আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা ২০২৪ : পর্ব ১১

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago (edited)

নমস্কার বন্ধুরা,

কলকাতা বইমেলায় বিভিন্ন বিদেশী স্টল গুলো দেখে আমার অবাক লাগে যে তারা যেখানে তাদের দেশের সংস্কৃতি বা সাহিত্য বইমেলায় মেলে ধরার সুযোগ পায় সেখানে তারা যেন বিজ্ঞাপন করতেই বেশি ব্যস্ত। অথচ আমার মত মানুষ যারা বইমেলায় যায় শুধুমাত্র এই স্টল গুলোতে একবার করে ঘুরে অন্তত কিছুটা সেই দেশের সংস্কৃতি এবং বই পত্র নিয়ে অভিজ্ঞতা বাড়াতে তাদের পাওনা বলে কিছুই নেই। পেরুর স্টল সেখানেই ব্যতিক্রম। প্রতিবারই তারা ইন্দো হিস্পানিক ভাষার মেলবন্ধনের দিকটা ফুটিয়ে তোলে। বইমেলা চলাকালীন সেখানে প্রতি সন্ধ্যাবেলায় চলে নানান আলোচনা সভা। সেখানে প্রচুর বাঙালিদের কেও দেখা যায় যারা পরিষ্কার ভাবে স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলতে সক্ষম। পেরু কিছু দূরেই বিশাল মাপের আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের স্টল পেয়ে গেলাম।

PXL_20240120_185813320_copy_1209x907.jpg

বর্তমানে কনটেম্পোরারি ইংরেজি লেখা আমেরিকান লেখক দের হাত থেকে আসে। এমনকি বিগত কয়েক বছরে আমি যতগুলো নতুন ইংরেজি ভাষার গোয়েন্দা উপন্যাস পড়েছি তা সবই আমেরিকান লেখকদের হাত থেকে বেরিয়ে এসেছে। তবে আমেরিকার স্টলটিও আমাকে ফ্রান্স এবং জার্মানির স্টলের মতই নিরাশ করলো। কারণ ফ্রান্স ও জার্মানির স্টলে যেমনি তারা তাদের দেশের বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞাপন করতেই ব্যস্ত তেমনি আমেরিকান স্টল গুলোও তাদের দেশের ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞাপন করেছে। তারা শুধুমাত্র তাতেই থামেনি তার পাশাপাশি তাদের দেশের রাজনীতির দিকটা বইমেলায় দেখানোর চেষ্টা করেছে। যেটা আমার কাছে খুবই খারাপ লেগেছে কারণ ব্যক্তিগত ভাবে আমি চাইনা বইমেলায় কোনো দেশের রাজনৈতিক ছায়া বইমেলায় ফুটে উঠুক। আমার মনে হয় বইমেলা অরাজনৈতিক হলে পাঠকেরা বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। তাই আমেরিকান স্টলে যে গতিতে ঢুকলাম তার দ্বিগুন গতিতে বেরিয়েও আসলাম।

PXL_20240120_185951122_copy_1209x907.jpg


আমেরিকান স্টল থেকে বেরিয়ে আসতেই এক মজার অভিজ্ঞতা হলো। আসলে আমেরিকান স্টলের ঠিক উল্টোপাশেই ছিলো রাশিয়ার স্টল। যেটা তুলনামূলক ফাঁকা থাকলেও তাদের স্টলের নামটা আমার বেশ ভালো লাগলো, "রাশিয়া থেকে বই"। যদিও রাশিয়ান ভাষা কিছুই বুঝিনা তবে কিছু বইপত্রের ইংরেজি অনুবাদ পড়েছি। তার মধ্যে বিখ্যাত রাশিয়ান ভাষার সাহিত্যিক নিকোলাই গগই, আলেকজান্ডার পুশকিন-রা রয়েছেন। নিকোলাই গগই-কে রাশিয়ান উপন্যাসের জনক বলা হয়। তার লেখার ঘরানা থেকেই রাশিয়ান উপন্যাসিকরা মূলত অনুপ্রেরণা নেন।

