৩১ এর রাত ও বর্ষবরণ || 10% beneficiary @shy-fox
আসসালামু আলাইকুম। শুভ দুপুর সবাইকে। এর সাথে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানাই। পুরনো জরা-জীর্ণতা কাটিয়ে নতুন বছর যেন সবার জীবনে সুখ বয়ে আনে সেই প্রত্যাশা করি।
ক্লাস, টিউটোরিয়াল, প্রজেক্ট, এসাইনমেন্ট এর কারণে জীবন যখন জরাগ্রস্থ, ঠিক তখনই নতুন বছর দ্বারে এসে কড়া নাড়ল। ভেবেছিলাম এবার আর বর্ষবরণ হবে না। তাই আমার কাছে এবারের বর্ষবরণটা মেসেঞ্জারে সবাইকে "হ্যাপি নিউ ইয়ার" বলার মাঝেই সীমাবদ্ধ ছিল। তবে ক্যালেন্ডারে দেখলাম পহেলা জানুয়ারি শনিবার। মানে ক্লাস ছুটি! প্ল্যান করলাম বন্ধুরা মিলে একটা ক্যাম্পাস টুর দিব।
কিন্তু সেদিন রাতে ঘটল এক ঘটনা। কিচেনে যাচ্ছিলাম। তখন দেখি সনাতন নিয়মে রাজ-রাজারা যেভাবে ঢোল পিটিয়ে ঘোষণা দিত, আমাদের হলের ৪৫ এর আপুরা থালা-বাটি আর ঘন্টি নিয়ে সেইভাবে ঘোষণা দিচ্ছে। প্রথমে কিছু বুঝিনি। পরে শুনতে পেলাম হলে এবার ৩১ এর রাত ও বর্ষবরণ করা হবে। প্রতিবারের মত বিদায়ী ব্যাচ আয়োজন করবে।
ক্যাম্পফায়ার করা হবে আর সাথে অনেক কিছু। উপরের ছবিটা দেখে নিশ্চয়ই আন্দাজ করে ফেলেছেন। হ্যা ডি জে নাইট। সময় রাত ১০ টা। প্রতিবারের মত বি ব্লকের মাঠে আমার রুমের একদম সামনে আয়োজন করা হবে। তাই আমার আর ১০টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়নি।
এই যে দুইজন দাঁড়িয়ে আছে আমার রুমের একদম সামনে। সারারাত ঘুমাতে পারবো না এই জন্য একটু খারাপ লাগছিল (শীতের রাতে আমার কাছে ঘুমের উপরে আর কিছু নেই)। বিশাল সাইজের এই দুইটা স্পিকার যখন বাজতে থাকে তখন আমার রুমের জানালার কাঁচের মত আমার হৃদযন্ত্রটাও কাঁপতে থাকে।
খুব বেশি কিছু ডেকোরেশন করা হয়নি। তারই কিছু অংশ আমার দ্বার থেকে দেখা যায়। ছবিটা তোলার সময় ভাবছিলাম একটু পরেই চত্বরের এই অংশ লোকে ভরে যাবে। (প্লিজ ইগ্নোর দ্যা ব্যাকগ্রাউন্ড। ছুটির দিন থাকায় সবাই কাপড় ধুয়েছে)
স্মৃতি ধরে রাখার জন্য সোডিয়াম বাতির নিচে এই সব ফ্রেমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একটু পর এখানে তিল ধারণের জায়গা হবে না। তাই আগে আগেই ছবি তুলতে চলে গিয়েছিলাম।
প্রিটি গার্লস অব প্রীতিলতা হল। এটা এই হলের একটা ট্যাগ হয়ে গিয়েছে। বলতে দ্বিধা নেই, এই ফ্রেমেই সব চেয়ে বেশি ছবি তোলা হবে।
ছবি তোলার পর্ব ৮ টার মধ্যে শেষ করি, এরপর সবাই মিলে ক্যান্টিনে খাবার খেতে যাই। কিছুক্ষণ সবার সাথে আড্ডা দিয়ে টিউশনে যাই ৯ টায়। আমি শুধু স্পিকারের সাউন্ড শোনার অপেক্ষায় ছিলাম। যেই সাউন্ড শুনব স্টুডেন্টকে ছুটি দিয়ে দিব। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে ১০ঃ৩০ টার পর শুরু হয় সব কিছু।
কিন্তু আমার হুট করে খারাপ লাগা শুরু হল। যেটা ভয় পাচ্ছিলাম। স্পিকারের সাউন্ড নিতে পারছিলাম না। তাই বেশি সময় ওখানে থাকিনি। রুমে এসে দরজা- জানলা অফ করে দিয়ে সাউন্ড প্রুফ হবার চেষ্টা করেছি। কিন্তু নগর পুড়লে দেবালয় কি এড়ায়? আধ মাইল দূর থেকে যখন সাউন্ড শোনা যায়, তখন ১০ পা দূরে কেন শোনা যাবে না?
