কপালে যখন দুর্ভোগ
নমস্কার বন্ধুরা,
দুর্ভোগ কি বলে কয়ে আসে। দুর্ভোগ মানুষের জীবনে যেকোনো সময়, যেকোনো পরিস্থিতিতে চলে আসতে পারে। আমার ক্ষেত্রে সেরকমই হলো। আমি কল্পনাতেও ভাবিনি যে এইভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হতে পারে তবে ভাগ্যে যা থাকে তাই তো হয়।
বেশি হেঁয়ালি না করে খোলসা করেই বলি। প্রায় মাসে আমাকে কলকাতা যেতে হয়, মূলত বিভিন্ন কাজকর্ম নিয়েই। শেষ গিয়েছিলাম নভেম্বর মাসে তারপর আবার কলকাতা যাওয়ার প্রয়োজন হয়ে পড়লো। যেহেতু এবার কলকাতা যাওয়ার বিষয়টা আগে থেকেই ঠিক ছিলো তাই ফের ভোরের ট্রেনের টিকিট কেটে ফেললাম। গত বার যখন কলকাতা গিয়েছিলাম তখন পূর্ব পরিকল্পনা মতো একটি টোটো ভাড়া করা হয়েছিল সেজন্য ভোরে স্টেশন পৌঁছতে বিশেষ বেগ পেতে হয়নি। এইবার যেহেতু আমি একা ছিলাম তাই ভোরের বেলার বাসে চেপে স্টেশন যাওয়াটাই ঠিক মনে করলাম। আর সেখানেই আমার দুর্ভোগের সূত্রপাত।
সব ঠিকই ছিলো এমনকি বাসের টিকিট কন্ডাক্টরের সাথেও কথা বলে রেখেছিলাম। ভোরের ট্রেন তাই আমি একটু আগেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম ফল স্বরূপ খুব সহজে ভোর সাড়ে চারটার সময় আমার ঘুম ভেঙে যায়। বিগত কদিন ধরে যে পরিমাণে ঠান্ডা পড়েছিল আমি রাত্রে ঘুমানোর সময় ভয়ে ছিলাম যে ঘুম থেকে আদৌ উঠতে পারব কিনা কিন্তু সেরমটা মোটেই হয়নি। ঘুম থেকে উঠেই ঝটপট করে ফ্রেশ হয়ে গরম জামা কাপড় ভালো করে গায়ে আটোসাটা করে জড়িয়ে বেরিয়ে পড়লাম। ঘড়িতে তখন বাজে পাঁচটা দশ। অন্ধকারের মধ্যে দিয়ে বাসস্টপের দিকে হেঁটে হেঁটে চলে গেলাম। মিথ্যে বলবো না, ভয় লাগছিল তবে কলকাতা যাওয়ার তারা ছিলো। ভয় কাটিয়ে যথা সময়ে বাসস্টপে পৌঁছে গেলাম। শুরু হলো অপেক্ষার পালা।
শীতের ভোর, রাস্তা অন্ধকার। জন মানুষের দেখা নেই। শুধু রাস্তার পাশে কয়েকটা ইলেকট্রিসিটি পোলে আলো ঝুলছে। ঠান্ডা সহ্য করতে না পেরে পকেটে হাত ঢুকিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। মাঝে একটা টোটো আমার যাত্রার উল্টোদিকে মাছ নিয়ে চলে গেলো। দেখতে দেখতে বেশ কিছুটা সময় পেরিয়ে গেলো কিন্তু বাসের পাত্তা নেই। শীতের দিন বলে খুব একটা তেমন গা করিনি।
মিনিট ১৫ পেরিয়ে যেতেই চিন্তা হতে শুরু হলো। আমি ঘড়ি চেক করলাম তখন বাজে ভোর পাঁচটা আটাশ। অথচ গাড়ির দেখা নেই। ভাবলাম যেহেতু খুব ঠান্ডা তাই হয়তো গাড়ি ধীরে ধীরে আসছে। আরো পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করলাম। নাহ গাড়ির তবুও দেখা নেই। বাধ্য হয়ে বাস কন্ডাক্টরকে ফোন করে বাস কতদূর জিজ্ঞেস করলাম। ওইপার থেকে ভেসে এলো, "দাদা আজ তো সাঁওতালদের ডাকা বনধ রয়েছে আজকে তো কোনো গাড়ি ঘোড়া চলবে না"।
