কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর প্রস্তুতি

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

PhotoCollage_1665429253687_copy_768x512.jpg

নমস্কার বন্ধুরা,

আজ কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো তাই সকাল সকাল তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে পড়তেই হলো। যেহেতু সন্ধ্যা বেলায় পুজো তাই আগে থেকেই পুজোর সমস্ত আয়োজন জোগাড় করতে রাখতে হবে। আর পুজোর সব আয়োজন করা একা হাতে কখনই সম্ভব নয়, বাড়ির সকলকেই অল্প অল্প করে হলেও হাত লাগাতে হবে, এটাই ছিলো নির্দেশ। যেহেতু পুজোর আয়োজনে আমাকেও হাত লাগাতে হবে তাই সকাল সকালই ঘুম থেকে উঠে যেতে হলো। আসল কথা হলো আমি যতটা না উঠতে চেয়েছিলাম তার থেকে আমাকে হাঁক পেড়ে পেড়েই বিছানা ছাড়া করানো হয়েছে।

যদিও হাঁক না পারলে আমার ঘুমটা যে আদৌ ভাঙতো কিনা তা নিয়ে আমি বেশ সন্ধিহান ছিলাম। আদপে দুর্গা পুজোর সময় থেকে শুরু করে টানা ছয় সাত দিন জ্বরে ভোগার পর শরীরে শক্তি বলে বলতে আর কিছুই ছিল না তাই অনেকটা সময় ঘুমিয়ে কাটাতে হচ্ছে তবে পুজোর দিনে বিছানায় পড়ে থাকলে তো আর হয়না। তাই অনেক হাঁক ডাক শোনবার পর কোনোমতে বিছানা ছেড়ে উঠেই পড়লাম।

PXL_20221009_141903344_copy_614x374.jpg

ঘুম থেকে উঠে দেখি সবে মুড়কি, খই, নাড়ু, মোয়া বানানোর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আমিও সেসব দেখে ঝটপট চোখ মুখ ধুয়ে কাজে লেগে পড়লাম। নাহ্! আমি মুড়কি কিংবা নাড়ু বানানোর দিকে এগোয়নি, সেসবে অনেক খাটনি তাই আমি দায়িত্ব নিলাম লক্ষ্মী ঠাকুরের প্রতিমা নিয়ে আসার। বাড়ির খুব পাশেই এক কুম্ভকার রয়েছেন তার কাছেই আমাদের প্রতিমার বায়না দেওয়া হয়েছিল। পুজোর সময়ে প্রতিমার অনেক চাহিদা থাকে তাই আগে থেকে বায়না দিয়ে রাখা হয় আরকি। আর ঠিক সেকারণের জন্যই একটু ধীরে সুস্থে সকালের জলখাবার পেটে দিয়ে বেরোলাম।

প্রতিমা নিয়ে আসতে বেশি দূরে যেতে হলোনা, মাত্র ৬০০ মিটার রাস্তা হবে। তবে এই ৬০০ মিটারের পথ যেতে গিয়ে খুবই কষ্ট হলো। আসলে মারাত্বক রকমের রোদের তেজ ছিলো সাথে আমার শারীরিক দুর্বলতা। সাইকেলে ভ্যান ছিলো বলেই রক্ষা। প্রতিমা নিয়ে বাড়ি পৌঁছতে পৌঁছতে ঘেমে নেয়ে স্নান করে যাওয়ার পরিস্থিতি।

PXL_20221009_132906545_copy_1008x756.jpg

হেস্তনেস্ত হয়ে বাড়ি ফিরে আমার উপরে আর কোনো কাজের দায়িত্ব এলো না, হয়তো আমার অবস্থা দেখেই কেউ আর ভারী কাজের দায়িত্ব দেওয়ার সাহস পেলোনা 🤪। শুধু পুজোর জায়গাটাকে পাহারা দেওয়া আর পেতলের প্রদীপ গুলোকে ধুয়ে মুছে কেতা দুস্তর বানানো এই দুই ছিলো আমার কাজ। যেগুলো আমি অতি নিপুণতার সাথে করে ফেললাম।

PXL_20221009_132829101_copy_1008x756.jpg

PXL_20221009_155729271_copy_1008x756.jpg

হাতে আর কাজ নাই তাই সোজা স্নান সেরে নিয়ে খেয়ে দিলাম ঘুম।





IMG_20220926_174120.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  
 2 years ago 

কোজাগরীর তো বেশ ভালোই আয়োজন হয় দেখছি বাড়িতে। নিজের মামাবাড়ির আয়োজনের কথা মন পড়ে গেলো। সবাই খুব হই হই করে আয়োজন করে। সারা বাড়ি জুড়ে আল্পনা চলে। আমার মা এবার পুরহিত ডাকে নি। নিজেই যেটুকু পেরেছে, করেছে।

