জেনারেল রাইটিং ✍️ পারিবারিক শিক্ষার গুরুত্ব।

০২জৈষ্ঠ্য , ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আসসালামু আলাইকুম,আমি মোঃআলী, আমার ইউজার নাম @litonali।আমি বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে আমার আজকের পোস্ট শুরু করছি।

---

একজন মানুষের জীবনের সব থেকে বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হল তার পরিবার। ছোট থেকে আমরা বাবা-মা ভাই বোন সবার সাথে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে ছোট থেকে বড় হই। আর এই ছোট থেকে বড় হওয়ার মাঝে আমরা যে আচার-আচরণ ,কালচার, সংস্কৃতি, ভাষাগত আচরণ বা বাহ্যিক আচরণ সবকিছুই কিন্তু পরিবার থেকে প্রভাবিত হই। আমার পরিবারের বড় সদস্যগণ কে আমি ছোটবেলায় যেভাবে কথা বলা আচার ব্যবহার করা দেখেছি আমি কিন্তু সেখান থেকে ঠিক সেটাই শিখেছি। একজন মানুষ তার সারা জীবনে যে জ্ঞান আহরণ করে তার প্রায় সবটুকুই আসে তার পরিবারের মাধ্যমে। এজন্য ছোট থেকে বড় হওয়া একজন কোমলময়ী শিশুর জন্য পরিবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনার শিশুসন্তান বড় হয়ে কেমন হবে সেটা নির্ভর করে আপনার পরিবারের সার্বিক অবস্থার উপরে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নিয়ে শিক্ষিত হওয়া যায় কিন্তু পারিবারিক শিক্ষা না থাকলে কেউ কখনো আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারে না। কেননা আমাদের জ্ঞানচর্চা শুরু হয় আমাদের পরিবার থেকে। এজন্য পারিবারিক শিক্ষাকে আমি সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা মনে করি। আমাদের নীতি-নৈতিকতার এত অবক্ষয় হচ্ছে কেন বলতে পারেন। আমি তো মনে করি সবটুকুনি তাই আমাদের পরিবার। কেন পরিবার থেকে আমাকে এমন শিক্ষা দেওয়া হলো না যে শিক্ষা নিয়ে আমি সুশিক্ষায় শিক্ষিত হব।

বর্তমান সময়ে পথে-ঘাটে এত ইভটিজিং মাদক বা ছেলে মেয়ে নষ্ট হওয়ার পিছনে সবটুকুনি দায় কিন্তু পরিবারকে নিতে হবে। একটু ভালোভাবে বুঝুন পরিবার কিন্তু এই দায় এড়াতে পারবে না। কেননা পরিবার থেকে তাকে এমনভাবে শিক্ষা দেওয়া হয়নি যে সে শিক্ষা নিয়ে সে ভালোভাবে দিন পার করবে। ছেলে মেয়ে যখন একটা অন্যায় করে ফেলে তখন কিন্তু আমরা সব দোষটা তাদের উপর চাপিয়ে দেন। অথচ তাদেরকে যে আমরা সঠিক শিক্ষা দিতে পারেনি সেটা কখনো বুঝতে চাই না। আপনি টাকার পিছনে ছুটতে ছুটতে নিজের ছেলে মেয়ের খোঁজ খবর নিতে ভুলে যান। কোথায় কি করছে বা কার সাথে ঘুরছে এটার খবর নেয়ার সময় থাকে না। এক সময় যখন বাইরের খারাপ আবহাওয়া তাকে গ্রাস করে ফেলে তখন আপনি চেষ্টা করেন তাকে ফেরানোর জন্য। আর তখন সমস্ত দায়ীটা সেই সন্তানের উপর দেয়ার চেষ্টা করা হয় পরিবার থেকে। আসলে এটা এখন বর্তমান সময়ে সমাজের একটা ব্যাধি হয়ে গিয়েছে। একটা পরিবারের বড় সদস্য গন্ডা যদি ছোটদের সাথে বন্ধুর মতো আচরণ করে এবং তাদের সবকিছু বোঝার চেষ্টা করে দেখবেন ওই পরিবারের ছেলে মেয়ে কখনোই পথ হারা হবে না। একটা পরিবারের ছোট সদস্য যদি তার ভালোলাগা ভালোবাসা সব বিষয়ে পরিবারের সাথে শেয়ার না করতে পারে তাহলে কিন্তু সে সঠিক পরিচর্যা পেল না।