আমার মাথায় বাজ ভেঙে পড়ল। তখন আর কিছুই করার নেই। সকালবেলা ঘুম থেকে ঠান্ডার মধ্যে এতো পরিশ্রম করে উঠে এলাম, সব প্ল্যান ভেস্তে গেলো। উপায় না পেয়ে গুটি গুটি ফের বাড়ির পথ ধরলাম। মাথায় ঘুরতে থাকলো, যদি ভাগ্যে দুর্ভোগ থাকে তাহলে সেটা কেউ আটকাতে পারবে না। কি আর করা মুখ কাচুমাচু করে বাড়িতে এসে ফের লেপের তলায় ঢুকে পড়লাম।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
খুবই দুঃখজনক এত ঠান্ডায় এত ভোরে বেরিয়ে শেষে কাজটাই মিটলো না । তাও বাড়ি গিয়ে ভালো করে ঘুমাতে পারলেন এই ঠান্ডায় 😁।
ভোরের বেলায় লেপের তলা যেন মাখন। আহা। গায়ে লেপ দিতেই ঘুম। 🤣🤣🤣
😂😂😂
ভালো তো দাদা শীতের সময় ভোরে হাটাহাটি করতে কেমন লাগে তার একটা অভিজ্ঞতা হলো😜।যা ঠান্ডা পরেছে এর মাঝে বের হওয়া খুব কষ্টকর তার উপর যদি বাস আসার কথা বলে বাস ধোঁকা কেমন লাগে।আসলে কপালের দূর্দশা থাকলে আর কে আটকাবে।ধন্যবাদ
ভোরের বেলা হলে সমস্যা ছিলো না। ভয়াবহ ঠান্ডা। আর জোরে জোরে হাওয়া চলছে।
বাসের লোক গুলোকে হাতের নাগালে পেলে হয়।
দাদা যে কি বলেন। আগের রাতে নিউজ দেখলেই তো সব ঝামেলা শেষ হয়ে যেত। আর কপালে দূর্ভোগ থাকলে কার বাবার সাধ্যি আছে যে, রক্ষা পাবে। আর হাটাহাটি করা তো খারাপ কিছু না। এতে করে বডি ফিটনেস বাড়ে বৈ কি কমে তো না। তা না হলে তো আবার গার্লফ্রেন্ড পছন্দ করবে না।
নিউজে বিশেষ দেখাইনি। তাই আরো সমস্যা হলো। একদিন হুট করে ভোরে উঠলে শরীর ভালো হবে কি? 😁
ভোর পাঁচটার সময় বাইরে বেরিয়ে যার ভয় লাগে সে তো প্রচন্ড পরিমানে ভীতু। আমি তো কুকুরের ভয় ছাড়া আর কোন কিছুর ভয় পাই না।তবে তোমাদের ওই দিকটার রাস্তা কি এতটাই শান্ত যে একটা টোটো পর্যন্ত পাওয়া গেল না এত সকালে। শুধু শুধু ট্রেনের টিকিটের টাকাটা নষ্ট হল তোমার, কলকাতা আর আসতে পারলে না।
আমার আবার কুকুরের ভয় আর লাগে না। 🤣
আর বলো না, টোটো বলে রাখলেই হতো। শেষে টাকাটা জলাঞ্জলি গেলো।
যদি এতই দুর্ভোগ লেখা ছিল তাহলে এই দুর্ভোগটা যদি আগে কল করে জানিয়ে দিত আজকে গাড়ি আসবে না কলকাতা যাওয়া হবে না তাহলে তো ভালোই হতো। লেপের তলা থেকে আর ওঠা লাগত না কষ্ট করে। যাই হোক পুরো কাহিনী শুনে খুবই খারাপ লাগলো, দাদা।যখন ভাগ্য খারাপ হয় তখন হয়তোবা সবদিক থেকেই খারাপ হয়ে যায়।