঘন মুহূর্ত টাই ফ্রেমবন্দি করেছিলাম।


🚴🚴

বদলি হয়ে মিরপুর আসার পরে শুনেছি যে এখানে ভারতের বিশিষ্ট অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিকের বাড়ি রয়েছে। তো কাজের ফাঁকে বেশ কয়েকদিন আগে সেখানেই ঘুরতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে শুধু তার বাড়ির ধ্বংস অবশেষটাই দেখেছি। আমি হয়তো ভেবেছিলাম পুরাতন বাড়ি অনেক কিছু দেখতে পারবো তেমন কিছু হল না। কিন্তু বাড়ির ভাঙ্গা অংশে দেখলাম কিছু ছোট্ট ছোট্ট বালক মাটি দিয়ে খেলা করছে। এই খেলাটার নাম গপাখেলা। এই খেলা ছোটবেলায় আমিও খেলেছি আমার কাছে খুবই ভালো লাগতো। সেই সাথে মাটি দিয়ে খেলনার জন্য বিভিন্ন জিনিসপাতি বানিয়ে রোদে শুকায়ে আগুনে পুড়িয়ে কত আনন্দ করেছি। এদের খেলা দেখে একবারের জন্য আমার মনে হচ্ছিল এদের সাথে খেলায় বসে পড়ি। আচ্ছা ছবিগুলোতে কি আপনাদেরও আমার মত করে শৈশব ভেসে উঠছে না??


🚴🚴

উপরে দুটি ফটো দেখতে পাচ্ছেন একটা ফটোতে একটি ছেলে একটি গাড়ির টায়ার নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। সেটাকে গাড়ি মনে করে চালাতে থাকে। আমিও কিন্তু বন্ধুদের সাথে আমার শৈশবে এমনটি করেছি। আরেকটি ফটোতে দেখতে পাচ্ছেন একটি মহিষের গাড়িতে কয়েকজন ছেলে মহিষের মতো অঙ্গভঙ্গিতে গাড়ি চালানোর চেষ্টা করছে। আমার কিন্তু এখনো ইচ্ছে করে ঘুড়ি বানাই আর ঘুড়ি বানিয়ে আকাশে উড়িয়ে মতো করে নিজের মনটাকে উড়িয়ে দিই। কত যে শৈশবে মজা করেছি নদীতে মাছ ধরেছি গোসল করেছি আর নৌকা বাইছি। এখনো নদী আছে সেই নদীতে নৌকা আছে পানি আছে কিন্তু আমাদের কাছে হয়তো সেই সময়টা নেই। কি করে আবার শৈশবে ফিরে যেতে পারি আসলে এটা কোনভাবেই সম্ভব নয়। তবে বর্তমান সময়ের যে অবস্থা বর্তমান শৈশব হচ্ছে মোবাইল কেন্দ্রিক এরা মোবাইলেই সব ধরনের বিনোদন করে থাকে। তবে ফিজিক্যালি যে বিনোদন গুলো আমরা পেয়েছি এখন আর সেগুলো তেমন একটা দেখা মেলে না। যাহোক কিছু ছবিকে কেন্দ্র করে শৈশবটাকে আবার ফিরে দেখলাম আশা করছি আপনাদের কাছে ও পোস্টটি ভালো লাগবে।


লোকেশন:


ডিভাইসঃ Redmi Note 5



standard_Discord_Zip.gif

>>>>>|| এখানে ক্লিক করেন ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Witness Banner 2.png


সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

ধন্যবাদ

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 4 months ago 

প্রতিটা মানুষের শৈশবকাল ছিল সবচেয়ে জীবনের অন্যতম সময়। শৈশবকালে স্মৃতিগুলো ভোলা অনেক কঠিন। শৈশব জীবনটাই ছিল দুষ্টু ময় জীবন। প্রত্যেকটা মানুষের জীবন বিশ্লেষণ করলে শৈশব জীবন হলো তাদের অন্যতম জীবন। আপনার লেখাগুলো পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 4 months ago 

একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া সবার জীবন বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে শৈশবের সময়টা ছিল স্বর্ণের মলানো।
ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।

 4 months ago 

আসলে ভাইয়া শুধু আপনি কেন আমার মনে হয় সবারই জীবনে শৈশব ছিল অনেক আনন্দের। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে সত্যি কিছু সময়ের জন্য শৈশবে ফিরে গিয়েছিলাম। তবে আমাদের মতো শৈশব এখন খুঁজে পাওয়া মুশকিল। এখন কার বাচ্চাদের শৈশব মোবাইলে চলে। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 4 months ago 

