বাড়ির বিশ্বকর্মা পুজো

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

GridArt_20220918_001107524_copy_1228x818.jpg

নমস্কার বন্ধুরা,

শরতের আবহে ধীরে ধীরে চারিদিকে পুজোর হাওয়া বইতে শুরু করে দিয়েছে, তবে যতক্ষণ সূর্য্য দেখা যায় আরকি। আসলে বিগত কদিন ধরে অনবরত বৃষ্টি হয়ে চলেছে, থামার কোনো প্রকার ইঙ্গিতই নেই। আজ যখন বৃষ্টির মধ্যে বিশ্বকর্মা পুজো হলো তখন আবহাওয়া দেখে শরৎ কম বর্ষাকালই বেশি মনে হচ্ছিলো।

যারা জানেন না তাদের বলে রাখা ভালো যে, বাবা বিশ্বকর্মা হলেন দেবতাদের ইঞ্জিনিয়ার। তাই যেসব মানুষের জীবিকা যন্ত্রপাতির সাথে জড়িত থাকে তাদের মধ্যে বাবা বিশ্বকর্মার পুজো করার চলটা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। বাবা বিশ্বকর্মার পুজো যেমন ছোটো-বড়ো সব ধরনের কলকারখানাতেই খুব ধুমধামের সাথে হয় তেমনি প্রত্যেক গৃহস্থ বাড়িতেও বাবা বিশ্বকর্মার পুজো বেশ আনন্দ সহকারেই হয়। আসলে সব বাড়িতেই সাইকেল, মোটর সাইকেল কিংবা গাড়ি বিদ্যমান। আর বিশ্বকর্মা পুজো শেষ হতেই দুর্গা পুজোর ঢাকে কাঠি পড়ে গেলো। শুরু হলো দুগ্গা পুজোর দিন গোনা।


সারারাত জ্বরে কেঁপেও আমি সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়েছিলাম। আসলে কথা ছিল যে পুরোহিত মশাই সকাল বেলাতেই পুজো করতে আসবেন। পুজোর সাথে সাথে থাকবো। কিন্তু সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে খুব একটা লাভ হলোনা. যেখানে পুরোহিত মশাইয়ের আসবার কথা ছিলো সকাল ৮ টার মধ্যে তিনি আসলেন ১০ টার কাছাকাছি সময়ে। আসলে সরাসরি যে তার ভুল সেটা বলা চলে না, মাঝে মধ্যেই বৃষ্টি তো হচ্ছিলো সাথে সব বাড়ি থেকে পুরোহিতকে নিয়ে টানাটানি। বিশাল কান্ড আরকি। সেসব। বাড়ি গিয়ে পুজো করতেই নাকি আরো বেশি দেরী।

পুরোহিত মশাই বাড়িতে পৌঁছতেই আর দেরী করা হলোনা, ঝটপট করে নিয়ম কানুন মেনে পুজো শুরু করে দেওয়া গেলো। যদিও আমি একটু দূরে দূরেই ছিলাম। কারণ আমি আবার বিগত বেশ কদিন যাবত জ্বরে পড়ে আছি। আর এ সময়ের জ্বর বেশ ছোঁয়াচে হয় তাই সবার সাবধানতার কথা মাথায় রেখে আমি একটু দূরে বসে থাকলাম আর পুজোর মুহূর্ত গুলো খুব ভালোভাবে অনুভব করলাম। পুজো শেষ হতেই পটাপট দুটো ছবি তুলে ফেললাম।

PXL_20220917_132032772_copy_1008x756.jpg

PXL_20220917_132024380_copy_1008x756.jpg

পুজো শেষ হওয়ার পর প্রসাদ গ্রহণ করলাম। পুরোহিত মশাই নিজেও অল্প প্রসাদ গ্রহণ করে অল্প বৃষ্টি থামতেই আবার বেরিয়ে পড়লেন, পরের বাড়ির উদ্দেশ্যে। পুজো শেষ করে ঘরে চলে এলাম, তখন ঘুমে আমার চোখ জড়িয়ে আসছে। আসলে রাতে খুব একটা ভালো ঘুম হয়নি। আর কোনো কাজ নেই বুঝতে পেরে বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম। পলকের মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়লাম।

ঠিক দুপুরবেলাতে খাওয়ার ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো, নইলে আজ মনে হয় ঘুম ভাঙার কোনো সুযোগ ছিলোনা 🤪। উঠে দেখি বিশ্বকর্মা পুজোর স্পেশাল মেনু তৈরী হয়েছে, খিচুড়ি। পাত পেড়ে বসে পড়লাম। খিচুড়ি, বেগুন ভাজা, আলু পটল ভাজা, পাঁচ মেশালি তরকারি আর সাথে অল্প গরুর গাওয়া ঘি।

