কবিতা : ‘তুমি’ - ফ্যান্টম | আবৃত্তিতে : নির্মাল্য
নমস্কার,
বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি ঈশ্বরের কৃপায় আপনারা সকলে সুস্থ এবং ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদ ও ভালোবাসায় আমি ভালো আছি। আজ আপনাদের সামনে আমি আরো একটি কবিতা আবৃত্তি নিয়ে হাজির হলাম।
আজ আমাদের সকলের প্রিয় ফ্যান্টম দার আরো একটি কবিতা আবৃত্তি রূপে আপনাদের সামনে পরিবেশন করছি। আবৃত্তি সিরিজে এটি আমার উনিশ তম উপস্থাপনা। আমার আজকের পরিবেশনা, তুমি। তুমি কবিতায় কবি বোঝাতে চেয়েছেন ভালবাসা হীন জীবন যেন অর্থ থেকেও ঐশ্বর্যহীন। রুক্ষ, নিঃস্ব নামান্তর। যা নিয়ে বিস্তারিত মতামত অভিমত পর্যায়ে গিয়ে আলোচনা করেছি। দেরি করা ঠিক হবেনা, তাহলে চলুন শুরু করে দিই।
নভেম্বরের দশ তারিখ,
মনে কি পড়ে প্রিয় ?
শীতার্ত সন্ধ্যার এক হিমেল হাওয়ায়,
তোমাকে আপন করেছিলাম ।
আমার জীবনে তুমিই প্রথম নারী,
যার হাতে হাত রেখে আমি হাঁটতে চেয়েছিলাম ।
আমার হৃদয় তো বরফের চাদরে ঢাকা ছিলো;
কতকাল ধরে তা আমি নিজেই জানতাম না ।
রক্তশূন্য, সাদা, শীতঘুমে আচ্ছন্ন হৃদয়,
তোমার ভালোবাসায় আজ সে প্রস্ফুটিত রক্ত গোলাপ ।
তোমার চোখের তারায়,
সেদিন আমি খুঁজে পেয়েছিলাম নিজেকে ।
এতকাল ধরে আমি নিজেকেই চিনতাম না ।
শুধু, টাকার পিছনে ছুটতে গিয়ে,
আমি হারিয়ে ফেলেছিলাম নিজেকে ।
টাকার স্তূপে আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসতো,
শত কোটি টাকার মাঝেও আমি ছিলাম
নিঃস্ব, রিক্ত, কাঙাল এক ভিখিরী ।
ঐশ্বর্যবান, এমন সময় তোমার দেখা পেলাম,
ভিখিরীর ভালোবাসার রিক্ত পাত্র পূর্ণ হলো ।
টাকার নোংরা স্তুপ থেকে মুক্তি পেয়ে,
আবার আমি খোলা হাওয়ায় জীবনের স্বাদ পেলাম ।
আমি আসলে নিজেকেই চিনতাম না,
জানতাম না আমি কতটা ভালোবাসার কাঙাল ছিলাম !