সেটাই প্রযুক্তির কল্যাণে এখনকার বাচ্চাদের শৈশবকাল হারিয়ে গিয়েছে।
আমাদের শৈশবকালটা ছিল সত্যিই অসাধারণ।
ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।

 4 months ago 

আমি আপনার সাথে একমত ভাইয়া। ১০০ জনের মধ্যে ৯৯ জন মানুষই বলবে শৈশবে ফেলে আসার স্মৃতি গুলোর কথা। কারণ এই সময়টি এমন একটি সময় পেরিয়ে এসেছি আমরা। যা চাইলেও কখনো কেউ ভুলতে পারবো না। বা ফিরে যেতে পারবো না। আমিও কোথাও গেলে ছোট বাচ্চাদের খেলা দেখলে আফসোস করি। কেন বড় হলাম ছেলেবেলায় তো ভালো ছিলাম। তখন ছিল না কোন দায় দায়িত্ব কোন আশা আকাঙ্ক্ষা শুধু দুষ্টুমি খেলা আর পড়ালেখা।আপনি ছোটবেলার কথা মনে করে এ পোস্টটিতে কিছু ছবি শেয়ার করেছেন। ছবিগুলো বেশ লাগছিল। বিশেষ করে আপনার ভাই ভাতিজা তাদের স্মৃতিগুলো মোবাইলে বন্দি করে রেখেছেন। এরপর নায়ক রঞ্জিত মল্লিকের বাড়ি দেখতে গিয়ে ছোট্ট ছোট্ট বালক মাটি দিয়ে গপাখেলা করছে। এই খেলাটার নাম এই প্রথম শুনলাম।ধন্যবাদ ভাই আপনাকে। শৈশবের দুরন্ত কিছু মুহূর্ত ও সাথে ছোট বাচ্চাদের খেলার কিছু দৃশ্যর ছবি সুন্দর করে তুলে আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন।

Posted using SteemPro Mobile

 4 months ago 

আসলে শৈশবকালটা কখনো ভোলা যায় না।
যদিও ফেরত পাব না তবুও বারবার ফিরে যেতে ইচ্ছে করে সেই দুরন্ত পনায়।
ধন্যবাদ আপনাকে গুছিয়ে মন্তব্য করার জন্য।

 4 months ago 

প্রতিটি মানুষের শৈশব কাল বড়ই মধুর।আপনার শেয়ার করা ফটোগ্রাফি গুলো দেখে শৈশবের কথা মনে পরে গেলো।কতোই না আনন্দমুখর ছিল সেই শৈশবের সময়।তবে মেয়েদের চাইতে ছেলেরা ছিল ভীষণ দুরন্ত।এখনকার বাচ্চারা এতো আনন্দ পায়নি যা আমরা পেয়েছি।খুব ভালো লাগলো আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে সুন্দর অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।

 4 months ago 

আপনার মত আমিও এদের এমন খেলাধুলা করতে দেখে কিছু সময়ের জন্য মনে হচ্ছিল শৈশবে হারিয়ে গিয়েছে।
তাইতো মধুর এই দৃশ্য গুলো ফ্রেমবন্দি করে রেখে পোস্ট আকারে আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম।

 4 months ago 

আমাদের জীবনে সবচেয়ে আনন্দের সময় ছিলো শৈশব কাল। আপনার পোস্টি পড়ে কিছুক্ষণের জন্য মনে‌ হয় শৈশবের জীবনে চলে গিয়েছিলাম। আপনি একদম ঠিক বলেছেন কাদামাটি খরকুটো আর কাঠের এক টুকরো ব্যাট বলে যতটা খুশি ছিলাম এখন হয়তো ২, ৪ হাজার টাকা তেও এতটা খুশি থাকতে পারিনা। দিন দিন যত বড় হচ্ছি ততই যেনো দায়িত্ব বেড়ে চলেছে। ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 4 months ago 

আসলে এমন ভাবে দায়িত্বের বেড়াজালে আমাদের শৈশব কৈশোর পার হয়েছে তবুও ওই সময়গুলো এখনো বারবার পিছুটানে।
ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.12
JST 0.027
BTC 65022.21
ETH 3560.14
USDT 1.00
SBD 2.37