ভৌতিক গল্প: একটি ভয়ানক রাত:-পর্ব ১||১০% বেনিফিসিয়ারি @shy-fox

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago (edited)

silhouette-3777403.jpg
Pixabay

সবুজে ঘেরা একটি গ্রাম।

শহুরে এলাকা থেকে বহু দূরে অবস্থিত। এবার শীতের আগমণ বেশ ভালই আগে হয়েছে। প্রচুর শীত পরছে এবার। শীতকাল মানেই অতিথি পাখির আগমণ। এবারো তার ব্যতিক্রম হয় নি।

নদীর ধারের জমিটাতে প্রচুর অতিথি পাখি, হাস,বক আসতে শুরু করেছে। একদিন রাতে পাখি শিকারে গেলে মন্দ হয় না। একা একা বসে চিন্তা করছে আরিফ। 'কিরে, একা একা কি ভাবছিস?' হটাৎ পিছন থেকে এসে চমকে দিল হাফিজ। আরিফ আর হাফিজ দুই বন্ধু। প্রতিদিন স্কুল থেকে শুরু করে সারা দিন তারা একসঙ্গেই কাটায়। হাফিজ কে দেখে খুশি হয়ে গেল আরিফ। বললো ভাল সময়ে এসেছিস হাফিজ। একটা বিষয়ে চিন্তা করছিলাম।তোকে কেবল জানাবো ভাবছি। কি বিষয়ে নিয়ে? জিজ্ঞাসা করল হাফিজ। এবার তো প্রচুর শীত পড়েছে রে। অনেক অতিথি পাখির আগমন দেখা যাচ্ছে। তা পাখি শিকারে জাবি নাকি একদিন। পরিকল্পনা টি হাফিজের খুব পছন্দ হয়েছে। সে সরাসরি সম্মতি জানালো। ভালোই চিন্তা করেছিস আরিফ। তা কবে জাবি চিন্তা করছিস। হাফিজ বলে উঠল। আমার গুলতি টা হারিয়ে গেছে রে হাফিজ। তোর টা কি ভাল আছে? হাফিজ বলল , হ্যা আছে। তবে মার্বেল শেষ হয়ে গেছে রে। আরিফ বললো আজ তো সন্ধ্যা হয়ে গেছে প্রায়।তাহলে চল কাল সকালে বাজার হতে মার্বেল কিনব ও রাত ১২ টার পর রওনা দেব,কি বলিস? সম্মতি জানালো হাফিজ। দুজনে সম্মতি জানিয়ে বাড়ি ফিরে গেল। পর দিন তাদের সকাল সকাল মার্বেল কেনাও হয়ে গিয়েছে অনেক গুলো। এখন শুধু রাতের অপেক্ষা। তাদের দুজনেরই রাত ঠিক বারোটায় নদীর ধারের তেঁতুল গাছ তলায় আসার কথা। রাতে গ্রামের কেউই প্রায় এই জায়গা দিয়ে যাওয়া আসার সাহস করে না। গ্রামবাসীর মধ্যে অনেকেই অনেক সময় ভয়ানক অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছে বলে জানা যায়। কেননা বছর দু এক আগে এই গাছে একটি মেয়ে গলায় দড়ি দিয়ে অত্যহত্যা করেছিল। এর পর থেকেই মাঝে মধ্যে রাতে এই গাছ তলায় সাদা কাপড় পড়া কাওকে হাটা চলা করতে দেখা যায় অনেক সময়। এবং মাঝে মধ্যে এখন থেকে ভীষণ কান্নার আওয়াজ পাওয়া যায়। আসে পাশে যাদের বাড়ি তারা নাকি প্রায়ই এই সব অদ্ভুত আওয়াজ শুনতে পান। তবে আরিফ এবং হাফিজ এসবে কখনোই কান দেয় না। বিশ্বাস তো বহু পরের কথা। তাই তারা ইচ্ছে করেই দেখা করার জন্য এই জায়গাটি নির্বাচন করে। আরিফ বলে ওঠে পাখি শিকারের পাশাপাশি ভূত শিকারেও বের হওয়া যাবে কি বলিস হাফিজ? হাফিজ হাসতে হাসতে উত্তর দিলো," ঠিক বলেছিস ,তাহলে এখানে এসে অপেক্ষা করবো রাতে তোর জন্য। সময় মতো চলে আসিস কিন্তু।"

ruin-1837344_1920.jpg
Pixabay
রাত তখন প্রায় বারো টা বাজতে দশ কি পনেরো মিনিট বাকি। আজ রাতটি তাও আবার ভরা পূর্ণিমা।দুধেভরা বাটির মত দেখা যাচ্ছে চাঁদ।আরিফ চাঁদ দেখে বলে দিতে পারে কয়টা বাজে। তাই প্রায় সময় হয়ে গেছে দেখে চুপিসারে সে বাড়ি থেকে বের হয়ে পড়ল। সে বের হওয়ার সময় লক্ষ্য রাখলো যেন কোন সাড়া শব্দ না হয় কেননা একবার তার মা জেগে গেলে তাকে যেতে দিবে না। আস্তে করে বের হয়ে সোজা রওনা দিলো আরিফ নদীর ধারে সেই তেতুল তলার দিকে। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হাফিজ এখনো আসেনি অথচ তারই আগে আসার কথা ছিল।