PXL_20240120_190442336_copy_1209x907.jpg

PXL_20240120_190525798_copy_1209x907.jpg

গত বছরেও আমি রাশিয়ার স্টলে ঢুঁ মেরেছিলাম। যেটা আমার কাছে এক অনন্যপ্রাপ্তি ছিল। কারণ রাশিয়ান ক্লাসিক্যাল মিউজিক বা ক্লাসিক্যাল নৃত্য অনেকে চিনলেও তাদের বই বিশেষ কেউ চেনে না। আর আমাদের কাছে সেই নাম না জানা লেখকদের মাঝে যখন আলেকজান্ডার পুশকিন বা নিকোলাই গগই দের ছবি আমি দেখি তখন মনে এক আলাদাই ভালো লাগা কাজ করে। শুধুমাত্র এই ভালোলাগা থেকেই ভাষা না বুঝেও রাশিয়ান স্টলে বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটালাম।

PXL_20240120_190522693_copy_1209x907.jpg

PXL_20240120_190508857_copy_1209x907.jpg

PXL_20240120_190454701_copy_1209x907.jpg




IMG_20220926_174120.png

Vote bangla.witness

Or

Set @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  
 5 months ago 

আজকের পর্বে বইমেলার কিছু দৃশ্যপটভূমি দেখতে পেলাম। তার পাশাপাশি আপনার যে বিষয়গুলো ভালো লাগেনি সেই সম্পর্কে ধারণা পেলাম। আসলে বইমেলায় বই সম্পর্কিত সব থাকবে রাজনৈতিক বা বিজ্ঞাপন অন্যান্য কিছু যেটা বিরক্তি কর সবার কাছেই লাগবে। যেটা আপনার কাছে খারাপ লেগেছে দাদা । বিশেষ করে রাশিয়ার ইস্টলটি আপনার কাছে খুবই ভালো লেগেছে সব মিলিয়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম আপনার পোস্ট পড়ে।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

বইমেলায় রাশিয়ান্সটল, আমেরিকান স্টল এগুলো দেখে খুবই ভালো লাগলো। বইমেলা আমি অনেক পছন্দ করি তবে আমাদের এদিকে শুধুমাত্র ঢাকাই বেশিরভাগ বইমেলা দেখা যায় তবে আমি ঢাকা থেকে অনেক দূরে থাকি যার জন্য আর সেখানে যাওয়া হয় না তবে যাই হোক বইমেলায় গিয়ে যে সুন্দর সময় গুলো কাটিয়েছেন সেগুলো আমাদের মাঝে উপস্থাপন করে আমাদের কে এগুলো উপলব্ধি করা সুযোগ করে দিয়েছেন আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

কলকাতার আন্তর্জাতিক বইমেলায় বিভিন্ন দেশের লেখকদের বই পাওয়া যায়। আপনার এই কথাটা শুনে একটু হাসিই পেলাম

আমেরিকান স্টলে যে গতিতে ঢুকলাম তার দ্বিগুন গতিতে বেরিয়েও আসলাম।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

একে একে আমরা আপনার পোস্ট গুলির ১১ তম পর্বে কলকাতা আন্তর্জাতিক বই মেলার অনেক বিষয় সম্পর্কে জানতে পেরেছি।বাঙালিরা যে স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলতে সক্ষম এটা শুনে সত্যি নিজ জাতির প্রতি গর্বিত আমি।আর আমার কাছেও এটা খুব খারপ লাগলো যে বই মেলা গুলোতেও এখন রাজনীতি ঢুকে গেছে।নিকোলাই গগই-কে যে রাশিয়ান উপন্যাসের জনক বলা হয় এটা আপনার পোস্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম দাদা।বই মেলার আজকের পর্বটা আমার কাছে আগের পর্ব গুলার মতই বেশ ভালো লেগেছে দাদা,ধন্যবাদ।

 5 months ago 

তাহলে বলা যায় যে, পেরুর বুক স্টলটা একেবারে পারফেক্ট ছিলো। তবে আমেরিকান বুক স্টলে শুধুমাত্র তাদের দেশের ইউনিভার্সিটি গুলোর বিজ্ঞাপন দিয়েই থামেনি, বরং রাজনৈতিক বিষয়গুলো তুলে ধরেছে, এটা জেনে আসলেই বেশ অবাক হলাম। এরা তো দেখছি ফ্রান্স এবং জার্মানির চেয়ে এক ডিগ্রী উপরে 😂। বইমেলার আসল উদ্দেশ্য এটা কখনোই হতে পারে না। তাদের উচিত ছিলো নিজেদের দেশের সংস্কৃতি যেনো অন্য দেশের মানুষজন বেশি বেশি জানতে পারে সেই ব্যবস্থা করা। যাইহোক অবশেষে রাশিয়ান বুক স্টলে গিয়ে বেশ ভালো সময় কাটিয়েছেন দাদা। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 60970.82
ETH 2602.36
USDT 1.00
SBD 2.65