চলো কলকাতা
নমস্কার বন্ধুরা,
যতবার কলকাতা ছেড়ে যেতে চাই কলকাতা যেন আমাকে কিছুতেই ছাড়তে চায় না 😁। আসলে দুটো নিমন্ত্রণ একসাথে পেয়ে কি না করা যায়, তাই আবার কলকাতা আসলাম। যদিও ভাইঝির জন্মদিনের নিমন্ত্রণ পেয়ে আমার কলকাতা আসার মোটেই ইচ্ছে ছিলো না কিন্তু আশীষের গৃহপ্রবেশের নিমন্ত্রণ পেয়ে আমি না করতে পারলাম না। পরপর দুটো অনুষ্ঠান, আশীষের নতুন ফ্ল্যাটের গৃহপ্রবেশ ও নারায়ণ পুজো আর সাথে ভাইঝির জন্মদিন তাই মনে অনেক দোটানা থাকলেও কলকাতা আসা স্থির করেই ফেললাম।
আসলে আশীষের সাথে টানা তিন বছর একসাথে কাটিয়েছি আর যখন ওর জীবনে ভালো কিছু হচ্ছে তখন না আসলে কেমন নিজেরই খারাপ লাগতো। হুট করে কলকাতা যাওয়া তো ঠিক করে ফেললাম কিন্তু বিপত্তি হলো টিকিট কাটতে গিয়ে। দূরপাল্লার ট্রেন বেশ কয়েকদিন আগে থেকে রিজার্ভেশন টিকিট না কেটে রাখলে কনফার্ম টিকিট পাওয়া যায় না। যেটার ভয় ছিলো তাই হলো। কনফার্ম টিকিট পেলাম না তাই বাধ্য হয়ে বসে আসার মতো টিকিটই কেটে নিলাম। মনে আশা ছিলো ওই টিকিটটাই হয়তো কনফার্ম হয়ে যাবে।
দেখতে দেখতে কলকাতা আসার দিন চলে এলো। সকাল সকাল কলকাতায় দুদিন থাকার মতো ব্যাগ গুছিয়ে অপেক্ষা শুরু করলাম, কখন রেলের টিকিটের কনফার্মেশন মেসেজটা আসে। বিকেলের দিকে অপেক্ষার অবসান হলো নাহ্! গোটা সিট হয়নি তবে বসার জায়গাটা পেয়েছি। তাতেই সই।
ট্রেন ছিলো রাত ৯:৪০ মিনিটে আর আমার বাড়ি থেকে স্টেশন প্রায় ১ ঘণ্টার রাস্তা। বর্ষার দিনের কথা মাথায় রেখে আমি বাড়ি থেকে একটু আগে বেরিয়ে পড়লাম। মনে মনে ঠিক করে রেখেছি প্রথমে যে গাড়িটা পেয়ে যাবো সেটাতেই উঠে পড়বো। ঘন্টাখানেকের রাস্তা, তাই বিশেষ চিন্তা নেই।
ঘড়িতে তখন সন্ধ্যা ৭:০০ টা। দাড়িয়ে আছি বাসের অপেক্ষায়, ধীরে ধীরে ১০ মিনিট অতিক্রম করলো তারপর পনেরো মিনিট, এইভাবে ৪৫ মিনিট গত হলো, দেখতে দেখতে রাত ৭:৪৫। ট্রেন মিস করার ভয় তখন ঘাড়ে চেপে বসেছে। রাস্তা থেকেই বাড়িতে ফোন করলাম। ফোনটা দুবার রিং হতেই দূর থেকে বাসের আওয়াজ পেলাম। শান্তি! ফোনটা কেটে রাস্তার দিকে তাকাতেই বাস কাছাকাছি এসে পড়লো। আমি কিছু না ভেবেই উঠে পড়লাম।