PXL_20220917_132838500_copy_1008x756.jpg

আহা। বিশ্বকর্মা পুজো সাথে বৃষ্টি। অবশেষে যেন বৃষ্টির জন্য খুশি হলাম। তৃপ্তি করে সবটুকু খিচুড়ি সাবরে দিলাম। জ্বরের মধ্যে বৃষ্টি, পুজো ও খিচুড়ি সব মিলিয়ে বাড়ির বিশ্বকর্মা পুজো বেশ ভালো কাটলো। থালার দিকে বেশি নজর দেবেন না,গরম খিচুড়ি ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য অতগুলো দেখাচ্ছে। খিক খিক।





Support @heroism by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

|| Join HEROISM ||

Sort:  
 2 years ago 

বিশ্বকর্মা পুজো দিয়ে শুরু হয় বছরের বড় বড় উৎসব গুলো। বিশেষ বিশেষ দিনগুলোতে পুরোহিত মশাই পাওয়া খুবই কষ্টদায়ক হয়ে যায়, কারন মোটামুটি সব বাড়িতেই পুজো থাকে পারলর সবাই বগলদাবা করে পুরোহিত মশাই কে ধরে নিয়ে যায়। পুজোর আয়োজন খাওয়া দাওয়া সবকিছুই খুব ভালো ছিল।ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি দাদা আপনি যেনো খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যান। সুন্দর মুহুর্ত গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা।

 2 years ago 

যিনি গড়বেন তাকে দিয়েই যে শুভ কাজের শুরু হয় দিদি।

 2 years ago 

আমিতো শুনেছিলাম,দূর্গা পূজার আগে নাকি বৃষ্টি অবশ্যই হয়।আর কটাদিন পরেই তো পুজা।হয়তোবা তার লক্ষণ হিসেবেই এতো বৃষ্টি হচ্ছে।

শরীরে জ্বর থাকা সত্ত্বেও দারুণভাবে বিশ্বকর্মা পুজা উপভোগ করেছেন দাদা।আমিও অবশ্য ফেসবুকে দেখেছি অনেকের পুজার সময়ের মুহুর্ত। বেশ ভালোই লাগে।
শুভ কামনা জানাই, আসছে দূর্গা পূজা মনের মতো করে কাটান।

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন। পুজোর আগে বৃষ্টি হয়, এটাই নিয়ম।

আপনাকেও শুভকামনা জানাই।

 2 years ago 

আশা করি জলদি সুস্থ হয়ে উঠবেন।পুরুতমশাইরা এরকম বড় বড় পুজোর দিনে এরকম দেরি করেই আসেন।স্বরস্বতী পুজো তে সেই ঠান্ডার মাঝে ভোর বেলা স্নান করে বসে থাকি কারন পুরুতমশাই ভোরে আসবেন কিন্তু উনি আসেন ১০টায়।কাল আমরাও অনেক মজা করেছি।ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মুহুর্ত গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago (edited)

যেহেতু সবার বাড়িতেই বিশ্বকর্মার পুজো হয় সে কারণে আরো বেশি দেরী হয়।

 2 years ago 

সর্বপ্রথম আপনার সুস্থতা কামনা করি প্রিয় ভাই , আসলে হিন্দু ধর্মালম্বীদের বিশ্বকর্মা পুজা দিয়েই তাদের আনুষ্ঠানিক পুজা শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে ১২ মাসে ১৩ পার্বন , পুজা মানেই বৃষ্টী , ছোট কাল থেকেই দেখতাম পুজার সময় হলেই বৃষ্টী হত , এতেই ধর্মালম্বী ভাইদের আনন্দ লুকিয়ে থাকে , আর খিচুরির কথা কি বলব এই রেসিপিটা তো রান্না হলেই জমে ক্ষির বলাই লাগে , সব মিলিয়ে আপনার শেয়ার করা কিছু মুহুর্তগুলো অনেক ভাল লাগল ভাই

 2 years ago 

সত্যিই, বিশ্বকর্মা পুজো দিয়ে ১৩ পার্বণের সূত্রপাত বলতে পারেন।

 2 years ago 

বেশ ভালই ধক্কল এ পড়েছিলেন দাদা। একে তো শরীর খারাপ তার উপর বাড়িতে বিশ্বকর্মা পুজো। সেই সাথে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপের অনবরত বৃষ্টি। কষ্ট হলেও বাড়ির পুজো সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে এটাই বিশাল পাওয়া। আপনার দ্রুত রোগ মুক্তি কামনা করছি।

