চললাম বাড়ির পথে
নমস্কার বন্ধুরা,
রওনা হলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে। কলকাতার দাবদাহ গরম থেকে কয়েকটা দিন কম তাপমাত্রায় কিছুটা স্বস্তি নিতে। তার পাশাপাশি বিগত কয়েক মাস ধরে একঘেয়ে জীবন কাটিয়ে চলেছি তার থেকে মনকেও কিছুটা রেহাই দেওয়ার জন্য। বাড়ি যাওয়ার চিন্তাটা বেশ কয়েক সপ্তাহ আগেই স্থির করে ফেলি এবং তার পাশাপাশি রেলের টিকিটটাও কেটে রাখি। আমি কেটেছিলাম স্লিপার ক্লাসে। কারণ যখন আমি ট্রেনের টিকিট কাটি তখন আবহাওয়া অনেকটাই সামান্য ছিল তাই ভেবেছিলাম এসি হীন কামরায় খুব একটা অসুবিধা হবে না। কিন্তু বিগত কদিনে কলকাতার তাপমাত্রা ৪৫° কাছে ঘোরাফেরা করছে। সেই জন্য যাওয়ার কথা ভেবে কিছুটা যেন মানসিকভাবে দমে গিয়েছিলাম। আদবেই বাড়িতে আস্ত হয়ে পৌঁছবো নাকি সিদ্ধ হয়ে পৌঁছতে হবে।
আমার ট্রেন ছিল রাত্রি বেলায়। কাজকর্ম সেরে স্টেশনের উদ্দেশ্যে বেরোতে একটু দেরি করে ফেলেছিলাম। স্টেশন যখন পৌঁছলাম ট্রেন ছাড়ার তখন মাত্র পনেরো মিনিট বাকি। দৌড়োতে দৌড়োতে ট্রেনের উঠলাম, তখন ট্রেন ছাড়ার মাত্র দশ মিনিট বাকি আছে। কামরায় উঠে নিজের নির্ধারিত সিটে ব্যাগ পত্র রেখে একটু স্বস্তি পেলাম।তখন বারবার মনে হচ্ছিলো আরেকটু আগে বেরোনোই উচিত ছিলো। ঘেমে যাওয়ায় নিচের সিটেই বসলাম। ঘন্টাখানেক বসে সবাই যখন শুয়ে পড়বে তখন নির্ধারিত সিটে চলে যাবো, এই ছিলো আমার ভাবনা। কলকাতায় যে পরিমাণে গরম লাগছিল ট্রেনে চলতেই ঠান্ডা হাওয়ায় সেটা উধাও হয়ে গেলো। খোলা জানলা দিয়ে ট্রেনের মধ্যে হু হু করে হাওয়া ঢুকছিল। এযেন এক আলাদাই অনুভূতি।
সৌভাগ্যক্রমে যে সিটে বসে ছিলাম তার যাত্রীরা ঘন্টা খানেক পরের স্টেশন থেকে উঠলেন। তারা উঠতেই আমিও আমার নির্ধারিত সিটে উঠে শুয়ে পড়লাম। কিছুক্ষণ পরে বেশ ভালোই শীত লাগা শুরু করলো। বাতাস গায়ে শিরশিরানি ধরিয়ে দিল। ট্রেন এই কারণে আমার সব সময় ভালো লাগে। গায়ে পাতলা চাদর জড়িয়ে দারুন একটা ঘুম দিলাম। বারোটা নাগাদ ঘুমিয়ে সোজা সকাল সাতটায় ঘুম ভাঙলো। ঘুম থেকে উঠে দেখি গন্তব্য স্টেশনের কাছাকাছি পৌঁছে গেছি।
ঘুম থেকে ওঠার পরে দেখি নিচের সিটগুলো ফাকা হয়ে গেছে। ব্যাগ পত্র সেখানে নামিয়ে বসে পড়লাম বাইরের সবুজ প্রকৃতির উপভোগ করতে। বাইরে হালকা কুয়াশা নজরে এলো। যা দেখে বেশ অবাকই হলাম। কলকাতায় যেখানে রীতিমতো অগ্নি বর্ষণ সেখানে এদিকটায় এখন ঠান্ডা আছে। তার পাশাপাশি চারিদিকে মাঠ ভর্তি ফসল। মাঠ ভর্তি ফসল আর সবুজ প্রকৃতির ঠান্ডা হাওয়া দুইয়ের মাঝে ট্রেন ছুটছে। এক যেন এক অন্যরকম অনুভূতি।
এই গরমের মধ্যে মনে নন এসি টিকিট কাটার কথা শুনে কিছুটা ভয় পেয়েছিলাম। কিন্তু পড়তে পড়তে সেই ভয়টা দূর হয়ে গেল। ট্রেন চালু হওয়ার পর বেশ ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিলো দেখে ভালোভাবে জার্নি করতে পেরেছিলেন। ট্রেনের জার্নিতে ভালো সিট পেলে খুব আরামেই জার্নি করা যায়। আপনি তো কিছু বুঝতেই পারেননি এক ঘুমে প্রায় বাড়ি পৌঁছে গিয়েছেন।
কলকাতায় দেখছি আমাদের এখানের থেকেও বেশি গরম। আর এই গরমে শহর ছেড়ে বাড়ি যাওয়ার বুদ্ধি টা ভালো করেছেন দাদা। অন্তত কিছুদিন আরাম আয়েশে থাকা যাবে। ট্রেন ছাড়লে জানলা দিয়ে হাওয়া আসলে সত্যি গরম দূর হয়ে যায়। তখন একটা প্রশান্তি কাজ করে। আপনার ট্রেন জার্নির পুরোটা শুনে বেশ ভালো লাগল।
কলকাতায় যে পরিমাণ গরম তাতে বাড়ি গিয়ে ঠিকই করেছ দাদা। তবে দাদা, এরপর তুমি যখন দূরপাল্লার ট্রেনে ওঠার কথা চিন্তা করবে, তখন বাড়ি থেকে একটু সময় নিয়ে বেরোবে। এতে করে এরকম টেনশন আর থাকবে না। যাইহোক, কলকাতার গরম থেকে কিছুদিনের জন্য রেহাই পেলে, এটা জেনে বেশ খুশি হলাম। এখন প্রকৃতি উপভোগ করো বাড়ি গিয়ে।
দাদা কলকাতায় যে পরিমাণে গরম পরেছে, এতে করে বাড়িতে যাওয়ার সিদ্ধান্তটা একেবারে পারফেক্ট হয়েছে। বাড়িতে গিয়ে কয়েকটা দিন আরামে থাকতে পারবেন। ট্রেন জার্নি আমারও ভীষণ পছন্দ। বাসের চেয়ে ট্রেন জার্নিতে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা পাওয়া যায়। আপনার জার্নিটা সবমিলিয়ে বেশ ভালো ছিলো। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।