কিছুটা সময় নিজের জন্য... // ১০% লাজুক 🦊-কে
নমস্কার,
বেশ কিছুদিন আগে চার দেওয়ালের বন্দি দশা কাটাতে আমি প্রায় উদ্দেশ্যহীন ভাবেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েছিলাম। সেবার আমার গন্তব্য ছিলো ব্যারাকপুর স্টেশন, কলকাতা থেকে মাত্র ৩০ মিনিটের পথ। আমার সেদিনের অভিজ্ঞতা ছিলো অদ্ভুত ভাবেই ভালো, সে থেকেই আজও একই ভাবে বেরিয়ে পড়লাম কলকাতা থেকে অল্প দূরে কোনো ফাঁকা স্টেশনের খোলা আকাশের নীচে খানিকটা সময় নিজের সাথে কাটাতে।
দুপুর তিনটেয় কাজকর্ম সেরে যখন বাড়ি ঢুকলাম তখন আর হাতে দু দন্ড জিরিয়ে নেওয়ার সময় ছিলো না। বারবার মাথায় ঘুরছিলো যত তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যাব তত তাড়াতাড়িই বাড়ি ফিরতে পারব। তাই বিকেল ৪:৩০ মিনিটের ট্রেন দেখে বাড়ি থেকে ৩:৪৫ মিনিটেই বিধান নগর স্টেশনের দিকে বেরিয়ে পড়লাম।
স্টেশন পৌঁছেই সোজা ঢুকলাম টিকিট ঘরে। টিকিট কাটলাম তারপর আবার পা বাড়ালাম প্লাটফর্মের উদ্দেশ্যে। প্লাটফর্মে উঠতেই দেখি জন সমুদ্র। আমি প্রায় দিকভ্রান্ত যাযাবরের মতোই দাঁড়িয়ে পড়লাম জন সমুদ্রের মাঝে। সঠিক সময়েই ট্রেন প্লাটফর্মে প্রবেশ করলো। হুড়োহুড়ি করে ট্রেনের কামরায় উঠে পড়লাম আর সৌভাগ্যবশত একটা জায়গাও পেয়ে গেলাম। ট্রেন চলা শুরু হলে আমিও কানে হেডফোন গুঁজে চোখটা বুজলাম।
ঘন্টাখানেক পর আমার হুঁশ ফিরলো। আর হুঁশ ফেরা মাত্র সিট ছেড়ে উঠে পড়লাম ট্রেন থেকে নামার জন্য। স্টেশনে নামলাম যখন ততক্ষণে সূর্য অস্তমিত হয়েছে। স্টেশনের মাঝামাঝি খোলা আকাশ দেখেই বসলাম। বসা মাত্রই মাথায় নানা চিন্তা আনাগোনা শুরু করে দিলো। নানান চিন্তা ভাবনা করছি আর কাজ শেষে ঘরে ফেরা ক্লান্ত মানুষগুলোকে দেখছি।
অনেকটা সময় সেভাবেই কাটিয়ে দেবার পর ভাবলাম স্টেশনের আশপাশটা ঘুরে দেখলে হয়। সেইমতো উঠে পড়লাম। স্টেশন থেকে বেরিয়ে পড়লাম, বেরোতেক দেখলাম স্টেশন চত্বরে বিশাল চৈত্র সেল অথচ স্টেশনে সেটার লেশমাত্রও ছিলো না।
দিক ভ্রান্তের মতো আশপাশটা ঘুরছি তখনই কানে এলো, ও দাদা প্যান্ট নিয়ে যান, মাত্র ৭০ টাকা। আমি দোকানির দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে আবার ঘুরতে শুরু করলাম। চৈত্র সেলে কেনাকাটা করতে থাকা মানুষ গুলোর উদ্দীপনা ছিলো চোখে পড়ার মতোই। আমি খানিকটা সময় ঘোরাফেরা করে আবার স্টেশনে ফিরলাম। স্টেশনে ঢুকতেই মানুষের কোলাহলটা আর পেলাম না, স্টেশনও তখন অনেকটা ফাঁকা, চারিদিকে শুধুই নিস্তব্ধতা।
শুনশান স্টেশনে ঘরে ফেরার জন্য ট্রেনের অপেক্ষা করছি। মিনিট দুয়েক পরে স্টেশনের নিস্তব্ধতা চিড়ে মাইকে ঘোষণা হলো, ডাউন শিয়ালদহ-রানাঘাট লোকাল দুই নাম্বার প্লাটফর্মে আসছে....। নিজের সাথে কিছু সময় কাটিয়ে আবার ঘরে ফেরার পালা যে...