 2 years ago 

সেটাই বাঁচোয়া। ভালোই ভালোই পুজো হয়ে গেলো।

 2 years ago 

দাদা নমস্কার,
প্রথমে আপনার সুস্থতা কামনা করছি ৷আপনি অসুস্থ শুনে অনেক খারাপ লাগলো৷যাই হোক সকালে বাবা বিশ্বকর্মা দেবের পুজো বাড়িত করেছেন খুব ভালো৷
গতকাল আমরাও পুজো করেছি দাদা ৷

 2 years ago 

বাহ্। আশা করি ভালোয় ভালোয় পুজো দিয়েছেন।

পুরোহিতের দোষ কোথায় বলো। পুজোর সময় পুরোহিত নিয়ে টানাটানি পড়ে, এটা তো এখন বলতে গেলে কমন হয়ে গেছে। এইজন্য আমাদের বাড়ির কিছু কিছু পূজো আমরা নিজেরাই করি। পুরোহিত লাগে না।

খিচুড়ি, বেগুন ভাজা, আলু পটল ভাজা, পাঁচ মেশালি তরকারি আর সাথে অল্প গরুর গাওয়া ঘি।

কি খেয়েছ সেটা বললে নাকি, লোভ দেখানোর চেষ্টা করলে ঠিক বুঝতে পারলাম না। তবে তোমার যেহেতু জ্বর ছিল তাও সুষ্ঠুভাবে সবকিছু সম্পন্ন হয়েছে এটাই অনেক। আর তোমার মত আমারও একই অবস্থা হয়েছে, রাতের বেলা ঠিকঠাক ঘুম হচ্ছে না আর দিনের বেলা পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছি।

 2 years ago 

বিশ্বকর্মা পুজো আর স্বরস্বতী পুজো দুটোতেই ধুতি টানাটানি হয়। হাঃ হাঃ।

এক ঢিলে দুই পাখি হয়ে গেলো। 😝

 2 years ago 

প্রিয় দাদা আমি প্রথমেই আপনার সার্বিক সুস্থতা কামনা করছি। ধর্মীয় যে কোন উৎসব মানেই আনন্দ, উচ্ছ্বাস ও উল্লাসে মেতে ওঠা। বাড়িতে বিশ্বকর্মা পুজোর মাধ্যমে নিশ্চয় আপনার পরিবারের সকলেই অনেক আনন্দ করেছে। প্রিয় দাদা শেষ পর্যন্ত শরীরে জ্বর অবস্থায় থেকেও পুজোয় আনন্দ করেছেন এটা জানতে পেরে আমার খুবই ভালো লাগলো।

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন বিদুৎ বাবু। পুজোতে খুবই মজা করা হয় 🥰

 2 years ago 

দাদা কাঁপুনি দিয়ে জ্বর খুবই বাজে জিনিস আমারও দুইদিন আগে হয়ে গেল এমন জ্বর। করোনার সময়ও এই ভাবে কাঁপুনি দিয়ে জ্বর হয়েছিল আমার।আমি তো ভয় পেয়ে গেছিলাম এই আছি, এই চলে গেলাম এই অবস্থা।
এতকিছুর পরও দাদা ভালই ভালই পুজো কাটিয়ে দিয়েছো এইজন্য বিশ্বকর্মা ঠাকুরকে অনেক ধন্যবাদ জানাও ।

খিচুড়ি, বেগুন ভাজা, আলু পটল ভাজা, পাঁচ মেশালি তরকারি আর সাথে অল্প গরুর গাওয়া ঘি।

পূজোর প্রসাদ দেখিয়ে এভাবে লোভ না দিলেও পারতে দাদা 🤤🤤 ঠান্ডা ঠান্ডা ওয়েদারে খিচুড়ি খেতে সব সময় ভালো লাগে।

 2 years ago 

দুদিন ভিজলাম তারপর থেকে জ্বর। যাক এখন একটু ভালো আছি।

লোভ দেখানোতে আমি PhD করেছি 😝

 2 years ago 

দাঁড়াও কয়েকদিনের মধ্যে আমি পিজ্জার লোভ দেখাবো তোমাদের সবাইকে, দাদা। হিহি..

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 59471.57
ETH 2618.20
USDT 1.00
SBD 2.40