টিভি সিরিজ : দ্য উইচার - ডিয়ার ফ্রেন্ড
নমস্কার বন্ধুরা,
সবাই কেমন আছেন? আশা করছি ঈশ্বরের কৃপায় আপনারা সকলেই সুস্থ। আপনাদের আশীর্বাদ এবং ভালোবাসায় আমি ভালোই আছি। আজ আপনাদের সাথে আমি নেটফ্লিক্সের দ্য উইচারের টিভি সিরিজের দ্বিতীয় সিজনের ষষ্ঠ এপিসোডটির রিভিউ নিয়ে হাজির হলাম।
দ্য উইচার সিরিজটি পোল্যান্ডের উপন্যাসিক আন্দ্রেজ সাপকোস্কির দ্য উইচার নামক উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে তৈরী হয়েছে। দ্য উইচার মধ্যযুগীয় প্রেক্ষাপটের উপর দ্য কন্টিনেন্ট নামক জায়গায়, যেখানে জেরাল্ট দ্য উইচার অফ রিভিয়া, প্রিন্সেস সিরিলা ও ইয়েনেফার অফ ভেঙ্গাবার্গ হলো মূল চরিত্র।
জেরাল্ট ও সিরি সিনট্রার মনোলিথ থেকে পালিয়ে যাওয়া চেরনোবগ মনস্টারকে শিকার করতে যায়। জঙ্গলের মাঝে এক লেকের পাড়ে সিরিকে রোচের পিঠে বসিয়ে নিজে লেকের মধ্যে গিয়ে দাড়ায়। কিছুক্ষনের মধ্যে চেরনোবগ আক্রমণ করে। কিন্তু জেরাল্ট চেরনোবগকে মারতে ব্যর্থ হয়, সেটি তখন রোচকে আক্রমণ করে সিরিকে মাটিতে ফেলে দেয়।
রোচ মারাত্মকভাবে আহত হলে জেরাল্ট তাকে কষ্ট থেকে মুক্তি দেয়। তারপর জেরাল্ট চেরনোবগকে মারতে ফাঁদ পাতে, সিরিকে একটি পাথরের উপরে দাড় করিয়ে দেয়। চেরনোবগ যখন সিরির দিকে আক্রমণ করতে আসে ঠিক তখনই জেরাল্ট আচমকা সেখানে উপস্থিত হয়ে জন্তুটিকে হত্যা করে ফেলে।
কের মরহেনে ভেসেমির ও ট্রিস নিজেদের মধ্যে সিরির মিউটাজেন রক্ত নিয়ে আলোচনা করছিলো। ঠিক তখন ভেসেমিরের গলার উইচারদের মালা তাকে অন্য কারো উপস্থিতি সম্পর্কে সতর্ক করে। হঠাৎ, রিয়েন্স সেখানে উপস্থিত হয়। রিয়েন্স ট্রিসকে আগুনের বলয়ের মধ্যে আটকে দিয়ে মিউটাজেনের শিশি চুরি করে এক পোর্টাল বানিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
ফ্রিঞ্জিলা ও ফ্রান্সেসকা বাগানে হেঁটে বেড়ানোর সময় ফ্রান্সেসকা একটি মৃত ফুলের প্রাণ ফিরিয়ে আনে। ফ্রান্সেসকা গল্প করে যে যখন সে ছোটো ছিলো তখন তার সবচেয়ে প্রিয় কাজ ছিলো তার মায়ের সাথে ফুল তোলা। ফ্রান্সেসকা ফ্রিঞ্জিলাকে জিজ্ঞেস করে কাহিরের আশেপাশে থাকলে ফ্রিঞ্জিলা কেন আলাদা আচরণ করে। ফ্রান্সেসকা ফ্রিঙ্গিলাকে বলে যে কাহির আর ক্ষমতায় নেই তাই তাকে তার গুরুত্ব চিনিয়ে দেওয়া উচিত। ঠিক সেসময় কাহির সেখানে আসে, কাহিরকে দেখে ফ্রান্সেসকা দুর্গের দিকে ফিরে যায়। কাহির বলে যে সে বুঝতে পারে যুদ্ধের সময় ফ্রিঙ্গিলাকে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে, কিন্তু সে নিশ্চই হোয়াইট ফ্লেমের মিশন ত্যাগ করেনি। তাই এখন সময় এসেছে তাদের ফিরে পুরনো মিশনে ফিরে যাওয়ার।
