শৈশবের স্মৃতি চারণ (beneficiary 10% @shy-fox)

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

আজ২৪ই ভাদ্র-১৪২৮বঙ্গাব্দ

বুধবার-শরৎকাল।


আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি মোঃআলী, আমার ইউজার নাম @litonali।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] এর সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনজানিয়ে আমার আজকের পোস্ট শুরু করছি।


IMG_20210729_100613.jpg

https://w3w.co/bonanza.corruptly.motivate

শৈশব প্রত্যেকের জীবনের মধুর একটি সময়। শৈশব জীবনের দিনগুলি ছিল দুরন্তপনা, দুষ্টুমি আর সারাদিন ছোটাছুটি করে দৌড়ে বেড়ানোর এক অন্যতম মুহূর্ত। আমার শৈশব যেন আজও আমাকে পিছু টানে। সত্যিই আজও বার বার ফিরে যেতে মন চায় ফেলে আসা সেই শৈশবের দিনগুলিতে। মনে পড়ে অবাধে ঘোরা ফেরা আর খেলে বেড়ানো সেই সব দিনগুলির কথা। আপনিও হয়তবা শৈশব শব্দটি পড়েই স্মৃতির পাতায় হাতড়াতে শুরু করেছেন ফেলে আসা সোনালি দিনগুলোকে।কার না মনে পড়ে সেই ছেলে বেলার কথা। দিনগুলি এখন শুধুই স্মৃতি হয়ে আছে। ছেলে বেলার সেই বন্ধুদের সাথে জড়িয়ে থাকা স্মৃতি।


IMG_20210908_124954.jpg

IMG_20210908_124745.jpg

https://w3w.co/bonanza.corruptly.motivate

আমাদের গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার খোকসা উপজেলার আমবাড়িয়া ইউনিয়নের ধোকড়াকোল গ্রামে। ৫টি পাড়া মিলে এই গ্রামটি। সকল পেশাজীবী মানুষ এখানে বসবাস করে। নেই কোন ঝগড়া, নেই হানাহানি। সকলেই শান্তি প্রিয়।আমাদের গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে পদ্মার অব বাহীকা।


IMG_7920.JPG

IMG_7919.JPG

IMG_7917.JPG

IMG_7911.JPG

https://w3w.co/healthcare.ferrying.publics

এখনো যদি সময় পাওয়া যায় তখন বন্ধুদের সাথে চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে অনেক সময় বেরিয়ে আসে সেই পুরাতন দিনগুলোর স্মৃতি মাখা দৃশ্য। চোখের সামনে চলে আসে প্রায় ১৫ বছর পূর্বের স্মৃতি। মনে পড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময়ে শিক্ষকদের বকুনি, আবার অনেকে বলেন সব চেয়ে রাগী শিক্ষকের পিটুনির কথাও।সবাই যেন কোথায় হারিয়ে যাই। আর কয়েক বন্ধু মিলে স্কুল পালানো।
পরদিন স্যারের দুটো বেত্রাঘাত খেয়ে ক্লাসে ঢোকার অনুমতি।আমাদের বিদ্যালয়ের নাম ছিল ধোকড়াকোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।


IMG_7841.JPG

IMG_7768.JPG

IMG_7769.JPG

https://w3w.co/healthcare.ferrying.publics

কয়েকজন বন্ধু মিলে নদীতে চলে যেতাম গোসল করার জন্য । নদীর পানিতে টুই টুম্বর। ইঞ্জিন আর ডিঙি নৌকা চলে নদীতে। মাঝে মধ্যে দু'একটা অনেক বড় নৌকাও দেখা যায়। নদীতে গোসল করতাম আবার অনেক সময় মাছও ধরতাম। কেন দেরি করে বাড়ি ফিরলাম।মায়ের কাছে বকা শুনতে হতো এ নিয়মিত।

