বছর শুরুর পিকনিক

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

নমস্কার বন্ধুরা,

বছরের দ্বিতীয় দিনেই বছর শুরুর পিকনিক করে ফেললাম। নতুন বছরের শুরুটা বেশ ভালো ভাবেই হয়ে গেলো। আদপে আজকে পিকনিক হওয়ার কথা মোটেই ছিলো না। মাত্র দশ মিনিটের প্ল্যানিংয়ে সবকিছু হয়ে গেলো।

PXL_20230102_190615266_copy_1209x907.jpg

রোজকার মতো আমি সন্ধ্যায় হেঁটে হেঁটে বাড়ি ফিরছি সেই সময়ে পাড়া তুতো এক দাদা দাঁড় করিয়ে বললো, "ভাই বছরের শুরুতে সবাই পিকনিক করে নিয়েছে আমরাই শুধু বাদ থাকলাম"। ব্যস, এই কথা দিয়েই একটা আস্ত পিকনিক আমরা করে ফেললাম। সত্যি কথা বলতে পিকনিকের ইচ্ছা যে আমার ছিলো না তা কিন্তু নয়, তবে বিগত কদিন যে পরিমাণে ঠান্ডা পড়েছে তাতে বেশ ভয় লাগছিলো। শুধুমাত্র পাড়াতুতো দাদার জোরাজুরিতে পিকনিকটা সম্ভব হলো। আরেকটা কারণ খুব কাজ করেছে সেটা হল বছরের শেষ কদিন ধরে দুর দূরান্ত থেকে ভেসে আসা নানান পিকনিকের গান বাজনা।

পিকনিকে কথা শুনে বাইরে দাঁড়িয়েই মনের দোলাচলে পিকনিকের বাকি সদস্যদের ফোন করা শুরু করলাম। সবার কাছ থেকে কনফারমেশন পেতেই তৎক্ষণাৎ ১০ মিনিটের মধ্যে টাকা তুলে বাজার করতে সেই দাদাকেই পাঠিয়ে দেওয়া হলো। আমরা সাধারণত পিকনিক দেশি মুরগি কিংবা খাসির মাংস দিয়ে করি কিন্তু যেহেতু আজ হঠাৎ করেই হয়ে গেলো তাই ব্রয়লার মুরগি ছাড়া আর উপায় ছিল না। তাছাড়া ব্রয়লার মুরগি ছাড়ানো সহজ আবার রান্নাও খুব তাড়াতাড়ি হয়। দুজনকে বাজার করতে পাঠিয়ে আমরা বাকিরা রয়ে গেলাম উনুন খুঁড়ে রাখার জন্য।

PXL_20230102_191144591_copy_1209x907.jpg

ঝটপট করে আমাদের উনুন খোঁড়া শেষ হলো আর ওদিকে বাজারও এসে উপস্থিত। তারপর আর কি শুরু হয়ে গেলো পিকনিকের তোড়জোর। ঘড়িতে তখন সন্ধ্যা সাতটা। গরম জল করে মুরগি প্রস্তুত করে নেওয়া হলো। বাকি কজন রইলাম পেঁয়াজ রসুন আদা এগুলো কাটার দিকে। ঠান্ডার মধ্যে আমাদের হাত এতটাই জমে গেছিল যে পেঁয়াজ রসুন কাটতে কাটতে মুরগির মাংস পরিষ্কার করা শেষ। আমাদের দেরী হওয়া দেখে তাই আগে ভাত রান্না শুরু হলো।

PXL_20230102_200603323_copy_1209x907.jpg

PXL_20230102_201659077_copy_1209x907.jpg

ভাত রান্না শেষ হওয়ার আগেই আমরা বাকি সরঞ্জাম গুলো প্রস্তুত করে ফেললাম। বাকি শুধু মুরগির মাংস রান্না, যথারীতি ঝটপট করে মুরগির মাংস বসিয়ে দেওয়া হলো। তারপর সবাই মিলে উনুনের চারপাশে বসে আগুন পোহাতে পোহাতে রান্না এগোতে দেখলাম। যদিও আমি দু একবার ছাড়া পকেট থেকে হাত বের করার মতো ইচ্ছে বা সাহস কোনোটাই দেখাইনি।

PXL_20230102_213056309_copy_863x645.jpg

ঘন্টাখানেকের মধ্যে মাংস রান্না হয়ে গেলো ঘড়িতে তখন বাজে সাড়ে নটা। রান্না হতেই ঝটপট করে লেবু আর কাঁচা পেঁয়াজ কেটে নেওয়া হলো। বেশি অপেক্ষা না করে সবাই থালা নিয়ে বসে পড়লাম সাথে বেশ খানিকটা করে মাংস। কনকনে ঠান্ডার মধ্যে গরম গরম ভাতে মাখো মাখো মুরগির মাংস। আহা, উপাদেয়।

