খেজুরের রস খাওয়া,সরিষা ক্ষেতের ফটোগ্রাফি এবং সকালের সময়।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

২০ পৌষ , ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

০৪জানুয়ারী , ২০২২ খ্রিস্টাব্দ
১১জমাদিউল সানি, , ১৪৪৪ হিজরী
বুধবার।
শীতকাল।


আসসালামু আলাইকুম,আমি মোঃআলী, আমার ইউজার নাম @litonali।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] এর সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনজানিয়ে আমার আজকের পোস্ট শুরু করছি


1672829155301.jpg

আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সকলের সুস্বাস্থ্য এবং মঙ্গল কামনা করছি। প্রচুর ঠান্ডা তার সাথে খুব করে বইছে শৈত প্রবাহ। কর্মব্যস্ত নগরী মাঠঘাট শূন্যহহীন হয়ে গিয়েছে। কারণ যে পরিমাণ বাতাস পদ্মার বুক থেকে ধেয়ে আসছে আর যে পরিমাণ ঠান্ডা এতে আর মানুষের বাইরে বেরোনোর মত কোন উপায় নেই। এরকম বৈরী আবহাওয়া আর কয়দিন চলবে জানিনা তবে এরকম চলতে থাকলে নিম্ন মধ্যবিত্তদের আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে যাবে। একেতো শীতের কষ্ট দূর হতো যদি পেটে খাবার না থাকে তাহলে কষ্টের সীমা থাকবে না। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্র কানাডা এবং ইংল্যান্ডের কিছু এলাকা জুড়ে এত পরিমাণ ঠান্ডা পড়ছে যে কেউ ঘর থেকে বের হতে পারছে না। এমনকি তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস যেগুলা ফিরিয়ে রাখার প্রয়োজন সেগুলো তারা জানালা দিয়ে অথবা দরজা দিয়ে বাইরে রাখছে। তা থেকেই জমে যাচ্ছে ফ্রিজে রাখার কোন প্রয়োজনই পড়ছে না। হতে পারে মানুষের পরীক্ষার জন্য এটি এক ধরনের গজব সৃষ্টি কর্তার পক্ষ থেকে। সবাই সুস্থ থাকবেন সতর্কতা অবলম্বন করবেন ।বিশেষ করে বাচ্চাদেরকে বেশি সাবধানে রাখতে হবে। যাহোক আজ সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে গ্রামের মেঠো পথ ধরে একটু মাঠের ভেতর গিয়েছিলাম ।সেখানে গিয়ে কিছু এলোমেলো ফটোগ্রাফি করেছি সেগুলো এবং সকালের ভ্রমণ কাহিনী আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই।


IMG_20230104_163102.jpg

IMG_20230104_163026.jpg

IMG_20230104_162945.jpg

প্রায় প্রতিদিনই খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে সকালের সালাত আদায় করে একটু হাটাহাটি করা হয়। সেই মতো আজও সকালে ঘুম থেকে উঠে খবরের সালাত আদায় করে দুজন হাঁটতে বের হয়েছিলাম খেজুরের রস খাব বলে। গ্রামের মেঠো পথ ধরে মাঠ পাড়ি দিয়ে যেতে হবে গাছির বাড়িতে। তারপরে খেতে হবে রস। শীতের সময় কনকনে শীতের মাঝে খেজুরের রস খাওয়ার অন্যরকম একটি মজা এবং অনুভূতি সবসময়ই থেকে যায়। আজ কদিন ধরে সব থেকে বেশি পড়ছে এজন্যই খেজুর রস খাওয়ার জন্য বের হয়েছি।


IMG_20230104_163804.jpg

IMG_20230104_163154.jpg

IMG_20230104_163127.jpg

খেজুরের রস খাওয়ার জন্য গাছির বাড়ি গিয়ে দেখি তিনি এখনো ঘুম থেকে ওঠেননি। নাদের গাছি বলে ডাক দিতেই তিনি বের হয়ে আসেন বাড়ি থেকে। আমাদেরকে দেখেই চিনতে পেরেছে যে আমরা রস খেতে এসেছি। আমাদেরকে দেখেই তিনি বলতে শুরু করলেন যে আজ এখনো তো রস পারতে যাইনি যে ঠান্ডা পড়ছে এত ঠান্ডার মধ্যে ঘর থেকে বের হতেই পারছিলাম না। এদিকে আমার অনেক গুলা গাছের রস পাড়তে হবে সেই রস জ্বালাতে হবে এবং সেখান থেকে গুড় এবং পাটারি প্রস্তুত করতে হবে। আমরা তখন বললাম যে অনেক দূর থেকে আসছি মাঠ পাড়ি দিয়ে আমাদের তো খেজুর রস খেতেই হবে। এই কথা বলতেই তিনি তার বাড়ির পাশে থাকা একটি গাছ থেকে এক হাঁড়ি রস বেড়ে আনন্দ এবং সেটি আমাদেরকে দিল খাওয়ার জন্য।


