বাসস্ট্যান্ডের আগন্তুক : পর্ব ৩

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago


Copyright free Image : Pexels

বাসস্ট্যান্ডের আগন্তুক : পর্ব ২ এর পর...


বাসস্ট্যান্ডের আগন্তুক : পর্ব ৩


বেশ কিছুটা সময় রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকার পরেও গাড়ির আওয়াজ খুবই ক্ষীণ ভাবে আসছিলো। অমিত গাড়ির আশা ছেড়ে তাই রাস্তা থেকে মুখ ঘুরিয়ে ফের বাস স্ট্যান্ডের দিকে এগোতে শুরু করলো। বাস স্ট্যান্ডের দিকে দু পা এগোতেই হঠাৎই হুশ করে একটা ছোটো গাড়ি কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমিতের পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে গেলো। অমিত মুহূর্তের মধ্যে রাস্তার দিকে ঘুরে চিৎকার শুরু করে দিলো।

'গাড়ি থামাও, গাড়ি থামাও, গাড়ি থামাও।'

কিন্তু গাড়িটা কিছুতেই থামলো না। যে গতিতে গাড়িটা এলো, ঠিক সেই গতিতেই গাড়িটা নিমেষের মধ্যে রাতের অন্ধকারে উবে গেলো।

গাড়ি হাতছাড়া হওয়ার রাগে অমিত গজগজ করতে করতে আর বাসস্ট্যান্ডেই গেলো না। তাছাড়া সেই অদ্ভুত লোকটা এখন বাসস্ট্যান্ডের কোনায় ঘাপটি মেরে বসে আছে। অমিত তাই রাস্তার উল্টোপাশে ফুটপাতের ধারে বন্ধ থাকা একটা চায়ের দোকানের দিকে এগিয়ে গেলো। মনে মনে সে ভাবলো গাড়িগুলো ওই দিকটাতেই এসে দাঁড়াবে, তাই রাস্তার ওপাশ টাতে দাড়িয়ে থাকাই ভালো হবে। অমিত গাড়ি পাওয়ার সুযোগ আর হাতছাড়া করতে চায় না।



Copyright free Image : Pixabay


অমিত চায়ের দোকানের উঠতেই ভূত দেখার মতো আঁতকে উঠলো। একি! সে তো এখুনি দেখে আসলো সেই লোকটা বাসস্ট্যান্ডের এক কোনায় বসে আছে। লোকটা এতো তাড়াতাড়ি চায়ের দোকানে এলো কিভাবে!? অমিতের মূর্ছা যাওয়ার মতো অবস্থা।

নিজেকে কিছুটা সামলে নেওয়ার পর অমিত চিন্তা করলো যে রাতের অন্ধকারে নিশ্চই তার চোখের ভুল হয়েছে তাছাড়া অনেকক্ষণ পেটে কিছু খাবার না পড়ে হালকা গ্যাস গ্যাস ভাব লাগছে। সেকথা ভেবে ব্যাগ থেকে জলের বোতল বের করে চোখে মুখে হালকা জল ছিটিয়ে এক ঢোক জল খেয়ে অমিত আবার চাতালের দিকে তাকালো। নাহ! চাতালে তো কেউ নেই। তাহলে চোখেরই ভুল ছিলো। মনে মনে অমিত যেন একটু খুশিই হলো তবে চাতালের দিকে এগোলো না। চায়ের দোকানের বাইরেই দাড়িয়ে পড়লো।


চায়ের দোকানের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে দূরে কোথাও থেকে চড়াৎ করে খুব জোরে বাজ পড়ার আওয়াজ পাওয়া গেলো। অমিত এইবার বেশ চিন্তায় পড়ে গেলো। এমনিতেই ঘণ্টাখানেকের উপরে বাড়ি যাওয়ার জন্য কোনো গাড়ির পাত্তা নেই তার উপর যদি এখন বৃষ্টি আসে তাহলে তো আরো বিপদ বাড়বে। একথা ভাবতে না ভাবতেই টিপটিপ করে কয়েক ফোটা বৃষ্টির জল অমিতের হাতে মুখে এসে পড়লো। অমিত ভয়ে ভয়ে আকাশের দিকে তাকালো, আকাশে কোথাও এক চিলতে মেঘ নেই।

