মাঝ রাতের শো: পর্ব ৩
নমস্কার বন্ধুরা,
মাঝ রাতের শো: পর্ব ২ এর পর....
রাত হয়েছে দেখে সুতীর্থা কাজ শেষ করে ল্যাপটপ ব্যাগে ঢুকিয়ে অফিস থেকে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো এমন সময় আমার এফ এম-এর ম্যানেজার অভীক তাকে ডাক দিলো। হঠাৎ ম্যানেজার কেন ডেকেছে তা নিয়ে সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে সুতীর্থা ম্যানেজারের ডেস্কে গুটি গুটি পায়ে পৌঁছে গেলো। সুদীপ্তাকে চিন্তিত দেখে অভীক দুগাল হেসে তাকে বললো,
"- আরে সেরকম কিছু নয়। আসলে আমরা শিলিগুড়িতে নতুন একটা অফিস খুলতে চাইছি সেখানে আমাদের নতুন অফিসের স্টাফ দরকার। ইন্টার্ন হিসেবে বেশ কিছু ক্যান্ডিডেট দেখা হয়েছে তবে তাদের কাজ শেখাবার জন্য একজন অভিজ্ঞ মানুষের দরকার সেই কারণেই তোমাকে মূলত ডাকা।"
সুতীর্থা নিজের মনেই ভাবতে শুরু করলো, আজ যে রেডিও স্টেশনে অডিশনটা দিয়েছে সেখানে যদি তার না হয় তাহলে তো ওকে শিলিগুড়িতে ট্রান্সফার করে দেবে। সেই চিন্তার মধ্যে সুতীর্থা একটু হারিয়ে গেলো। অভীক দা কি বলে চলেছে সেগুলো সুতীর্থার কান অবধি এসে পৌঁছাচ্ছিলো না। দু একটা কথা কানে ভাসা ভাসা আসছে বটে তবে পুরোপুরি কিছুই বুঝতে পারছে না।
হঠাৎই জোর ঝাঁকুনিতে সুতীর্থার অন্যমনস্কতাটা কেটে গেলো। হুঁশ ফিরে বুঝতে পারলো অভীক তাকে হাত চেপে জোরে জোরে ঝাঁকি দিচ্ছে আর বলছে সুতীর্থা তুমি কি শুনতে পাচ্ছ? সম্বিত ফেরা মাত্র সুতীর্থা অভীকের মুখের তাকিয়ে বললো, কিছু বলছিলে অভীক দা?
কথা বলছি যখন তখন তোমার মন কোথায় থাকে? অভীক কিছুটা রেগে গিয়েই বললো। বকা খেয়ে সুতীর্থার মুখ কাঁচুমাচু হয়ে গেলো।
অভীক আবার বলা শুরু করলো, শিলিগুড়ি অফিসের জন্য আমার এফ এম একজন লেট নাইট শো এর রেডিও সঞ্চালক খুঁজছে। যখন তুমি চাকরিতে জয়েন করেছিলে তখন জানতাম তোমার প্রাথমিক ইচ্ছে ছিলো রেডিও সঞ্চালক হওয়ার, এখন কি সেটাই আছে? যদি ইচ্ছেটা পুষিয়ে রাখো তাহলে তোমার জন্য একটা অফার আছে। নতুন অফিসের জন্য একখানি ম্যানেজার দরকার। বোর্ডের সাথে আলোচনার সময় তোমার নামটাই বারবার উঠে এলো। বোর্ডের মতে তুমিই এটার জন্য বেস্ট ক্যান্ডিডেট। তোমার কলকাতা অফিসে চার বছরের কন্টেন্ট রাইটিং এর অভিজ্ঞতা আছে তার পাশাপাশি তুমি বেশ সুন্দর গান গাইতেও পারো। কিভাবে রেডিও প্রোগ্রাম প্রোডিউস করা হয় সেটাও তোমার অল্প বিস্তর জানা আছে। অভিজ্ঞতা গুলোই এবার কাজে লাগানোর পালা এসেছে। আমরা সবাই চাইছি তুমি আমাদের শিলিগুড়ি অফিসের ম্যানেজার হিসেবে জয়েন করো। ইন্টার্নদের কাজ শেখানোর পাশাপাশি তোমাকে একটি নিজস্ব লেট নাইট শো দেওয়া হবে। তারপর এক সময় সেখানের ইন্টার্নরা কাজকর্ম শিখে গেলে লেট নাইট শো সহ কলকাতা ফিরিয়ে নিয়ে আসা হবে।
অভীক একনাগাড়ে কথা গুলো শেষ করে সুতীর্থার দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলো,
তুমি কি রাজি আছো?
![](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmVZ2LnjzbteWf1QSr3MqRaJx7dYMMGANXS258rRfzaubR/Division.jpeg)
অবশেষে সুতীর্থার স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। সুতীর্থা তো এই অফারে অবশ্যই রাজি হবে। আশা করি রেডিও সঞ্চালক হিসেবে শিলিগুড়ি অফিসে শো করে সুতীর্থার বেশ সুনাম হবে এবং সুতীর্থাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হবে না। সেজন্যই বলা হয় যেকোনো কাজে লেগে থাকতে হয়। তাহলে সুযোগ অবশ্যই আসে একদিন না একদিন। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।