হঠাৎ কলকাতা
নমস্কার বন্ধুরা,
আমার কলকাতা যাওয়া যেন হঠাৎ করেই হয়ে থাকে। তবে এইবার যে পুরোপুরি হুট করে আসা সেটা কিন্তু নয়, বিশেষ কিছু কাজ নিয়েই এসেছি। কদিন ধরে বেশ কিছু কাজ গুলো হাতে জমেছিলো সেটা ভেবে কলকাতা আসবো আসবো করছিলাম। কিন্তু আসা আর হয়ে উঠছিলো না। হঠাৎ একটা বিশেষ তারিখ পড়ে যাওয়ায় অবশেষে কলকাতায় একদিনের প্ল্যানে চলেই আসলাম। একদিনের প্ল্যান কথাটা হয়তো মোটেই বাড়িয়ে চড়িয়ে বলছি না। সকাল ন'টার সময় স্থির করলাম কলকাতা যেতে হবে তারপর সাড়ে এগারোটার দিকে ট্রেনের টিকিট টাও কেটে ফেললাম।
টিকিট কাটা নিয়েও এক মজার ঘটনা হলো। সকাল এগারটায় তৎকাল টিকিট কাটতে বসে মোট চারবার পেমেন্ট ফেলিওর। জানিনা আমার ব্যাংকের আজ ১১ টার সময় কি ত্রুটি হলো যে তৎকাল টিকিট কাটতে আমি হলাম ব্যর্থ কিন্তু কলকাতা তো যেতে হবেই তাই ওয়েটিং লিস্ট থাকা সত্ত্বেও ট্রেনের টিকিট কেটে নিলাম। ভেবে নিলাম নির্ধারিত সিট না পেলে জেনারেল কামরায় বসে যাবো। সারাদিন টিকিট নিশ্চিত হওয়া নিয়ে অনেক মাথা চুলকানোর পর রাত্রি নটার সময় আমার সিট নিশ্চিত হয়ে গেলো। ঠিক এরপরই যেন আমার কলকাতা যাওয়ার ব্যাপারটা খেয়াল হলো। ব্যাগ গুছিয়ে নিলাম। সকাল ছটার ট্রেন। মনে মনে ঠিক করলাম বাড়ি থেকে অন্তত ঘন্টাখানেক আগে বেরোতেই হবে।
ভোর সাড়ে চারটা নাগাদ অ্যালার্ম বাজতেই ঘুমটা ভেঙে গেলো। বিছানা থেকে হুড়মুড়িয়ে উঠে চোখমুখ না ধুয়ে সোজা দৌড়ালাম চা বানাতে। চা ফুটতে দিয়ে চোখে মুখে জলের ছিটে দিয়ে গায়ে জামা কাপড় গলিয়ে চা মুখে দিয়ে বেরিয়ে পড়লাম, স্টেশনের উদ্দেশ্যে। বাইরে তখন রাতের অন্ধকার তখনও কাটেনি। কুয়াশার জন্য চারিদিকে আরো যেন অন্ধকার জাকিয়ে বসেছে। স্টেশনটা অনেকটা দূরে তাই রাতেই টোটো রিজার্ভ করে রেখেছিলাম সেটাতে চড়ে বসলাম। ফাঁকা রাস্তায় টোটো জোরে ছুটিয়ে দিলো।
বেশ কিছুটা রাস্তা পেরোতেই অন্ধকার অল্প কেটে হালকা দিনের আলো ফুটে এলো যদিও তখনও বেশ কুয়াশা। ৪০ মিনিট টোটো ছুটিয়ে অবশেষে পৌঁছে গেলাম স্টেশনে। ট্রেনে আসতে তখন ২৫ মিনিট বাকি। ধীরে ধীরে কুয়াশায় ঢাকা স্টেশনে যাত্রীদের আনাগোনা বাড়তে থাকলো।
ট্রেন আসার অপেক্ষাতে কেটে গেল কুড়ি মিনিট তারপর ট্রেন আসার ঘোষণা হলো। ঘোষণা হওয়া মাত্র ব্যাগপত্র পিঠে নিয়ে ট্রেনে ওঠার প্রস্তুতি নিয়ে নিলাম। চার মিনিট দেরী করে ট্রেন ঢুকলো। আমিও চটপট ট্রেনে উঠে আমার নির্দিষ্ট জায়গায় বসে পড়লাম। শুরু হলো আমার যাত্রা।