মেয়ের জন্মদিন ছেড়ে কি করতে যে আজ সে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। নিজেকেই দোষরোপ করতে শুরু করে অমিত। এসব ভাবতে ভাবতেই বৃষ্টির বেগটা বেড়ে গেলো। কি আর করা বাধ্য হয়ে অমিত চায়ের দোকানের চাতালে ঢুকে পড়লো। চায়ের দোকানের চালে অল্প একটু ছেড়া ত্রিপল আছে সেটার নীচেই মাথা রেখে কোনোমতে দাড়ালো।


চলবে....





Support @heroism by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

|| Join HEROISM ||

Sort:  
 2 years ago 

দাদা গল্পটা বেশ দারুণ লাগছে। আপনার গল্প পড়ে বুঝতে পারলাম, যেখানে বাঘের ভয়, সেখানে রাত হয়। অসাধারণ লিখেছেন তবে একটু একটু ভয় ধরেছে। তবে গল্পটা যদি রাত্রে পড়তাম নিযগাদ ভয় পেতাম। আগামী পর্বগুলোর অপেক্ষায় থাকলাম। আপনার জন্য রইল ভালোবাসা অবিরাম।

 2 years ago 

ধন্যবাদ রবিউল দা 😇

 2 years ago 

দাদা, গল্পটা পড়ে বেশ ভাল লেগেছে তবে গল্পের প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্ব পড়তে পারি নি। দাদা, বাকি পর্বগুলো পড়ার অপেক্ষায় রইলাম। তবে দাদা, এই গল্পটা মনে হচ্ছে কিছুটা ভুতুড়ে টাইপের আমি খুব মনোযোগ সহকারে এই গল্পটা পড়েছি খুব ভালো লেগেছে। ৪র্থ পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ দাদা।।

 2 years ago 

আগের পর্ব গুলোর লিংক দিয়ে দিলে ভালো হয় কি?

ধন্যবাদ রীতা ম্যাডাম 😇।

 2 years ago 

দাদা,এটা ভালো হবে।দাদা চতুর্থ পর্ব টা কখন দিবেন সেই অপেক্ষায় আছি।।

 2 years ago 

দাদা তুমি একদিন প্রশ্ন করেছিলে বিনা মেঘে বজ্রপাত কি করে হয়? তার উত্তর আজ তোমার গল্পের মধ্যেই পেয়ে গেলাম। অমিত তো বিনা মেঘে বজ্রপাতের দেখা পেয়ে গেছে। হিহি 🤓 অনেকদিন পর দাদা, তোমার গল্পের তৃতীয় পর্ব দেখতে পেলাম। আজকের পর্বে ভুতের একটু আভাস পেয়েও পেলাম না এরকম হলো🧟‍♂️🧟‍♀️🧟 দেখা যাক সামনে কি হতে চলেছে অমিতের কপালে। 🤔🤔

 2 years ago 

হ্যাঁ। বিনা মেঘেই বাজ পড়ে গেলো। হাঃ হাঃ।

 2 years ago 

🤣🤣 হ্যাঁ দাদা ।

 2 years ago 

এতদিন পর এলো এই পার্ট টা। আমি ভাবলাম আর দেবেন না মনে হয়। এখনও উত্তেজনা বাকি। অপেক্ষা করড। পরের পর্ব তাড়াতাড়ি দেবেন।
লোকটা কে?
আকাশ পরিস্কার থাকতেও বৃষ্টি কেন?
সব প্রশ্ন ঘুরছে মাথায়।

 2 years ago 

অনেক দিন পরে লেখার সুযোগ পেলাম।

ধীরে ধীরে সব প্রকাশ পাবে।

 2 years ago 

আগন্তুক আগের পর্ব দুইটো দেখেছি দাদা আপনার। তিন পর্বে দারুন উত্তেজনা বাড়ছে। আমার গা তো শিউরে উঠছে একি ঘটতে চলেছে। যাইহোক আগামী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

আমার গল্প পড়ে আমিই মাঝে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। হাঃ হাঃ।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.033
BTC 64182.74
ETH 2768.00
USDT 1.00
SBD 2.66