৪-ঠা ভাদ্র, ১৪২৮ // আসুস অথারাইজড সার্ভিস সেন্টারে // ১০% পেআউট লাজুক খ্যাঁক-কে
৪-ঠা ভাদ্র, ১৪২৮
নমস্কার,
বোনের ল্যাপটপের হিনজ টা ভেঙেছে সেই ১৩ দিন আগে। মাঝে বার তিনেক ওটাকে নিয়ে সার্ভিস সেন্টারে যেতে বললেও কাজের চাপে আর যাওয়া হয়নি। এদিকে ওর পরীক্ষা এগিয়ে আসছে, তাই আজ জোর করেই নিয়ে গেলাম।
ক্লায়েন্টদের দোকানে ঢুঁ মারার আগেই আসুসের অথারাইজড সার্ভিস সেন্টারে চলে যাবো তারপর ফেরার পথে কাজ গুলো সেরে আসলেই হবে। এই ভেবে রেখেছি। আজকে ভাগ্যদেবী এতোটাই সহায় হবেন সেটা স্বপ্নেও ভাবিনি। দুপুর নাগাদ স্নান সেরে খেয়ে বেরোবো এমন সময় আশীষের ফোন। হাতিয়ারার দিকে একটা ফ্ল্যাটের খোঁজ পেয়ে ও দেখতে এসেছে, আমাকে ওর সাথে যেতে হবে। ওর কাজটাও গুরুত্বপূর্ণ তাই মুখের উপর না বলিনি, তবে ওকে বললাম ফ্ল্যাট দেখার পর আমাকে যেন খান্না ছেড়ে দেয়। তারপর নাহয় আমিই বাস ধরে আসুস সার্ভিস সেন্টারে চলে যাবো। আশীষ বললো 'আমাকেও বড়বাজার যেতে হবে ফ্লাট দেখে একসাথে চলে যাবো'। এতো ভালো ভাগ্য কার হয়!
ফ্ল্যাটটা দেখা হলো, নতুন তৈরী হচ্ছে। ৮৬৩ স্কোয়ার ফুট হলেও, প্রায় ৩০% সুপার বিল্ট এরিয়া। ৩,৭০০ টাকা প্রতি স্কয়ার ফুট। ফ্ল্যাটের কাজ দেখে পছন্দ হলেও দামটা শুনে পিছিয়ে আসা হলো। বাগুইঅটির ভেতর দিকটায় এতোটা দাম কল্পনাও করা যায় না। আমাদের প্রায় ঘন্টা দেড়েক সময় এদিকেই চলে গেলো।
তাড়াতাড়ি যাবার জন্য কেষ্টপুরের ভেতর দিয়ে আমরা ভি আই পি রোড ধরলাম। রাস্তায় মেঘের সাথে রোদের খেলা দেখে অভিভূত হয়ে গেলাম।
তবুও রাস্তায় কোথাও না থেমে সোজা আসুসের সার্ভিস সেন্টারেই যাওয়া হলো। কলকাতায় আসুসের বেশ কয়েকটা অথারাইজড সার্ভিস সেন্টার থাকলেও চাঁদনি চকেরটা সেন্টারটা সবচাইতে কাছে।
সেন্টারে পৌঁছে মিনিট বিশেক বসতে হলো, তারপর ডাক পেলাম ল্যাপটপটা দেখানোর।
ডেস্কের দিদিটার ব্যবহার বেশ ভালো। তিনি আমার কথা পুরোটা শুনলেন তারপর নিজে ল্যাপটপটা দেখে বললেন "স্যার কমপক্ষে ১০-১৪ দিন লাগবে"। আমি তো শুনে আঁতকে উঠলাম। একটা হিনজ বদলাতে দু সপ্তাহ! আমার হাতে আর কোনো অপশনও নেই। ল্যাপটপ জমা দিয়ে বেরিয়ে আসতে হলো।
সেখান থেকে আশীষের কাজে সোজা বড়বাজারে। বাপ রে বাপ সেকি ভীড়। মহরমের বাজার আর আগামীকালকের রাখিবন্ধন। দুটো মিলিয়েই ভয়ানক ভীড়। জ্যামেই বাইক নিয়ে প্রায় ৪৫ মিনিট সময় নষ্ট হলো।
অনেক ধস্তাধস্তি করে অবশেষে সন্ধ্যে ৬ টার দিকে ক্লায়েন্টের কাছে এসে পৌছালাম। আজ আর বিশেষ কাজ নেই। যা কাজ গতকাল বাড়ি থেকেই তুলে দিয়েছি, তবুও ল্যাপটপের সমানে কিছুটা বসতেই হলো। ল্যাপটপে বসে আছি দোকানের পাশ থেকে মাইক ধীরে গান ভেসে আসছে। আজ সম্ভত ক্যালেন্ডারে শ্রাবণ মাসের শেষ তারিখ, তারই পুজা।
কাজ শেষ করে পথেই দেখি প্রসাদের লাইন, আমিও দাঁড়িয়ে পড়লাম প্রসাদ পাবার লোভে। প্রসাদের পাবার লাইন হলো সব চাইতে লেভেলার। বিত্তবান থেকে গরিব, উচ্চ পদে চাকুরিরত থেকে ভ্যান চালক সবাইকে সমান করে দেয়। লাইনে একে একে প্রসাদ নিলাম। বাবাকে প্রণাম জানিয়ে, প্রসাদ খেতে খেতে বাড়ির পথে রওনা দিলাম।
খুব সুন্দর লিখেছেন দাদা। বন্ধুর দরকারে এগিয়ে যাওয়াই বন্ধুর কর্তব্য আপনি সেটা পালন করেছেন। এবং বাকি গল্পটাও খুব ভালো ছিল। আপনাকে ধন্যবাদ এরকম আপনার প্রাত্যহিক জীবনের গল্প শেয়ার করার জন্য।
প্রয়োজনে বন্ধুরাই এগিয়ে আসে। তাই বন্ধুদের সময় দিতে দ্বিধাবোধ হয় না। মূল্যবান মতামতের জন্য ধন্যবাদ
🙂
খুব গুছিয়ে আপনার দিনটি উপস্থাপন করেছেন। খুবই ব্যস্ত একটি দিন আপনি কাটিয়েছেন। ছবি গুলো ও সুন্দর হয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ। ব্যস্ততার মধ্যে কাটাতেই ভালো লাগে
অনেক ব্যস্ততার মাঝে আবার বাবার প্রসাদ।সব কষ্ট যেন একনিমেসেই গায়েব।প্রসাদ খেতে আমার ভালোই লাগে।ধন্যবাদ দাদা।
বন্ধুর বিপদে বন্ধু এগিয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক। শুধু বন্ধু বলে নয় মানবিকতার দিক দিয়ে আপনার এলাকার কিংবা আপনার দেশে কিংবা সমাজের যে কোন লোক যদি বিপদে পড়ে আপনাকে অবশ্যই উচিত হবে তার পাশে গিয়ে সাহায্য করা
ধন্যবাদ জীবনের একটি শিক্ষামূলক এবং অনুপ্রেরণামূলক গল্প শেয়ার করার জন্য
বিপদ বলে কোয়ে আসেনা। সামর্থ্য থাকলে যেকারো বিপদে এগিয়ে যাওয়া উচিত