তুমিই জানালে ভালোবাসার অর্থ,
তুমিই চেনালে জীবনের মানে ।
"ইটারনাল লাভ", শব্দটির সাথে সেদিনই প্রথম পরিচয়,
মানুষ মরে, কিন্তু ভালোবাসা মরে না ।
মানুষ হারিয়ে যায়, ভালোবাসা হারায় না ।
ক্ষয়ে যায় আমাদের জীবন, ভালোবাসার ক্ষয় নাই ।
জানি তুমি চাও না কিছু,
শুধু চাও এই হৃদয় টুকু।
তাই-ই দিয়েছি আমি উজাড় করে,
হৃদয়ের সব'কটা জানালা আজ খুলে।
কবিতা জুড়ে কবি জীবনের প্রকৃত অর্থ ও ভালোবাসার মাঝে এক মেল বন্ধন তৈরি করার চেষ্টা করে গেছেন। তাই কবিতার প্রতি পদে পদে কবি যেন নিজের জীবনের উপলব্ধি গুলোকেই ব্যক্ত করেছেন। কবি বোঝাতে চেয়েছেন যে জীবনের প্রকৃত অর্থ অন্য কিছুতে নয় ভালোবাসার মধ্যে লুকিয়ে আছে।
কবির সমস্ত উপলব্ধি গুলোই হয়েছে তার জীবনে ভালোবাসার মানুষটি আসার পর থেকে। কবিতায় তাই বারবার বলছেন যে, তিনি সবসময় টাকার পিছনে ছুটেছেন কিন্তু টাকায় তো সমস্ত কিছু নয়। মানুষ তো দিনের শেষে ভালোবাসার কাঙাল। তাই যখন কবির জীবনে সত্যিকারের ভালোবাসা এসেছে তখন ভালোবাসার কাছে টাকা হার মেনে নিয়েছে। কারণ অর্থ জীবনে আসবে যাবে কিন্তু ভালোবাসার মানুষটি হারিয়ে যায় না। কিংবা ভালোবাসার মানুষটি যদি চলে যায় তাহলে তাকে চিরকাল ভালোবাসা যায়।
কবির নিরস, রুক্ষ, ভালোবাসা হীন জীবনে সেই মানুষটি প্রস্ফুটিত গোলাপ হিসেবে এসেছে। সারা জীবন টাকার পিছনে ছোটার পর কবি অবশেষে হারিয়ে ফেলা নিজেকে খুঁজে পেয়েছেন। সেই মানুষটি কবিকে নতুন করে ভালবাসতে শিখিয়েছে। ভালোবাসার কাঙাল থেকে ঐশ্বর্যবান হতে শিখিয়েছে। একঘেয়ে অর্থের পিছনে দৌড়ানো থেকে মুক্তি দিয়েছে। সেই কাছের মানুষই কবিকে দিয়েছে জীবনের প্রকৃত স্বাদ। তাই কবিও নিজেকে পুরোপুরি উজার করে দিয়েছেন।
কবির কথাগুলো ঠিক নয় কি? জীবনে অর্থই কি সব কিছু। মানুষ সবকিছুই করে তার ভালবাসার মানুষ গুলোর জন্য তাই অর্থের থেকে দামি যে জিনিসটা সেটা সবসময়ই ভালোবাসা। তাই চলুন আমরা সবাই নতুন ভাবে ভালবাসতে শিখি।
আবৃত্তি
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
সত্যি আপনার কবিতা আবৃত্তি শুনে মনটা উজাড় হয়ে গেল। কবিতা পড়তে যেমন ভালো লাগে আবৃত্তি শুনতেও তেমনি ভালো লাগে। আপনি তো কবিতাটি খুবই সুন্দর ভাবে উপস্থাপনা করে লিখেছেন আবার অসাধারণ কণ্ঠে আবৃত্তি করেছেন। কবিতাগুলো শুনলে মনটা আপনা আপনি ভালো হয়ে যায়। সত্যি যে ভালোবাসা টাকাকে হার মানায় তাই প্রকৃত ভালোবাসা, যারা টাকার জন্য ভালোবাসে মানুষকে তা কখনো প্রকৃত ভালোবাসা হয়ে ওঠে না। কবিতাটি পড়তে যেমন ভালো লেগেছে শুনতেও তেমনি ভালো লেগেছে কবিতা আবৃতি। আপনার কন্ঠে এরকম আরো অনেকগুলো কবিতা এবং কবিতা আবৃতি দেখার অপেক্ষায় থাকবো। প্রত্যেকটি লাইন খুবই সুন্দর ভাবে ফুটে উঠেছে।
