রাতের কলেজ স্ট্রিটে
নমস্কার বন্ধুরা,
কলেজ স্ট্রিট মানেই জাঁক-জমক পূর্ণ একটা ব্যাপার। ছাত্রছাত্রীদের মাঝে সাহিত্যিক অধ্যাপকদের ভিড় লেগেই থাকে সবসময়। তবে এসবের সব কিছুই দিনের বেলাতেই দেখতে পাওয়া যায়। আর আমি যতবার কলেজ স্ট্রিট গিয়েছি সেটা দিনের বেলাতেই, রাতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা আমার মোটেই ছিলো না। আসলে দিনে যেমন কলেজ স্ট্রিটের সব কটি দোকান খোলা থাকে তেমনি দূর দুর থেকে আসা লোকজনের আনাগোনাও হয় প্রচুর সে জন্য সবাই দিনের বেলা যাওয়াই পছন্দ করে। আমি যেহেতু ঝটিকা সফরে কলকাতা এসেছি তাই হাতে সময় ছিলো না, সেই কারনে শেষ পর্যন্ত রাতেই কলেজ স্ট্রিট যেতে হলো। যেটার অভিজ্ঞতা মোটেই আমার ছিল না।
আসলে কলকাতা যাবো জানতে পেরেই এক বন্ধু কিছু কম্পিটিটিভ পরীক্ষার বইপত্র কিনে আনতে আমাকে বলে ছিলো। পরপর সবদিন কাজ ব্যস্ত থাকবো তাই দিনের বেলা কোথাও যাওয়া সম্ভব ছিলো না দেখে রাতে চলে গেলাম। গিয়ে যেন অন্য কলেজ স্ট্রিটের দেখা পেলাম, যেটা আগে কখন লক্ষ্য করিনি।
ধু ধু করছে কলেজ স্ট্রিট। বেশিরভাগ দোকানই বন্ধ হয়ে গিয়েছে আর যেগুলো ফুটপাতের দোকান ছিল তারাও দোকান বন্ধ করার জন্য তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে। রাস্তায় কিছু লোকজন যদিও আছে তবে দিনের বেলার তুলনায় সেগুলো নস্যি। আর তাদের দেখে মনে হলো তারা কেউই বই কেনার জন্য আসেননি। সকলেই সারাদিন পরিশ্রম করে বাড়ি ফিরে আসছেন।
যাক আমার তো আর এসবের দিকে খেয়াল করে লাভ নেই। যেহেতু ফুটপাতের দোকানগুলো খোলাই আছে তাই সে গুলো থেকে বই কিনে যত তাড়াতাড়ি বই বেরিয়ে পড়া যায়। পাবলিকেশন এর নাম ধরে বই খুঁজতে শুরু করে দিলাম। এ দোকান থেকে সে দোকান, সারা কলেজ স্ট্রিটের বেশিরভাগ অংশ টাই প্রায় চষে ফেললাম কিন্তু বইয়ের দেখা নেই।
অনেক খোঁজা খুজির পরে বই না পেয়ে চায়ের কাপের দিকে ঝুঁকলাম। কলকাতায় ঠান্ডা খুবই মোলায়েম তবুও হালকা শীতে আদা চা যেন অমৃত।
চা খেয়ে আবার নতুন উদ্যমে নেমে পড়লাম। ঠিক তখনই এক ভদ্রলোক পাশের এক গলিতে যাওয়ার জন্য বললেন, সেখানে একটা দোকান আছে পেলে সেখানেই পেতে পারি। কথা মতো তাই করলাম।
ওমা এতক্ষণ ধরে সেই দুর্লভ বইটি এই দোকানটাতে গিয়ে বলা মাত্র হাতে ধরিয়ে দিলেন। বই হাতে পেয়েই কিনে ফেললাম, কারণ ওদিকে রাত তখন প্রায় নটা বাঁচতে চলেছে। আমাকেও ঘরে ফিরতে হবে। সকাল সকাল উঠে আবার অনেকদূর যাওয়া আছে। বই কিনে মনে বেশ ফূর্তি নিয়ে রাতের কলেজ স্ট্রিটকে বিদায় জানালাম।