| 250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
অসম্ভব সুন্দর হয়েছে দাদা।নিজের প্রতি পার্সোনাল সময় দেওয়া মাঝে মাঝে অনেক দরকার।৭০ টাকার প্যান্ট কিন্তু মাঝে মাঝে খুব ভালো হয় দাদা😁।আর শেষ টা অনেক সুন্দর হয়েছে, কাব্যিক একটা ফ্লেভার পাওয়া গেছে
জীবনে কাব্য ছাড়া সবই পারবো তবুও ধন্যবাদ ভাই 🤗
এটি দারুণ ছিল দাদা হিহি। তা চৈত্র সেল থেকে নিজের জন্য কিছু নিয়ে নিতে পারতেন। বছরের শেষ কেনাকাটা স্মৃতি হয়ে থাকত হাহা।
সাহস হলো না। কি জানি বাড়ি আসতেই হয়তো ছিঁড়ে গেলো। হাঃ হাঃ
😂😂😂😄 অস্থির
এটাও সম্ভব! এটা বিশ্বাস করতেই তো কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।আমি হলে ঠিক ফিরে যেতাম।😉🤪
নিজের জন্য কিছুটা সময় খুব দরকার।
আমারও ইচ্ছে করছিলো তবে প্যান্টটার আয়ু নিয়ে বেশ সন্ধিহান ছিলাম তাই যাইনি। 😆
কিছু সময় নিজের জন্য রাখা আমাদের সবারই উচিত ।কারণ যদি আমরা শুধু কাজই করে যাই তাহলে জীবনকে উপভোগ করতে পারবোনা। আপনার মত মাঝেমধ্যেই খোলা আকাশের নিচে কিছু সময় কাটিয়ে নেওয়া ভালো যা আমাদের মনকে রিফ্রেশ করে। ধন্যবাদ আপনাকে।
জীবন উপভোগ করার থেকেও নিজের সাথে একান্ত সময় কাটানো দরকার। ধন্যবাদ ভাই 😊
দাদা এটা বেস্ট ছিল। নিজের জন্য আমরা দিন শেষে কিছুই রাখি না। হাজার ব্যস্ততার মাঝে ও যদি এভাবে নিজেকে মাঝে মাঝে সময় দেয়া যাই তাহলে খারাপ কি। আমি হলে ও ঠিক এভাবেই হটাৎ বেড়িয়ে পরতাম। ধন্যবাদ দাদা।
সময়টা হবে শুধু নিজের জন্য।
আসলে দাদা আমি মনে করি যে এভাবে 70 টাকায় প্যান্ট নিতে ডাকছে এর প্যান্ট গুলো সে রকমই হয় আর কি। আর নিজের জন্য আমাদেরকে অবশ্যই কিছু সময় বের করা উচিৎ এতে আমাদের মন ভালো থাকে।
সেই জন্য সাহস পায়নি কেনার। 🤣
আপনার লেখা পড়তে পড়তে কল্পনায় ট্রেনে চেপেছিলাম। চৈত্র সেল প্যান্ট মাত্র ৭০ টাকা। জানি না কেমন হবে তবু যাই হোক না কেন দাম মাত্র ৭০ টাকা। আমার কাছে অবাক করার মত বিষয়। এত জন সমুদ্র তবু সব কিছু চলছে নিয়মে। ভাল লেগেছে খুবি । ভাল থাকবেন দাদা।
চৈত্র সেলে আগের বছরের সব মালপত্র বেঁচে দেওয়ার রীতি তাই দাম অতিরিক্ত ভাবেই কমে যায়।
দারুন তো