চেরনোবগ জন্তু টিকে হত্যা করার পর জেরাল্ট ও সিরি হাঁটতে হাঁটতে মেলিটেলের মন্দিরে পৌঁছান। জেরাল্ট গল্প করে ভেসেমির তাকে সাইন শিখতে এখানেই পাঠিয়েছিলো। সিরির সাথে জেরাল্ট গল্প করতে করতে সেখানে মন্দিরের প্রধান নেনেকে সেখানে আসেন, নেনেকে দুজনকে অভ্যর্থনা জানিয়ে সিরিকে নিয়ে তার অফিসে যান। যেখানে সিরিকে শক্তি নিয়ন্ত্রণ করতে শিখিয়ে দেওয়ার কথা বলেন। সিরি তাতে প্রস্তুত হয়ে যায়। নেনেকে তখন সিরিকে সাহায্য করার জন্য তার মন্দিরের সেরা ছাত্রদের মধ্যে জার নামের একজনের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।
এক সরাইখানায় বসে রিয়েন্স লিডিয়াকে বলে যে তার কাছে সিরির রক্তের একটি শিশি আছে। রিয়েন্স শর্ত রাখে লিডিয়া যদি তার নিয়োগকর্তার সাথে দেখা করিয়ে দেয় তাহলেই সে তাকে শিশিটা দেবে।
ইস্ট্রেড কিছু তথ্যের খোঁজে ইতিহাসবিদ কডরিংগার ও ফেনের কাছে যায়। ইস্ট্রেড জানতে চায় নিলফগার্ডের সাথে একজন উইচার, একটি মনোলিথ ও একটি রহস্যময় মেয়ের কী সম্পর্ক আছে। ইস্ট্রেড তাদেরকে অর্থ প্রদান করলে, কড্রিংগার ও ফেন উত্তর দেয় যে মেয়েটির নাম সিনট্রার সিরিলা।
জার সিরিকে লাইব্রেরিতে পড়াশোনার জন্য কিছু বইপত্র দেয়। এসবই, ইয়েনেফার দূর থেকে পর্যবেক্ষণ করে। যদিও ইয়েনেফার অন্যমনস্ক হয়ে সিরিকে সে হারিয়ে ফেলে তখন উপায় না দেখে অজান্তেই জেরাল্টের ঘরে ঢুকে যায়। কিছু পরে সেই ঘরে সিরিও উপস্থিত হয়। জেরাল্ট ইয়েনেফারের সাথে সিরির পরিচয় করিয়ে দেয়। তারপর ইয়েনেফার জেরাল্টকে বলে, অক্সেনফর্টে জাস্কিয়ারের সাথে তার দেখা হয়েছিলো। সেখানে ফায়ার ম্যাজিক ব্যবহার করা এক জাদুকরের সাথেও তাদের দেখা হয়েছিল যে কিনা জেরাল্ট ও সিরিকে খুঁজছিল।
ইসট্রেড কডরিংগার ও ফেনকে বলে যে সে সিনট্রান বংশের রেকর্ডে লেইশারাথার্দলার নামের এক জিন দেখতে পাচ্ছে যার কথা সে আগে শোনেনি, যে জিন বেশিরভাগ মহিলাদের মধ্যেই আছে। কডরিংগার তখন একটি কাগজ তুলে ধরলে ফেন পড়তে শুরু করেন, "যখন মানুষ তাদের সংখ্যাবৃদ্ধি করে এলভসদের আক্রমণ করেছিল, তখন এলভরা মানুষদের ধ্বংস করার জন্য একটি যোদ্ধা তৈরি করেছিল।"
সিরি লাইব্রেরিতে গেলে মেঝেতে রক্ত মাখা একটা ইতিহাসের বই দেখতে পায়। রক্তের ফোঁটা অনুসরণ করে সিরি জারের কাছে পৌঁছায়, যে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। সেখানে রিয়েন্স সিরির আগুনের মধ্যে আটক করে ফেলে তারপর জেরাল্ট ও ইয়েনেফার হস্তক্ষেপ করে সিরিকে আগুন থেকে মুক্ত করে।
জেরাল্ট সিরির আক্রমণকারীদের সাথে লড়াই শুরু করে দেয় তখন সিরি এবং ইয়েনেফার নিজেদের একটি ঘরে তালাবদ্ধ করে। দরজার অন্য পাশ থেকে রিয়েন্স আগুন দিয়ে গলিয়ে দরজা খোলার চেষ্টা করে। ঘরে থাকা অরবুকুলাম বল সিরির জাদু অনুভব করে জ্বলজ্বল করে ওঠে। ইয়েনেফার সিরিকে পোর্টাল বানাতে শিখিয়ে দেয়।
