মার্সিবলের পাথর কিনতে
নমস্কার বন্ধুরা,
পাথর তোলার কাজে যে এতটা পরিশ্রম হতে পারে সেটা আজ হাতে নাতে টের পেলাম। যদিও ঘটনার সূত্রপাত একটু অন্যভাবেই হয়েছে। আদপে কদিন আগে থেকে আমাদের পাশাপাশি দুই বাড়িতে খাওয়ার জলের জন্য মারসিবল বসানোর যোগার যন্ত্র করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় পাইপ লাইন থেকে শুরু করে সমস্ত বৈদ্যুতিন তার সবই আগের দিন কিনে আনা হয়েছিল। কিন্তু যেটা কিনে নিয়ে আসা হয়নি সেটা হল মারসিবলের চারপাশে দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে বালি কিংবা পাথর।
প্রথমে বালি নাকি পাথর কোনটা ভালো হয় সেটা নির্ধারণ করতে বেশ কিছু মারসিবল বসিয়েছে এমন মানুষের সাথে কথা বলে মতামত নেওয়া হলো। অনেক মতামত নিয়ে সেগুলো পর্যালোচনা করার পরে মনে হল পাথর দেওয়াটা ঠিক হবে। তবে সেটা যে সে সাধারণ পাথর ব্যবহার করলে হবেনা, বিশেষ একধরনের পাথর লাগবে, নাম তাজমহল পাথর। এইবার বিশেষ এই পাথর কোথায় পাওয়া যাবে সেটা অনেক খোঁজার পর যার কাছে বাকি সরঞ্জাম কেনা হয়েছে তার কাছেই মিললো। আর অপেক্ষা কিসের। দুপুর দুটোর দিকে সব কাজকর্ম সেরে টোটো চেপে বেরিয়ে পড়লাম। দোকানে যখন গিয়ে যখন পৌঁছানো হলো তখন ঘড়িতে বাজে দুপুর তিনটে। রোদের তেজ অনেকটাই কম। দোকানে ঢুকে দোকানের মালিককে বলা মাত্রই দোকানের কর্মচারীর সাথে আমাদেরকে পাথর টা দেখিয়ে দিলেন।
আমাদের পঞ্চাশ টিন পাথর প্রয়োজন। দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো পাথর তোলার মতন দোকানে সেদিন কর্মচারী নেই। মাত্র একজন এসেছেন বাকিরা তাদের গ্রামে রাতে জেগে যাত্রাপালা দেখে দিনটা ছুটি নিয়েছে। ঝটপট কাজ করে বেরিয়ে যেতে হবে তাই শুরু হল বেলচা চালিয়ে পাথর তোলার ধস্তাধস্তি। জীবনে কোনদিনই বেলচা চালাইনি কিন্তু পাথরের পরিমাণ দেখে বুঝতে পেরেছিলাম যে আমাকেও হাত লাগাতে হবে। তাছাড়া বাড়ির কাজ নিজে করলে ভালোই লাগবে তাই আমিও নির্দ্বিধায় হাত লাগিয়ে দিলাম। শুরু হলো পরিশ্রম।
চারজন মিলে বারবার ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে পাথর তোলা এবং বস্তার মুখ ধরা এই সমস্ত করা চললো তবুও চল্লিশ মিনিটের বেশি সময় লেগে গেলো। অনেক খাটাখাটনি করে বস্তা তো ভরে ফেললাম কিন্তু আমার হাতটা অবশ হয়ে গেলো। বাধ্য হয়েই আমি হাত ধুয়ে দোকানে গিয়ে বসে পড়লাম। বাকিরা ধীরে ধীরে পাথরের বস্তা টোটো বোঝাই করতে থাকলো।
বিকেল সাড়ে চারটা নাগাদ টোটো তে সব বস্তা বোঝাই হয়ে গেল তারপর আমরাও সেখান থেকে বিদায় নিয়ে নিলাম। প্রায় সাত কুইন্টাল পাথর নিয়ে ভারী টোটো ধীরে ধীরে চলতে থাকলো।
সন্ধ্যার দিকে বাড়ির কাছাকাছি পৌছালাম। সারাদিন অনেক পরিশ্রম গেছে কিছু না খেলে হয় তাই টোটো চালককে পাকড়াও করলাম, কোনো ভালো খাবারের দোকানের সামনে দাঁড়ানোর জন্য। সে গিয়ে দাঁড়ালো এক তেলে ভাজার দোকানে।
দোকানে গরমাগরম সমোচা দেখে সেগুলো কিনে মুখে দিয়ে আবার রওনা হলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে। যদিও ততক্ষনে সন্ধ্যে নেমে পড়েছে।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
মার্সিবল বসানোর পাইপ কেনার পোস্ট দেখেছিলাম। এই জিনিস বসাতে অনেক ঝামেলা দেখছি। আজ আবার পাথরও কিনতে হচ্ছে । কর্মচারীদের যাত্রা দেখে ছুটি নেওয়ার খেসারত আপনাকে পোষাতে হলো। যেই কাজ যাদের তারাই সে কাজ ভালো পারে। হঠাৎ করে কেউ করতে গেলে অনেক কষ্ট হয় । তাছাড়া এত ভারী পাথর টোটোতে করে নিয়ে যাওয়া গিয়েছে? গতদিন রসে টইটুম্বুর জিলাপির ছবি দিয়েছিলেন। আজকে সমুচার এই ছবিটা না দিলে হতো না? লোভ সামলানো যায় না।
বাপরে! এ তো মহা হুজ্জুকির ব্যাপার দেখছি। মেটেরিয়াল আনআ, সব সেট করা। খুবই খাটনির কাজ। কিন্তু আশার দিক এটাই যে এখন একটু খাটনি হলেও পরে এর সুবিধে সবাই পাবে। এখন যদিও লোক জোগাড় করা, জিনিস আনা সবটাই সময় ও পরিশ্রম সাপেক্ষ। তবে এত কাজের পরও শেষের সিঙাড়া দুটো যেনো প্রাণ জুড়িয়ে দেয়।
তাজমহল পাথর শুনে তো মনে হচ্ছিল এই বুঝি নির্মাল্য দা আগ্রা চলে গেল। পরে দেখলাম না এলাকার মধ্যেই আছে। হা হা হা... সাবমারসিবল বসানো তো দেখছি বেশ ঝামেলার কাজ। আর তুমি যেটা খেয়েছিলে ওটা আমারও খুব পছন্দের তেলে ভাজা।
পাথর যে ভারী হবে এটা স্বাভাবিক দাদা। আপনিও বুঝতেন না যদি আজ তাদের সঙ্গে হাত না লাগাতেন। বেশ ভালো পরিশ্রম হয়েছে আপনার সেটা বুঝতে পারছি।
পাথরের নাম সম্পর্কে সেরকম কোন ধারণা ছিল না, দাদা। তোমার কাছ থেকে এই নতুন তাজমহল পাথরের নাম জানতে পারলাম। সারাদিন খাটাখাটনির পরে তেলের খাবার না খাওয়াই ভালো দাদা। গরমাগরম সমোচা যদিও অনেক লোভনীয় খাবার তারপরও খালি পেটে তেলের খাবার বেশি খেতে হয় না শরীর খারাপ করতে পারে।
নিজের কাজ নিজে করতে লজ্জা বা শরমের কিছু নেই। আর যাই করি দুই একজনকে জিজ্ঞেস করেই করা ভালো। আপনি সেই প্রক্রিয়াগুলো সম্পূর্ণ করেছেন। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।