আসসালামু আলাইকুম এবং শুভ সন্ধ্যা সবাইকে। আশা করি সবাই সাদরেই শীতকাল বরণ করছেন। ইদানিং গ্রামে শীত বেশ ভালই পড়ছে। যদিও ঢাকার ভেতরে সেটা বোঝার খুব একটা উপায় নেই। তাই বুঝি সেটারই জানান দিতে সৃষ্টিকর্তা নগরীর আকাশ আজ মেঘে ঢেকে দিয়েছেন, সাথে বইছে মৃদু ঠাণ্ডা বাতাস। সব মিলে আমার চারপাশে আজ থমথমে একটা পরিবেশ।

আজকের রাত কেমন হবে জানিনা। বিশাল বড় চাঁদ মেঘের আড়াল থেকে উঁকি দিবে কিনা তাও জানিনা। কারণ বহু আকাশচুম্বী দালান এখন আমার আকাশকে ঢেকে রাখে।

আমার বড় ইচ্ছে ছিল একটা রূপালী রাত্তিরে বিশ মাইলের লেকে নৌকা চালাবো আর পাটাতনে শুয়ে শুয়ে আকাশ দেখব। তবে আমার সেই আশাটা এখন দুরাশা। কারণ অমন পরিবেশে যাবার জন্য সঙ্গী সাথীর দরকার হয় যা আমার একেবারেই নেই।

তাই কি আর করা! নিজেকে কল্পনাই সেখানে নিয়ে যাই। গাছের গায়ে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি। পাড় ধরে হেঁটে যাই, নৌকাটা খুঁজে বের করতে। অপেক্ষায় থাকি কখন আগের দলটা তাদের জ্যোৎস্নাস্নান শেষ করবে আর নৌকা নিয়ে তীরে ভিড়বে।

আজ আমার ডিজিটাল আর্টটি আমার সেই কল্পনাকে বাস্তব রূপ দেবার একটা ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। শুরতেই আর্টটি দেখে নেওয়া যাক।

ডিজিটাল আর্টটি যেভাবে এঁকেছি

আমি এই আর্টটি ফোনে এঁকেছি আর বরাবরের মতই ibis paint x এপটি ব্যবহার করেছি। ডিজিটালি ছবি আঁকার জন্য এই এপটা বেশ ভাল। এখানে অনেক বিল্ট ইন ব্রাশ আছে, তাছাড়াও নতুন অনেক ফিচার যোগ করা হয়েছে। সব মিলে এপটি আমার কাছে খুব ফ্লেক্সিবল লাগে।

ধাপ ১
প্রথমে ibis paint x ওপেন করে একটা আর্টবোর্ড নিয়েছি। এরপর লো অপাসিটির ব্রাশ সিলেক্ট করে আর্টবোর্ড এ কালো রঙ দিয়েছি। পুরোটা একদম কালো করিনি কারণ সাদা কালোর একটা ধোঁয়াশা পরিবেশ করতে চেয়েছি।

ধাপ ২
নতুন একটা লেয়ার নিয়ে একটা গাছের শেইপ করেছি আর তাতে কালো রঙ দিয়েছি। শেইপ এঁকে পড়ে রঙ করার জন্য পেইন্ট বাকেট টুল ব্যবহার করেছি।

ধাপ ৩
এই পর্যায়ে গাছের ছোট বড় কিছু শাখা-প্রশাখা এঁকেছি। এই ধাপটা অনেকে স্কিপ করে। কিন্তু এটা করলে পাতার ভেতর দিয়ে ছোট ছোট ডাল দেখা যায় যাতে করে আর্টটি যে কাঁচা হাতের আঁকা সেটা কম বোঝা যায়।

ধাপ ৪
এখানে আমি দুইটি কাজ করেছি। প্রথমে লিফ ব্রশ টুল সিলেক্ট করে গাছে ছোট বড় পাতা এঁকেছি। এরপর অন্য একটি লেয়ার নিয়েছি। সেখানে আমি একটি বড় পূর্ণিমা চাঁদ এঁকেছি। চাঁদের ভেতর হাল্কা কালো ছোপও দিয়েছি যাতে অনেকটা আসল চাঁদের মত লাগে। এরপর লো অপাসিটির একটা ব্রাশ নিয়ে সাদা রঙ দিয়ে চাঁদের চারপাশে উজ্জ্বলতা দিয়েছি। আর সবশেষে লেয়ারটিকে গাছের লেয়ারের নিচে রেখেছি যাতে মনে হয় যে গাছের ফাঁক দিয়ে চাঁদ দেখা যাচ্ছে।

ধাপ ৫
গাছের লেয়ারের নিচে একটা লেয়ার নিয়ে তাতে লেকের অন্য পাড় এঁকেছি। লেকটা বেশ বড় তাই সেটা ঝাপসা দেখা যাবে।

ধাপ ৬
লেকের এই ধারটা এঁকেছি। পাড় বোঝাতে কিছু ঘাস ব্যবহার করেছি। এছাড়াও দুই ধারের মাঝে পানি এঁকেছি। সেই পানিতে চারপাশের জমাটবাঁধা অন্ধকার আর উজ্জ্বল চাঁদের প্রতিচ্ছবি পড়েছে।

ধাপ ৭
ছবিটিকে png ফরম্যাটে গ্যালারিতে সেইভ করে নিলাম।

এটাই ছিল আমার রূপালী রাত্রি এর একটা কল্পনাচিত্র। আশা করি সবার ভালো লেগেছে।

ধন্যবাদ

@kitki