বাসে উঠে আরেক বিপত্তি! জানতে পারলাম বাসটি স্টেশন পর্যন্ত যাবে না, অর্ধেক রাস্তা গিয়ে দেহ রাখবে। কি আর করা, যেটুকু যাওয়া যায়। অর্ধেক রাস্তা গিয়ে একটা মফঃস্বল শহরে নামলাম। বেশি দৌড়াদৌড়ি করতে হলো না কাছেই স্টেশন পর্যন্ত যাওয়ার টোটো পেলাম। দাম দর না করে টোটো তে উঠে পড়লাম। রাতের অন্ধকারে সুই সুই করে টোটো ছুটতে শুরু করলো, গন্তব্য স্টেশন।
স্টেশন পৌঁছালাম তখন ঘড়িতে রাত ৯:১০। সন্ধ্যে ৭ টায় বেরিয়ে স্টেশন পৌঁছতে লাগলো পাক্কা দু ঘন্টা দশ মিনিট। যদিও আমি যখন পৌঁছেছি স্টেশন তখন ফাঁকা বললেই চলে।
স্টেশনে বসতেই ধীরে ধীরে যাত্রীদের আনাগোনা বাড়তে থাকলো। কিছুক্ষনের মধ্যে ট্রেন এসে উপস্থিত। আমার নির্ধারিত ফাঁকা সিটে গিয়ে বসে পড়লাম। টিটি আসতেই তার কাছে জেনে নিলাম আমার সহযাত্রীর ট্রেনে উঠবার ঠিকানা। সহযাত্রী উঠবে ৩ ঘন্টা পরের স্টেশনে। শুনে প্রশান্তি পেয়ে হাত পা ছড়িয়েই বসে পড়লাম। তিন ঘণ্টা চিন্তা নেই অন্তত।
ট্রেন ছেড়ে দিলো। রাতের অন্ধকারে একের পর এক স্টেশন পিছনে ফেলে এগিয়ে চললাম, কলকাতার উদ্দেশ্যে।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
দাদা,কলকাতা আসতে আপনাকে বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়েছে।দূরপাল্লার ট্রেনগুলোতে টিকিট কাটতে বেশ সমস্যা।তাছাড়া আপনি তো কলকাতাতে থাকেন যদি তখন সেখানে থাকতেন তাহলে এত ছোটাছুটি করতে হতো না।যাইহোক শেষমেষ আপনি ট্রেন পেয়েছেন জেনে ভালো লাগলো, ধন্যবাদ দাদা।
ভাইয়া ,আপনার যাত্রা নিরাপদ হোক শুভ হোক ।
দাদা কলকাতায় আসতে বিভিন্ন ঝামেলার সম্মুখীন হয়েছে জানতে পেরে সত্যি আমার খুব খারাপ লাগলো। তবে দূরপাল্লার ট্রেনের টিকিট ক্রয় করতে সাধারণত এ ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। যাহোক শেষ পর্যন্ত আপনি ট্রেন পেয়েছেন এটা জানতে পেরে ভাল লাগলো। প্রিয় দাদা আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
আপনার যাত্রা শুভ হোক দাদা
বেশ পেরেশানি গেছে দেখি। শেষ পর্যন্ত যে ট্রেন টা ধরতে পেরেছিলেন এটাই বড় কথা। কলকাতা শহর টা কয়দিন হলো আমাকেও টানছে বেশ। দেখি টুপ করে কবে যাওয়া যায় ।
কলকাতা শহর যে ভোলার নয় দাদা। এই শহরকে একবার ভালোবেসে ফেললে এ শহর বারবার তোমাকে ভালবাসতে বাধ্য করাবে, আর সেই টানে তোমাকে তার কাছে ফিরতেই হবে😁। যাই হোক আসার সময় একটু কষ্ট পোহাতে হয়েছে জেনে খারাপ লাগলো। কিন্তু কথায় আছে,
তাই বাকি ভুলে এখন এনজয় করো।