ব্যাড লাক। সব কিছু মিস করি। বাকি সব বাদ দিলেও ক্যাম্পফায়ার আর ফানুস ওড়ানো বাদ দিতে পারিনা। আর একটা ছবিও তুলতে পারিনি, কারণ ডিজে নাইটের মাঝে এসব করা হয়েছে। তখন ছবি তোলা নিষিদ্ধ।
আজ যখন মাঠের দিকে তাকালাম, তখন দেখি একটু খানি পোড়া ঘাসের উপর কয়লা পড়ে আছে। (ছবি তুলতে তুলতে দুপুর হয়ে গিয়েছে। কারণ কাল অনেক রাত অবধি জেগে ছিলাম। ঘুম পাচ্ছিল, তবু জেগে ছিলাম। কারণ হুট করে জোড়াল শব্দে চমকে গিয়ে ঘুম ভাঙ্গাতে চেয়েছিলাম না। তবুও এক সময় ঘুমিয়ে পড়েছিলাম আর জানাও হয়নি স্পিকার কখন অফ হয়েছিল।)
যাই হোক তবুও আফসোস নেই। কারণ অনেক দিন পর সেই সব বন্ধুদের এক সাথে পেয়েছি যাদের সাথে ১টা বছর গণরুমে কাটিয়েছি।
ক্যাটাগরি | স্পেসিফিকেশন |
---|---|
ডিভাইস | রিয়েল মি ৮ ৫জি |
লোকেশন | জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় |
নতুন বছর সবার ভাল কাটুক, এই কামনায়
@kitki
যেখানে কোন কিছু পাওয়ার কোনো আস্থাই ছিল না। আর সেখানে যদি এত বড় একটা সারপ্রাইজ হয় সেটা আসলে বিশাল বড় ব্যাপার। আর বিদায় ব্যাচের বর্ষবরণ উপলক্ষে যে আয়োজন করেছেন সেটি ছিল মনমুগ্ধকর। তবে আপনার ক্যাম্পাসের ফটোগ্রাফি গুলো অসাধারন ছিল যা সত্যিই ভালো লেগেছে। আপনার বর্ষবরণের বিষয়গুলো সত্যি গল্পের মতো ফুটে উঠেছে। আমাদের সাথে এত সুন্দর করে শেয়ার করার জন্য আপনার প্রতি রইল আন্তরিক শুভেচ্ছা।
ধন্যবাদ ভাইয়া। আপনাকে নববর্ষের শুভেচ্ছা।
আপনার উপস্থাপনা টি সত্যি অনেক ভালো ছিল কিন্তু আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির কিছু নিয়মকানুন রয়েছে। আপনাকে ছবি ব্যবহার করতে গেলে অবশ্যই আপনার ফোনের ডিভাইস এবং লোকেশন আপনাকে ব্যবহার করতে হবে। আপনি লেভেল থ্রী উত্তীর্ণ করেছেন কিন্তু আপনি অনেক বেশি বিষয়গুলো আপনার পোষ্টের মাধ্যমে তুলে ধরছেন না। বিষয় গুলো লক্ষ রাখবেন।
ধন্যবাদ ভাইয়া ভুলগুলো ধরিয়ে দেওয়ার জন্য। পোস্ট আপডেট করে এড করেছি। ভবিষ্যৎ পোস্টগুলোতে আর মিস হবে না।