কিছুক্ষনের মধ্যে ভোরের আড়ষ্টতা কাটিয়ে রোদ উঠতেই হাতের আঙুলগুলো সচল রাখতে আমিও এক কাপ লেবু চা তুলে নিলাম।

250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আপনার যাত্রা শুভ হোক,আর সব কাজ মিটিয়ে ভালোভাবে বাসায় ফিরে আসুন এটাই কামনা করি।টিকিট কাটার পেমেন্ট ফেলিওর এর কথা শুনে নিজেই হাসলাম।কারণ প্রয়োজনের সময় সবকিছুই যেন জামেলা শুরু করে দেয়,এরকম কত ঘটনা প্রতিনিয়ত আমাদের সাথে ঘটে যায়। 😂😂
ঠিক বলেছেন। প্রয়োজনের সময়েই যত সমস্যা শুরু হয়।
আপনার কলকাতায় যাওয়ার পোস্টটি পড়লাম পড়ে ভালোই লাগলো। টোটো জোরে যাচ্ছিল তাও ৪০ মিনিট লাগছে স্টেশনে পৌঁছাতে। এটা থেকে বুঝলাম স্টেশনটা বেশ ভালই দূর ছিল। ধন্যবাদ আপনাকে হঠাৎ কলকাতায় যাওয়ার গল্পটা মাঝে মাঝে শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ। বেশ ভালোই দূরে। তবে যে পৌঁছে গেছি সেটাই বা কম কিসের।
ট্রেন জার্নি আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। আর আপনিতো এই শীতের সকালে ভোর বেলার মনোরম পরিবেশে ট্রেন জার্নি শুরু করেছেন। এত সুন্দর সকাল দিয়ে যেহেতু আপনার দিনটি শুরু হয়েছে তার মানে সমস্ত দিনটি আপনার খুবই ভালো কাটবে। ট্রেনে উঠে সূর্যের রোদ ওঠার দৃশ্যের ফটোগ্রাফিটি দারুন হয়েছে। আর সেই সাথে ট্রেনে বসে লেবু চা খাওয়া। আহা!! লেবু চায়ের কথা মনে পড়তেই আমারও লেবু চা খাওয়ার ভীষণ ইচ্ছে করছে। যাইহোক দাদা, হঠাৎ কলকাতা যাওয়া নিয়ে খুব সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। অনেক অনেক শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো আপনার জন্য।
শীতের সকালে মনোরম বলে কিছু নেই। ভোরে ঠান্ডায় জীবন বেরিয়ে যাচ্ছিলো। সকালে ধোঁয়া ওঠা লেবু চা। আহা 😋
কলকাতা যাত্রা অনুভূতি জানতে পেরে ভালো লাগলো। আসলে ট্রেনে করে যেতে খুবই ভালো লাগে। আপনার ট্রেন আসতে কুড়ি মিনিট দেরি হইলো। সেজন্য আপনি সেখানে অপেক্ষা করলেন। আর ট্রেন আসাতে আপনি আপনার নির্দিষ্ট জায়গায় বসলেন, বিশেষ করে সূর্যের ফটোগ্রাফিটি আমার খুবই ভালো লেগেছে।
ঠিক সময়েই এসেছে। আমরা আগে পৌছে গেছি। হাঃ হাঃ
আপনার দিনপুঞ্জি পড়ে বেশ ভালোই লাগলো। তবে দাদা আমরা প্রায় সময় নিজের কাজগুলো সঠিক সময় না করে, আলসেমি করতে করতে অনেকটা সময় অতিবাহিত হওয়ার পর যখন কানের ডগা এসে পৌঁছায় তখন দৌড়ের উপরে থাকি। যাই হোক হঠাৎ করে কলকাতা যাওয়া এবং এত ভোর বেলায় ওঠা খুবই কষ্টদায়ক ছিল। শেষ পর্যন্ত টিকেট কনফার্ম হওয়ার পর ছয়টা ট্রেনে কলকাতা যাওয়ার কনফার্ম হয়ে গেল। আমাদের সাথে আপনার অনুভূতিগুলো শেয়ার করার জন্য শুভেচ্ছা রইল দাদা।
