"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ২৫ || লেবু-লঙ্কার আচার
নমস্কার বন্ধুরা,
সবাই কেমন আছেন? আশা করছি ঈশ্বরের কৃপায় আপনারা সকলেই সুস্থ। আজ আপনাদের সামনে আমি আরো একটি নতুন মজাদার রেসিপি নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম। আমার আজকের রেসিপিটি হলো লেবু-লঙ্কার আচার।
আচার ভালো লাগেনা এমন মানুষ খুবই কম দেখা যায়। আমি যদিও হাফিজ দার মতো ঠিক আচার প্রেমী নই (আদপে দাঁত শিরশির করে খুব), তবুও কালে ভদ্রে আমের আচারের বয়ানটা হাতে পেলে পুরোটা সাবড়ে দেওয়ার অভ্যেস ছিলো। আমি ছোটো থাকতে ভাঁড়ার ঘর রকমারি আচারে ভরপুর থাকতো। আমের আচার, কুলের আচার থেকে শুরু করে আমলকির আচার সব মিলিয়ে প্রায় ৮-১০ ধরনের আচারের বয়াম ভাঁড়ার ঘরে সবসময় মজুদ। হাতের কাছে পেয়েও আমি সচরাচর আচার খেতাম না ঠিকই, তবে যখন সুযোগ পেতাম তখন আমের আচারের তেল ও এক টুকরো আমার আচার দিয়ে মুড়ি মাখিয়ে বসে পড়তাম। আহা! যেন স্বর্গ।
টুকটাক হলেও আচার তো খেয়ে নিই কিন্তু আচার বানানোর অভ্যাস বা অভিজ্ঞতা কোনোটাই আমার নেই তাই হাফিজ দা আচারের প্রতিযোগিতাটি আনুষ্ঠানিক ভাবে আয়োজন করলে আমি বেশ চিন্তাতেই পড়ে গেলাম। কি আচার করা যায়? কালী পুজোর আগ দিন পর্যন্ত অনেক চিন্তা ভাবনা করলাম তারপর খেয়াল হলো আমাদের বাগানের লেবু দিয়েই কোনো আচার করলে কেমন হয়। সারাদিন বিদুৎ না থাকায় ভাবনার সুযোগ পেয়েও গেলাম। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে পাশের বাড়ির এক ভাইপোর সাথে লেবুর কোনো ধরনের আচার হয় কিনা সেটা নিয়ে আলোচনা করলাম। সেই মুহূর্তে আমাকে সে লেবু লঙ্কার আচারের কথা বললো। আমিও সুযোগ পেয়ে লেগে পড়লাম নিজেদের বাগানের লেবু এবং নিজেদের গাছের লঙ্কার সদ্ব্যবহার করতে। তারপর মায়ের সহায়তা নিয়ে বানিয়ে ফেললাম লেবু লঙ্কার আচার।
নাহ্! কথা বাড়ানো আর ঠিক হবেনা চলুন সোজা চলে যাই আচার বানানোর রেসিপিতে।
- লেবু
- লঙ্কা
- মৌরি
- গোটা সাদা সর্ষে
- মেথি
- অজবায়ন
- লঙ্কা গুঁড়ো
- নুন
ধাপ ১
- লেবু তিন ফালি করে এবং লঙ্কা গুলো দু ফালি করে কেটে বাটিতে রেখে একটা পাত্র দিয়ে চাপা দিয়ে রাখলাম। (এই ধাপ টা মা করে দিয়েছে) 😛।
ধাপ ২
- যেহেতু তেল ছাড়া মশলা ভাজা হবে তাই আগে খালি কড়াই তাতিয়ে নেওয়া দরকার। সেকারনে প্রথমে কড়াই চাপিয়ে নিয়ে তাতাতে ছেড়ে দিলাম।
ধাপ ৩
- কড়াই ভালো ভাবে তেতে যাওয়ার পর মৌরি, অজবায়ন ও গোটা সাদা সর্ষে কড়াইতে দিয়ে ভাজতে শুরু করলাম। মশলা গুলো হালকা ভেজে একটা প্লেটে তুলে রাখলাম।
ধাপ ৪
- মৌরি, অজবায়ন ও সাদা সর্ষে ভাজা হয়ে যাওয়ার পর গোটা মেথি গুলোকেও একই ভাবে শুকনো ভাবে ভেজে নিলাম।
ধাপ ৫
- গোটা মশলা শুকনো ভাবে ভেজে নেওয়ার পর শীল নোরায় সব মশলা একসাথে বেঁটে নেবো।
ধাপ ৬
- বাটা মশলা গুলো এক এক করে কেটে রাখা লেবু ও লঙ্কার উপরে ছড়িয়ে তারপর স্বাদমতো নুন দিয়ে সব কিছু মাখতে শুরু করে দেবো।
ধাপ ৭
- মশলা গুলো লেবু এবং লঙ্কার সাথে ভাবো ভাবে মাখিয়ে নিতেই আমাদের লেবু-লঙ্কার আচার তৈরী।
আজ আকাশ মেঘলা তাছাড়া বিকেলের দিকে আচার বানানোর সুযোগ মিললো তাই রোদ দেওয়ার বেশি সুযোগ পাই নি। আগামীকাল থেকে মাঝে মধ্যেই রোদ খাওয়ানোর পালা শুরু হবে।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
দাদা দেখছি সব কাজেই বেশ এগিয়ে। আজকে আবার আচার টাও ভালোই করেছেন দেখি। আমার কাছে বেশ সহজ আর নির্ভেজাল লেগেছে রেসিপিটি। এভাবে যে লেবু দিয়ে আচার হতে পারে এই প্রথম দেখা আমার। ভালো লাগলো খুব আয়োজনটা। আর দাদা আচারের তেল টা দিয়ে মুড়ি মাখার সত্যিই তুলনা নেই গো,, অমৃত পুরো 😅👌