IMG_20230104_163923.jpg

IMG_20230104_163859.jpg

IMG_20230104_163830.jpg

তবে মজার বিষয় হচ্ছে আজকে রস খেয়েছি একদম ফ্রি ফ্রি তিনি আমাদের কাছ থেকে কোন টাকা নেননি। টাকা নাই আমার একটাই কারণ হচ্ছে আমরা এতদূর পাড়ি দিয়ে এসেছি এর জন্য। তবে আমরা অনেকবার বললাম টাকা নেওয়ার জন্য। তখন তিনি আমাদের পায়ের অবস্থা থেকে বলতেছে মাঠ পাড়ি দিয়ে ঘন কুয়াশার মাছ দিয়ে এসেছেন আপনারা রস খেতে আপনাদের কাছ থেকে কি করে এখন আমি টাকা নিতে পারি। যাও গিয়েছিল রস খাওয়ার গল্প তবে রস খাওয়ার পরে প্রচন্ড শীতে কাঁপছিলাম।


IMG_20230104_164148.jpg

IMG_20230104_164128.jpg

IMG_20230104_164106.jpg

IMG_20230104_164008.jpg

রস খেয়ে বাড়িতে ফেরার সময় একটু ঘন কুয়াশা কেটে হালকা হয়। এ সময় মাঠের মধ্যে এসে কিছু ফটোগ্রাফি করি। সেই ফটোগ্রাফি গুলাই উপর থেকে নিচ পর্যন্ত আপনাদেরকে দেখানোর চেষ্টা করেছি। মাঠের মধ্যে মানুষ নেই বললেই চলে। যেখানে অন্যান্য দিন দেখেছি কর্মব্যস্ততায় মাঠ ভর্তি মানুষ। মাঠ ভর্তি শুধু সরিষা খেয়ে সবুজ আভা এবং সুঘ্রাণে ভরপুর। সকাল সকাল গিয়ে যে এত সুন্দর পরিবেশ উপভোগ করব আসলে বুঝতেই পারেনি।


IMG_20230104_164329.jpg

IMG_20230104_164306.jpg

IMG_20230104_164247.jpg

IMG_20230104_164231.jpg

IMG_20230104_164215.jpg

IMG_20230104_164148.jpg

এখন সরিষার সময় আশপাশ এলাকা সেরেছে এক নতুন রূপে আপনি যেদিকেই যাবেন যেদিকেই চোখ মেলে দেখতে চাইবেন সেদিকেই মিলবে মাঠ ভর্তি সরিষা ফুল এর সমারোহ এবং মৌমাছির ভন ভন আওয়াজ। তাছাড়া শিশিরবিন্দু জমে থাকা ফুলগুলো দেখতে সবথেকে বেশি ভালো লাগছিল এজন্য আর লোভ সামলাতে পারলাম না এজন্যই ক্যামেরাবন্দি করে ফেলি। এগুলোর দিকে একটু ভালো করে লক্ষ্য করলেই আপনারা এ বিষয়গুলো দেখতে পাবেন।



লোকেশন:

ডিভাইসঃ Redmi Note 5



standard_Discord_Zip.gif

>>>>>|| এখানে ক্লিক করেন ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Witness Banner 2.png


সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

ধন্যবাদ

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 2 years ago 

সকালে শিশির ভেজা সরিষা ফুলের সৌন্দর্য দেখে সত্যিই মুগ্ধ হলাম। এত সুন্দর লাগছে যেন শীতের আগমনে প্রকৃতির সৌন্দর্য বেড়ে গিয়েছে। দারুন ছিল আপনার করা ফটোগ্রাফি গুলো।

 2 years ago 

আসলে ফটোগ্রাফি করার জন্য এই জায়গা পর্যন্ত পৌঁছানোর আগ মুহূর্তে আমি নিজেও জানতাম না যে এত সুন্দর মুহূর্ত এবং এত সুন্দর দৃশ্য আমার জন্য অপেক্ষা করছে।

 2 years ago 

এই কনকনে শীতে কুয়াশার মধ্যে আপনারা মাঠ পাড়ি দিয়ে গাছির বাড়িতে গিয়েছেন খেজুরের রস খেতে। আর তিনি তা আপনাদেরকে ফ্রিতে খাইয়ে দিলেন যা আসলে সত্যিই খুব ভালো লাগছিল। আসলে তার মধ্যে মানবতা ছিল বলেই হয়তো বা আপনাদের অবস্থা দেখে তিনি টাকা নিতে চাননি, কষ্ট করে এসেছেন ভেবে।তবে ফটোগ্রাফি গুলো বেশি দারুন লেগেছে। সরিষা খেতে পুরো মাঠ ভরে আছে দেখলাম। ভালো লাগলো আপনার আজকের ব্লগটি।

 2 years ago 

আসলে এরকম মানবিক মানুষ এবং অতিথি আপ্যায়নের মন মানসিকতা এখনো পৃথিবীতে কিছু মানুষের মধ্যে বিদ্যমান যার কারণে পৃথিবীতে এখনও এত সুন্দর ধন্যবাদ আপনাকে।।

