জল যন্ত্রণা // ১০% পেআউট লাজুক খ্যাঁক-কে

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago


নমস্কার,

ঠিক দুমাস আগের ঘটনা। অক্টোবর মাসের শেষে পুরো বিল্ডিংয়ের জন্য ব্যবহৃত দুটো জলের পাম্পের একটি পাম্প নষ্ট হয়ে যায়। সাথে সাথে জলের মিস্ত্রি ডাকলে তারা শুধুমাত্র ইলেকট্রিক তারের সমস্যা বলে চলে যান। কিছু সময়ের মধ্যেই ইলেকট্রিশিয়ান ডেকে সেবারের মত বেঁচে যাওয়া গেছিলো বটে তবে জল ছিলোনা প্রায় ৪ ঘন্টা, বাড়ির লোকজন সেসবের টের পায়নি কিছুই তাঁর পিছনের কারণ পিসেমশাইয়ের সকাল সকাল হাসপাতাল যাওয়া। উনি সকালে বেরিয়ে যাওয়ার সুবাদে সকালেই সমস্ত রান্না হয়ে গিয়েছিলো, তাই জল আছে কি নেই সেদিকে কারোরই খেয়াল ছিলো না। মাসখানেক পরে যে আমাদের জলের চরম কষ্ট হতে চলেছে সেটাও হয়তো সেদিন কেউ ভাবেনি।

জলের পাম্পের মিস্ত্রি বলেছিলেন শুধুমাত্র ইলেকট্রিক তার পাল্টালেই সব ঠিক হবে তাকে ধরে কয়েকটা ঘুষি মারার ইচ্ছেটা কয়েকদিন ধরেই বেশ প্রবল ছিলো। আদপে গত তিন দিন যাবত গোটা বিল্ডিংয়েই জল নেই আরে ইহা সেই টোটকা মিস্ত্রির কান্ড। পাম্পের মিস্ত্রি কথা অনুযায়ী শুধুমাত্র ইলেকট্রিক তার বদলানো হয়েছিল তবে মাসখানেক সেটা চললেও ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থাকে সমস্যার শুরু দেয়। মাঝেমধ্যেই পাম্প দিয়ে জল ওঠা থেমে থেমে যায়, বিল্ডিংয়ের কেয়ারটেকার বিষয়টাকে গুরুত্ব না দিয়ে অল্প অল্প জল তুলে কাজ চালিয়ে দিচ্ছিলো। কিন্তু পাম্প যে ভরা শীতেই দেহ রাখবে সেটা হয়তো আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলো।

জানুয়ারি মাসের ৫ তারিখের ঘটনা হঠাৎ জানতে পারা যায় বিল্ডিংয়ে পাম্প নষ্ট হয়েছে সারাদিন জল থাকবেনা। সাধারনত এই রকম মুহূর্ত এলে বাড়ির সন বালতি ল জল ভরে নেওয়া হয় কিন্তু আমরা এমন সময় জানতে পারি ততক্ষণে পাম্পের জল সমস্ত শেষ।

আমার অভ্যাসের জন্য খাবার জল ছিলো এটাই ভাগ্য। আদপে প্রতি রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে অভ্যেস করে খাওয়ার জল ভর্তি করে রাখি তাই সারাটা দিন খাবার জলের অসুবিধা হয়নি তবে বাড়ির সবাইকেই স্নান থেকে বিরত থাকতে হয়। সেদিনের শিক্ষা নিয়ে পরের দিন খুব সকালে উঠে বালতিতে জল ভরে রাখা হয় অন্তত শৌচকর্ম টুকু করবার জন্যই। দ্বিতীয় দিন কোনোমতে কেটে গেলো।

