কবিতা : ‘একটি বুলেটের দাম’ - ফ্যান্টম | আবৃত্তিতে : নির্মাল্য
নমস্কার বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি ঈশ্বরের কৃপায় সকলেই সুস্থ ও সবল। আপনাদের আশীর্বাদ ও ভালোবাসায় আমি আপাতত অনেকটা ভালো আছি। আজ আপনাদের সামনে আরো একটি কবিতা আবৃত্তি নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম।
আপনাদের সামনে আমি আমাদের সকলের প্রিয় ফ্যান্টম দার আরেকটি কবিতা আবৃত্তি রূপে পরিবেশন করবো। আবৃত্তি সিরিজে এটি আমার পনেরো তম উপস্থাপনা। আমার আজকের পরিবেশনা, একটি বুলেটের দাম। গতকাল রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভাষণ শোনার পরে একটি বুলেটের দাম কবিতাটি আরো বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে পড়লো। আমার বিস্তারিত মতামত অভিমত পর্যায়ে গিয়ে আরো আলোচনা করবো। আর দেরি করা ঠিক হবেনা, চলুন শুরু করে দেওয়া যাক।
একটি বুলেটের দাম কত ?
বিশ তিরিশ নাকি চল্লিশ রুপি !
টাকার মূল্যে কি যায় বোঝা ?
শত সহস্র মানুষের চোখের জলে কেনা একটি বুলেট ।
বিষাদমাখা মায়ের চোখের বাঁধভাঙা অশ্রুর দামে
কেনা একটি বুলেট ।
ক্ষুধার্থ নিরন্ন শত শিশুদের ক্রন্দন শুনি,
বুলেটের কেমন মূল্য তাই আজ আমি বুঝি ।
উদ্বাস্তু গৃহহীন মানুষের বেদনার্ত চিৎকার,
বুলেটের গর্জনে নিমেষে ঢাকা পড়ে সব হাহাকার ।
বুলেট এতটাই দামি, যে তার আজ মূল্য চোকাতে গিয়ে,
তোমার আমার ঘরে আজ ক্রন্দন ধ্বনি ওঠে ।
রক্তের দামে, ক্ষুধার দামে আর কান্নার দামে কেনা
একটি বুলেটের কেমন মূল্য তা যায় আজ বোঝা ।
এই স্বপ্ন ইমারত, ঘাম আর রক্তে গড়া তোমার আমার,
একটি বুলেটের আঘাতে ভেঙে হয় শত চুরমার ।
একটি প্রাণের দামে কেনা এই একটি বুলেট,
মানবতাকেই বিক্রি করে আজ কিনেছি বুলেট ।
গতকাল রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তার ভাষণে জানালেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সাথে তিনি যুদ্ধ বিরতির জন্য আলোচনায় বসতে প্রস্তুত আছেন তারপর থেকেই দাদার একটি বুলেটের দাম কবিতাটা আমার মনে পড়লো। দাদা এই কবিতাটি ইউক্রেন এবং রাশিয়ার যুদ্ধের একদম শুরুতে লিখেছিলেন। যুদ্ধে যেভাবে মানবতার নিষ্পেষণ হয় সেইটার তীব্র কটাক্ষ করেই তার এই কবিতা।
দুটো দেশের যুদ্ধের ফলে হাজার হাজার মানুষ উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়। লক্ষাধিক মানুষ তাদের দুবেলা দুমুঠো পেটের খাবার জোগাড়ের জন্য হন্যে হয়ে পড়ে। শহরের পর শহর বোমা এবং গুলির কারণে ধুলিস্যাৎ হয়ে যায়। তাই যেন যুদ্ধের বুলেট গুলো সেই উদ্বাস্ত মানুষগুলোর প্লেট থেকে খাবার কেড়ে নিয়ে এসে বানানো হয়েছে এটাই ছিল কবির মূল বক্তব্য।
যেখানে একটা বুলেটের দাম টাকার অর্থে খুবই সামান্য কিন্তু তার দাম যে মানবিকতার অর্থে অনেক বেশি। বুলেটের আসল দাম জানতে চাইলে সেই মানুষটিকে গিয়ে জিজ্ঞেস করা হোক যে যুদ্ধের কারণে ঘরছাড়া হয়েছে, সেই মাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করা হোক যার সন্তান ঠিকমতো দুবেলা খেতে পারছে না কিংবা সেই বয়স্ক মানুষ টিকে যার বাড়িটা আজ ধুলিস্যাৎ হয়ে গেছে।
