ভ্রমণ🚴♂️ড্রিম হলিডে পার্ক নরসিংদী 📸 ৪র্থ পর্ব।
২৭চৈত্র , ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
০৮এপ্রিল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৮রমজান ১৪৪৫ হিজরী
সোমবার
বসন্তকাল।
আসসালামু আলাইকুম,আমি মোঃআলী, আমার ইউজার নাম @litonali।আমি বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে আমার আজকের পোস্ট শুরু করছি
🚴
শুভ রাত্রি ❤️ ইতিমধ্যে হয়তো ঈদের খুশি ছড়িয়ে পড়েছে সবার মাঝে। ঈদ মানে খুশি আর আনন্দের জোয়ার। তবে খুশিটা যেন একা একা না থাকি এই ঈদের খুশি সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। কর দুস্ত অসহায় মানুষ আছে যাদের ঈদের খুশি এখনো ঘরে পৌঁছায়নি। হয়তো আজকে কোন রকম খাবারটা যোগাড় করেছে ঈদের দিনের খাবারটা এখনো পরিকল্পনায় আসেনি। ঈদের চাঁদটা যেমন সর্বজনীন সৌন্দর্য সবাই উপভোগ করতে পারি। কেমন যেন ঈদের খুশিটাও সবার সাথে ভাগাভাগি করে নিতে পারি। যাইহোক আজ আমি আপনাদের মাঝে তুলে ধরব ড্রিম হলিডে পার্ক ভ্রমণের চতুর্থ পর্ব। পার্কটির আয়তন কিন্তু অনেক বড় প্রায় এক দিন ধরে ঘুরেছি তারপরও মনে হচ্ছিল যেন শেষ হলো না। মাঝে মাঝে কিছু কিছু জায়গায় যাওয়ায় হয়নি বা কিছু কিছু রাইডে চড়া হয়নি। যেহেতু সময় স্বল্পতা ছিল এজন্য একদিনের মধ্যে যতটুকুনি সম্ভব হয়েছে ততটুকুনি ঘুরে দেখেছি এবং ফটোগ্রাফি করেছি। আজকের পর্বে কিছু অদ্ভুত স্ট্যাচু এবং তাদের পিছনের কিছু হাস্যকর গল্প আপনাদের মাঝে তুলে ধরব। যে গল্পগুলো আর কি আমাদের ভ্রমণ সাথীরা তাৎক্ষণিকভাবে রচনা করেছে। যাহোক আর কথা নয় তাহলে চলুন এবার শুরু করা যাক।
🚴
ড্রিম হলিডে পার্কের রয়েছে অনেক বড় বড় দিঘী। গভীরতা কেমন জানি না তবে এত বড় দিঘী দেখে মনে হয় যেন ছোটখাটো একটা নদী। আবার আদর্শ গ্রামের পাশে তো আস্ত বড় একটা নদীর মতো দীঘি রয়েছে যেটা সবথেকে বড়। যখনই বড় এই দিঘির পাড় দিয়ে যাচ্ছিলাম হঠাৎ করে দেখি তো একটা জলপরী ভেসে উঠলো। আহা কি হাসাহাসি আর মজা। সবাই তো খুব করে এই জলপরীটাকে নিয়ে মজার ফলে অনেক কথা বলছিল। কেউ বলছিল আমার অনেক দিনের ইচ্ছা একটা জলপরী দেখব তাকে পছন্দ করব এবং তিনটা শোনার কোরাল নেব। কেউ বলছিল একটা মোবাইল আছে ফেলে দাও পানিতে তাহলে জল পড়িয়েছে তোমাকে আরো তিনটা মোবাইল দেবে। মোবাইল ফেলে দাও আর লেটেস্ট মডেলের iphone চেয়ে নাও। আমার একটু দূর যেতে না যেতেই দেখি মৎস্য কন্যা। কি ব্যাপার মৎস্য কন্যাকে দেখে তো আরো মজা। আসলে সবাই মিলে একসাথে ভ্রমণ করলে যা হয়। উপস্থিত বুদ্ধি আর উপস্থিত কোথায় কত রকমের আনন্দ ভেসে আসে। এদেরকে দেখলাম আর ফটোগ্রাফি করলাম তারপরে সামনের দিকে অগ্রসর হলাম।
🚴
সোনালী কালারের দুজন পালোয়ানকে দেখা যাচ্ছে উপরের ফটোগ্রাফিতে। তারা তাদের শক্তি পরীক্ষা করছে একে অপরের সাথে। এটা কিন্তু বাংলাদেশ তথা গ্রামগঞ্জের এক ঐতিহ্যবাহী খেলা। যা আমাদের গ্রাম্য ভাষায় বলা হয় "মাল" খেলা। বড়দের মুখে শুনেছি আগে পহেলা বৈশাখ এলে ধুমধাম করে অনেক বড় মেলা হত আমাদের গ্রামে মাতব্বরের বাড়িতে। সেখানে লাঠি খেলা এবং মাল খেলা মাল থাকতো অন্যতম। বাইরের অনেক গ্রাম থেকে মানুষজন আসতো সেখানকার সব থেকে শক্তিশালী পালোয়ান এবং অন্য আরেকটি গ্রামের সব থেকে বড় পালোয়ানকে খেলায় নামিয়ে দেওয়া হতো এবং তাদের শক্তি পরীক্ষা হতো। যদিও কালের বিবর্তনে এগুলো এখন আর নেই হারিয়ে গিয়েছে তবুও কিন্তু এই স্ট্যাচুর মাধ্যমে জাগ্রত।