forest-4099730.jpg
Pixabay
কিছু করার নেই দেখে আরিফ চুপচাপ তার বন্ধুর জন্য অপেক্ষা করতে থাকলো। অপেক্ষা করতে করতে আরিফ খেয়াল করলো তাড়াহুড়া করতে গিয়ে তার মার্বেল গুলোই আনা হয়নি। অথচ কথা হয়েছিল মার্বেলগুলো আরিফ আনবে এবং গুলতি হাফেজ নিয়ে আসবে। তাই সে আবার দৌড়ে গেল বাড়ির পথে মার্বেল গুলো নিয়ে আসতে। চুপিসারে মার্বেলের থলেটি নিয়ে সে আবার দৌড়ে চলে আসলো তেতুল তলার নিচে। আসার পথে দেখতে পেল গাছ তলায় কে যেন দাঁড়িয়ে আছে তবে দূর থেকে এবং কুয়াশার কারণে তেমন বোঝা যাচ্ছে না। দৌড়ে আরিফ গাছ তলায় পৌছে দেখে তেতুলতলা সেই আগের মতোই জনশূন্য হয়ে রয়েছে। তবে কি ভুল দেখল আরিফ? কাকে দেখতে পেল সে?

চলবে!

Sort:  
 3 years ago 

গল্পটা বেশ ভালো হবে মনে হচ্ছে। আমরাও তো শীতের সময়ে অনেক পাখি ধরেছি। কিন্তু রাতে কখনো পাখি ধরি নাই। এরা রাতে যে পাখি ধরে এটা আমি এই প্রথম আপনার গল্পে শুনলাম। যাইহোক আপনার পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।

 3 years ago 

আসলে রাতে পাখি শিকারের ব্যপার টা আমিও দেখি নি কোথাও তবে শুনেছি কয়েক জনের কাছ থেকে। গল্প টি যেহেতু পুরোটাই কাল্পনিক তাই কাহিনি কিছুটা ইন্টারেস্টিং করতে দিয়ে দিয়েছি আর কি। ধন্যবাদ ভাই মূল্যবান মন্তব্য করার জন্য।

 3 years ago 

আপনার গল্পটি খুব সুন্দর শুরু হয়েছে ভাইয়া।বেশ জমে উঠবে মনে হচ্ছে।ভুতের গল্প আমি খুবই পছন্দ করি।ভুতের গল্প পড়তে বেশ ভালো লাগে।ভয় ভয় একটা অনুভূতি কাজ করে।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

অনেক ধন্যবাদ আপু মন্তব্য করার জন্য। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 3 years ago 

আপনার গল্পটা পুরোপুরি পড়লাম বেশ ভালই লাগলো। আসলে বিষয়টা সত্যি কিনা জানিনা কেউ যদি আত্মহত্যা করে তাহলে তার আত্মা নাকি আত্মহত্যা করা স্থানের আশ পাশ দিয়ে ঘোরাঘুরি করে। রাতের বেলায় এই সব গল্প পড়লে গাঁ শিউরে ওঠে। সুন্দর গল্প টি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

 3 years ago 

ধন্যবাদ ভাই মতামত করার জন্য।

 3 years ago 

ওয়াও ভাইয়া গল্পটা খুব সুন্দর শুরু করেছেন ।এখনই গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। পরবর্তীতে কি হবে সেই অপেক্ষায় রইলাম। সামনে ভয়ঙ্কর কিছু হবে মনে হচ্ছে। আপনার গল্পের উপস্থাপনা খুব সুন্দর ছিল। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।

 3 years ago 

সত্যি ভাই গল্পটা অনেক ভয়ানক। হাফিজ এবং আরিফ সাহস নিয়ে রাত বারোটার সময় গিয়েছে নদীর ধারে সত্যিই অনেক সাহস ছিল।হ্যাঁ ভাইয়া খুব উত্তেজনা কাজ করছিল যে যাকে দেখলো আরিফ সেই ব্যক্তিটি কে?। অনেক ভালো লাগলো পড়ে।

 3 years ago 

পরের অংশে বিস্তারিত জানতে পারবেন। ধন্যবাদ ভাই,সাথেই থাকবেন।

 3 years ago 

গল্পটা পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আপনি গল্পটা খুবই সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। এই গল্পটা পড়ে হাফিজ এবং আরিফ অনেক সাহজ এটা বুঝলাম, ভুতের গল্প পড়তে আমার একটু ভয় কাজ করে। তার পরেও আপনারা সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার জন্য আমি গল্পটা পড়ে মজা পেয়েছি। ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

ধন্যবাদ ভাই মন্তব্য করার জন্য।

 3 years ago 

গল্পটা আমার কাছে খুব ইন্টারেস্টিং মনে হচ্ছে। তবে আমার কাছে মনে হচ্ছে আরিফ কোন একটা বিপদের মুখে পড়তে যাচ্ছে। তার জন্যই তার এই শেষ দেখাটা ছিল অর্থাৎ শেষে সে যা দেখেছিল তা।
আপনি খুব সুন্দর লিখেছেন। আশা করি সামনে আরও সুন্দর সুন্দর লেখা পাব, ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 3 years ago 

প্রথম পর্বটি পড়েই ভয় পেয়েছি ভাইয়া। কাকে দেখতে পেলো তেতুল তলায় সেটা জানার অপেক্ষায় রইলাম। অনেক সুন্দর ভাবে গল্প লিখতে পারেন আপনি।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে আপু সুন্দর মতামত করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.031
BTC 61092.62
ETH 2666.59
USDT 1.00
SBD 2.62