পুজো পরিক্রমা ২০২৩ : হরিশ পার্ক ব্যায়াম সমিতি
নমস্কার বন্ধুরা,
মহালয়ার দিন এবং প্রথমার দিনে কলকাতার পুজোর কিছু ঝলক দেখে নিয়ে চতুর্থী থেকে কলকাতার ঘোরার স্থির করেছিলাম। আর সে অনুযায়ী চতুর্থীর দুপুর বেলাতেই বেরিয়ে পড়লাম উত্তর কলকাতার বিখ্যাত সব পুজো মণ্ডপ গুলো দেখে নিতে। আদপে পুজোর দিন যত এগোতে থাকে তত ভিড় বাড়তে থাকবে তাই যেটুকু পারা যায় আগেই দেখে নেওয়ার কথা মাথায় নিয়েছিলাম। সেমত পরিকল্পনা নিয়ে শুরুতে উত্তর কলকাতায় পুজো দেখতে বেরিয়ে পরলাম।
উত্তর কলকাতার পুজো মূলত ভবানীপুর থেকে শুরু হয়ে রাজবিহারী এভিনিউ ও গড়িয়াহাট পর্যন্ত হয়। শুরুটা করেছিলাম ভবানীপুরের পুজো দিয়ে। চতুর্থীর দিনে প্রথম যে পুজো মন্ডপটিতে গিয়েছিলাম সেটি ভবানীপুর হরিশ পার্ক ব্যায়াম সমিতির পুজো। ঐতিহ্যবাহী হরিশ পার্ক ব্যায়াম সমিতির পুজো এবার ৮৪ বছরে পদার্পণ করেছে, এবারের তাদের থিম ছিলো বাঁশের চাঁচলি দিয়ে গড়া। হরিশ পার্ক ব্যায়াম সমিতির পুজো মন্ডপটির সমস্ত কিছুই বানানো হয়েছিল বাঁশের চাঁচলি দিয়ে। পুরো পার্ক জুড়ে মেলা বসেছিল তবে তার মাঝেই সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল পুজোর মণ্ডপটি।
বাঁশের চাঁচলির ব্যবহার বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে দেখা যায়। পুরনো সময়ে কুলো ও বেঁড়া বানানোর জন্য বাঁশের চাঁচলি ব্যবহার করা হতো। যদিও এর ব্যবহার পূর্বে বহুল হলেও বর্তমানে অনেক কমে এসেছে। হরিশ পার্ক ব্যায়াম সমিতির পুজো কমিটির থিমে আমাদের হারিয়ে যাওয়া অতীতের দিকটাই তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। পরিবেশ বান্ধবতার দিকটা বিবেচনা করেই পুজোর মাতৃ প্রতিমা সহ প্রত্যেকটা কাজই ছিল বাঁশের।
পুজো মন্ডপে বাঁশের চাঁচলির ব্যবহার শুধু নয়, বিশেষত্ব ছিলো মন্ডপের একদম মাথায় মা দুর্গা সহ তার সন্তানের বাঁশের চাঁচলি দিয়ে গড়া প্রতিমা। তাছাড়া মণ্ডপে বাঁশের চাঁচলি আরো অনেক দেবদেবীর প্রতিমা দিয়ে তৈরি করা ছিলো। মা দুর্গার প্রতিমা একচালার উপরে ডাকের কাজ। যা হরিশ পার্ক ব্যায়াম সমিতির পুজোকে অন্য মাত্রা এনে দেয়।
আপনাদের শহর কলকাতা টা দুইটা অংশে বিভক্ত উওর এবং দক্ষিণ। এটা নিয়ে দেখি অনেক কন্ট্রোভার্সিও আছে। হরিশ পার্ক ব্যায়াম সমিতি তাদের পূজা প্যান্ডেলের থিমে ফুটিয়ে তুলেছে পুরাতন দিনের সব ঐতিহ্য। গ্রামের সেই বাঁশের চাঁচিল দিয়ে তৈরি বেড়া দিয়ে তৈরি করেছে প্যান্ডেল। সত্যি বেশ চমৎকার। প্রথমে কম ভিড়ের মধ্যেই বেশ দারুণ একটা প্যান্ডেল ঘুরেছেন দেখছি। বেশ চমৎকার ছিল পোস্ট টা।