🚴
বাঁশির সুর কিন্তু আমাদেরকে মাতিয়ে তোলে। কিছু কিছু বাশির সুর শুনলে তো মনটা উদাস উদাস হয়ে যায় যেন হারিয়ে যায় কোথায় কোন অরণ্যে। আবার কিছু কিছু বাঁশির সুরে মনের মধ্যে অন্যরকম একটি ফিলিংস বা ভালোবাসাকে জাগিয়ে তোলে। বাঁশি বাজাতে আমারও খুব ভালো লাগে আমার দাদার কাছ থেকে আমি কোনরকমে একটু শিখেছিলাম তবে এখন চর্চার অভাবে প্রায় ভুলে গিয়েছি এখন আর সুর তুলতে পারিনা। বাদ দিয়েছিলাম এটা ভেবে যে বাঁশি বাজালে নাকি সামনের দাঁত পড়ে যায় খুব তাড়াতাড়ি। যাহোক এই ফটোগ্রাফিটি কিন্তু আমাদের গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধারণ করে রয়েছে। কেননা গ্রামগঞ্জে মাঠে-ঘাটে আগে এরকম অনেক মানুষকে দেখা যেত যে বটতলা বসে এরকম ভাবে বাঁশিতে সুর তুলে মানুষকে মাতিয়ে রেখেছে।
🚴
এই পার্কটি এমনভাবে ডিজাইন করা যে এখানে ভ্রমণ করলে আপনি সব রকমের সৌন্দর্য দেখতে পাবেন। নদী নালাখাল বিল গ্রাম্য শহর পাহাড়-পর্বত এমনকি আইসল্যান্ড ও খুঁজে পাবেন এখানে। উপরের ফটোগ্রাফিতে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন পাহাড়ের তলদেশ দিয়ে বয়ে চলা নদী এবং সেখানে মাছ শিকার করে ওত পেতে থাকা একটি বক এবং পাশে একটি ভাল্লুক। এক কথায় উপরের দুটি ফটোগ্রাফি দেখলে পাহাড়ি সৌন্দর্যটা অনুভব করা যায়। এজন্যই এই পার্কটি আমার কাছে এত ভালো লেগেছে যে একটি এরিয়ার মধ্যে সব ধরনের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলেছেন তারা।
🚴
এই দুটি ফটোগ্রাফিতে ও পাহাড়ি সৌন্দর্য দেখিয়েছি এর মধ্যে দেখতে পাচ্ছেন কিছু সাপুড়ে বিন বাজিয়ে সুর তুলে সাপকে নাচাচ্ছে। এবং অন্য আরেকটি ফটোগ্রাফিতে দেখতে পাচ্ছেন পাহাড়ি জনপদে মানুষজন কিভাবে ঘর করে বসবাস করে তার কিছু নমুনা। আপনি যখন এই জায়গাটি ভ্রমণ করবেন হঠাৎ করে চোখ পরলে আপনার কাছে মনে হবে যেন এটি সত্য। কেননা এগুলো ইলেকট্রিক সার্কিট এর মাধ্যমে সবসময় নড়াচড়া করানো হয়। যদিও কাল্পনিক তবুও সৌন্দর্যটা অসাধারণ। বিশেষ করে কালারগুলো এমনভাবে ফুটিয়ে তোলা যে দেখলে মনে হবে এ যেন হুবহু সত্য।
🚴
আগেই বলেছি এখানেই ঘুরতে গেলে আপনি সব ধরনের সৌন্দর্য দেখতে পাবেন। এখন আপনারা দেখতে পাচ্ছেন স্যাটেলাইটের আদলে তৈরি করা রয়েছে অনেক সুন্দর একটি সৌন্দর্যপূর্ণ স্যাটেলাইট যেখানে বাংলাদেশের মানচিত্র ঘোষিত। বড়দিঘী নদীর মত তার প্রায় মাঝখানে একটি ব্রিজ রয়েছে ব্রিজের পাশে অনেক সুন্দর ভাবে এই সুন্দর দুটি ফুটিয়ে তোলা। এটা তারা মূলত মহাকাশের সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তোলা। আপনি লক করলে এখানে কিছু নভোচারী দেখতে পাবেন। তাছাড়া মহাকাশ ভ্রমণ করতে গিয়ে গবেষণায় মগ্ন রয়েছে।
🚴
এই ইউনিটি ভ্রমণ শেষ হলে আমরা একটু সামনের দিকে অগ্রসর হই। হতেই দেখি একটি মেয়ে বেহালা হাতে সুর তুলছে। আমার এক বন্ধু তো এর পাশে গিয়ে দুটো কাটি হাতে নিয়ে হাত নাড়িয়ে গান গাইতে শুরু করলো। কি যে পাগলামি আর মজা লোকজন দেখে অনেক হাসাহাসি করতে লাগলো। সে বলছিল যে এ একা একা দাঁড়িয়ে বেহালাতে সুর তুলছে অথচ গান গাওয়ার কোন লোক নেই। আমি শুধু তাকে একটু সাপোর্ট করতেছি যাতে সে সুরটা আরো বেশি ভালো করে তুলতে পারে। আপনারাই বলুন এরকম কথা শুনলে হাসি না দিয়ে কি বসে থাকা যাবে। বলেছিলাম এর আগে যে এখানে এলে আপনি এমন এমন স্ট্যাচুগুলো দেখতে পাবেন যেগুলো দেখে সত্যি আপনার অনেক ভালো লাগবে। যাইহোক আজকের পর্বে অনেক ফটোগ্রাফি এবং অনেক কথা শেয়ার করে ফেলেছি। আশা করছি আমাদের ভ্রমণের এ পর্ব কথাগুলো এবং ফটোগ্রাফি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। আগামী পর্ব দেখার আমন্ত্রণ রইল। ভালো থাকবেন।
