রক্ষা কালী মায়ের মেলায় ঘোরাঘুরি (অন্তিম পর্ব)

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

নমস্কার বন্ধুরা,

মেলায় যাবো অথচ নাগরদোলা দেখবো না তা কখনো হয়। আসলে যেকোনো দলে কিছু না কিছু সংখ্যক মানুষ থাকেই যারা নাগরদোলা খুবই ভালোবাসে আর তারাই মেলার রাইড গুলো খুঁজে বের করে ফেলে। জানিনা তাদের জীবনে এত পরিমাণে সাহস কোথ থেকে আসে যে তারা নাগরদোলা দেখলেই চড়ার জন্য দৌড়ে দৌড়ে যায়। আমাদের সাথেও তার ব্যাতিক্রম নয়। দলের মাত্র একজন নাগরদোলায় চড়তে প্রচন্ড ভালোবাসে। জিলিপি খাওয়া শেষ করেই সে দৌড় মারলো নাগরদোলার পানে। তাকে বারবার বলছিলাম যে এখন নাগরদোলা চড়লে বমি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। শেষে এও ভয় দেখালাম, কিছু হলেই নাগরদোলা লোকেরা তাকে দিয়েই নাগরদোলা পরিষ্কার করাবে কিন্তু কার কথা কে শোনে।

20230122_180353_HDR_copy_1209x907.jpeg

যাক আমরা চলে গেলাম তখন মেলার অন্তিম প্রান্তে, যেখানে বিভিন্ন রাইড গুলো ছিলো। যদিও আমি নাগরদোলা চড়ি না তবুও তার সাথে যেতেই হলো। আমরা বাকিরা নাগরদোলা থেকে দূরে থাকলেও সে একাই নাগরদোলাতে চড়ে বসলো। নাগরদোলা ভরতে বেশ কিছুটা সময় লাগায় নাগরদোলার নীচে দাঁড়িয়ে ভাবলাম যে এই ফাঁকে মেলার এ দিকটা ঢু মেরে নেওয়া যাক।

PXL_20230122_180639030_copy_1209x907.jpeg

নাগরদোলার পাশেই ছিলো বাচ্চাদের ঘুরতে থাকা গাড়ির রাইড। তবে এক্সপ্রো মেলায় গিয়ে যা দেখেছিলাম তা এখানে নেই। আসলে এক্সপো মেলাতে কিছু ধেড়ে বাচ্চা উঠে বসেছিলো সেটা এই মেলাতে নেই। রাইডের সবাই বাচ্চাই। বাচ্চাদের ঘুরতে থাকা রাইডের পাশেই দেখি কিছু দূরে ড্রাগন রাইড। যদিও সেটা বাচ্চাদের জন্যই কিন্তু সেখানে রীতিমতো ধেড়ে মানুষজন উঠে খিল খিল করে হাসছে। হাসি শুনেই সেদিকে নজর গেলো।

PXL_20230122_180604761_copy_1197x898.jpeg

আমি হাসি শুনে বেশ মজা পেলাম। আসলে মেলাগুলো হয়তো এইখানেই তার সার্থকতা পায়। মানুষজন সমস্ত দুঃখ ভুলিয়ে কিছুটা হলেও আনন্দ পায়। তার পাশেই ছিল নতুন এক ধরনের খেলা। দেখলাম যে একটা টেবিলে পাঁচখানা গ্লাস রাখা রয়েছে সেটা একটি বড়ো বল দিয়ে সেটাকে ফেলতে হবে আর ফেলতে পারলে সেটার জন্য পুরস্কার রয়েছে।

PXL_20230122_191427628_copy_1209x907.jpg

সেখানে খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কিছু মানুষকে বল দিয়ে গ্লাস ফেলার ব্যর্থ চেষ্টা করতে দেখলাম। ঠিক তখন নাগরদোলা থেমে গেলো। তখন খেয়াল হলো রাত অনেক বেজেছে এবার ফিরে যাওয়ার পালা। আসা হয়েছিল দু'ঘণ্টা মেলায় কাটিয়ে ফিরে যাওয়ার জন্য কিন্তু যখন আমরা মেলা থেকে ফেরার পথ ধরলাম তখন ঘড়িতে বাজে রাত্রি সাড়ে নটা। যদিও তা বোঝার উপায় নেই কারণ মেলায় তখনও লোকজন গিজগিজ করছে।