বুলেটের আর্থিক মূল্য অল্প হলেও তাকে চোকাতে হয় সাধারণ মানুষের কষ্ট দিয়ে। একদিন হয়তো যুদ্ধ থেমে যাবে কিন্তু যুদ্ধের কারণে যে সব মানুষের জীবন তছনছ হয়ে গেলো তারা কখনোই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে না। হয়তো বুলেটের সেটাই দাম।
ইউক্রেন এবং রাশিয়ার যুদ্ধের প্রথম দিকে দাদা এই কবিতাটি লিখেছিলেন।সেটা আপনি দারুণভাবে উপস্থাপনা করার পাশাপাশি আবৃত্তি করেছেন দাদা।সকাল সকাল শুনে ভালো লাগলো, সত্যিই মানুষের এই চরম ক্ষতি থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা দুষ্কর।ধন্যবাদ দাদা।
যুদ্ধের শুরুতে দাদা এই কবিতাটি লিখেছিলেন তখনো কবিতাটি পড়ে খুবই খারাপ লেগেছিল। আজকে সেই কবিতাটি আপনি আবার খুবই চমৎকার করে আবৃত্তি করেছেন। আসলে আমাদের সকলেরই প্রত্যাশা এই দুই দেশের আলোচনা যেন হয় ফলপ্রসু হয় । যুদ্ধ যেন থেমে যায়। যুদ্ধ কারোই কাম্য নয়। এতে একদলের লাভ হয় কিন্তু নিরীহ মানুষজন দুর্বিষহ কষ্টের সম্মুখীন হয়।
দাদার লেখা এই কবিতাটি আপনি খুবই সুন্দরভাবে আবৃত্তি করলেন। আসলে দাদা এই কবিতাটি আমি পড়েছিলাম। যতটা ভালো লেগেছে আজকে আপনার মুখে আবৃত্তি শুনে আরো বেশী ভাল লাগল। আসলে কবিতা পড়ার চাইতে আবৃত্তি করা কিংবা আবৃত্তি শুনতে আরো বেশি ভালো লাগে।
আপনি খুবই সুন্দর দাদার কবিতা আবৃত্তি করেছেন। আসলে কবিতা আবৃত্তি শুনতে অনেক ভালো লাগে আপনার আজকের আবৃত্তি আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। দাদা এই কবিতাটির যুদ্ধের প্রথম দিকে লিখেছিলেন।
জি দাদা
গতকাল আমিও তো খবরে দেখলাম যে রাশিয়া ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল দখলে নিয়েছে৷
আসলে অনেক দিন ধরেই যুদ্ধ চলছে কত মানুষের যে কত কষ্টের সাথে জীবন যাপন করছে ৷ সত্যি তা আসলে বলে লিখেও শেষ করা যাবে না ৷
জানি না কেন এ যুদ্ধ তবে দিনশেষে তো সবাই মানুষ ৷ একটা চিন্তা করলে অনেক খারাপ লাগে ওই মানুষ গুলোর কথা মনে করলে ৷
বেশি দুর যাব না কয়েকদিন আগে মিয়ানমারেরই কথা বলি যারা কিনা পরপর আমাদের বাংলাদেশের দিকে মর্টার সেল নিক্ষেপ করছে ৷ সেখান কার মানুষগুলোও ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে অন্যথায় চলে গেছে৷
তাহলে চিন্তা করুন সেখানে কি হচ্ছে ৷
যা হোক সর্বোপরি বলবো আমরা শান্তি চাই ৷
দাদা,এই কথাগুলো একদম সত্যি কথা যুদ্ধের কারণে এক দেশ অথবা জাতির যে ক্ষতি হয়েছে সেই ক্ষতি কখনো পূরণ করা সম্ভব নয়। রাশিয়ার যুদ্ধ শুরুর দিকে বড় দাদা লেখা এই কবিতাটি পড়েছিলাম খুবই ভালো লেগেছে। দাদা,বড় দাদা লেখা কবিতাটি আপনি খুব সুন্দর ভাবে আবৃত্তি করেছেন আর বর্ণনাও খুব সুন্দর ভাবে লিখেছেন আপনার কবিতা আবৃত্তি টি খুব মনোযোগ সহকারে শুনেছি। ধন্যবাদ দাদা💐
মানবতা আজকে হারিয়ে গেছে দাদা। বিবেকাস দিশেহারা, নিরস্ত্র মানুষ আজ বুলেটের খোরাক। অসাধারণ লিখেছেন দাদা আপনি আপনার এই কবিতাটি। এবং নির্মাল্য দাদা খুবই চমৎকারভাবে আবৃত্তি করেছে। আপনাদের দুজনের জন্যই অবিরাম ভালোবাসা সহ শারদীয় শুভেচ্ছা রইল।