কাঠিয়া বাবার আশ্রমে
নমস্কার বন্ধুরা,
কলকাতা যাবো আর লোকাল ট্রেনে উঠবো না তা কখন হয়। লোকাল ট্রেনের সাথে কেন যেন আমার সম্পর্কটা একটু অন্য রকমের। যেখানে এইবার লোকাল ট্রেনে চড়ে কলকাতার বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিলো না সেখানে শেষমেষ যেতেই হলো। আসলে মনে হয় আমার ভাগ্যে লোকাল ট্রেনে চড়া আগে থেকেই লেখা আছে। আসলে হঠাৎ করে জানতে পারলাম যে ভাইপোর কিছু বই পত্র নিয়ে আসতে আমাকে কাঠিয়া বাবার আশ্রমের কাছে যেতে হবে। প্রথমে যাওয়ার ইচ্ছে না থাকলেও পড়ার বই পত্র নিয়ে আসার কথা ভেবে চলেই গেলাম। তাছাড়া যখন শুনলাম আশ্রমের পাশেই গঙ্গা, আমি আর না করিনি। কাঠিয়া বাবার আশ্রমে যেতে হলো তা দিয়েই ট্রেনে চড়লাম। তবে আমার কাজ আশ্রমে ছিলো না কিন্তু যেহেতু আশ্রমের পাশেই কাজ গুলো তাই আশ্রমের পাশ দিয়েও ঘুরে এলাম।
বিধান নগর স্টেশনে টিকিট কেটে ঢুকে একটু ভালোই লাগলো। আদবে শেষবার যখন কলকাতায় লোকাল ট্রেনে উঠেছিলাম তখন স্টেশন অনেকটাই ফাঁকা ছিল, এখন অবস্থার অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে। যেহেতু কলেজ শুরু হয়ে গেছে তাই অনেক ছাত্রছাত্রীদের ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে দেখলাম। সাথে প্রচুর অফিস যাত্রী। তবে করোনা পূর্ববর্তী সময়ের তুলনায় বেশ কম। টিকিট নিয়ে স্টেশনে দাঁড়িয়ে পড়লাম কিন্তু ২০ মিনিট পরেও ট্রেনের পাত্তা নেই। অনেক অপেক্ষার অবসান করে ট্রেন এলো আমিও বাকিদের সাথে হুড়োহুড়ি করে উঠে পড়লাম। গন্তব্য সোদপুর।
মিনিট ১৫ র মধ্যে গন্তব্যে পৌছে গেলাম। যদিও আমার স্টেশনে পৌঁছতে অল্প দেরী হলো তবুও যার কাছ থেকে বই নেওয়ার কথা তার জন্য স্টেশনে আরো বেশ কিছু সময় দাড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকলাম। ওদিকে সন্ধ্যা নামছে। চোখের সামনে ঝড়ের গতিতে বিকেলের পড়ন্ত রোদে গঙ্গা দেখতে পাওয়ার সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে দেখে আমার আর তর সইছিলো না। আসলে ভাগ্যে লোকাল ট্রেন থাকলেও বিকেলের গঙ্গার ঘাট ছিল না।
অনেক অপেক্ষার পর আমার সঙ্গী এলে ঝটপট তাকে নিয়ে কাঠিয়া বাবার আশ্রমে পৌঁছালাম। ততক্ষণে সূর্য অস্ত গেছে। সূর্যের পড়ন্ত আভা গঙ্গার জলের উপরে খেলছে। তাই তাকে বই দিয়ে যাওয়ার কথা বলে আমি গঙ্গার ঘাটে বসে পড়লাম। আহা।
গঙ্গা জীর সাথে আমার যেন আত্মার সম্পর্ক। আমার মন মন খারাপ থাকলেও গঙ্গার ঘাটে বসলেই কেমন যেন মনটা ভালো হয়ে যায়। সূর্যাস্তের শেষ মুহূর্ত উপভোগ করতে করতে সূর্যের শেষ আভাটুকু গঙ্গায় ধীরে ধীরে মিলিয়ে যেতে দেখলাম।
