জীবনে প্রথম মোবাইল হাতে পাওয়ার অনুভূতি,❤️❤️
১২ভাদ্র , ১৪২৮ বঙ্গাব্দ
২৭আগস্ট , ২০২১ খ্রিস্টাব্দ
২৮মহররম , ১৪৪৩ হিজরী
শনিবার।
আসসালামু আলাইকুম,আমি মোঃআলী, আমার ইউজার নাম @litonali।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] এর সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনজানিয়ে আমার আজকের পোস্ট শুরু করছি
জীবনের প্রথম মোবাইল পাওয়া যে, কত আনন্দের কত উচ্ছাসের তা শুধু যে পায় সেই উপভোগ করতে পারে, হোক সেটা মা-বাবা,বা বড় ভাই- অন্য যে কোন মানুষের কাছ থেকে।
আর যদি নিজের টাকায় কেনা হয় তো আনন্দের কোন শেষ থাকে না। এত হলো পাওয়ার আনন্দটা, এবার প্রথম পাওয়া জিনিসটা যদি হয় কোন ইলেকট্রনিক বস্তু যেমন, সাউন্ড বক্স, মোবাইল ফোন তাহলে আনন্দটা কেমন হতে পারে একবার ভাবুনতো
হা আমি আমার জীবনের প্রথন মোবাইল ফোনের কথা-ই বলছি। তখন ২০১৩ সাল, আমি তখন দশম শ্রেণির ছাত্র। আমার কয়েকজন বন্ধুর মোবাইল ছিল।। ওদের মেবাইল নিয় মাঝে মাঝে টিপাটিপি করতাম গান শুনতাম।আর ভাবতাম আমার যদি একটা মোবাইল থাকত!!
দশম শ্রেণীতে পড়লেও তখন আমি 14 জন পোলাপানের প্রাইভেট পড়াইতাম। তারা সকলেই ছিল ফোর এবং ক্লাস ফাইভ এর।। মাসে ৩০০ টাকা করে পেতাম প্রতিজনের কাছ থেকে।। পারিবারিক অর্থনৈতিক অবস্থা একটু খারাপ ছিল তাই এজন্যই টিউশনিটা করাইতাম। কিন্তু শখ তো আর বাধা মানে না।ঐ বয়সে মোবাইলের প্রতি একটা দুর্বলতা সবারই থাকে।
তখন থেকে মনে মনে পরিকল্পনা করতে থাকলাম যে কিভাবে মোবাইল কেনা যায়।খুজতে থাকলাম কম দামে পুরনো একটি ফোন পাওয়া যায় যদি। তখন তো পৃথিবী জুড়ে শুধু নোকিয়া ফোনের রাজত্বই ছিল ।যার হাতে দেখতাম নোকিয়া ফোন হোক বাটন বা ভিডিও।। আমার বন্ধু জাহিদ এই বিষয়ে অনেক পারদর্শী ছিল সে সপ্তম শ্রেণী থেকেই একটি নোকিয়া ফোন ব্যবহার করত। মাঝে মাঝে ওকে দেখতাম বিভিন্ন ধরনের ফোন অন্য কারো সাথে কেনাবেচা করতে।আমি ওর সাথে শেয়ার করলাম একটি পুরাতন মোবাইল কিনার কথা অল্প টাকায়।
জাহিদ আমাকে বলল আমি এরকম ফোন তো মাঝে মাঝেই কেনাবেচা করি !