দাদা আপনার ট্রেন জার্নি দেখে আমারও ট্রেনে চড়তে ইচ্ছে করছে। আসলে ট্রেন জার্নি আমার কাছে খুব ভালো লাগে। কয়েক বছর আগে কলকাতা গিয়েছিলাম ঘুরতে। আপনার পোস্ট দেখে পুরনো সেই কলকাতার স্মৃতি মনে পড়ে গেল। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে দাদা, পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
ট্রেনে চড়তে আমারও বেশ লাগে। দূরে যেতে হলে ওটাই একমাত্র বন্ধু।
টিকিট বিলম্বনা আমারও একবার হয়েছিল বোলপুরে গিয়ে। কতবার চেষ্টা করেছি তৎকাল টিকিট কাটার জন্য, তবে যতবারই টিকিট কাটি না কেন, কেন জানিনা ক্যান্সেল হয়ে যায়। যাই হোক অনেক কষ্ট করে শেষ পর্যন্ত টিকিট পেয়েছিলাম। যাইহোক তোমার কাজ সুষ্ঠুভাবে হোক সেটাই আশা করি।
আমার তো পেমেন্ট ডিক্লাইন। কি সমস্যা। টিকিট আছে অথচ কাটতে পারছি না। কি জ্বালাতন।
সব শেষ গত বছরে ভোররাত্রি ট্রেন ভ্রমণ করেছিলাম। একটু সকাল সকাল ট্রেনে ভ্রমণ করতে ভালই লাগে আর যদি একটু বেশি শীত পড়ে তাহলে আরো বেশি মজা লাগে। ট্রেন যখন ফাঁকা মাঠের মধ্য দিয়ে যায় কুয়াশা ঢাকা দৃশ্যটা আমার এখনো মনে পড়ে। আপনার তোলা ছবিতে কুয়াশার কিছুটা অংশ দেখা যাচ্ছে। এই সৌন্দর্য টা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে।
গরমের ভোরে আমার অসুবিধা হয় না, তবে শীতে পারা যায় না। ভয়ানক ঠান্ডা। কুয়াশার কিছুই তুলতে পারিনি।
আপনার কোন প্লাটফর্ম জানিনা। তবে আমার মামাবাড়ি আসাম যাওয়ার পথে এই ধরণের বড় বড় সুন্দর ঝকঝকে পরিস্কার প্লাটফর্মগুলো দেখি আর অবাক হয়ে যাই আর ভাবি নিজেদের লোকাল প্লাটফর্ম গুলোর হট্টগোলের কথা।এটা দেখে সেই কথাই মনে পড়ল।ট্রেনের জানলা দিয়ে খুব সুন্দর ছবি তুলেছেন। আমার ইচ্ছে করে এমন ছবি তুলতে কিন্তু ফোন পড়ে যাওয়ার ভয়ে তুলি না। আপনি যখন লিখলেন ভোরবেলা বেড়িয়েছেন তখন আমা ভাবছিলাম এখন তো ভোর ৪টে মানে অন্ধকার। তারপর দেখলাম যে না টোটো রিজার্ভ করেছেন। টোটো হওয়ায় এই সুবিধা হয়েছে। চায়ের কাপে রোদের ছটা বেশ মনোরম লাগলো।
আমি আবার হট্টগোলের প্ল্যাটফর্ম গুলো মিস করি। ভোর মানে রীতিমতো রাতের মতো অবস্থা।
হুট করে যাওয়া ঠিক হলে টিকিট কাটা নিয়ে খুব সমস্যায় পড়ে যেতে হয়। পেয়ে গেছি সেটাই ভাগ্যের।