লোকেশন:
ডিভাইসঃ Redmi Note 5
VOTE @bangla.witness as witness OR
সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
ধন্যবাদ
ভ্রমণ করতে আমার অনেক ভালো লাগে সাথে ভ্রমণ কাহিনীর গুলো পড়তে হবে ভালো লাগে। ড্রিম হলিডে পার্ক এর ভ্রমণ কাহিনী গুলো পড়তে পড়তে আমার খুব যেতে ইচ্ছে করছে। এই পার্কটি দেখছি বেশ দারুণ আপনার ফটোগ্রাফির মাধ্যমে আপনি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন। শুভকামনা রইল আপনার জন্য
ভ্রমণ করতে আমারও অনেক ভালো লাগে তাই তো সময় পেলে ছুটে চলি নতুন উত্তর খোঁজে আজকের ভ্রমন পোস্টটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে অনেক খুশি হলাম ধন্যবাদ।
ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি।
তাই তো ঈদের আনন্দ সবার মাঝে রাশি রাশি।
বাহ ভাইয়া ড্রিম হলিডে পার্ক নরসিংদী ঘুরাঘুরি করছেন দেখেছি।আমি যাবও যাবও বলে আর যাওয়া হলো না।বি বাড়িয়া থেকে মনে হয় তেমন দূরেও হবে না। ড্রিম হলিডে পার্ক নরসিংদী ভ্রমণ পর্ব ৪ পড়ছি আমি। যদিও এর আগের গুলো আমি পড়িনি।আপনার ফটোগ্রাফি আর পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম। অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
আমরা তো সেই কুষ্টিয়া থেকে ঘুরতে চলে গেলাম আপনি বি-বাড়িয়া থেকে যাব যাব করে আর যাচ্ছেন না ওখান থেকে তো খুব কাছেই হবে।
ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য ভ্রমণ পোস্টটি দেখে।
নরসিংদীর ড্রিম হলিডে পার্কে ভ্রমণের খুবই সুন্দর কিছু পোস্ট আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করে আসছেন৷ আজকেএ সেরকম একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন৷ খুব সুন্দর ভাবে আপনি ফটোগ্রাফির মাধ্যমে এই স্থান সম্পর্কে অনেক কিছুই আমাদের মাঝে ফুটিয়ে তুলেছেন এবং খুব সুন্দর বর্ণনাও দিয়েছেন যা দেখে খুবই ভালো লাগছে৷ অসংখ্য ধন্যবাদ এরকম সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য৷
ভ্রমণ কাহিনী এবং ফটোগ্রাফি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুবই খুশি হলাম ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মতামত প্রকাশ করার জন্য।
হ্যাঁ ইতিমধ্য সবার মনেই ঈদের আনন্দ বইতে শুরু করেছে। যাহোক আপনি এই পার্ক নিয়ে আজকে চতুর্থ পর্ব শেয়ার করেছেন। হ্যাঁ বোঝাই যাচ্ছে পার্কের এরিয়াটা বড় তাছাড়া যেহেতু পুরোটা দিন পার্কের এরিয়া কভার করতে লেগে গিয়েছে তাহলে কত বড় এরিয়া নিয়ে এই পার্কটা তৈরি করা হয়েছে সেটা বোঝাই যাচ্ছে। সেখানকার কিছু সৌন্দর্য ফটোগ্রাফির মাধ্যমে আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
পার্কের এরিয়া আসলেই অনেক বড় একদিনে আমরা সম্পূর্ণ টা ঘুরে দেখতে পারিনি।
যতটুকুনি সম্ভব হয়েছে ঘুরেছি এই পর্বের ফটোগ্রাফি এবং বর্ণনা আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে অনেক খুশি হলাম ধন্যবাদ।