তোর জন্য যেহেতু দেখব একটি ভালো ফোনেরই খোঁজ করব। তার ঠিক দুদিনের মাথায় ও বলল একটি ভাল নোকিয়া ফোন পেয়েছি। ফোনটির মডেল ছিল নোকিয়া ৩১১০c। ১৬৫০ টাকা হলে বিক্রি করবে। আর আমার কাছে ওই মুহূর্তে এতগুলো টাকা ও ছিল না। বাড়িতে ভয়ে বলতেও পারছিনা মোবাইল কেনার কথা। কোনরকম মুখ ফসকে মাকে বললাম। মা কিছু না বলে আমাকে অনেকটা আশ্বাস দিলেও ফোন কেনার জন্য। শেষমেষ বাবাকে বলে রাজি করিয়ে আমাকে এক হাজার টাকার ব্যবস্থা করে দিল। আর বাবা জানলো যে আমি ১০০০ টাকা দিয়েই ফোনটা কিনছি। বাদবাকি টাকা আমার কাছ থেকে দিয়ে মোবাইল কিনলাম একটি মেমোরি কার্ড কিনলাম আর একটি সিম আমার আগেই কেনা ছিল। আর ব্লুটুথ এর মাধ্যমে আমার বন্ধু জাহিদের ফোন থেকে কিছু অডিও এবং ভিডিও গান শেয়ার করে নিলাম।
মোবাইলটা হাতে পাওয়ার পরে আমি কি যে খুশি।। সেটা কিভাবে বোঝায়. মেক্সিমাম সময় মোবাইল হাতের মধ্যে রাখতাম সবাইকে দেখানোর চেষ্টা করতাম যে আমার একটা মোবাইল আছে। রাস্তা দিয়ে চলার সময় জোরে জোরে গান বাজাইতাম যাতে সবাই বোঝে যে আমি একটা মোবাইল অপারেট করি। আসলে তখনকার কথা মনে হলে এখন অনেক হাসি পায়।
তবে মোবাইল কিনার পরে আমি উল্লেখযোগ্যভাবে দেখেছি আলিফ লায়লা ,তখন চলতো সব থেকে বেশি চঞ্চল চৌধুরী এবং মোশারফ করিমের নাটক বিশেষ করে সাকিন সারি সুরি। এই নাটকটির সবগুলো পর্বই আমি দেখেছিলাম অল্প অল্প করে টাকা দিয়ে লোড দিয়ে নিয়ে আসতাম কম্পিউটারের দোকান থেকে। আর বাড়ি এসে বন্ধুদের সাথে সেটা শেয়ার করে করে দেখতাম। দশম শ্রেণীতে আমাদের একটা উপন্যাস ছিল হাজার বছর ধরে এই উপন্যাসটিও লোড দিয়ে দেখেছি প্রথমবার।। যখনই মা বা বাবার কাছে রাতে মোবাইল টিপার সময় ধরা খেয়েছি তখনই বলেছি যে উপন্যাস দেখছি সামনে পরীক্ষা।
প্রথম প্রথম মোবাইল পাওয়ার পরে তো কিসে এক অবস্থা রাত বারোটা একটা পর্যন্ত ওই মোবাইলই চালাইতাম মাঝে মাঝে কম্পিউটারের দোকানে গিয়ে গান লোড দিতাম সিনেমা নাটক লোড দিয়ে রাত ধরে বন্ধুদের সাথে দেখতাম। স্কুলে যাওয়ার সময় হলে চুরি করে মোবাইল নিয়ে ক্লাসে ঢুকতাম। ভয়ে থাকতাম কখন যেন সার জেনে যায় আমার পকেটে মোবাইল রয়েছে।।
মাঝে মাঝে মোবাইলে ১০ টাকা ২০ টাকা করে লোড দিতাম আর বন্ধুদের সাথে অল্প অল্প করে কথা বলতাম বেশিরভাগ সময় মিসকল দিতাম। তখন দুই টাকায় ২৫ টা এসএমএস দিত ৭ দিন মেয়াদ থাকতো। ওই এসএমএসের মাধ্যমেই বেশি কথা হতো বন্ধুদের সাথে। প্রথম মোবাইল কেনার পরে মনটা কেমন যেন সব সময় উৎফুল্ল থাকতো অনেক আনন্দঘন মুহূর্ত পার হত মোবাইলের সাথে।
