শীতের রাতে অ্যাডভেঞ্চার
নমস্কার বন্ধুরা,
মাঝেমধ্যে আমার খুব ইচ্ছে করে নতুন নতুন অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করার। সত্যি কথা বলতে নতুন অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে কার না ভালো লাগে বলুন তো। আদপে প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই একটা অ্যাডভেঞ্চারাস অংশ লুকিয়ে থাকে যা অনেকে প্রকাশ্যে আনেন অনেকে সেটা প্রকাশ্যে আনতেই ভয় পান। অনেকের আবার নতুন এডভেঞ্চার করতেই ভয় লাগে। যদিও সেসব মানুষের সংখ্যা হয়তো হাতে গুনলেই শেষ হয়ে যাবে। আমি প্রথম দলের মানুষ হলেও কাজকর্মের সুবাদে খুব একটা ফাঁকা সময় হাতে পাই না তাই যখনই সুযোগ পাই এদিক ওদিক ছুটে যাই। আর নতুন কোনো অ্যাডভেঞ্চারের বিষয়টাই আলাদা।
কদিন আগে সেরকমই হঠাৎ সুযোগ এলো এক নতুন এডভেঞ্চারে যাওয়ার। এডভেঞ্চার বলতে তেমন কিছু নয়, সর্ষে চাষের জন্য জমিতে দিন রাত এক করে জল দেওয়া শুরু হয়েছে। টানা তিন দিন সারা রাত জল চলেছে আরো নাকি দিন দুয়েক চললে তবেই জমিতে জলের ঘাটতি মেটানো যাবে। তা যাদের জমিতে জল দেওয়া হচ্ছিলো সে সন্ধ্যাবেলায় বাড়ি ঢোকার সময়ে আমাকে দেখতে পেয়ে বললো যে রাতে জলের মটরে ডিজেল ভরতে যাবো সেখানে যাব কিনা। নতুন এডভেঞ্চারের গন্ধ পেয়েই আমি এক পায়ে রাজি। রাতে যাওয়ার সম্মতি জানিয়ে বাড়িতে ঢুকে পড়লাম।
মাঠে যাবো বলে আগে থেকেই জামা কাপড় এঁটে বসে ছিলাম ফোন আসা মাত্র বেরিয়ে পড়বো আরকি 😁। রাত নটা বাজতেই যাওয়ার ফোন এলো। ফোন কেটে ঝটপট করে এক হাতে টর্চ আরেক হাতে লাঠি নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। বেরিয়ে দেখি চারিদিকে কুয়াশায় ঢেকে গিয়েছে। দুজন হাতে লাঠি আর টর্চ নিয়ে হাটা দিলাম মাঠের দিকে।
মাঠে নেমেই টর্চ জ্বালিয়ে দিলাম। কিলোমিটার দেড়েক দূরে অন্ধকারে মোটর চলছে। হাঁটতে হাঁটতে মোটরের কাছে পৌঁছে গেলাম। মোটরে তেলের ট্যাংক খুলে দেখা গেলো তখন বেশ কিছুটা তেল আছে তবে যেহেতু সকাল অবধি চলার মতো তেল রাখতে হবে তাই ট্যাংকটা ডিজেল ভরিয়ে দেওয়া হলো।
মোটরে ডিজেল ভরতে বেশ কিছুটা সময় লাগলো বটে। আদপে ফানেল না নিয়ে গিয়ে আরো বেশি সময় লেগে গেলো। তেল ভরে তারপর জল দেওয়া চলছিলো সে জমিতে চলে যাওয়া হলো সেখানে গিয়ে জলে পাইপ গুলোকে ঠিকঠাক করে আবার ফেরার রাস্তা ধরা হলো।
কিছু বুঝে ওঠার আগেই সব কাজ শেষ হয়ে গেলো। কাজ শেষে অ্যাডভেঞ্চার কতটা হলো সেটা বুঝতেও পারলাম না তবে একটা জিনিস নিশ্চিত ভাবেই হয়েছে সেটা হলো আমার ভয়ানক ঠান্ডা লেগে গেলো। হেঁটে হেঁটে বাড়ি পৌঁছতে পৌঁছতে নাক দিয়ে গড়গড় করে জল বইতে শুরু করে দিলো। বুঝতে পারলাম যে আর রক্ষে নেই। নির্ঘাত শয্যাশায়ী হবো। কি আর করার। অ্যাডভেঞ্চারের মূল্য তো কোনোভাবে তো দিতেই হতো।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
হা হা 😄
এই অ্যাডভেঞ্চারের চক্করে মনে হয় এবার ঠান্ডা আবারো লেগে যাবে আপনার। তবুও বলবো মাঝে মাঝেই এভাবে সাহস করে বেরিয়ে পরা উচিত, এতে ভালোই লাগে। কুয়াশার মধ্যে আলো পরাতে চারিদিক বেশ অদ্ভুত দেখাচ্ছিলো। যাক আপনার অ্যাডভেঞ্চার ভালো লেগেছে আমার কাছে।
ঠান্ডা আর লাগেনি ইমরান দা। বেঁচে গেলাম এই বার। রাতে আর বেরব না। বেশ ভয় পেলাম সেদিন।
আহা গ্রামের দিনগুলির কথা মনে পড়ল দাদা।আমরা এমন মেশিন ঘরে বসে মেশিন পাহারা দিতাম।সারা রাত ভয়ে ভয়ে কাটানো। আপনার পোস্ট দেখে সেই দিন গুলো মনে পড়ল।দারুন লাগল আপনার অ্যাডভেঞ্চার। ধন্যবাদ দাদা পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।
ঠান্ডার এডভেঞ্চার। পুরো জমে গেছিলাম সেদিন।
হাহাহা, দাদা আমি তো ভাবলাম এডভেঞ্চারের মাঝে কোন ভুতের দেখা পেলেন নাকি। যেভাবে শুরু করেছেন সর্ষের মধ্যেই ভূত ভেবেছিলাম। কিন্তু পরে যে ঠান্ডার ভুত ধরে গেল তা তো বুঝলাম,🤣🤣।যাইহোক রাতের বেলার এমন একটা মুহূর্ত আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন দেখে ভালো লাগলো। আপনার সুস্থতা কামনা করছি।
ভূতের দেখা পাওয়া গেলো না। যদিও পাইনি সেটাও খুবই ভালো।
ভোগান্তি পোহাতে হলো না আর। বেঁচে গেলাম এ যাত্রায়।