কুষ্টিয়া মিরপুরের ঐতিহ্যবাহী হাটবার। (১৯৪৮-২০২৩)

in আমার বাংলা ব্লগ10 months ago

২৩আশ্বিন , ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

১৯অক্টোবর ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
২২রবিউল আউয়াল ১৪৪৫ হিজরী
মঙ্গলবার।
শরৎকাল।


আসসালামু আলাইকুম,আমি মোঃআলী, আমার ইউজার নাম @litonali।আমি বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে আমার আজকের পোস্ট শুরু করছি


1696940017522.jpg

চাকরি করার সুবাদে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জেলা ভ্রমণ করতে হয়। যদিও জার্নি করতে একটু কষ্ট হয় তারপরেও মেনে নিতে হয়। তবে এই এক বছরে বিভিন্ন জেলা উপজেলা ঘুরে বিভিন্ন রকম অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। ভ্রমণ করতে এমনিতেই আমার ভালো লাগে। তাছাড়া এখন বিভিন্ন জায়গা ভ্রমণ করে সেখানকার ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতেও পারছি। আজ তেমনি একটি ঐতিহ্যবাহী বাজারের কথা এবং কিছু ফটোগ্রাফি আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে চলছি। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভক্ত হওয়ার পর ১৯৪৮ সালে কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলায় নদীর পাড়ে এই হাটটি প্রথম সপ্তাহের মঙ্গলবারে বসতে শুরু করে বলে লোকমুখে কথা প্রচলন রয়েছে এখনো। নদীর পাড়ে হাট বসার প্রধান কারণ ছিল দূর দূরান্তের বেপারী এবং ক্রেতাগণ নৌকার মাধ্যমে যাতায়াত করতে পারতো। কেননা তখন এতো ভালো রাস্তাঘাট ছিল না নৌকা ছিল একমাত্র দূরদূরান্তে যাওয়ার ভালো মাধ্যম। নদীপথে যাত্রা এবং মালামাল পরিবহনে খুব সুবিধা ছিল। সবদিক থেকে ব্যাপারী এবং জনসাধারণের সুবিধা অনুযায়ী বাজারটি এখানে গড়ে ওঠে। যদিও বর্ষার মৌসুম ছাড়া এখন আর নদীতে পানি থাকে না তার পরেও বাজার কিন্তু সেই জমজমাট। এই বাজারের কথা ফেসবুকে পড়েছি ইউটিউবে ভিডিও দেখেছি এজন্য যেহেতু মিরপুরে এসেছিলাম ভ্রমণ না করে আর থাকতে পারলাম না। এই বাজারের বিখ্যাত খাবার রয়েছে যা ইউটিউব এবং ফেসবুকের মাধ্যমে অনেকবার দেখেছি। মনে খুব লোভ হচ্ছিল ঐতিহ্যবাহী গরম জিলাপি এবং কলিজা ভুনা খাওয়ার জন্য। এজন্য আমার কলিগকে সাথে নিয়ে চলে গেলাম বাজার ভ্রমণ করতে। যদিও বৃষ্টির কারণে এদিন বাজারের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। তার পরেও ঐতিহ্যবাহী বাজার বলে কথা একটু ঘুরে না দেখলে কেমন হয়। এই বাজারে আমি দেখেছি ছোট থেকে বড় এবং সমস্ত নিত্য প্রয়োজনীয় আসবাব পত্র পাওয়া যায়।


IMG_20231010_181057.jpg

IMG_20231010_181042.jpg

IMG_20231010_181025.jpg

IMG_20231010_181010.jpg

IMG_20231010_180952.jpg

IMG_20231010_180916.jpg

ছোটবেলায় বইতে পড়েছিলাম নদীর পাড়ে বটগাছ আর সেই বটগাছ কে কেন্দ্র করে এই হাট বসে সপ্তাহে একদিন বা দু'দিন। আর যেদিন হাট বসে ওই দিনকে এলাকার লোক হাটবার বলে চেনে। এমন বাজার যদিও কখনো দেখিনি এই প্রথম বইয়ের কথার সাথে মিল খুঁজে পেলাম। দূর দূরান্ত থেকে লোক এসেছে এই বাজারে নৌকা এবং গাড়ির মাধ্যমে। উপরের ফটোগ্রাফি গুলোতে দেখিয়েছি নদী বটগাছ এবং বটগাছের নিচে অনেকগুলা সবজির দোকান। সত্যি বাজারটি ভ্রমণ করে আমার কেমন যেন মনে হচ্ছিল বইয়ের পাতায় ফেরত চলে গেলাম।


IMG_20231010_180934.jpg

IMG_20231010_180858.jpg

IMG_20231010_180812.jpg

প্রতি সপ্তাহের মঙ্গলবার তথা হাটবারে এখানে আশপাশের সব বাজার বন্ধ থাকে। আশপাশের সকল ক্রেতা এবং বিক্রেতা এখানে এসে ভিড় জুমায়। বাজারে দুপুর বেলার পর থেকেই এত পরিমান ক্রেতা বিক্রেতার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় যে হাঁটতে হলে খুবই সাবধানে দেখে শুনে হাঁটতে হয়। উপরের ফটোগ্রাফি গুলোতে দেখতেই পাচ্ছেন ক্রেতা বিক্রেতার ভিড় জমে রয়েছে চারিপাশ। প্রথমে দাম পাশাপাশি হচ্ছে এবং পরবর্তীতে সেটা বিক্রি হচ্ছে। তবে হাটের দিনে এখানে সব জিনিসের দামি অন্যান্য দিনের তুলনায় এবং অন্যান্য জায়গার তুলনায় কম দামে পাওয়া যায়।


