পুজো পরিক্রমা ২০২৩ : হাতিবাগান নবীন পল্লী
নমস্কার বন্ধুরা,
বর্তমান যুগে বাংলা ছড়ার মান ও কদর দিন দিন কমে চলেছে। ধীরে ধীরে বাংলা লেখকদের আড়াল করে তার পরিবর্তে চলে আসছে ইংরেজি লেখকরা। এরকম সময়ে দাঁড়িয়েও যে নামটি জ্বলজ্বল করছে তা হলো, সুকুমার রায়। সুকুমার রায়ের আবোল তাবোল পড়েনি এমন বাঙালি খুব কম পাওয়া যায়। অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই বাঙালি সন্তানের সৃষ্টি আজ বাঙালির অন্তরাত্মায় স্থান করে নিয়েছে। "হুঁকো মুখো হ্যাংলা" হোক কিংবা "ঠাস দ্রুম দ্রাম" এর মতো ছড়া গুলো শুনলেই এই মানুষটার কথা চোখে ভেসে উঠে। তার সৃষ্টি নিয়েই এবছরে হাতিবাগান নবীন পল্লীর পুজো পরিকল্পনা। নিজের জীবদ্দশায় এই শ্রেষ্ঠ বাঙালি তার প্রাপ্য সম্মান পাননি। এমনকি মানুষটি কালজয়ী লেখা প্রকাশিত হতেও দেখে যাননি। সুকুমার রায়ের মৃত্যুর মাত্র দশ'দিন পরে প্রকাশিত হয় আবোল তাবোল। নবীন পল্লী সুকুমার রায়ের এই অমর সৃষ্টি নিয়ে ফুটিয়ে তুলেছে তাদের পুজো মন্ডপ।
১৯২৩ সালের ৯-ই সেপ্টেম্বর তারিখে সুকুমার রায় ইহলোক ত্যাগ করেন আর সেই বছরের ১৯-শে সেপ্টেম্বর তারিখে তার কালজয়ী লেখা আবোল তাবোল প্রকাশিত পায়। স্রষ্টা জীবদ্দশায় তার সৃষ্টিকে পুস্তকরূপে দেখতে পাওয়ার আগেই পরোলোকে চলে যান। ২০২৩ সালে সুকুমার রায়ের মৃত্যু এবং আবোল তাবোলের একশত বছর পূর্ণ হলো। সেই বিষয়টিকে বাস্তবের মাটিতে এনে হাতিবাগান নবীন পল্লী তাদের পুরো পাড়াটিকে আবোল তাবোলের প্রচ্ছদে সাজিয়ে নিয়েছে। পুজোর থিম রূপে জায়গা পেয়েছে সুকুমার রায়ের কালজয়ী লেখার সমস্ত চরিত্ররা।
ষষ্ঠীর মধ্যরাতে কাশী বোস লেন থেকে সোজা বেড়িয়ে হাতিবাগানের নবীন পল্লীতে পৌঁছে গেলাম। হাতিবাগানে মোট চারখানি খুব ঐতিহ্যশালী পুজো রয়েছে। তার মধ্যে একটি হাতিবাগান নবীন পল্লী। গলিতে যখন ঢুকে পড়লাম তখন যেন অবাক হওয়ার পালা। সারা কলকাতা জুড়ে নানা ধরনের নানা ভাবনার নানান জিনিসপত্র দিয়ে বানানো মন্ডপ দেখে এসেছি তবে নবীন পল্লী সবার থেকে একদমই আলাদা রকমের। কারণ ধীরে ধীরে নবীন পল্লী গলিতে ঢুকে বুঝলাম পুরো পাড়ার বাড়ির দেওয়াল জুড়েই আবোল তাবোলের প্রচ্ছদ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। কোথাও হাঁসজারু আবার কোথাও সুকুমার রায়ের ছড়া। আবোল তাবোলে হরেক বিষয় পাড়ার দেওয়ালে ফুটে আছে। যেটা সত্যিই এক অনন্য।
মন্ডপের অন্দর জুড়ে আবোল তাবোলের চরিত্ররাই স্থান পেয়েছে। আর এদের মাঝেই বিরাজিত জগৎ জননী মা দুর্গা।
একেবারে যথার্থ বলেছেন দাদা, বর্তমান যুগে ইংরেজি লেখকদের জয়গান চারিদিকে। যাইহোক সুকুমার রায়ের আবোল তাবোল আমার মনে হয় প্রায় প্রতিটি বাঙালি পড়েছে। যাইহোক হাতিবাগান নবীন পল্লীর থিম এবং সম্পূর্ণ আয়োজন দারুণ লেগেছে দাদা। প্রতিটি ফটোগ্রাফি চমৎকারভাবে ক্যাপচার করেছেন দাদা। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
দাদা, যদিও আমি সুকুমার রায়ের লেখা আবোল তাবোল পড়িনি তবে দুর্গা পুজোর এই থিম দেখে মনে হচ্ছে, কোন কাব্যের জগত। যদিও এই বছর আমাদের হাতিবাগান নবীন পল্লী -তে যাওয়ার কথা ছিল, তবে আমার অসুস্থতার কারণে যাওয়া হয়ে ওঠেনি। যদিও তাতে সমস্যা নেই, তোমার পোস্ট দেখে সব কিছু জেনে নিলাম বিস্তারিত। তবে সত্যি কথা বলতে এখন মনে হচ্ছে যে, এই জায়গায় না গিয়ে মিস করেছি।