বর্ধমান পর্ব ২ : শক্তিগড়ের ল্যাংচা // ১০% লাজুক 🦊-কে

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

নমস্কার বন্ধুরা,

মিষ্টি প্রেমী মানুষের কাছে বর্ধমান জেলার শক্তিগড় নামটা খুবই পরিচিত। আর শক্তিগড় পরিচিতি পেয়েছে একটি বিশেষ মিষ্টির কারণে সেই মিষ্টিটির নাম ল্যাংচা।

কালচে বাদামি রঙের ময়দা, খোয়া, চিনি ও ক্ষীর দিয়ে বানানো একধরনের লম্বা আকারের মিষ্টি হলো ল্যাংচা। অনেকাংশে পান্তুয়ার অনুরূপ খেতে এই মিষ্টিটির উৎপত্তি ও নামকরণ নিয়ে অনেক ইতিহাস জড়িয়ে আছে। ল্যাংচার উৎপত্তি নিয়ে নানা মুনির নানা মত থাকলেও সবচেয়ে প্রচলিত মত হলো, কৃষ্ণনগর রাজ পরিবার ও বর্ধমান রাজ পরিবারের বৈবাহিক সম্পর্ক। আসলে ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের মেয়ের সাথে বর্ধমানের রাজার বিজয়চাঁদ মহতাবের ছেলের বিয়ে হয়। কৃষ্ণনগরের রাজকন্যা বিবাহের পর বর্ধমানে থাকাকালীন মিষ্টি খাওয়ার আবদার করেন, যেটা তিনি কৃষ্ণনগরে বাবার বাড়ি খেতেন। রাজকন্যাকে সেই মিষ্টির নাম জিজ্ঞেস করলে তিনি তা বলতে পারেন না, শুধু এটুকুই জানান মিষ্টির কারিগর ছিলো খোঁড়া। ময়রা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতেন বলেই মিষ্টির নাম হয়ে যায় ল্যাংচা।


গত ফেব্রুয়ারিতে আমার পরপর দুবার বর্ধমান যাওয়ার সুযোগ হয়েছিলো। প্রথম বার গিয়েছিলাম শুধুমাত্র বর্ধমান শহরটা ঘুরতে আর পরের বার সইফের বিয়ের নিমন্ত্রন খেতে। আমি বর্ধমান শহরের রোড ট্রিপ নিয়ে অভিজ্ঞতা প্রথম পর্বে আপনাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছিলাম। আজ আমি বর্ধমানের অন্যতম মিষ্টি ল্যাংচা নিয়ে কিছু কথা আপনাদের ভাগ করে নেবো।

ইতিহাস তো আগেই জানা হলো চলুন এবার মিষ্টির দিকেই যাওয়া যাক। কলকাতা থেকে বর্ধমান শহর যাওয়ার পথে গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোডের ধারে কিলোমিটার ব্যাপী শক্তিগড় ল্যাংচা বাজার। তবে আমরা রাস্তার ধারের বাজারগুলিতে না গিয়ে মূল রাস্তা থেকে এক কিলোমিটার ভেতরে শক্তিগড় শহরের বুকে "ল্যাংচা ভবন" যাওয়া স্থির করি।

ল্যাংচা ভবন ঢুকতেই ক্ষীরের তীব্র গন্ধ নাকে আসলো। আর অপেক্ষা না করে দুটো অর্ডার করেই দিলাম। অর্ডার করার মিনিটের মধ্যে হাতে ধরিয়ে দিলো থার্মোকলের প্লেটে দুখানা করে ল্যাংচা। হাতে পাওয়া মাত্র চামচ চালিয়ে দিলাম ল্যাংচার মধ্যে। দুভাগ করে ল্যাংচার অর্ধেক মুখে পুরে দিলাম।

PXL_20220212_131342237-01_copy_1281x961.jpeg

নরম আর গরম ল্যাংচা মুখে ঢুকতেই গলে গেলো। দু খানা মিষ্টি যেন নিমেষের মধ্যেই খেয়ে ফেললাম। আহা! ল্যাংচা খেয়েই আবার বর্ধমানের উদ্দেশ্য যাত্রা শুরু হলো।





Support @heroism by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Sort:  
 2 years ago 

ল্যাংচা কোথায় যেনো এর আগে শুনেছি।ল্যাংচার বর্ননা শুনে আমারই বেশ খেতে ইচ্ছে করছে। এটা বেশ মজার ছিলে কারিগর খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাটতো বিদায় মিষ্টির নাম ল্যাংচা,😝😝। ভাই ছিলো।ধন্যবাদ

 2 years ago 

অনেক জায়গায় অনেক নাম তবে ল্যাংচাটাই আমার সেরা লাগে 😆

 2 years ago 

দাদা আজ তনুজা বৌদির পোস্টেও ল্যাংচার কথা জানতে পারলাম। বৌদিকে অবশ্য জিজ্ঞেস করেছি এটা কি জিনিস। এখন আপনার পোষ্ট থেকে জানতে পারলাম এই মিষ্টির কথা। এটা দেখতে অনেকটা আমাদের দেশের কালো জাম মিষ্টির মতো। দেখেই বোঝা যাচ্ছে অনেক ভালো মিষ্টি। শুধু শুধু লোভ বাড়িয়ে দিলেন হাহাহা

 2 years ago 

লম্বা কালো জাম বলতেই পারেন। ভেতরটায় ক্ষীর থাকে। দারুন লাগে খেতে 😋

 2 years ago 

নরম আর গরম ল্যাংচা মুখে ঢুকতেই গলে গেলো।

এরকম বর্ণনা দেওয়া ঘোর অপরাধ,ঘোর অপরাধ।এভাবে করে বললে তো খেতে ইচ্ছে করে ভাই।🤪🥺এই ল্যাংচাকে আমাদের এখানে বলা হয় কালো জাম।

 2 years ago 

সত্যিই অপরাধ! পরের বার থেকে ভিডিও বানাবো। খিক খিক।

 2 years ago 

বাহ, এই মিষ্টির নাম এই প্রথম শুনলাম, যদিও আগে কখনো খাইনি। তবে দাদা আপনার কথা শুনে যা মনে হচ্ছে অনেক সুস্বাদু। আমি কিন্তু মিষ্টি তেমন পছন্দ করি না তবে এই মিষ্টি মনে হয় আমার খাওয়ার যোগ্য। তবে আমাদের দেশে পাব কিনা তাও সন্দেহ আছে। দারুন একটা অভিজ্ঞতা হল আজ।

 2 years ago 

দারুন খেতে দিদি। দারুন 😋। বাংলাদেশেও পাবেন তবে হয়তো অন্য নামে।

 2 years ago 

বর্ধমানের ল্যাংচা বর্ণনা শুনে খুবই খেতে ইচ্ছা করছে। ল্যাংচা মুখের ঢুকলেই গলে যাওয়াটা স্বাভাবিক। বর্ধমানের ল্যাংচা বর্ণনা শুনে আমি ল্যাংচার ফ্যান হয়ে গেলাম। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 2 years ago 

ল্যাংচা খেলে আরো বড়ো ফ্যান হয়ে যেতেন। দারুন খেতে। 😋

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.12
JST 0.032
BTC 67128.47
ETH 3124.75
USDT 1.00
SBD 3.70