সূর্যের আভা মিলিয়ে যেতেই গঙ্গার ওপারের শহরের রাতের আলো গুলোও একে একে জ্বলে উঠলো। ঠিক সে সময়ে আমার বই গুলো চলে আসলো।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
অনেকদিন পর খুব চমৎকার একটা লেখা পেলাম দাদার কাছ থেকে। একদম যেন গল্পের বইয়ের পাতা পড়ছিলাম। কলকাতার লোকাল ট্রেনে চড়ার অভিজ্ঞতা আমারও হয়েছে। সত্যি বলতে বেশ মজাই লেগেছে আমার কাছে। এত চাপাচাপি আর এত ভিড়, তারপরেও ঠেলেগুতে ওঠা, বেশ মজার একটা ব্যাপার। আর দাদা কলকাতা বা তার আশেপাশে সবথেকে সুন্দর দৃশ্য আমার কাছে লেগেছে গঙ্গার ঘাট গুলো। মন ভালো করে দেওয়ার মতো কিছু মুহূর্ত যেন সেখানে সবসময় অপেক্ষা করে থাকে।
ট্রেনে যাতায়াত করার মজা আছে কিন্তু আমাদের এদিকে লোকাল ট্রেনে যে পরিমান ভিড় থাকে তা দেখে ট্রেনে যাতায়াত করার আনন্দ চলে যায়। আপনার বই আসার আগ পর্যন্ত গঙ্গার পাড় খুব সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছেন। সূর্যাস্তের সময় নদীর এই সুন্দর দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। সত্যি বলেছেন দাদা যখন মন খারাপ হয় তখন এমন সুন্দর নদীর পাড় বসে থাকলে মন ভালো হয়ে যায়। আপনার বই আনতে যাওয়াও হলো আর খুব সুন্দর কিছু দৃশ্য আমাদের সাথে শেয়ার করাও হয়ে গেল। ধন্যবাদ দাদা আপনার সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
ট্রেনে যাতায়াত করার মজাই আলাদা। খোলামেলা জায়গা, জানালার পাশে বসে প্রকৃতি খুব সুন্দর ভাবে উপভোগ করা যায়। তবে লোকাল ট্রেনগুলোতে আমার মাঝে মাঝে খুব বিরক্ত লাগে। যাই হোক একসাথে আপনার দুই কাজ হল বইগুলো আনা হলো, গঙ্গার ঘাট দেখা হল। আসলে আপনার মত আমারও গঙ্গার ঘাট -নদীর পাড়ে বেশ ভালো লাগে ।মনে হয় যেন মন ভালো হয়ে যায়।
ট্রেন ভ্রমণ আমার কাছে মজা লাগে তবে ট্রেন ভ্রমণ এর একটা সমস্যা হচ্ছে ট্রেন যে দিনে আসতে লেট করে সেই অপেক্ষা টা আমার কাছে খুবই বিরক্ত লাগে। আপনার গল্পটা বেশ ভালো লাগলো তবে আপনি যদি কাঠিয়া বাবার আশ্রমে সূর্য অস্ত যাওয়ার আগ মুহূর্তে পৌঁছাতে পারতেন তাহলে হয়তো জায়গাটার সৌন্দর্য আরো ভালোভাবে আমাদের মাঝে তুলে ধরতে পারতেন।
পড়ন্ত বিকেলে গঙ্গার ঘাটের অপরূপ সৌন্দর্য দেখে সত্যি ভালো লাগলো দাদা। কাঠিয়া বাবার আশ্রমে গিয়ে তো দারুন সময় কাটিয়েছেন দাদা। যেহেতু আপনার ভাইপোর প্রয়োজনীয় বই আনতে গিয়েছেন তাই হয়তো সেই ফাঁকে গঙ্গার ঘাটের অপরূপ সৌন্দর্য দেখার সুযোগ হয়েছে। আর সাথে যেহেতু আপনার সঙ্গী ছিল তাহলে তো সময়টা আরো দারুন কেটেছে দাদা।
এই আশ্রমটা ঠিক কোন জায়গায়?লোকাল ট্রেনে চড়তে বেশ ভালো লাগে, যদি সেটা ফাঁকা থাকে তবেই। আর আপনি যতই ভাবেন কোন একটা জিনিস আপনি করবেন না, আপনার ডেস্টিনি তে থাকলে সেটা তো করতে হবেই। 😄