সত্য বলার সৎ সাহস।
১৩ ভাদ্র , ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আসসালামু আলাইকুম,আমি মোঃআলী, আমার ইউজার নাম @litonali।আমি বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে আমার আজকের পোস্ট শুরু করছি।
শিশুকাল থেকেই বিভিন্ন পুস্তকের মাধ্যমে পড়ানো হয় সদা সত্য কথা বলিব মিথ্যা বলা মহাপাপ। তাছাড়া পৃথিবীর সমস্ত ধর্মগ্রন্থ তেই মিথ্যা বলা মহাপাপ। পাপকে আমরা সবাই ঘৃণা করি। বাল্যকাল থেকে শুরু করে লেখাপড়া শেষ অব্দি পর্যন্ত সত্য মিথ্যা কথাগুলো শুধুমাত্র বর্তমান সময়ে পুস্তকেই শোভা পেয়েছে। আজ আমাদের সমাজে ছোটবেলায় পড়ে আসা সেই কথাগুলোর বাস্তবতা খুঁজে পেলাম না। মানুষের দিকে এবং পরিবেশের দিকে তাকালে মনে হয় মিথ্যার অতল গহরে সত্য তলিয়ে গিয়েছে। বেশ কিছুদিন হল আমি অনেক পুরাতন একটি নাটক বহুব্রীহি এই নাটকের কিছু বাস্তব কাটিং উদাহরণ সমাজের সাথে মিলানো চিত্রগুলো দেখছি। যেগুলো আসলেই আমাদেরকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এবং বিবেককে ত্বরান্বিত করে। বর্তমান সময়ে আমাদের সমাজে তাকালে শতকরা দু একজন হয়তো বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন আমি সত্যবাদী সত্য কথা বলি। কিন্তু অধিকাংশ লোক নিজের আধিপত্য বিস্তার করা এবং নিজের স্বার্থের জন্য মিথ্যাকে সত্য এবং সত্যকে মিথ্যায় রূপান্তরিত করছে। যখনই আমাদের স্বার্থের উপর আঘাত আসে তখন আমরা সত্যটাকে ভুলে যাই। সত্য বলার সৎ সাহসটা আমার ভেতর থেকে দূর হয়ে যায়। বুকের মধ্যে কম্পনী দিয়ে ওঠে নিজের স্বার্থের কথা ভেবে। আর তখন গলা ফাটিয়ে মিথ্যাটাকেই সত্য বানানোর চেষ্টায় ব্যাকুল হয়ে পড়ি।
বহুব্রীহি নাটকে এমন একটা চরিত্র ছিল যেখানে বলা হয়েছে যে আমরা বছরে একটা দিন ১৬ই ডিসেম্বর সত্য দিবস হিসেবে পালন করব। তাছাড়া এই দিনটি আমাদের বিজয় দিবস। এই দিনটিতে আমরা কেউই মিথ্যা কথা বলবো না। আসলে এমন একটি দিন যদি ধার্য করা হতো যে তিনটিতে পৃথিবীর কোন মানুষ মিথ্যা কথা বলবে না। পরস্পর পরস্পরের সাথে সত্য কথার মাধ্যমে সব কাজকর্মগুলো সম্পাদন করবে। তাহলে বোঝা যেত যে সত্য কতটা সুন্দর। এবং সত্য সাথে নিয়ে চলাফেরা করলে মানসিক দিক দিয়ে কতটা প্রশান্তির অনুভব করা যায়। আমরা অন্যকে বিপদে ফেলতে নিজেকে রক্ষা করার জন্য মিথ্যাটাকে সত্য আর সত্যটাকে মিথ্যা বানিয়ে ফেল। সেটা সর্বনিম্ন পর্যায় থেকে রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পর্যায়ে পর্যন্ত চলছে। বিশেষ করে পৃথিবীর বেশিরভাগ রাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ক্ষমতার টিকিয়ে রাখার জন্য সব ধরনের সত্যকে বাজেয়াপ্ত করে মিথ্যা গুলো প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। যখন একটি সর্বোচ্চ পর্যায়ে মিথ্যাটা প্রতিষ্ঠিত হতে থাকে তখন নিম্ন পর্যায়ে অটোমেটিক্যালি সত্যটা উঠে মিথ্যাটা প্রতিষ্ঠিত হতে থাকে।
বিশেষ করে বর্তমান সময়ে বিচার ব্যবস্থা সব থেকে নাজুক অবস্থা। যত সত্য মিথ্যার পার্থক্য এখানে দিয়ে গড়ে ওঠে। একজন হত্যা করে সাড়া পাচ্ছে আর একজন চুরি করে ফাঁসির আসামি হয়ে যাচ্ছে। আর আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা বর্তমানে সবথেকে বড় প্রতারক। যদিও সরকারিভাবে এটাকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা হচ্ছে তারপরেও বারবার ব্যর্থ। কেননা এই চক্রের সাথে সরকারি বড় বড় আমলারা যুক্ত। যে আমরা বর্তমান সময়ে বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে দেখতে পাচ্ছি। ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত লাভের কারণে পণ্যে ভেজাল মিশ্রণ করছে। আসল পণ্য রেখে নিজেরাই নকল পণ্য প্রস্তুত করে ভালো পণ্যের লোগো লাগিয়ে মার্কেটজাত করতে। যেখানে সাধারণ মানুষ এবং ক্রেতারা প্রতারিত হচ্ছেন। এখন যেকোনো একটা কাজ করতে গেলে বা কোন জিনিসপত্র কিনতে গেলে মাথার ভিতরে প্রথমেই ভেসে ওঠে যে আমি কি প্রতারিত হচ্ছি। যত নামিদামি ব্যান্ডের পণ্য হোক না কেন মনে হয় এ যেন নকলে ভরপুর। কেননা আমরা এটাতেই অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি বর্তমান সময়ে প্রতারিত হতে হতে এখন ভালো পণ্যগুলোও মনে হয় নকল।
পৃথিবীর সব ধর্মগ্রন্থেই কিন্তু বর্ণনা করা হয়েছে ঘুষ গ্রহণ করা ঘুষ প্রদান করা এবং এর সাক্ষ্য প্রদান করা তিনটাই গুরুতর অপরাধ। অথচ আপনি দেখবেন প্রায় প্রতিটা সেক্টরে ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে কাজ হচ্ছে। একজন স্কুল শিক্ষক মানুষ গড়ার কারিগর সে রিটাইট করিতে আজ পাঁচ বছর হলো অথচ তার পেনশনের টাকাটা পেতে থাকে চরমভাবে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে মানুষকে টাকা পয়সা দিয়ে তারপরে তার প্রাপ্য টাকাটা উদ্ধার করতে হচ্ছে। আসলে এ কেমন বিচার বা এ কেমন সমাজ ব্যবস্থা যেখানে এত ঘৃণিত কাজ হতে পারে। আজ আমাদের সমাজ অন্যায় এবং অফ যারে ভরে গিয়েছে এর একটি কারণ আমরা সত্য থেকে দূরে সরে গিয়েছে। আমরা সত্য দিয়ে কোনটাই বেকার বিশ্লেষণ করে দেখি না নিজেকে বাঁচানোর জন্য বা উঁচিয়ে ধরার জন্য মিথ্যাটা গলা ফাটিয়ে বলতে থাকি।
এজন্য ইসলাম ধর্মে বলা হয়েছে মানুষের বিবেকের বিচার করা হবে শেষ বিচারের দিনে। কেননা বিবেক দিয়ে আমরা যে কাজগুলো করছি যে কথাগুলো বলছি সেটা কি আদৌ ঠিক। আপনি যতই গলা ফাটিয়ে মিথ্যা বলার চেষ্টা করেন না কেন সত্য এক সময় প্রকাশ পাবে। কেননা সত্যকে কখনো চেপে রাখা সম্ভব নয়। এজন্য আসুন আমরা নিজেদের মধ্যে সৎ সাহসটা গড়ে তুলি সত্য বলার সৎ সাহস সবসময় বুকের মধ্যে রাখে। আর এমন ভাবে নিজেকে প্রস্তুত করি যেন সত্যটাই বলার সৎ সাহস সবসময় মনের মধ্যে জেগে ওঠে। সত্য বলার সৎ সাহস এবং ভবিষ্যতে ভালো মানুষ হয়ে বেঁচে থাকতে হলে এখানে পারিবারিক শিক্ষাটা সব থেকে বেশি প্রভাব ফেলবে। আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ তাই আসুন আমাদের সন্তানদেরকে আমরা পারিবারিক শিক্ষার মাধ্যমে এমনভাবে গড়ে তুলে যেন সত্যটাকে সত্য এবং মিথ্যাটাকে মিথ্যা বলার সাহস বুকের মধ্যে সবসময় থাকে। বর্তমান সমাজের দিকে তাকালে আপনারা অনেক কিছুই দেখতে পাবেন যে মিথ্যা কিভাবে লাঞ্চিত হয়। আর সূর্যের আলোর মতো সত্যটা কিভাবে রক্তিম আভায় আলোকিত করে পুরো পৃথিবীটাকে। যাই হোক এরই মধ্যে দিয়ে আমার আজকের সংক্ষিপ্ত এই জেনারেল রাইটিং বিশেষ করছে আশা করছি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
ডিভাইসঃ Redmi Note 5
|| [আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে]
VOTE @bangla.witness as witness OR >>>>>|| এখানে ক্লিক করেন ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<
সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
ধন্যবাদ
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
মিথ্যা হলো সকল পাপের মা। মিথ্যা থেকেই জন্ম হয় সকল পাপের। সত্য কথা বলার দিবস ব্যাপার টা ভালো লেগেছে আমার কাছে। তবে এইরকম দিধ ধার্য করে সত্য কথা বলার দিবস পালন করা আর ছেড়া চুলে খোপা বাঁধা একই কথা। কোনটাই কোন কাজে আসবে না। যদি এসব কেউ পরিবর্তন করতে পারে সেটা মানুষের বিবেক।
একদম ঠিক বলেছেন যদি আমাদের মাঝে পরিবর্তন না আনতে পারি তাহলে দিবস বা রজনী পালন করে কোনোটাতেই কোন কল্যান আসবে না।