শেষ বয়সে দেখা যায় অনেক বাবা মা সব হারিয়ে বৃদ্ধাশ্রম খুঁজে নিচ্ছে। কারণ একটাই ছেলে মেয়ে তাদের ভরণপোষণ দিতে ব্যর্থ। তারা তাদের নিজের পরিবার গোছাতে ব্যর্থ বাবা মার খবর নেয়ার সময় থাকে না। এ দোষটা আপনি কাকে দিবেন যে পরিবার থেকে তার ছেলে বা মেয়ে শিক্ষা নিয়ে ভালো হতে পারেনি তাদের না ছেলেকে বা মেয়েকে। আমি কিন্তু এই জায়গায় পরিবারকেই দায়ী করব। আপনি কেমন শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুললেন আপনার সন্তানকে যে বৃদ্ধ বয়সে তারা আপনাকে ছুড়ে ফেলে দিল। আর সব থেকে বড় কথা হল পারিবারিক শিক্ষার সাথে ধর্মীয় শিক্ষার বিকল্প অপরিসীম। সাথে ধর্মীয় শিক্ষার বিকল্প অপরিসীম পরিবার থেকে ভালো শিক্ষা আর যদি ধর্মীয় জ্ঞান কোন সন্তানের মধ্যে থাকে তাহলে কখনোই তারা পথ হারাবে না। এমনকি বাবা-মা কেউ শেষ বয়সে ছুড়ে ফেলে দেবে না। আপনার ঘরের পরিবেশ যদি ভালো হয় এক কথায় যদি পরিবারটি আদর্শ হয় তাহলে অবশ্যই ছেলেমেয়ে সেই আদর্শে বড় হবে। এজন্য ছেলেমেয়ে ভালো করতে হলে আগে নিজেদেরকে সংশোধন হতে হবে। কেননা আপনাদের কথায় কাজে প্রভাবিত হয়েই তো সেই মানুষটি ছোট থেকে বড় হয়েছে।

পরিবার থেকে আপনার সন্তানদেরকে এমন ভাবে শিক্ষা দেন যেন অন্যরা আপনার সন্তানদের শিক্ষা দেখে তার ওপর প্রভাবিত হয়। তাকে ধরে আরো অনেকে সুপথে আসার চেষ্টা করে। শেষ বয়সে এসে এবং সমাজের বুকে আপনি যত ভালো থাকতে চান ঠিক তত ভালোভাবে সন্তানকে লালন পালন করুন। পারিবারিক শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা যতই থাক একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে হলে অবশ্যই পারিবারিক শিক্ষাটা ভালো হওয়া যায়। আজান হলে আপনি পবিত্র হয়ে মসজিদে যান দেখবেন আপনার শিশু সন্তান আপনার বাস ধরবে। একদিন দুইদিন যেতে যেতে সেও আপনার মত নামাজী হবে। আপনি বিড়ি সিগারেট খান একদিন দুদিন দেখতে দেখতে দেখবেন সে সেটার উপরে প্রভাবিত হচ্ছে। আপনি নগ্ন গান সিনেমা মিউজিক দেখেন ছোট থেকে যখন আপনার সন্তান আপনার সাথে বসে এগুলা উপলব্ধি করবে দেখবেন বড় হয়ে আপনার সন্তান ঠিক তেমনি করছে। আপনি ঠিক যেমনটি যেমনটি করবেন আপনার সন্তান ঠিক তেমনভাবেই গড়ে উঠবে। এজন্য আসুন আমরা আগে নিজে সংশোধন হই এবং পরিবারকে আদর্শ পরিবার হিসেবে গড়ে তুলি। তাহলে দেখা যাবে আমাদের সন্তান সমাজের বুকে সুসন্তান হিসেবে গড়ে উঠেছে। পারিবারিক শিক্ষার উপর গুরুত্ব দেন। নিজে ভালো থাকবেন এবং পরিবারকেও ভালো রাখতে পারবেন। যাইহোক আমার ছোট্ট চিন্তায় কিছু লেখার চেষ্টা করলাম আশা করছি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।