ফ্যান্টম দাদার কবিতাগুলো বেশ সুন্দর হয়।ভালোবাসা ছাড়া আর কি আছে বা জীবনে।দাদা আপনি আবৃত্তি বেশ দারুন করেছে,তবে শুরুর দিকে কন্ঠ টা আরো সফট হলে আরো দারুন লাগতো।বাকি সব ঠিক আছে,প্রেমের কবিতা তো তাই সফট হলে সুন্দর লাগে। ভুল হলে ক্ষমা করবেন দাদা।ধন্যবাদ
একটু-আধটু গান গাইতে জানি কিন্তু কবিতা আবৃত্তি কেন জানি আমার মাঝে আসে না। তাই কারো কবিতা আবৃত্তি শুনলে ভীষণ ভালো লাগে, আর সেই কবিতা মনোযোগ দিয়ে শোনার চেষ্টা করি। দাদা, আপনার কন্ঠ ফ্যান্টম দাদার কবিতা আবৃত্তি শুনে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। আপনার কবিতা আবৃত্তি শুনে আমারও মনে হচ্ছে, একটু কবিতা আবৃত্তির চেষ্টা করি। ভালোবাসার কাছে টাকা হার মেনে গিয়েছে আর এই বিষয়বস্তুকে কেন্দ্র করে চমৎকার একটি কবিতা রচনা করেছেন আমাদের প্রিয় ফ্যান্টম দাদা। আর সেই কবিতাটি খুবই সাবলীলভাবে আবৃত্তি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। পরবর্তী সময়ে আরো নিত্যনতুন কবিতা আবৃত্তি উপহার দিবেন এই প্রত্যাশা করছি। শুভকামনা ও ভালোবাসা রইল আপনার জন্য।
আপনার কবিতা আবৃত্তির ধরণ খুবই সুন্দর দাদা। আপনার কন্ঠে কবিতাটির আবৃত্তি শুনে, মনটা ভরে গেল দাদা। কবিতাটির প্রতিটি লাইন অনেক সুন্দর। আসলে সত্যিকারের ভালোবাসা সব কিছুর ঊর্ধ্বে, এর সাথে কোন কিছুর তুলনা চলে না। জীবনে চলতে গেলে, সত্যিকারের একজন মানুষ পাশে থাকলেই যথেষ্ট। টাকার চেয়ে সত্যিকারের ভালোবাসা যে অনেক উপরে, সেটা এই কবিতাটিতে স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। আমাদের সবার প্রিয় ফ্যান্টম দাদাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, এত সুন্দর একটি কবিতা লিখার জন্য।
ফ্যান্টম দাদার লেখা কবিতা পাঠ আর আমি শুনবো না ,তা তো আর হয় না।তাও আবার আপনি পাঠ করছেন।আপনার শব্দ,আপনার উচ্চারণ আর আপনার টোন প্রত্যেকটাই খুব পরিষ্কার। আর কবিতার সারমর্ম এত সুন্দর ব্যাখ্যা করেছেন আলাদা করে আর কিছু বলার নেই।একজন প্রেমিক তার প্রেমিকার সাথে কাটানো কিছু মুহূর্ত , সে যেনো ভুলতেই পারে না। তার জীবন ছিল দুঃখ এবং শুষ্ক। যেন সেই দুঃখ-শুষ্ক জীবনেও কেউ একজন বারির ধারার মতো ঝরে পড়েছে।অসাধারণ পাঠ।
দাদা তোমার কণ্ঠে শেয়ার করা ফ্যান্টম দাদার কবিতাটি খুব অসাধারণ হয়েছে। আমি এর আগেও অনেক কবিতা আবৃত্তি করা শুনেছি তোমার কন্ঠে খুবই ভালো লাগে আমার আবৃত্তি গুলো শুনতে। ভালোবাসাই তো জীবনের প্রধান জিনিস, ভালোবাসা ছাড়া জীবনে আর কি আছে দাদা? তুমি শব্দটা শুধু একটি গুরুত্বপূর্ণ শব্দ নয়, এটা একটা ভালোবাসার অধ্যায়।