পুজো পরিক্রমা ২০২৩ : ত্রিধারা সম্মিলনী
নমস্কার বন্ধুরা,
দক্ষিণ কলকাতার পুজো গুলো অত্যন্ত দূরে দূরে,কথাটা খুব শোনা যায়। কথাটা কিছুটা সত্যি হলেও পুরোটা নয়। কারণ দক্ষিন কলকাতার একটা রাস্তার দুপাশেই মূল বড় বড় পুজো দেখতে পাওয়া যায় তবে কিছু পুজো আবার নানান জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। বালিগঞ্জে পাশাপাশি দুটো খুব নামকরা পুজো দেখে নিলাম। ঠিক তার উল্টোপাশে আরো দুটো পুজো, একটি ত্রিধারা সম্মিলনী আরেকটি দেশপ্রিয় পার্কের পুজো। বালিগঞ্জের বিখ্যাত দুটি পুজো দেখে ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলাম রাস্তার ঠিক উল্টোপাশেই। যদিও সেই পুজো দুটোও পাশাপাশি তবে কলকাতার রাস্তার গোলক ধাঁধার মধ্যে হারিয়ে শেষ পর্যন্ত দেশপ্রিয় পার্কের পুজো মন্ডপে যেতে পারিনি। ত্রিধারা সম্মিলনীর আলোকের রোশনাইয়ে হারিয়ে গিয়েছিলাম বললেও ভুল হবে না।
দুর্গাপুজো বাঙালির সবচাইতে বড়ো উৎসব। বাঙালি সারা বছরের কষ্ট ভুলে গিয়ে এই সময়ে মা দুর্গার আগমনে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে। প্রত্যেকে দুঃখ ভুলে কদিনের জন্য উৎসবের আলোতে গা ভাসিয়ে দেয়। শ্রীধারা সম্মিলনী সেই উৎসবকেই কেন্দ্র করে তাদের পুজোর থিমে বানিয়ে নিয়েছে। সারা বছর ধরে আমাদের জীবনে নানান প্রতিবন্ধকতা আসতে থাকে, যা আমাদের ধীরে ধীরে হতাশার দিকে ঠেলে দেয়। ঠিক তখনই মা দুর্গা আমাদের মাঝে এসে সবার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেন। আমরা সব কিছু ভুলে পুজোর আনন্দে গা ভাসিয়ে দিই।
ত্রিধারা সম্মিলনীর পুজোতে আলো ও রঙের মিশেল। মন্ডপে দিকে ঢুকছিলাম তখন তথাকথিত কোন প্যান্ডেল দেখতে পারিনি। দূর থেকে শুধু আলোর রোশনাই চোখে আসছিল। ধীরে ধীরে ভিড়ের মধ্যে দিয়ে মন্ডপের মূল অংশে প্রবেশ করার সময় বুঝলাম পুরো মন্ডল সজ্জা আলোর রোশনাই দিয়ে বানানো। চারিদিকের আলো কাজ দেখে তাজ্জব হয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না। রং ও আলোর মিছিলে এত সুন্দর মন্ডপ সৃষ্টি করা সম্ভব, সেটা ত্রিধারা সম্মিলনী বুঝিয়ে দিল। মণ্ডপের সব টুকু কাজই হয়েছে আলোর বিভিন্ন পাইপ দিয়ে।
আর সব আলোর রোশনাই ফিকে করে দিয়ে মা দুর্গা ঠিক মধ্যেখানে বিরাজ করছেন। মা এখানে শ্বেত বসনা।
ত্রিধারা সম্মিলনীর আলোকসজ্জা দেখে তো হারিয়ে যাওয়ার কথাই। ফটোগ্রাফিতে দেখতেই কতো সুন্দর লাগছে, বাস্তবে না জানি কতোই সুন্দর লেগেছিল। আশেপাশের কয়েকটি জায়গায় পূজার আয়োজন করা হলে বেশ ভালোই,হেঁটে হেঁটে খুব তাড়াতাড়ি পৌঁছে যাওয়া যায়। যাইহোক ত্রিধারা সম্মিলনীর এমন জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন দেখে সত্যিই খুব ভালো লাগলো দাদা। এতো চমৎকার মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।