পুজো পরিক্রমা ২০২৩ : হিন্দুস্থান পার্ক সার্বজনীন
নমস্কার বন্ধুরা,
গড়িয়াহাট সিংহি পার্ক সার্বজনীনের দুর্গা পুজো দেখে সোজা চলে গেলাম চতুর্থীর রাতে আমার দেখা শেষ পুজো মন্ডপ হিন্দুস্থান পার্ক সার্বজনীনে। হিন্দুস্থান পার্ক সার্বজনীনের এবারের থিম ‘প্রাণ’। আমরা ছোটো থেকেই, "একটি গাছ একটি প্রাণ" কথা শুনে বড়ো হই তবুও আমরা নির্বিচারে গাছ কেটে ফেলি। অথচ গাছ না থাকলে মানুষের বেঁচে থাকা সম্ভব ছিলো না। গাছের থেকে এত উপকার পেয়েও মানুষ গাছের প্রাণের প্রতি কোনো রকম ভ্রুক্ষেপ না করেই অপ্রয়োজনে গাছ কেটে ধ্বংস করে দিই।
ভগবানের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি গাছ। গাছের উপকারিতা লিখতে বসা হয় তাহলে হয়তো সেটা নিরন্তর চলতে থাকবে কারণ গাছ যেমন প্রাণীকুলকে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন দান করে তেমনি গাছ আমাদের প্রয়োজনীয় খাদ্য শস্য প্রদান করে। অথচ বর্তমানে কংক্রিটের সভ্যতায় বসবাস করা মানুষ গাছের প্রতিদানের কথা পুরোপুরি ভুলতে বসেছে। মানুষ ভুলে গেছে গাছ না থাকলে আমরা পরিশুদ্ধ বাতাস শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য পাবো না তেমনি বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যের অভাবও দেখা যাবে। গাছের প্রতিদানের কথা স্মরণ করে ৯৩ বছরে হিন্দুস্তান পার্কের দুর্গাপুজো কমিটির "প্রাণ"।
চতুর্থীর বিকেল চারটা থেকে শুরু করেছিলাম তখন পুজো মন্ডপ গুলো অনেকটাই ফাঁকা ছিলো। অল্প রাত হতেই পরিস্থিতি বদলে রাতের মহানগরীতে তখন মানুষের ঢল। চতুর্থীর রাত সেটা মানুষের ভিড় দেখলে কোনমতেই বোঝা সম্ভব নয়। গড়িয়াহাটের মোড়ে দুই ঐতিহ্যবাহী দুর্গা পুজো দেখে হিন্দুস্তান পার্কের পুজোতে গুটি গুটি পায়ে ঢুকে পড়লাম। পুজো মন্ডপ রাস্তা থেকে খুব কাছে হওয়াতে খুব তাড়াতাড়ি পৌঁছে গেলাম। মন্ডপের কাছাকাছি পৌঁছাতে বুঝলাম মন্ডপ সজ্জাতে আলো-আঁধারির ব্যবহার করে বিভিন্নভাবে গাছের অবদানের দিকটা তুলে ধরা হয়েছে। হিন্দু ধর্মের অত্যন্ত মান্যতা পাওয়া এবং ভেষজ গুণ সম্পন্ন তুলসী গাছের চারিদিকে রাখা হয়েছে। তুলসীর সুগন্ধেই আশেপাশের বাতাসে ম ম করছিলো।
আলো আঁধারের মধ্যে দিয়ে মন্ডপে ঢুকে পড়লাম। মণ্ডপের ভেতরের সজ্জা অনেকগুলো স্তরে ভাগ করা হয়েছে। প্রথমে কিছু চিত্র আঁকা সেগুলো আমাদের প্রকৃতির সাথে আমাদের যে নিবিড় সম্পর্ক সেটাকে তুলে ধরা হয়েছে। তারপর একদম মন্ডপের ভেতরের পুরো কাজটাই হয়েছে, গাছের নানা অংশ দিয়ে। যেটা আলোক সজ্জায় আরো খুব সুন্দর ফুটে উঠেছে। এর ঠিক মধ্যিখানে বিরাজ করছেন মা দুর্গা, সব প্রাণের রক্ষাকারিনী হিসেবে।
বাহ্! হিন্দুস্থান পার্ক সার্বজনীনের এবারের থিমটা তো দারুণ। আসলেই গাছ হচ্ছে আল্লাহ তায়ালার অন্যতম শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। গাছ আমাদের জন্য কতোটা উপকারী, সেটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু জানার পরও আমরা অহরহ গাছ কেটে ফেলছি প্রয়োজন বা অপ্রয়োজনে। আসলেই আমরা অকৃতজ্ঞ। উপকারের বিনিময়ে সবসময় অপকার করে থাকি। যাইহোক তাদের আয়োজন এককথায় দুর্দান্ত হয়েছে দাদা। ফটোগ্রাফি গুলো দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। এতো সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।
আমরা জ্ঞান থাকতেও অজ্ঞানী ভাই। বিষয়টা চোখের মধ্যে ঢুকিয়ে দিলেও হয়তো আমাদের হুঁশ ফিরবে না।
দাদা আজও তো দেখছি পুজো মন্ডব ঘুরে বেশ দারুন কিছু ফটোগ্রাফি আপনি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। আপনার শেয়ার করা আজকের ফটোগ্রাফি গুলো কিন্তু দারুন। তার সাথে বেশ সুন্দর বর্ণনাও করেছেন হিন্দুস্থান পার্কের সার্বজনীন পুজোর।
ধন্যবাদ দিদি।