 2 years ago 

প্রচুর শীতের মধ্যে মাঠ পাড়ি দিয়ে খেজুরের রস খেতে গিয়েছে শুনে ভালো লেগেছে। আমি এরকম তরতাজা রস কখনো খাইনি। কুয়াশার মধ্যে সরিষা ফুলের ফটোগ্রাফি গুলো আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর সরিষা ফুলের ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

আসলে এমন মিষ্টি সুগন্ধ এবং অরিজিনাল তেতুলের রস খাওয়ার মজা এবং অনুভূতি অন্যরকম।। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে সাথে থাকার জন্য।।

 2 years ago 

ঠিক বলছেন এ বছর কিন্তু বর্ষাকালে একদম বৃষ্টি হয় নাই সেই তুলনায় কিন্তু শীতের পরিমাণ অনেক বেশি দেখা যাচ্ছে।কি জানি এই শীতের পরিমাণ আর কতদিন থাকে বা কি পরিমাণে শীত আরো হয় তার কোনো ধারণা নেই।আপনি কুয়াশাচ্ছন্ন বেশ সুন্দর সরিষার ফুলের ফটোগ্রাফি নিয়েছেন।সরিষার ফুল গুলো আমার দেখতে বেশ ভালো লাগে কারণ আমাদের এদিকে সরিষার ফুল নেই তাই।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সরিষার ফুল গুলো শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

নাইনের বইতে পড়েছিলাম প্রমথ চৌধুরীর লেখা একটি কথা।

উনো বর্ষায় দুনো শীত।

এর মানে হচ্ছে যে বছর বৃষ্টি কম হয় সেই বছর শীত বেশি পরে এবং যে বছর বৃষ্টি বেশি হয় সেই বছর শীত কম পড়ে এ বছর আমরা ঠিক এমনটাই লক্ষ্য করতে পারছি।।

 2 years ago 

আসলে আমাদের এদিকে খেজুরের রস পাওয়া যায় না । যার কারণ হচ্ছে আমাদের এদিকে কোন খেজুর গাছ নেই। এ কারণে এখন পর্যন্ত কাঁচা রস খাওয়া হলো না। তবে আগামী সপ্তাহে কাঁচা রস আনবো। কাঁচা রস খাওয়ার অনুভূতি সত্যিই অসাধারণ। আপনার সরিষ ফুলের ফটোগ্রাফি দুর্দান্ত হয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

ইস রে ভাই আপনাদের দিকে খেজুরের রস পাওয়া যায় না জানতে পেরে খুবই কষ্ট পেলাম।। আপনাকে দাওয়াত রইলো চলে আসুন আমাদের কুষ্টিয়ায় খেজুরের রস খাওয়ার জন্য শীত থাকতে থাকতেই।।

 2 years ago 

আসলে যত শীত হোক না কেন খেজুর রস খাওয়ার জন্য অনেক দূর পথ পাড়ি দেয়া সম্ভব হয়। কি আর করা যাবে ভাই সত্য প্রবাহের কারণে যেন শীতের পরিমাণটা আরো বৃদ্ধি পেয়ে গিয়েছে। এটা জেনে ভালো লাগলো যে আজকে আপনি ফ্রিতে খেজুরের রস খেতে পেরেছেন।

 2 years ago 

ফ্রিতে খেজুর রস খাওয়ার কারণ একটাই সেটা হচ্ছে এত কষ্টের শীতের মধ্যে মাঠ পাড়ি দিয়ে গিয়েছি গাছির বাড়িতে। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।।

 2 years ago 

এত ঠান্ডা আমি কখনো দেখিনি। আমার মনে হয় এটা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ঠান্ডা পড়েছে আজকে। কে জানে? সামনে কি আছে। যাই হোক নাদের গাইছা থেকে অবশেষে খেজুর রস খেয়েই ছাড়লেন।

 2 years ago 

আমিও আমার এই ছোট্ট বয়সে কখনো এত বেশি ঠান্ডা দেখিনি মনে হচ্ছে এ বছরই সবথেকে বেশি ঠান্ডা পরছে।। সামনের দিন কি হবে সৃষ্টিকর্তাই ভালো জানেন তবে খেজুরের রস খেতে কিন্তু খুবই মজা লাগে ঠান্ডার মধ্যে

 2 years ago 

খেজুরের রস খাওয়ার মুহূর্তগুলো সত্যিই অসাধারণ। আপনি রস খেতে গিয়ে সরিষা ফুলের অপরূপ সৌন্দর্যময় দৃশ্যগুলো ফটোগ্রাফি করেছেন, দেখে খুবই ভালো লাগলো।

 2 years ago 

আসলে রস খেতে গিয়ে সরিষা ফুলের সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়েছি তাই আর কি করার ক্যামেরাবন্দি করে আপনাদের মাঝে তুলে ধরলাম

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 62311.78
ETH 2418.00
USDT 1.00
SBD 2.67