জেরাল্ট পিছন থেকে ইয়েনেফারকে থামতে বলে, কিন্তু ইয়েনেফার তাকে বলে যে 'সে থামতে পারবে না', এই বলে পোর্টালের দিয়ে ইয়েনেফার সিরিকে নিয়ে পালিয়ে যায়।
রোমাঞ্চ নিয়ে আমার ভালোবাসা সম্পর্কে আলাদা করে বলার নেই। রোমাঞ্চ আমার বরাবরই খুব পছন্দের। "দ্য উইচার" সিরিজের প্রথম সিজন দেখার পর আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম দ্বিতীয় সিজনের জন্য। আর দ্বিতীয় সিজন দেখতে শুরু করার পর আমি মোটেই নিরাশ হইনি। চরিত্র নির্বাচন, সিনেমাটোগ্রাফি, গল্প সব গুলো দিক থেকেই দ্বিতীয় সিজন প্রথম সিজনের মতোই অসাধারণ।
ষষ্ঠ পর্বের শুরুতেই দেখি জেরাল্ট ও সিরির সাহায্য নিয়ে চেরনোবগ মনস্টারকে মারতে সমর্থ হয়। যদিও তার আগে চেরনোবগ মনস্টার জেরাল্টের ঘোড়া রোচকে মেরে ফেলে।
কের মরহেনে রিয়েন্স ভেসেমির আর ট্রিসকে আক্রমণ করে, ভেসেমিরকে আহত করে সিরির রক্ত নিয়ে পালাতে সমর্থ হয়।
ইস্ট্রেড সিরির সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করতে দুই ইতিহাসবিদের কাছে যায়, সেখানে জানতে পারে সিরির রক্তে এলভান জিন আছে।
মেলিটেলের মন্দিরে জেরাল্ট ও সিরির সাথে ইয়েনেফারের দেখা হয়। মন্দিরে রিয়েন্স সিরিকে অপহরণ করতে আসলে জেরাল্ট তাদেরকে পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দেয়। যদিও সেই সুযোগে ইয়েনেফার সিরিকে নিয়ে পালিয়ে যায়।
পরের এপিসোডের জন্য অপেক্ষা করছি, দেখা যাক জেরাল্ট কি করে। আর সিরিকে নিয়ে ইয়েনেফারের পরিকল্পনা আদৌ কি?
পরিচালনা | ৯ |
কাহিনী | ৯.৫ |
অভিনয় | ৮ |
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
মারাত্মক একটি সিরিজ।যেমন মজা তেমন একশন।সব থেকে ভাল লাগে ইয়েনিফার এর বিকৃত অবস্থা থেকে সুন্দরী হয়ে ওঠা আর হেনরি কেভিল উইচার এর চরিত্রে দুর্দান্ত করেছে।
সেটা প্রথম সিজনেই হয়েছে। আমি তো পরের সিজন গুলোর জন্য অপেক্ষা করছি।
এই সিরিজের প্রথম সিজন দেখতে আমার কিছুটা দেরি হলেও দ্বিতীয় সিজন বেরোনোর সাথে সাথেই দেখে নিয়েছিলাম ওই দিনই। তবে সত্যি কথা বলতে দ্বিতীয় সিজনটা আমার কাছে অত বেশি ভালো লাগেনি। ক্যারেক্টার গুলো কেমন যেন প্যাঁচানো ঘোঁচানো। তোমার নিখুঁত বর্ণনা দেওয়া দেখে মনে হচ্ছে খুব মনোযোগ দিয়ে দেখেছে তুমি নির্মাল্য দা।
গল্পের বইগুলো যে ওই রকমই প্যাঁচালো। আমার তো দারুন লাগছে। খিক খিক
টিভি সিরিজ : দ্য উইচার - ডিয়ার ফ্রেন্ড এর রিভিউটি পড়ে মনে হচ্ছে একটি রোমাঞ্চকর টিভি সিরিজ। আর রোমাঞ্চকর টিভি সিরিজ গুলোর রিভিউ পড়তে আবার খুবই ভালো লাগে।চেরনোবগ জন্তু টিকে হত্যা করার বিষয়টি আমার কাছে খুবই রোমাঞ্চকর মনে হয়েছে। অসাধারণ একটি টিভি সিরিজ এর রিভিউ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
হ্যাঁ। খুবই রোমাঞ্চকর। আপনি দেখুন দারুন লাগবে।