ধান্যকুড়িয়া গায়েন-দের বাগান বাড়ি
নমস্কার বন্ধুরা,
ধান্যকুড়িয়ার গ্রামে তিন তিনটি প্রাসাদোপম বাড়ির স্থাপত্য কার্য দেখে বেশ অভিভূত হতে হয়েছে। বর্তমান সময়ে যেখানে চারিদিকে দৃষ্টি কটূ বাড়িতে ছেয়ে যাচ্ছে সেখানে এমন সাজানো গোছানো গ্রাম যে এখন মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে সেটা সত্যিই অবাক করে। গ্রামের ভেতরে কিছুটা সময় কাটিয়ে গ্রাম থেকে বেরিয়ে পড়লাম বিকেল গড়িয়ে অল্প অল্প সন্ধ্যের দিকে এগিয়েছে বাড়ি ফিরতেও হবে। টোটো চেপে ফের চলে এলাম ধান্যকুড়িয়া গ্রামের মোড়ে। কলকাতার দিকে যাওয়ার রাস্তাটির নাম টাকি রোড। সেই টাকি রোডের ধারেই ছিলো ধান্যকুড়িয়া গ্রামে পরিদর্শন করার শেষ আকর্ষণ, গায়েন-দের বাগানবাড়ি। ধান্যকুড়িয়া গ্রামে যে জায়গা থেকে আমি ঘোরা শুরু করেছিলাম সেটা ছিলো গায়েন বাড়ি আর টাকি রোডের পাশে তাদেরই বাগান বাড়ি।
শ্রী মহেন্দ্র নাথ গায়েন হাত ধরেই গাইন বাগান বাড়ির স্থাপনা হয়। তবে গায়েনদের মূল বাড়িটিতে ভারতীয় স্থাপত্য কলার উপরে তৈরী হলেও তাদের বাগান বাড়িটি ছিলো আদ্যোপান্তে ব্রিটিশ স্থাপত্য কলার। বর্তমানে ভগ্ন প্রায় হয়ে গিয়েও ব্রিটিশ স্থাপত্য শিল্পের নিদর্শন বাগান বাড়িটিতে স্পষ্ট। আসলে এটা ছিল গায়েন বাড়ির এক সম্প্রসারিত অংশ যেটা তারা মূলত বাগানবাড়ির হিসেবে ব্যবহার করত। কয়েক একর জায়গা জুড়ে তৈরি বাগান বাড়িতে আজ হয়তো তার জৌলুস হারিয়েছে তবে দেখলে বোঝা যায় সেই আমলে কতটা ধন-সম্পদ থাকলে এরম সুবিশাল প্রাসাদ বানানো সম্ভব।
যদিও বাগান বাড়িটির সবকিছুই আমাকে বাইরের মূল ফটক থেকে দেখতে হয়েছে। আসলে কয়েক বছর আগে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এটিকে হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করে নিজেদের তত্ত্বাবধানে নিয়ে নেয় তারপর থেকে সাধারণ মানুষের ঢোকা পুরোপুরি নিষেধ হয়ে গেছে। বাইরের লোহার দরজায় তালা দেওয়া আর এক দারোয়ান বসে আছে। তবে দূর থেকেই একটা বিষয় স্পষ্ট তা হলো স্থাপত্যের দিক থেকে বাড়িটি ব্রিটিশ দূর্গের মতো। মূল বাড়িটির গম্বুজ, জানালা থেকে শুরু করে মূল ফটকের সিংহের সাথে লড়াই রত দুই মানুষ সবেতেই ব্রিটিশ ছোঁয়া।
তবে সবই এখন অবহেলায় পড়ে আছে। রাজ্য সরকার এটিকে হেরিটেজ হিসেবে অধিগ্রহণ করলেও রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না। বাগান বাড়ির বাগান এখন জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। যাতে ঢাকা পড়েছে মূল বাড়িটিও। চাইলে খুব সহজে এটিকে একটি পর্যটকদের আকর্ষণের জায়গা করা যেতে পারে। বাড়িটিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে কিছু টিকিট মূল্য নিয়ে যদি সাধারণ মানুষের ঢোকার সুযোগ করে দেওয়া হয়। তাহলে নিশ্চিত ভাবে প্রচুর মানুষজন শুধুমাত্র গায়েনদের বাগান বাড়ি দেখার জন্যই ভীড় করবেন।
হয়তো ভেতরের দৃশ্যটা আরো সুন্দর ছিল এবং এ থেকে বেশ তথ্য গ্রহন করতে পারতাম। তবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এটা হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করেছেন জেনে ভালো লাগলো। খুব সুন্দর একটি জায়গা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দাদা। সুন্দর এই স্থানটা দেখার সুযোগ করে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
আসলে ভারত আমার অনেক পছন্দের একটা দেশ কারণ এখানে যেমন আদিম ঐতিহ্য রয়েছে তেমনি টেকনোলজি দিক থেকে অনেক উন্নত। ধান্যকুড়িয়া গায়েন-দের বাগান বাড়ি টি অবহেলায় পড়ে আছে এটা ঠিকই বলেছেন তবে এই ঐতিহ্যগুলো আসলে অসাধারণ। গেটের উপর মূর্তিগুলো দেখেই আমার নজর কেরেছে যাই হোক ধন্যবাদ দাদা আপনাকে এমন সুন্দর ব্লগ পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
এতো সুন্দর বাগান বাড়ি কতোটা অবহেলায় পড়ে রয়েছে, দেখে সত্যিই অবাক হলাম। সরকারের উচিত অতি শীঘ্রই এই বাগান বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ করা। এই ধরনের জায়গা কমবেশি সবারই দেখার আগ্রহ থাকে। সুতরাং টিকেটের বিনিময়ে হলেও, অবশ্যই এই জায়গা মানুষজন দর্শন করতে যাবে। যাইহোক গায়েন-দের বাগান বাড়ির এতো সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।