![](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmVZ2LnjzbteWf1QSr3MqRaJx7dYMMGANXS258rRfzaubR/Division.jpeg)
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
শেষমেশ বইতো পেয়েছেন তাহলে।আমি বই কিনতে গেলে রাতেই বের হই,ভীড় কম থাকে।শান্তি মতো দেখে দেখে বই কেনা যায়।
মৃদু ঠান্ডায় রাতের পরিবেশ আর সাথে চা,আসলেই অমাইক কম্বিনেশন।
সুন্দর সময় ছিল।ভালো থাকুন।
যাক কলেজ স্ট্রিট যেয়ে ভালোই এক অভিজ্ঞতা হলো আপনার। রাতের বেলা রঙ চা ভালো জমে। খুজতে খুজতে অবশেষে বই পাওয়া হলো। ভালো ছিলো সে রাত টা।
কথাটা একদম ঠিকই বলেছেন দাদা। আসলে হালকা শীত তার মাঝে যদি কারো সর্দি-কাশি বেড়ে যায় এই চা অনেক বেশি উপকারী। তবে এমনিতেও খেতে খুবই ভালো লাগে। আর বইটি যে সর্বশেষ পেয়েছেন সেটি শুনে ভালো লাগছে। রাতের কলেজ স্ট্রিট দেখে একদম সাদামাটা লাগছে। ব্লগটি দেখে এইরকম রাতের বেলায় ঘুরতে ইচ্ছে করছে।
যাই হোক শেষে এসে বইটি পেয়েছেন জেনে ভালো লাগলো দাদা। আপনার যেহেতু বই খুঁজতে অনেকটা সময় লেগেছে তাই খুব সহজে সেই দোকান থেকে বইটি পেয়ে অবশ্যই আপনার ভালো লেগেছে। আর আপনার বন্ধুর প্রয়োজনীয় বই কিনতে পেরেছেন। আসলে এই ধরনের জায়গা গুলোতে দিনের বেলায় এক চিত্র থাকে রাতের বেলায় আলাদা রকম চিত্র দেখতে পাওয়া যায়।
দাদা ,চায়ের রংটা বেশ কালচে টাইপের।আর কলেজ স্ট্রিট এমন একটি জায়গা যেখানে সব বই পাওয়া যায়।আপনারা অনেক খোঁজাখুঁজির পর কাঙ্ক্ষিত বইটি পেয়ে গেলেন জেনে খুবই ভালো লাগলো, ধন্যবাদ দাদা।
দাদা, কম্পিটিটিভ পরীক্ষার বইপত্র কিনতে গিয়ে আমার সাথেও এরকম ঘটনা ঘটে গেছিল একবার।পুরো কলেজ স্ট্রিটের ৬০% দোকান দেখা কমপ্লিট হয়ে গেছিল কিন্তু বইটির খোঁজ পাচ্ছিলাম না। অনেক পরে গিয়ে বইটির খোঁজ পেয়েছিলাম তাও অর্ডার করে আনতে হয়েছিল। সবশেষে তাহলে যে বইটি কিনতে গেছিলে সেটি পেলে শুনে ভালো লাগলো ।
রাতের কলেজ স্ট্রিট কেমন হয় তার কোন অভিজ্ঞতাই ছিলো না। আপনার পোস্টের মাধ্যমে এই অভিজ্ঞতাও হয়ে গেলো। একেই বলে আমরা যা খুঁজি তা আমাদের হাতের কাছে থাকতেও আমরা হাতরে বেড়াই। যাক অত রাতেও খোঁজাখুঁজি আপনার সফল হয়েছে, এটাই বড় প্রাপ্তি।