রাতের কলকাতায়...
নমস্কার বন্ধুরা,
বহুদিন পর রাতের কলকাতায় বেরোলাম তবে ঠিক সফরের উদ্দেশ্যে নিয়ে নয়। আসলে কিছুটা প্রয়োজনের তাগিদে বেরোতে হয়েছিল। হঠাৎ করে ২৫ শে ডিসেম্বর পিসিকে কলকাতা ফিরতে হলো ব্যক্তিগত প্রয়োজনে। রাতের ট্রেনের টিকিট নেই সেজন্য দুপুরবেলার ট্রেনের টিকিট কেটে মাঝ রাত্তিরে শিয়ালদহ স্টেশনে নামা ঠিক হলো। আর সে কারণেই মাঝ রাতে আমার বেরোনো। তবে কারণ যাই হোক অনেকদিন পরে ফের রাতে কলকাতা শহরে বেরোতে পেরে বেশ অন্য ধরনের ভালো লাগলো। রাতের শহর কলকাতা এক অচেনা নগরী হয়ে ওঠে। সারাদিন যে জায়গা গুলো অত্যন্ত ব্যস্ত থাকে রাতে সেই জায়গা গুলো যেন সবচাইতে বেশি নিস্তব্ধ হয়ে যায়।
রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ ট্রেন শিয়ালদহ স্টেশনে থামবে তাই সাড়ে এগারোটা নাগাদ বেরিয়ে পড়লাম। বেরোনোর সময় অল্প অল্প শীত করছিলো। আসলে কলকাতার আবহাওয়া বড্ড বিভ্রান্তিকর। দুদিন আগে যেখানে অল্প গরম লাগছিলো আজ হঠাৎ করেই ফের ঠান্ডা লাগছে। আবহাওয়া যাই হোক, শীতের রাতে ফাঁকা রাস্তায় পেয়ে গাড়ি ছুটতে লাগলো। আগে ডিসেম্বরের রাত মানেই মুখ থেকে ধোঁয়া বেরোবে বা হাত পা জমে যাবে সেটা কিন্তু একবারের জন্য অনুভূত হলো না। আবহাওয়ায় যে কতটা পরিবর্তন হয়েছে সেটা হয়তো ছোট ছোট এই বিষয়গুলো থেকেই বোঝা যায়।
যথারীতি শিয়ালদহ স্টেশন যখন পৌঁছলাম তখন সেখানে মানুষজনের ভিড়। লোকাল ট্রেনের টিকিট কেটে স্টেশনে ঢুকে পড়লাম যদিও আমরা গন্তব্য ছিল না তবে স্টেশনে তো টিকিট ছাড়া ঢোকা যায় না। শিয়ালদহ স্টেশনে দূরপাল্লার ট্রেনের প্লাটফর্ম গুলোতে দিনের বেলায় ভীড় লেগেই থাকে রাতে একদম ফাঁকা। থাকার মধ্যে আছে শুধুমাত্র কয়েকজন রেল পুলিশ, কয়েকটি সারমেয় এবং দুটি কফির দোকান। বেছে একটা কফির দোকানের পাশেই বসা ঠিক করলাম। যদিও পিসির পৌঁছাবার অল্প দেরী তবুও সেটুকু সময়ে কফিকেই বন্ধু বানাবো ঠিক করলাম। বসার সময় তাই এক কাপ কফি হাতে নিয়ে বসলাম। তারপর অপেক্ষার পালা।
রাতের শিয়ালদা স্টেশন একদমই অন্য রকমের লাগছে। দূরপাল্লার ট্রেনের প্ল্যাটফর্ম গুলোতে রাত্রি এগারোটা পর্যন্ত তিল ধারনের জায়গা পাওয়া যায় না সেখানে কয়েকজন রেল পুলিশ, আমি আর কফির দোকানে দুজন মানুষ ছাড়া আর কেউ নেই। স্টেশনের অল্প ঠান্ডা লাগছিল তাই কফি শেষ করে কানে হেডফোন গুজে গান চালিয়ে পকেটে হাত ঢুকিয়ে নিলাম। তিন নম্বর গান শেষ হওয়ার আগেই ট্রেন সঠিক সময়ে স্টেশনে এসে দাঁড়ালো। পিসিকে নিয়ে রাতের শহর ছেড়ে ঘরের দিকে রওনা দিলাম।
আমার কাছে কিন্তু আপনার রাতের কোলকাতা ঘুরে বেড়ানো দেখে কেমন যেন সিনেমাটিক মনে হচ্ছিলো। এমন নিস্তব্দ রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে কিন্তু আমার দারুন লাগে। আপনি কিন্তু শুধু পিসি কে আনা নয়, আমার মনে হয় রাতের কোলকাতা কে আপনি অনেক মিস করেছেন। ধন্যবাদ দাদা এমন সুন্দর অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
দাদা রাতের বেলা ঘুরাঘুরি করতে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে। যদিও শীতের দিনের তুলনায় গরমের দিনে, রাতের বেলা ঘুরাঘুরি করতে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে। তবে এখন আর আগের মতো এতো শীত নেই। যাইহোক আপনার পিসিকে বাসায় আনতে এতো রাতে শিয়ালদহ স্টেশনে যেতে হয়েছে আপনাকে। যতটুকু জানি শিয়ালদহ স্টেশন হচ্ছে কলকাতার খুবই ব্যস্ততম একটি স্টেশন। যাইহোক আপনার পিসিকে নিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে ঠিকঠাকমতো রওনা দিতে পেরেছেন, জেনে ভীষণ ভালো লাগলো দাদা। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ঋতুর পরিবর্তনের কারণে দেখা গেছে যে যখন শীত হওয়ার দরকার, তখনও গরম পড়ছে। আবার যখন বর্ষার দিনে বৃষ্টির দরকার তখন বৃষ্টি পাচ্ছি না। যাই হোক রাতের কলকাতা আপনার ফটোগ্রাফির মাধ্যমে ভালই লাগলো। হয়তো সরাসরি দেখার সুযোগ নেই, তাই আপনার ফটোগ্রাফি দেখে কিছুটা হলেও উপলব্ধি করলাম ধন্যবাদ দাদা।
দাদা আপনার পিসি মনিকে নিতে এসে রাতের কলকাতার শহর ঘুরে শিয়ালদহ রেলওয়ে স্টেশনে আসার বসার ও কফি খাওয়ার অনুভূতি পড়ে দারুন লেগেছে। আমাদের দেশের বিভাগীয় রেলস্টেশন ব্যতীত অন্য স্টেশনে প্রবেশ করতে টিকেট নিতে হয় না। আপনাদের দিকে নিয়ম কড়া। ধন্যবাদ।