একটি কথা না বললেই নয়। নদী সাতড়িয়ে উপারে গিয়ে লটা খাওয়ার কথা আজও ভীষণ মনে পড়ে। খুব মিষ্টি, তবে মুখ ছরে যেতো। তাও ভালো। কার আগে কে কত বেশি ভেঙে নিতে পারে। তবে নদী পারি দিয়ে ওপার যেতে ভরা নদীতে অনেক সময় ভয়ও পেতাম। সেই সাঁতার কাটা, বিকেলে সকলে মিলে ফুটবল খেলা। প্রথমে আমাদেরকে সিনিয়রদের সাথে খেলায় নিতে চাইতো না। আমরা বল মাঠের বাইরে চলে গেলে সেটা এনে দিতাম। তবে কয়েকজন বন্ধু মিলে মাঠের বাইরে ধান কাটার পর ক্ষেত পতিত থাকতো। সেখানে আমরা বল খেলতাম। তবে আসল বল নয়, গাছের কাট বাদাম দিয়ে বল খেলতাম।আবার বছর ঘুরে যখন নৌকা বাইচ প্রিতিযোগীতা হতো তখন আর আনান্দের শেষ থাকত না।

বছরে দুটি বড় ছুটির আশায় থাকতাম। কখন গ্রীষ্মকালীন ছুটির সময় আসবে। অনেকদিন স্কুলের বারান্দায় পা রাখতে হবে না। তখন শুধু খেলাধুলা নিয়ে বেশি ব্যস্ত সময় পার করতাম। পড়াশোনা শিকায় তুলা থাকতো। কিন্তু ছুটির পর যেদিন স্কুল খোলা হতো পূর্বে পড়া কিছুই মনে থাকতো না। কি পড়া বাড়িতে দেয়া ছিল। খেতে হতো শিক্ষকের কানমলা। মিঠু সারের কছে কানমলা দিতে দিতে লাল হয়ে যেত। কানের ময়লা একটু থাকতো না। স্যার ও আজ পৃথিবীতে নাই।স্যার এর কথা মনে হলে আজ ও চোখের কোণে জল চলে আসে মনের ও জানতেই।


IMG_6736.JPG

https://w3w.co/healthcare.ferrying.publics

তবে গ্রীষ্মকালে স্কুলের সামনের রাস্তার পাশ দিয়ে অনেক গুলো জাম গাছ ছিল।সুযোগ পেলেই গাছে উঠা, জাম পেরে খাওয়া। আর ধরা পড়লেই শিক্ষকের পিটুনি।আমরা যারা গ্রামে বাস করেছি, আমাদের সময়কালে গ্রামের বিভিন্ন স্মৃতি এখনো তাড়িত করে।এখনো মনে পরে বিকাল বেলায় গ্রামের বাজারে যাওয়ার জন্য বাবার কাছে বায়না ধরতাম বাজারের সিংগারা,চপ আর পিয়াজু খাওয়ার। আর একটা বিষয় ভাবলে কষ্ট লাগে যে আমরা গ্রামে যেসব খেলাধুলা করতাম, এখনকার শিশুরা সেই খেলাগুলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বা তারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। আমরা যেমন সবুজ শ্যামল গ্রামের প্রকৃতির মাঝে বৃস্তিন্ন ফসলের ক্ষেতে ঘুড়ি উড়াতাম, নদীতে সাঁতার কাটতাম, ঢেউয়ের তালে তালে ভেসে থাকতাম, ডুব দিয়ে মাছ ধরতাম, ডাংগুলি, কানামাছি, লুকোচুরি, দাঁড়িয়াবান্ধা, গোল্লাছুট, হাডুডু, রান্নাবাটি, সাতচাঁড়া, মার্বেল খেলতাম তা বর্তমানের শিশুরা তেমন একটা খেলছে না।বৃষ্টির মধ্যে ভিজে ২-৩ ঘন্টা এক নাগারে বন্ধুদের সাথে ফুটবল খেলেছি।অনেক সময় ঠান্ডা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভুগছি আর মায়ের কাছে শুনছি কত বকুনি।মায়ে তখন বলত আমার কথা শুনিশ না তো তাই এটা হল, আমার কথা শুনলে এটা হত না।এখন প্রযুক্তির কল্যাণে শিশুদের হাতেও পৌঁছে গেছে স্মার্ট ফোন, ল্যাপটপ,এর মতো বস্তু। এখন শারীরিক শ্রমের খেলাধুলা ছেড়ে ভার্চুয়াল খেলাধুলায় মেতেছে শিশুরা। যার নেতিবাচক দিক ক্রমশঃ দেখা যাচ্ছে। শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। চোখের ও মস্তিষ্কের ক্ষতি হচ্ছে। আর যারা খেলাধুলার সুযোগ পাচ্ছে তারা দেশি খেলার বদলে খেলছে ক্রিকেট ও ফুটবল। কারণ, ক্রিকেট ও ফুটবলে পেশাগত ও অর্থনৈতিক দিক রয়েছে। তাছাড়া দেশি খেলাগুলো হারিয়ে গেলে আমাদের সংস্কৃতির একটি বড় সম্পদও যে আমরা হারাব তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

