আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা ২০২৪ : অন্তিম পর্ব

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago

নমস্কার বন্ধুরা,

ঘটি গরম হাতে নিয়ে আমি ফের বইমেলার মধ্যেখানে চলে এলাম। যেই জায়গাতেই বইমেলার মূলত যত সব আলোচনা তার সবের অডিটোরিয়াম এবং স্টল গুলো বসে। তাছাড়া এই জায়গাতেই মূলত কলকাতা পুলিশ, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিভিন্ন স্টল বসে থাকে। জায়গাটা আরো বেশি জমজমাট হওয়ার আরেকটা কারণ হলো এখানে আনন্দ পাবলিশার্স'কেও স্টল দিতে দেওয়া হয়। আসলে কলকাতা বইমেলায় আনন্দ পাবলিশার্স দু-দুটো স্টলের জায়গা পায় তবুও তাদের ভীরের কমতি হয় না। যেকোনো একটি স্টলেই গেলে যেটা দেখা যাবে তা হলো প্রথম স্টলটিতে যেমন ভীড় দ্বিতীয়টি সেই একই রকম ভিড়। এবং যেটা সারা বইমেলা জুড়েই চলে। ভিড় দেখে এমন হয়েছে বিগত বইমেলা গুলোতে আনন্দ পাবলিশার্স দেখলেই দূরে দূরে থেকেছি।

PXL_20240120_191515147_copy_1209x907.jpg

হাতের ঘটি গরম'টা নিয়েই বইমেলাকে সে দিনের মতো ইতি জানাবো ভাবছি তখনই দেখতে পেলাম আনন্দ পাবলিশার্সের সামনে কোন লাইন নেই, মাত্র গুটিকয়েক মানুষ। পাশে কথা ও কাহিনী এবং দে'জ পাবলিশার্সে বিশাল লম্বা লাইন অথচ আনন্দ পাবলিসের লাইন নেই। বিষয়টা অবাক লাগলেও, ফাঁকা ভেবে আমি আনন্দের স্টলে ঢুকে পড়লাম। ভিতরে ঢুকেই আসল পরিস্থিতি বুঝলাম।

PXL_20240120_190953011_copy_1209x907.jpg

PXL_20240120_191302250_copy_1209x907.jpg

যেমন বরফের এক দশমাংশ অংশ জলের উপর ভাসে তেমনি আনন্দ পাবলিশার্সেরও পরিস্থিতি। বাইরে এক ফোঁটা ভিড় নেই তা সত্ত্বেও স্টলের ভেতরে মানুষের মাথা গিজগিজ করছে।

PXL_20240120_191041217_copy_1209x907.jpg

বইয়ের স্টলে ঢুকে রীতিমতো দম বন্ধ হয়ে এলো। তবুও ঠিক করলাম ঢুকে যখন পড়েছি, কালেকশন দেখেই বেরোবো। কোন রকমে কচ্ছপের গতিতে অন্যদের সাথে ঠেলাঠেলি করে এগিয়ে যেতে থাকলাম। যেতে যেতেই আনন্দ পাবলিশার্সের প্রচুর নতুন বইপত্র নজরে আসলো। বইগুলো শুধুমাত্র দেখছি কেনার অর্থ আগেই শেষ করে ফেলেছি। তাছাড়া আনন্দ পাবলিশার্সের বইপত্র বিগত কয়েক বছরে এত দাম বেড়ে গেছে যে তাদের বইয়ে হাত দেওয়া অনেকটা সোনার উপরে হাত দেওয়ার মতো মনে হয়। তবুও উপায় নেই বেশিরভাগ নামি লেখক লেখিকার দের সাথে আনন্দ পাবলিশার্স চুক্তি। তাই তাদের সব কটি বই আনন্দ পাবলিশ করে। সেইজন্যই স্বভাবত পাঠকদের ভিড় সেখানে বেশি। এমনকি কলেজ পাড়াতেও তাদের দোকানের সামনে রীতিমতো লাইন দিতে হয়।

PXL_20240120_191130267_copy_1209x907.jpg

ভীড়ের মধ্যে কোনোমতে এগোচ্ছি তখন দুটি বইকে পাশাপাশি দেখে রাগ হলো। প্রেমেন্দ্র মিত্র বাবুর ঘনাদার পাশে শ্রীজাত বই দেখে কার না রাগ হবে। সেই দেখে আমি রাগ করেই বেরিয়ে আসলাম তবে আরেকটা কারণ দম বন্ধ হয়ে আসছিলো 😁।

PXL_20240120_191022522_copy_1209x907.jpg

টানা দু ঘন্টা ধরে কিলোমিটার দশেক হেঁটে পা আর নানান স্টল ঘোরার পর আমার পা দুটো আর সঙ্গ দিচ্ছিলো না। তাই আনন্দ পাবলিশার্স থেকে বেরিয়েই এবারের মতো বইমেলাকে বিদায় জানিয়ে দিলাম। সব ঠিক থাকলে পরের বছরে ফের আসবো, আরো কিছু বই কিনতে আর প্রচুর স্মৃতি জমাতে।




IMG_20220926_174120.png

Vote bangla.witness

Sort:  
 6 months ago 

দাদা ঘটি গরম খেয়ে আনন্দ পাবলিশার্সে ঢুকে,ঠেলাঠেলি করার পর তো মনে হয় আবারও ক্ষুধা পেয়েছিল আপনার। কারণ আনন্দ পাবলিশার্স এর ভিতরে যে পরিমাণে ভিড় দেখলাম। এতো বেশি ভিড় হওয়ার কারণেই তাদের বইয়ের দাম দিনদিন এতটা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে বইমেলায় গিয়ে প্রচুর হাঁটাহাঁটি করেছেন, এটা বলতেই হয়। যাইহোক দেখতে দেখতে সবগুলো পর্ব শেয়ার করে ফেলেছেন দাদা। প্রতিটি পর্ব বেশ উপভোগ করেছি। যাইহোক অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

দাদা প্রায় সবকটি পর্ব পড়েছি আপনার ৷ আজকের পোষ্ট টি শেষ পর্ব করে গিলেন ৷ যা হোক কচ্ছপের গতিতে না গিয়ে খরগোশের গতিতে গেলে আরও ভাল হতো ৷ হাহাহাহাহ
যা হোক টানা ২ ঘন্টা দশ কিলোমিটার হেটেছেন বলতে গেলে বিশাল বই মেলা বলতেই হবে ৷ অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা

 6 months ago 

প্রেমেন্দ্র মিত্র বাবুর ঘনাদার পাশে শ্রীজাত বই দেখে কার না রাগ হবে।

ঠিকই বলেছেন দাদা।প্রেমেন্দ্র মিত্রের লেখা কবিতা ও গল্প পড়তে আমার খুবই ভালো লাগে।আর আপনার বইমেলার আগের কয়েকটি পর্ব দেখেছি।আসলেই খুবই ভিড়ে বিরক্তিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়।পরের বছর আবার আমরা আপনার অপেক্ষায় থাকবো বইমেলার অনুভূতি শোনার,ধন্যবাদ দাদা।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 66181.33
ETH 2700.56
USDT 1.00
SBD 2.88