IMG_20231010_180753.jpg

IMG_20231010_180653.jpg

IMG_20231010_180615.jpg

IMG_20231010_180537.jpg

এই বাজারে দুটি খাবার আমি ইউটিউব এবং ফেসবুকের মাধ্যমে অনেকবার দেখেছি এর মধ্যে একটি হল ফুল জেলেপি। এটি নাকি হাট বসার শুরু থেকেই এখানকার লোক বানিয়ে বিক্রি শুরু করে। সত্যিই ভাবতে কেমন লাগছে সেই ১৯৪৮ সাল থেকে আজ অব্দি চলছে এই খাবারের সুনাম। ফটোগ্রাফি গুলোতে লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন একদিক থেকে তৈরি হচ্ছে এবং চারিপাশ ঘিরে লোকজন বসে গরম গরম ফুল জিলাপি খাচ্ছে। আমারতো গরম গরম জিলাপি এমনিতেই খুব ফেভারেট তাই আর না খেয়ে থাকতে পারলাম না সখ পূরণ করেই ফেললাম ঐতিহ্যবাহী খাবার বলে কথা।


IMG_20231010_180726.jpg

সব থেকে বেশি যেটা নিউজ চ্যানেল ফেসবুকে এবং ইউটিউব এর মাধ্যমে দেখেছি সেটা হল খাসির কলিজা ভুনা। যদিও শুধু কলিজা থাকে না এর মধ্যে থাকে কিছু পরিমান ছোলা। এরপর চলে আসলাম সেই কলিজা ভুনার দোকানে। এসেই দেখি যে পরিমাণ ভিড় সিরিয়ালে থাকতে হবে এই কলিজা ভুনা খাওয়ার জন্য। বসে রইলাম সিরিয়ালে পাঁচ মিনিটের মধ্যেই পেয়ে গেলাম দুজন দুবাটি কলিজা ভুনা। সত্যিই যেরকম সুগন্ধি আর সেই রকম স্বাদে। এক বাটি কলিজা ভুনার দাম সর্বনিম্ন ৩০ টাকা। খুব মজা করে খেলাম ঐতিহ্যবাহী খাবার বলে কথা। আসলে লোকজন তাদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে চায় তাদের ঐতিহ্যকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চায়। তেমনি আমি এই বাজার ভ্রমণ করে এবং এই বাজারের গল্প শুনে অবাক হয়েছি মুগ্ধ হয়েছি। এরকম নদীর পাড় সপ্তাহে একদিন হাটার বাজারের মধ্যে বড় বড় বটগাছ সত্যি এখন আর এরকমটা দেখা মেলে না। ভালো লাগলে আপনারও ঘুরে যেতে পারেন কুষ্টিয়া মিরপুরের ঐতিহ্যবাহী হাটবার সপ্তাহে মঙ্গলবার। যা হোক এই ছিল আমার আজকের পোস্ট আশা করছি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।


লোকেশন:


ডিভাইসঃ Redmi Note 5



standard_Discord_Zip.gif

>>>>>|| এখানে ক্লিক করেন ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Witness Banner 2.png


সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

ধন্যবাদ

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 10 months ago 

কুষ্টিয়া মিরপুর হাঁটে গিয়েছিলাম ভাইয়া আব্বুর সাথে। হাঁট টি বেশ আমার ভালই লাগছিল। অনেক খাবারে জিনিস পাওয়া যায় অনেক সুস্বাদু এবং আমি গরুর হাটে গিয়েছিলাম। আপনি এত সুন্দর সুন্দর ফুল জিলাপি দিয়েছেন এটাও মনে হচ্ছে এখনই খেয়ে ফেলি বেশ সুস্বাদু মনে হয়। সর্বোপরি আপনার ফটোগ্রাফি অনেক ভাল ছিল ভাইয়া

 10 months ago 

আসলে ভাইয়া জিলিপি এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার আমার খুব ফেভারিট। তবে এই বাজারের জিলাপি গুলো কিন্তু খুব বিখ্যাত।

 10 months ago 

ভাইয়া আপনার পোষ্টের মাধ্যমে কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলায় নদীর পাড়ের বাজার সম্পর্কে অনেক তথ্য জানতে পারলাম। আসলেই ছোট সময় বইতে পেড়েছি নদীর পাড়ে বট গাছকে কেন্দ্র করেই বাজার গড়ে উঠে। তার বাস্তব প্রমান এই বাজার। অনেক মানুষ আর জিনিষ পত্র দেখলাম। সব শেষে দেখলাম ছোলা ভোট দিয়ে কলিজা ভুনা কিন্তুু খেতে পারলাম না,হে হে হে। ধন্যবাদ।

 10 months ago 

আমন্ত্রণ রইল ভাইয়া আমাদের কুষ্টিয়া জেলা ভ্রমণের জন্।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59575.00
ETH 2607.14
USDT 1.00
SBD 2.43