ধান্যকুড়িয়া সাউ বাড়ি
নমস্কার বন্ধুরা,
আগের পর্বে আপনারা দেখেছিলেন ধান্যকুড়িয়ার গায়েন বাড়ি আজ দেখে নিই ধান্যকুড়িয়ার আরেক সম্ভ্রান্ত পরিবারের বাড়ি, যা পরিচিত সাউ বাড়ি নামে। গায়েনরা ধান্যকুড়িয়ায় বসতি স্থাপন করলে আরো দুটি সম্ভ্রান্ত পরিবার ধান্যকুড়িয়াতে তাদের বসত বাড়ি তৈরী করে। যে কারণেই ধান্যকুড়িয়া ধীরে ধীরে হয়ে ওঠে অত্যন্ত বর্ধিষ্ণু গ্রাম। গায়েনদের মতনই এই দুই পরিবারের মূল কর্ম ছিলো ব্যবসা। সেই থেকেই প্রতিপত্তি। গায়েন বাড়ির রাস্তার ঠিক অপর পাশেই তাদের মধ্যেই এক পরিবারের বসত বাড়ি যার নাম সাউ বাড়ি। তবে গায়েন বাড়িতে বর্তমানে এখন কিছু সদস্য বসবাস করলেও সাউ বাড়িতে কেউই থাকেন না।
গায়েন বাড়ি থেকে সাউ বাড়ির একটু ভিন্ন ধরনের। গায়েন বাড়ি যেখানে ভারতীয় স্থাপত্য কলার উপরে তৈরী সেখানে সাউদের দালান বাড়িটি ছিল ইউরোপীয় ধাঁচের। মানুষের অভাবে যা এখন অবহেলায় পড়ে আছে। সাউ বাড়ি ফাঁকা থাকার কারণ জানতে পারলাম পাশের এক বয়স্ক মানুষের কাছে। উনি বিস্তারিত না জানালেও এটুকু বললেন যে বেশ কয়েক বছর আগে এক অপ্রীতিকর ঘটনা হওয়ার পর সাউ বাড়ির মানুষজন সমূলে কলকাতায় উঠে গিয়েছেন। তারা এখন শুধুমাত্র দুর্গাপুজোর সময়তেই বাড়িতে আসেন। পুজো শেষ হলে আবার কলকাতা ফিরে যান। আর যেটা বাড়িটির অবস্থা দেখলেও বোঝা যায় যাচ্ছিলো। মানুষ থাকলে বাড়ির নূন্যতম যে পরিচর্যা টুকু হয় তার লেস মাত্র ছিল না। যা দেখে একটু খারাপই লাগলো।
খোঁজ নিয়ে আরো জানতে পারলাম ধান্যকুড়িয়া গ্রামের বসতি স্থাপনে সাহায্যকারী এই সাউদের মূল ব্যবসা ছিলো পাট, গুড়, চালের। ব্যবসার বিপুল অর্থ দিয়েই তৈরী হয় বিশাল আয়তনের এই ইউরোপীয় শৈলীর বাড়িটি। যেটাকে প্রাসাদ বললেও ভুল হয় না। বাড়িটির আয়তন বিশাল হলেও গায়েন বাড়ির সামনে যেমন সাজানো বাগান আছে তেমন কিন্তু এখানে নেই। বাড়ির ভেতরে একটি সুন্দর ঠাকুর দালান রয়েছে। যেটির ছবি তুলতে চাইলেও বাধা প্রাপ্ত হয়ে সেটা তোলা গেলো না।
প্রাসাদোপম বাড়িটিতে যে বিষয়টি বিশেষ ব্যাপারটি লক্ষ্য করছিলাম তা হলো ইউরোপীয় স্থাপত্যর প্রাচুর্য। প্রত্যেকটি জানালা এবং দরজাতে ইউরোপীয় ধারা স্পষ্ট। দরজার এবং জানালার উপরে সুন্দর ডিজাইন করাও রয়েছে। যেগুলো আমাকে খুব বেশি অবাক করছিলো। কারণ প্রায় ১০০ বছর আগে তৈরি হওয়া বাড়িতে এখন সেই ডিজাইন টিকে কিভাবে আছে। সত্যিই কুর্নিশ সেই সময়ের শিল্পীদের যাদের হাতের শিল্প শত বছর পরেও টিকে আছে।
![](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmVZ2LnjzbteWf1QSr3MqRaJx7dYMMGANXS258rRfzaubR/Division.jpeg)
এমন রাজ প্রাসাদের মতো একটি বাড়ি অযত্নে অবহেলায় পড়ে রয়েছে, দেখে সত্যিই খুব খারাপ লাগলো। তবে সাউ বাড়ির চেয়ে গায়েন বাড়িটাই আমার কাছে বেশি ভালো লেগেছে দাদা। কারণ গায়েন বাড়ির সামনে খুব সুন্দর বাগান রয়েছে। আর বাগান অবশ্যই বাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। আগের দিনের শিল্পীদের যেকোনো কাজ একেবারে নিখুঁত ছিলো। তাইতো এতো আগের কাজগুলো এখনো অক্ষয় রয়েছে। ফটোগ্রাফি গুলো দারুণভাবে ক্যাপচার করেছেন দাদা। সবমিলিয়ে পোস্টটি বেশ উপভোগ করলাম দাদা। এতো চমৎকার মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আমি ঠিক এই কথাটিই ভেবেছিলাম। ফেলে যাওয়ার কারণ যাই হোক, বাড়িটিকে সংরক্ষণ করাই যায়।
এই গায়েন বাড়ি আর সাউ বাড়ির কথা শুনতে শুনতে পুরো ব্যাপারটাই গুলিয়ে যাচ্ছে দাদা। হা হা হা... 🤭 তবে যে অপ্রীতিকর ঘটনা হওয়ার পর সাউ বাড়ির মানুষজন সবাই কলকাতায় উঠে গিয়েছিল, সেই অপ্রীতিকর ঘটনাটা কি, সেটা জানতে পারলে বেশ ভালো লাগতো। সর্বোপরি ধান্যকুড়িয়া সাউ বাড়ি সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য জানতে পারলাম, যেটা জেনে বেশ ভালো লাগলো দাদা।
আমিও এই নিয়ে কিছুটা ধাঁধাতে আটকে গেলাম। এতো বড়ো বাড়ি ছেড়ে তারা কেন গেলো?
এই উত্তর আমাদের সবাইকে মিলে খুঁজে বের করে আনতে হবে যা দেখছি দাদা। 🤔