মোবাইল কিনার পরে বেশ কিছুদিন পার হয়ে গেল কথা বলার কোন জায়গা খুঁজে আর পাইনা কোথায় কথা বলব শুধু মোবাইল নিয়ে ঘুরি।। তখন চিন্তা করে দেখলাম একটা প্রেম করতে হবে। এর আগের কনটেস্টে আমি আমার জীবনের প্রথম প্রেমের অনুভূতিটা শেয়ার করেছিলাম। সেখানেও আমি আমার এই মোবাইলের কিছু কথা বলেছিলাম। হয়ে গেল আমার এক বান্ধবীর সাথে প্রেমের বন্ধনে আবদ্ধ। ওর মায়ের মোবাইল দিয়ে ও আমার সাথে কথা বলতো তখন বুঝতাম যে মোবাইলটা কত দরকার মোবাইল আর প্রেমিকাকে তখন সমান সমান কেয়ার করা শুরু করলাম।। তখন মোবাইল কেনার জন্য অবশ্য লেখাপড়ার অনেক ক্ষতি হয়েছিল।। মাঝে মাঝে মা-বাবার বকুনি তো ছিলই সাথে।
প্রথম মোবাইলটি কিনে আমি অনেক আনন্দ উপভোগ করেছিলাম অনেক সুন্দর সময় উপভোগ করেছিলাম।। কতটা উচ্ছ্বাসিত এবং আনন্দ পেয়েছিলাম মোবাইল কিনার পরে সেটা হয়তো বলে বোঝাতে পারবো না। তবে আমার কাছে মনে হতো আমি যেন হিমালয় পর্বত বিজয় করে ফেলেছি।
ডিভাইসঃ Redmi Note 5
সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
ধন্যবাদ
নিজের টাকায় ফোন কিনলে সেটার গুরুত্ব সত্যি অন্যরকম সময়। যাক শেষ পযর্ন্ত বাড়িতে বলেছিলেন এবং ফোনটাও পেয়েছিলেন। আমার প্রথম ফোন হাতে পাবার গল্পটা কিছুটা আপনার গল্পের সঙ্গে মিলে যাবে। বেশ দারুণ ছিল আপনার প্রথম ফোন সাথে পাবার গল্পটা।।
আমি প্রথমেই ভেবেছিলাম বাড়ির অজান্তে যদি ফোন কিনি তাহলে চুরি করে চালাতে হবে তার কি দরকার বাড়িতে বলেই ফোনটা কিনি যা হয় হবে যাহোক গল্পটা পড়ে আপনার ভালো লেগেছে জেনে অনেক খুশি হলাম
আপনার জীবনে প্রথম মোবাইল পাওয়ার অনুভূতিটি আমার কাছে অসম্ভব ভালো লেগেছে। আসলে ঠিকই বলেছেন,
ভাই কাঙ্খিত ওই মোবাইল দিয়ে পাওয়ার পরে যে আমি কি খুশি হয়েছিলাম আর কি অনুভূতিতে আমার মাঝে কাজ করতেছিল আসলে বলে বোঝাতে পারবো না এখনো সেই ফিলিংস গুলো অনেক মিস করি
ঠিকই ভাই সেই সময়ের স্মৃতিগুলো আমাদের হৃদয়ের মনিকোঠায় আজীবন অম্লান হয়ে থাকবে।
প্রথম মোবাইল ফোন পাওয়ার অনুভূতি জানতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। আসলেই আপনি অনেক কষ্ট করেছেন। সেই দশম শ্রেণি থেকে আপনি টিউশনি করাতেন।বর্তমান সময়ে হাজার মোবাইল ব্যান্ডের ফোন রয়েছে কিন্তু তখনকার সময়ে নকিয়াই ছিল একমাত্র ব্যান্ড সবার হাতে হাতে এই নোকিয়া ছিল। যাইহোক আপনার গল্পটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো।
আমার জীবনের প্রথম মোবাইল ফোন হাতে পাওয়ার অনুভূতি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুবই খুশি হলাম ধন্যবাদ আপনাকে সুস্থ থাকবেন ভালো থাকবেন
Twitter