PXL_20230102_215033681_copy_1209x907.jpg

খাওয়া-দাওয়া শেষ করে সবাই মিলে দাঁড়িয়ে পড়লাম উনুনের পাশেই, অল্প গা গরম করে নেওয়ার জন্য। যদিও মুরগির মাংস এতটাই ঝাল হয়েছিল যে তখন এমনিতেই সবাই বেশ গরম হয়ে গিয়েছিলো। এমনকি অনেকের নাক চোখ দিয়েও জল বেরোচ্ছিলো। ঠান্ডার দিনে এটুকু মেনে নেওয়াই যায়। কি বলেন আপনারা?




IMG_20220926_174120.png

Vote bangla.witness


Support @heroism by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

|| Join HEROISM ||

Sort:  
 2 years ago 

শীতের মধ্যে একটু ঝাল ঝাল তরকারি না খেলে কি হয়। ঠান্ডা শরীর গরম করতে আগুন অথবা লেপ কম্বল নয় মাঝে মাঝে ঝাল ঝাল মুরগির মাংস দরকার হয়,হাহাহা। পোস্ট পড়ে বেশ মজা লাগছে। তবে আমরা যদিও এ বছরের শুরুতে পিকনিক করিনি কিন্তু হাজবেন্ডের জন্মদিন হিসেবে বেশ ভালোই কেটেছিল বছরের প্রথম দিনটি। যাইহোক সবাই মিলে একদম তৎক্ষণাৎ একটা পিকনিকের আয়োজন করে ফেললেন দেখে ভালোই লাগছে দাদা।

 2 years ago 

তাছাড়া মুরগির মাংস ঝাল ঝাল না হলে চলেই না। জন্মদিন কেই পিকনিক হিসেবে ভেবে নিন😁

 2 years ago 

দাদা শীতের দিন মানেই কো পিকনিক ৷ পাড়ার সবাই মিলে পিকনিক সত্যি অনেক ভালো লাগে নিজে রান্না করে খেতে ৷
যা হোক হঠাৎ করেই পিকনিক প্লান করে ৷ ব্রয়লার দিয়ে আয়োজন ৷ বাহ আবার খাওয়ার পর আগুনের পাশে বসে গরম হওয়া ৷ সব মিলে দারুন লাগলো ৷
ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটি পোষ্ট শেয়ার করার জন্য ৷

 2 years ago 

ঠান্ডা এতটাই বেশি ছিলো যে তাপ না পোহালে বাঁচা একপ্রকার দায় ছিলো। হাঃ হাঃ

 2 years ago 

আমাদের পাড়াতুতো দাদারা জোরাজুরি এই বছর আর করেনি তাই এই বছরের আর করা হয়নি আমাদের পিকনিক। ঝালেই জাদু দাদা, ঝাল বেশি হলে মাংসের টেস্টও বেশী হয়। যেহেতু অনেক ঠান্ডা পড়ছে এই সময় তাই একটু ঝাল বেশি খাওয়া ভালো শরীর গরম থাকবে।

 2 years ago 

সহমত। ঝালেই জাদু আছে। আহা। শীতের রাত ঝাল ঝাল মাংস।

তোমরাই জোরাজুরি করে পিকনিক করে নাও।

আমাদের পাড়াতুতো দাদারা এই বছর তেমন বেশি গরজ দেখায়নি পিকনিক করার জন্য। তার থেকেও একটা বড় সমস্যা ছিল সেটা হল আমার বাড়ির উপর তলায় যে থাকে সে এক্সিডেন্ট করেছিল। এজন্য ইচ্ছেটাও মরে গেছিল পিকনিক করার জন্য।

তবে শুধু মুরগির মাংস দিয়ে পিকনিক করলে হবে দাদা, আরো টুকটাক ব্যবস্থা করতে হতো। কমপক্ষে তিনটে চারটা আইটেম না থাকলে পিকনিক মনে হয় না।

 2 years ago 

আহা রে। ঠান্ডার মধ্যে কঠিন অবস্থা। তার শরীর ঠিক হলেই পিকনিক করে ফেলো।

তিন চারটে আইটেম দিয়ে করলে সকাল থেকে পিকনিক শুরু করতে হবে। হাঃ হাঃ

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 76606.02
ETH 3048.30
USDT 1.00
SBD 2.62