PXL_20230122_195323195_copy_1209x907.jpg

PXL_20230122_195305967_copy_1209x907.jpg

ফেরার পথে এক দোকানের সামনে এসে থমকে গেলাম। দেখি গরম গরম বাদাম ভাজা চলছে। গরম বাদাম ভাজা দেখে অল্প করে কিনেই নিলাম। বাকি রাস্তা বাদাম ভাজা বাদাম চিবোতে চিবোতে ফেরা যাবে যে।




IMG_20220926_174120.png

Vote bangla.witness


Support @heroism by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

|| Join HEROISM ||

Sort:  
 2 years ago 

জানিনা তাদের জীবনে এত পরিমাণে সাহস কোথ থেকে আসে যে তারা নাগরদোলা দেখলেই চড়ার জন্য দৌড়ে দৌড়ে যায়

আপনার কথার সঙ্গে আমি একমত দাদা। আসলেই তারা এতো সাহস পাই কোথা থেকে। আমার বন্ধু লিখন ঠিক এইরকম। মেলায় গিয়ে নাগরদোলা দেখলেই দৌড় ধরে। আমাকে নেওয়ার চেষ্টা করেছে বহুবার কিন্তু লাভ হয়নি।

শেষ পাতে মিষ্টি অনেক শুনেছি এবং দেখেছি। কিন্তু মেলার শেষ পাতে বাদাম চমৎকার দাদা। বেশ ভালো লাগল আপনার পোস্ট টা পড়ে।

 2 years ago 

আমি কখনোই নাগরদোলায় উঠার সাহস করে উঠতে পারিনি। দেখেই ভয় লাগে। তবে আজকাল মেলায় গেলে বাচ্চাদের খেলনা গুলোতে বড়দেরকেউ দেখতে পাওয়া যায সত্যি বিষয়টা হাস্যকর লাগে। কিন্তু তারা বেশ আনন্দে মেতে থাকে। যাই হোক দাদা মেলায় ঘুরাঘুরির এই পর্বটিতে দারুন ভাবে আপনি আপনার অনুভূতি তুলে ধরেছেন। ভালো লাগলে আপনার পোস্ট পড়ে।

 2 years ago 

রক্ষা কালী মায়ের মেলায় ঘোরাঘুরি দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। মেলায় ঘোরাঘুরি করতে আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে। অনেক গুলো বাদাম একসাথে দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। দাদা বাদাম ভাজা তো জমিয়ে খেয়েছেন। পোস্ট ভিজিট করে ভালো লাগলো।

 2 years ago 

এমন মেলাতে ঘুরাঘুরি করতে আমার খুব ভালো লাগে। নাগরদোলাই ওঠার অভ্যাস আমারও রয়েছে। যাইহোক আপনি খুব সুন্দর বর্ণনার সাথে আজকের এই পোস্ট আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন দেখে বেশ ভালো লাগলো। আশা করি খুবই সুন্দর একটি আনন্দঘন মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন এই মেলা থেকে।

 2 years ago 

গত পর্বে গরম গরম জিলিপি আর মিষ্টান্ন দেখেই তো মন ভরে গিয়েছিল। আর আজকে ভিন্ন কিছু নিয়ে উপস্থাপন করেছেন। তবে মেলাতে গেলে মনটা যেন অনেক বেশি ভালো হয়ে যায়। বিভিন্ন রকম মানুষ দেখার পাশাপাশি তাদের আনন্দঘন মুহূর্তগুলো উপলব্ধি করা যায়। নাগরদোলায় অনেককে উঠতে দেখি কিন্তু তারা যে একদম নির্ভীক এটা বলা যায়। কারণ নাগরদোলায় উঠতে হলে মনের একটা সাহস লাগে। তাছাড়া বাচ্চারা যদি ওঠে তখন তারা চিৎকার চেঁচামিচি করে সেটা দেখতেও কিন্তু ভালো লাগে। শেষের দিকে তাহলে গরম গরম বাদাম ভাজা খেতে খেতে গন্তব্যে পৌঁছালেন।

আমি মেলায় গেলে নাগরদোলায় উঠতে মিস করি না। নাগরদোলা ওঠার পর আমার চিৎকার শুনলে লোকজন ভয় পায় রীতিমত আর ওই বল দিয়ে গ্লাস ফেলার খেলাটা আমি অনেকবার খেলেছি, তবে কোনদিনও চারটারে বেশি গ্লাস ফেলতে পারিনি। সবগুলো জিনিসই মেলায় কমন তবে, বাদাম কিনে ঘরে খেতে খেতে আশার ভিতরেও একটা আলাদা মজা রয়েছে।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 58522.52
ETH 2540.72
USDT 1.00
SBD 2.50