দাদা আপনার লেবু-লঙ্কার ইউনিক আচার দেখে আমার জিহ্বাতে জল চলে আসছে। আসলে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সদস্য না হলে এত বাহারি রংয়ের আচারের দেখাও হয়তো পেতাম না। লেবু আমার কাছে খুবই প্রিয় লাগে আর যদি সেটা যে আচার তৈরি করা হয় তাহলে তো আরো বেশি সুন্দর লাগবে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা লেবু-লঙ্কার আচার বানিয়ে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। ইন্ডিয়াতে খমার মামাদের বাড়িতে যদি কখনো যাই তাহলে আপনাদের ওখানে গিয়ে এই লেবু লঙ্কার আচার খেয়ে আসবো।
লেবুর টক ভাব আর মশলার চটপটা স্বাদের কথা মনে পড়তেই জীভে জল চলে আসল।ছবি থেকেই স্বাদ টা যেন বুঝতে পারছি।আচার টা বেশ সিম্পল কিন্তু স্বাদের অনেক জটিল।ধন্যবাদ দাদা সুন্দর, সহজ এবং জীভে জল আনা একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
জি দাদা আপনার মতো আমারও একি অবস্থা আচার বা বেশি টক খেলে দাঁত শিরশির করে ৷ পরে তো কোনো কিছু খেলে খেতেই পারি না ৷ যা হোক খুব চমৎকার আচার রেসেপি তুলে ধরেছেন ৷ লেবু তো এমনি টক তার সাথে লঙ্কা ৷ বেশ ভালোই লাগছে আচার বানানোর রেসিপি টি দেখে ৷
পাশের বাড়ির ভাইপো সাথে আলোচনা করে খুবই ইউনিক একটি আচার রেসিপি আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। এই আচার রেসিপিটি আমার কাছে একদম নতুন এবং ইউনিক লেগেছে আর বর্তমান সময়ে আসার পছন্দ করে না এরকম মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবেইনা বলে আমার মনে হয়। আপনার এই রেসিপিটি আমার কাছে একদম নতুন লেগেছে এরকম রেসিপি এর আগে কখনোই দেখা হয়নি দাদা। ধন্যবাদ আপনাকে এত মজাদার একটি আচার রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
লেবু দিয়ে এতো সুন্দর আচার বানানো যায় না দেখলে বুঝতেই পারতাম না।অনেক দারুন হয়েছে দাদা আপনার রেসিপিটা খুব গুছিয়ে উপস্থপনা করেছেন শুভ কামনা দাদা।
কত ধরনের যে আজ ক'দিন ধরে লোভনীয় লোভনীয় আচারের রেসিপি দেখছি প্রত্যেকটা রেসিপি দেখে খুব লোভ লাগছে।।
আপনিতো সম্পন্ন ভিন্নধর্মী এবং ইউনিক ভাবে লেবু দিয়ে আচার প্রস্তুত করেছেন আসলে আমি কখনো জানতামই না যে এভাবে আচার প্রস্তুত করা যায়।
আসলে লেবুর কথাটা শুনতেই তো জিভে জল চলে আসলো দেখতে যেমন লোভনীয় দেখাচ্ছে খেতে যে খুব মজা হবে এটা কোন সন্দেহ নেই।।
দাদা আপনার কথার সাথে সহমত পোষণ করছি। আসলে আচার খেতে হয়তো সবাই পছন্দ করে। কিন্তু আমি কেন জানি আমি আচার খেতেই পারি না। তবে ভিন্ন রকমের আচার খেতে ভালই লাগে। লেবু ও লঙ্কার আচার কিন্তু দারুন হয়েছে দাদা। আসলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে যেদিন সারাদিন কারেন্ট ছিল না সেদিন আমিও সেই অবসর সময়টা কাজে লাগিয়ে আচার তৈরি করেছিলাম। দাদা আপনার শেয়ার করা আচারের রেসিপি দারুন হয়েছে।
দাদা আচারের কালার দেখেই আমার দাঁত শিরশির করছে😜।যদিও লেবুর আচার খাওয়া কখনো সুযোগ হয়নি,তবে শুনেছি খেতে নাকি বেশ মজা।তবে আমার মনে হয় রোদে দিলে কালারটা আরো সুন্দর হবে।প্রতিটি ধাপ দেখে মনে হচ্ছে বানানো খুব বেশি কঠিন না।যারা টক প্রেমী তাদের জন্য পারফেক্ট। দাদা আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো। ধন্যবাদ
মা কালী বলছি! লেবুর উপর লেগে থাকা মশলা দেখে কতবার যে ঢোক গিলেছি বলতে পারব না। এটা ভাত দিয়ে একঘর লাগবে খেতে। দারুন। আমি তো ছোটবেলায় লেবুর এই আচারটা কত যে চুরি করে খেতাম আমআর ছোট ঠাম্মার ঘর থেকে। ছোট ঠাম্মা আবার গোটা লেবু দিয়ে করত। 😋