সত্যি মোবাইল কেনার সাথে আমাদের কতই না অনুভুতি জড়িয়ে আছে। আপনার পোস্ট পরে ছোট বেলার কিছু অনুভুতিও মনে পরে গেলো। তখন টাকা খরচ করে আমাদের ম্যামুরি লোড করতে হতো। আর এখন দেখুন ইন্টার্নেট এর জগতে গান লোড ও করা লাগেনা। সেই দিন গুলি সত্যি খুব মিস করি।
আসলে ভাইয়া ছোটবেলার অনুভূতি তো তাই কখনো বলা হয়নি আর হয়তো ভুলাও হবে না খুবই সুন্দর সময় ছিল সোনালী দিনগুলো এখন অনেক মিস করি
জীবনে প্রথম মোবাইল ফোন হাতে পাওয়ার অনুভূতি আপনি আমাদের মাঝে অনেক সুন্দরভাবে শেয়ার করেছেন ভাইয়া। আপনি যখন দশম শ্রেণীতে পড়তেন তখন টিউশনি করাতেন এই বিষয়টা শুনে আমার অনেক ভালো লেগেছে। প্রতিজনের কাছ থেকে ৩০০ টাকা করে নিয়ে থাকতেন পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ থাকার কারণে আপনি টিউশনি করাতেন। আপনি মোবাইল ফোন কেনার বিষয়টি আপনার বন্ধু জাহিদের সাথে শেয়ার করেছিলেন এই বিষয়টা শুনে সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
আসলে সময়ই বলে দেয় কখন কি করতে হয় তখন হয়তো পরিস্থিতিরা খারাপ ছিল এজন্য একটু কষ্ট করতে হয়েছে তবে টিউশনি করালে মেধাটা সচল থাকে আমি মনে করি
অনেক পরিশ্রমী ছিলেন ভাই সেটাই কিন্তু বুঝতে পারলাম আপনার এই পোস্ট পড়ে। আর আপনার প্রথম মোবাইল পর অনুভূতি অনুভূতি পড়ে ভাল লাগলো। তবে বেশি ভালো লাগলো যে আপনি আপনার বাবার অনুমতি নিয়ে মোবাইলটা কিনে ছিলেন অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ ভাইয়া পুরো গল্পটি পড়ে সুন্দর এবং উৎসাহমূলক একটি মন্তব্য আমাকে উপহার দেওয়ার জন্য সুস্থ থাকবেন ভালো থাকবেন দেখা হবে পরবর্তীতে
প্রথম মোবাইল হাতে পাওয়ার গল্পটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো এটা জেনে খুবই ভালো লাগলো যে আপনি তখন ক্লাস টেনে পড়া অবস্থাতেই ১৪ টা প্রাইভেট পড়াতেন। যাই হোক ফোন কিনেই যে প্রেম শুরু করে দিয়েছিলেন এটা কিন্তু আমরা বুঝতে পেরেছি। হাহাহা।
নিজের টিউশনি টাকা দিয়ে মোবাইল কিনেছি টিউশনের টাকা দিয়েই আমার মোবাইলে ভরে প্রেম করেছি সবই চলতো ভালোই ছিল সোনালী দিনগুলো
আপনার পোস্ট টি পড়লাম ভাইয়া। অনেক ভাল লাগল পড়ে ।প্রথম সব কিছুর অনুভুতি ই একটু বেশি ভাললাগা কাজ করে। অনেক শুভকামনা ভাইয়া আপনার জন্য।
প্রথম পাওয়া সব জিনিসের অনুভূতিটাই অন্যরকম থাকে নিজের টাকায় ফোনটা কিনেছিলাম সেই সোনালী দিনের কথাগুলো এখনো মনে পড়ে খুবই ভালো ছিল দিনগুলো