তৃতীয় দিন অর্থাৎ ৭ তারিখে দুপুরবেলায় পাম্পের মিস্ত্রি আসলেন পাম্প নিয়ে নতুন তামার কয়েল লাগিয়ে। রিপেয়ার করেই অনেকটা নতুনের মত দেখতে লাগলেও আমি সন্দিহান ছিলাম, যতক্ষন না জল দেখি শান্তি নেই। সঠিক জায়গায় পাম্প ঢুকিয়ে একের পর এক পাইপ লাগানো শুরু হলো, মোট ২০০ ফিট গভীরতা তাই ১০ টি ২০ ফুটের পাইপ লাগলো। অনেক সময়সাপেক্ষ ব্যাপার তবে জল চলে আসবে এই চিন্তাতেই মনটা ভালো ছিলো।

শেষ পাইপ ঢুকিয়ে যখনই মটরের সুইচ দেওয়া হলো গরগড়িয়ে জল পড়া শুরু হয়ে গেলো। আমার মনে খুশির তরঙ্গ বয়ে গেলো।

টানা দুদিন ধরে স্নান করতে পারিনি, অবশেষে সুযোগ। স্নান করার।



Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Sort:  
 3 years ago 

আসলে কিছু কিছু মানুষ এমনি হয় কোন কাজের গুরুত্ব দেয় না আবার নিজে না পারলেও বলে না, যে আমি পারব না ভুল তথ্য দিয়ে চলে যায়।তাদের ভুল তথ্যের কারণে আমাদের অনেক ভোগান্তি হয় এটা তারা জ্ঞানে নেয় না। যাই হোক দাদা কিল ঘুষি মারার দরকার নাই। ধৈর্য্য মানুষকে সম্মানের জায়গায় নিয়ে যায়।

 3 years ago 

দাদা জলের যন্ত্রণা যে কতটা কষ্টদায়ক সেটা একমাত্র উপরওয়ালাই জানে। স্নান করতে না পারা এটা খুবই বিরক্তিকর একটা বিষয়। স্নান না করলে ঠিকমতো ঘুম হয়না, শরীর চটপট করে। তবে শীতের মৌসুম হিসেবে আপনার জন্য একটু ভালো হতো অন্তত বলতে পারতেন যে পাম্প নষ্ট শীতের মৌসুমে গোসল না করলে চলবে, হাহাহা। দাদা মজা করলাম মাইন্ড করবেন না। জলের অপর নাম জীবন, জল না হলে আমাদের চলে না, জল না থাকলে বুঝা যায় জলের মর্ম টা কি। সত্যি আপনি খুব কষ্টদায়ক কয়েকটা দিন পার করেছেন এবং বিব্রতকর অবস্থায় ছিলেন। এবং তবে পাম্পের আধ মিস্ত্রিরি টাকে যে মারেননি ব্যাটার কপালের ভাগ্য। আমাদের সাথে অনেক সুন্দর করে শেয়ার করেছেন। আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল দাদা।

 3 years ago 

IMG_20220106_113311.png

2FFvzA2zeqoVJ2SVhDmmumdPfnVEcahMce9nMwwksSDdRvRmybykqUvU4Qriq94s5bwFrDmYZdJgD7bRoaeK4aoq8pZoLdUPeYZ5Pb1dEejRZxkf2Knu1XeHbi1jU.png

আসলে আমরা যারা গ্রামে থাকি তাদের কিন্তু জল নিয়ে কোনো সমস্যা হয় না। আমি এই জিনিসটা খেয়াল করে দেখছি। বেশিরভাগ সময় শহরাঞ্চলে জলের সমস্যা ব্যাপক। খুব বিরক্তিকর একটা মুহূর্ত পার করেছেন


IMG_20220106_113311.png

 3 years ago 

দাদা আমরা বাংলাদেশের মানুষেরা সচরাচর জলের কষ্টে ভুগি না। তবে ঢাকা শহরে মাঝে মাঝে এই বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। এই কষ্টে যে পড়েনি সে এর তীব্রতা বুঝবে না। যাই হোক আপনার স্নানের কষ্ট দুদিনের উপর দিয়ে গিয়েছে।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 58180.92
ETH 2477.99
USDT 1.00
SBD 2.42