 2 years ago 

বাহ !! দাদা লক্ষি পুজো তো বাড়িতে বেশ জাকজমক. ভাবে করেছেন৷ বাড়িতে তো নারুর মোয়া বানাতে সবাই ব্যস্ত তা ছবিতে বেশ ভালো ভাবে দেখতে পাচ্ছি৷ যাহোক আপনাকে বড় কোনো কাজে নেই ৷ শুধু প্রতিমা আনার জন্যই কাজ ছিল তবু আপনি ঘেমে একবারে হেনস্তা হয়ে গেছেন ৷ আপনি এখনো সুস্থ মনে হয় ভালোভাবে হন নি৷

 2 years ago 

আসলে মারাত্বক রকমের রোদের তেজ ছিলো সাথে আমার শারীরিক দুর্বলতা।

দাদা,এখনকার যে জ্বর উঠেছে ঘরে ঘরে মানুষের সেই জ্বরে মানুষ একদমই দুর্বল হয়ে যাচ্ছে সবেতো মাত্র কিছুদিন হলো আপনি জ্বর থেকে সুস্থ হয়ে উঠলেন তাই আপনার এতটা খারাপ লেগেছে প্রতিমা আনার সময়।দাদা, এই পুজোর মধ্যে তৈরি করা মুড়কি, খই, নাড়ু,মোয়া আমার খুব খেতে ইচ্ছে করে। আমার এক দিদি আছে তিনি এ পূজার মধ্যে যা জিনিস তৈরি করে তা কিন্তু আমাকে দিয়ে যায়।দাদা,খুবই সুন্দর করে জাঁকজমক ভাবে পরিবারের সবাইকে নিয়ে পূজার অনুষ্ঠান শুরু করেছেন দেখে খুব ভালো লাগছে। ধন্যবাদ দাদা।।

 2 years ago 

যাক,অসুস্থতা তাও একটু একটু যাচ্ছে এটাই ভালো।অনেক কাজ করেছেন কিন্তু।😜😜

 2 years ago 

দাদা, লক্ষ্মী ঠাকুরের মুখ দেখতে পেলাম না তো। কয়দিন আগেই তুমি অসুস্থতা থেকে উঠলে তার মধ্যে ঠাকুর আনার এত বড় ভারী কাজ করার পরও অন্য যে দুটি কাজ করেছ সেটাও যথেষ্ট কাজ। তোমার ধুয়ে দেওয়া প্রদীপগুলো চকচক করছে হাতের নিপুণতা আছে সেটা মানতে হবে।

 2 years ago 

যেকোন কাজ বাড়ির সবাই মিলে করলে কিন্তু সুন্দর, গোছানো এবং তাড়াতাড়ি হয়। বলেনা দশের লাঠি একে বোঝা। ছোটবেলায় কিন্তু বন্ধুরা মুড়কি, খই, নাড়ু, মোয়া এগুলো আমাদের বেশ খাওয়াত। এখনও যেতে বলে কিন্তু এখন আর সময় করে যেতে পারি না। প্রতিমা আনতে খুব কাছেই গিয়েছিলেন মাত্র ৬০০ মিটার দুরত্ব। আর এতেই আপনি ঘেমে অস্থির। তবে ভাল হয়েছে আপনাকে আর কোন ভারী কাজ করতে হল না হি হি হি। ধন্যবাদ দাদা।

 2 years ago 

প্রথমে মা লক্ষ্মীকে প্রণাম জানাই। বাড়িতে মা লক্ষ্মীর পুজো করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। পুজো উপলক্ষে বেশ পরিশ্রম করেছেন দাদা। মা লক্ষ্মী আপনাদের কৃপা করুক।

 2 years ago 

দারুণ লিখেছেন। পুরো ঘটনাটা চোখেতে সামনে ফুটে উঠছিল বর্ণনা পড়ে।

 2 years ago 

আপনি অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও খুবই ভালো প্রস্তুতি নিয়েছেন দাদা।আসলে এই পূজা মানেই মুড়ি,মুড়কি,খই ও নাড়ু না বানালে হয়ই না।আমাদের বাড়িতে অবশ্য নিজেরাই পুঁথি পড়ে করা হয়েছে।ধন্যবাদ দাদা।

 2 years ago 

কোজাগরী মাতা লক্ষী কে প্রণাম। আপনি দায়িত্ব সহকারে মাতা লক্ষ্মী পূজার প্রস্তুতি বেশ ভালোভাবেই সম্পন্ন করেছেন। আমার মনে হয় সবথেকে কঠিন কাজ হলো, পূজা আরম্ভের আগে মায়ের মূর্তিকে বাড়ি পর্যন্ত নিয়ে আসা। আর এই কাজটা খুবই যত্ন সহকারে করতে হয়। আমিও মূর্তি আনা কাজটি অনেক বার করেছি।রোদ,বৃষ্টি কিংবা গরম যাই হোক না কেন, সকল বাঁধা অতিক্রম করে মূর্তিকে বাড়ি পর্যন্ত নিয়ে আসা একটি বিশাল বড় চ্যালেঞ্জ। আপনি খুব ভালোভাবে মা লক্ষ্মী পূজার পূর্ব প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করেছেন, মা আপনার জন্য কৃপা করুক।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.033
BTC 64349.87
ETH 2775.11
USDT 1.00
SBD 2.65