পার্কিংলটে বিপত্তি: পর্ব ৫
নমস্কার বন্ধুরা,
পার্কিংলটে বিপত্তি: পর্ব ৪ এর পর....
রাতুল অফিসের দরজার সামনে দাড়িয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতেই দারোয়ান আলো নিভিয়ে চলে এলো। দারোয়ান এসেই রাতুলকে বললো, চলুন স্যার আমার কাজ শেষ হয়ে গেছে এবার আমরা যেতে পারবো। রাতুল লক্ষ্য করলো দারোয়ানটির চোখে মুখে এক অদ্ভুত প্রশান্তির ছায়া। দুজনের তারপর লিফটের দিকে পা বাড়িয়ে দিলো। দারোয়ান অল্প দৌড়ে লিফটের বোতাম টিপে রাতুলের দিকে তাকিয়ে দুগাল হেসে বললো, আমি সৌমেন। রাতুল মুচকি হেসে তাকে জিজ্ঞেস করলো, সৌমেন ব্যাপারটা ঠিক কি বুঝলাম না তো। আমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে বললে কেন?
-"তেমন কিছু না বলে" সৌমেন থেমে গেলো।
রাতুল বিষয়টাকে তেমন গুরুত্ব দিতে চাইলো না। তবুও তার মনে যেন খটকা লাগছিল। কারণ যেখানে রাতের দারোয়ানদের কাজ হলো প্রত্যেক তলায় গিয়ে সব ভালোভাবে দেখা নেওয়া। সব অফিস যথাযথ আছে কিনা সেগুলো দেখে রাখা। সেখানে এই দারোয়ান হঠাৎ কেন এরকম আচরণ করছে, যাকে কিনা প্রত্যেক দিন ফ্লোরে একা থাকতে হয়। কেনই বা আজ রাতুলকে সে আটকে দিলো। বিষয়টা কেমন যেন খুবই সন্দেহজনক। রাতুল কথা গুলো ভাবতে ভাবতেই লিফটের দরজাটা খুলে গেল।
লিফট এসে পড়ায়, রাতুল ভাবনায় অল্প ব্যাঘাত ঘটিয়ে লিফটে উঠে পড়লো। পিছু পিছু দারোয়ানও লিফটে উঠলো। লিফটে উঠে দারোয়ান গ্রাউন্ড ফ্লোরের বোতাম টিপলো। আর রাতুল তারও একতলা নীচের, কারণ সেটা মূলত পার্কিং এর জায়গা। রাতুল মোটরসাইকেল ঐখানেই রাখে। তবে পার্কিংলটের নীচে আরো একখানা তলা রয়েছে যেটায় সকলের যাওয়া নিষেধ। লিফটে উঠে রাতুল ফের দারোয়ানকে তাকে দাঁড়িয়ে থাকতে বলার কারণটা জিজ্ঞেস করলো। তবে এইবার গলা স্বল্প ভারী করে।
দারোয়ান কাঁচুমাচু করে বলে উঠলো, স্যার ঘটনা অনেক বড়ো তবে ছোটো করে আপনাকে বলি। বলেই শুরু করলো, আদপে স্যার এই বিল্ডিংটা একটা পুরনো পোড়ো বাড়ি ভেঙে বানানো হয়েছে। যেখানে নাকি এক পরিবারের ১৩ জন আত্মহত্যা করেছিলেন। রাত হলেই নানান আওয়াজ আসে। তাই আমরা যে কজন দারোয়ানরা রাতে থাকি আমরা সবাই আমাদের বসার জায়গা বাদ দিয়ে অন্য কোথাও যাই না। রাত হলে প্রত্যেক তলা থেকেই নানা ধরনের আওয়াজ আসতে থাকে। বিশেষ করে মাঝ রাতে। বিষয়টা যারা আমরা রাতে থাকি তারা শুধু জানে তবে আপনাদের অফিসে যে পিয়নটা আছে সেও জানে। পাছে অফিসের কর্মচারীরা ভয় পায় সেজন্য কথাটা আমরা কাউকেই বলি না।
রাতুল দারোয়ানের কথা শুনে অল্প হেসে ফেললো। তার পর সে বললো, আরে না না তোমাদের কোথাও ভুল হচ্ছে। আগের বাড়িতে কেউ আত্মহত্যা করতে পারে কিন্তু এটা তো নতুন বিল্ডিং। আর এই বিষয়গুলো কি বর্তমান সময়ে কেউ মানবে বরং লোকের শুনলে তো উল্টে হাসবে। যাই হোক এ সমস্ত ভেবোনা। তোমাদের শোনার ভুল হচ্ছে। তবে তোমরা এতজন কি করে ভুল শুনছো, সেটা আমি বুঝতে পারছি না।
দিলেন তো ভয় পাইয়ে দাদা। ভাগ্যিস দিনের বেলায় পড়ছিলাম। রাতে পড়লে তো আরো ভয় লাগতো। রাতুল দারোয়ানের কথা পুরোপুরি বিশ্বাস না করলেও কিছুটা মনে সন্দেহ রয়ে গিয়েছে। মনে হচ্ছে সামনে ভয়ঙ্কর কিছু হবে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা। ধন্যবাদ।
একসাথে ১৩ জন আত্মহত্যা করেছে, সেখানে আবার নতুন বিল্ডিং শুনেই তো ভয় লাগছে।রাতে দারোয়ান রা এত আওয়াজ শুনে পাহারা দেয় কেমনে।আমার তো দিনের বেলাতেই ভয় লাগতো।যদিও ভয় পেয়েছি তবে এত তাড়াতাড়ি শেস করেছেন বিদায় খারাপ লাগছে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।বেশ ভালো লিখেছেন।ধন্যবাদ আপনাকে