আমি মেলা থেকে তাল পাতার এক বাঁশি কিনে এনেছি।বাঁশি কই আগের মতো বাজে নামন আমার তেমন যেন সাজে নাতবে কি ছেলেবেলা অনেক দূরে ফেলে এসেছি।মনে পড়ে উদাস করা নকসী কাঁথার মাঠে।ভুলেই যেতুম খেলায় কখন সূর্য্যি যেত পাতে।
মনের থেকে সেসব ছবি হারিয়ে ফেলেছি।এসব কথা থেকে থেকে যখন মনে আসে কিশোরী দিন স্বপ্ন রঙিন চোখের জলে ভাসে।হঠাৎ দেখি অনেকটা পথ চলে এসেছি।
শিল্পীঃসাবিনা ইয়াসমিন।

Device : redmi

Sort:  
 3 years ago 

শৈশব নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোষ্ট সাজিয়েছেন ভাইয়া। প্রতিটি টপিকের উপর নিজস্ব ফটোগ্রাফি। পোষ্টটিকে যেনো জীবন্ত করে তুলেছে।

শৈশব আমাদের প্রত্যেকের জীবনেরই সুন্দর হয়, কিন্তু বর্তমান সময়ের শহরের ছেলেমেয়েদের শৈশব কেটে যায়, নিজের শরীরের ওজনের থেকেও বেশি ভারী ব্যাগের বোঝা উঠাতে উঠাতে।

 3 years ago 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ 😍

 3 years ago 

দারুন একটি পোস্ট করেছেন ভাই। লেখাগুলো পড়ে আমার নিজের শৈশবের কথা মনে পরে গেল। বাচ্চাগুলোর ছবি অনেক সুন্দর করে তুলেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট তুলে ধরার জন্য।

 3 years ago 

আপনাকে ও ধন্যবাদ 😍😍

 3 years ago 

শৈশবকালটি হয় মধুময় জীবন থাকে উন্মুক্ত ও স্বাধীন। পৃথিবীকে নতুনভাবে চিনতে হয়।আপনার শৈশবের স্মৃতি অসাধারণ ছিল। প্রতিটি মানুষের শৈশবের ভাবমূর্তি একই রকম।অসাধারণ মুহূর্ত যা কখনো আর ফিরে পাবো না।অনেক সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন ভাই।

 3 years ago 

শৈশব থেকে এখন অনেক দূরে তাই বার বার পিচু টানে। আপনার সুন্দর মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ

শৈশবের স্মৃতি সত্যিই কখনো ভোলা যাবেনা।যদিও স্মৃতি গুলো একটু দূরে সরে আছিলো।কিন্তু আপনার পোস্টটি দেখার পর শৈশবের স্মৃতি আমার মাথায় এসে গেছে।মনে পড়ে যাচ্ছে শৈশবের সকল স্মৃতি।
ছোট বাচ্চা গুলোর কলিজা অনেক বড়।এত উচুতে থেকে কেমনে লাফ দেয়🤨।রুহ তো উপরে থেকে যাবে মনে হচ্ছে☺️।

অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাই শুভ কামনা রইলো।

 3 years ago 

আপনার সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আসলেই শৈশবের স্মৃতি কখনো ভোলার না।যখন ছোট ছোট বাচ্চাদের বিভিন্ন খেলা খেলতে দেখি তখন বুকের ভিতরটা কেমন যেন করে উঠে।মনে হয় আাবার যদি এ রকম সময় ফিরে পেতাম।
😍😍😍😍

 3 years ago 

অনেক সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন, যা পড়ে শৈশবের কথা মনে পড়ে গেল। যাই হোক সব মিলিয়ে পোস্টটি অনেক সুন্দর ছিল। ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

আপনার সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

You have been upvoted by @rex-sumon A Country Representative, we are voting with the Steemit Community Curator @steemcurator07 account to support the newcomers coming into steemit.

Coin Marketplace

STEEM 0.29
TRX 0.12
JST 0.033
BTC 63855.79
ETH 3113.00
USDT 1.00
SBD 4.04